03/07/2025
ঘটনাটা যুক্তরাষ্ট্রের। হাই স্কুল পড়ুয়া এক ছেলে। তার হঠাৎ সমবয়সী এক মেয়েকে খুব ভালো লেগে যায়। শুরু হয় তাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা।
পশ্চিমা কালচার অনুযায়ী ছেলে মেয়েরা খুব অল্প বয়স থেকেই নানা ধরনের অড জব করে। তো ওই মেয়েটি একটা জুতার দোকানে কাজ করতো। ওই জুতার দোকানের উল্টো পাশে ছিল একটা আইসক্রিমের দোকান।
ছেলেটা অনেক ভেবেচিন্তে আইসক্রিমের দোকানটায় কাজ নিলো। তার চিন্তা ছিলো এতে মেয়েটার সঙ্গে প্রতিদিন তার দেখা হবে। প্লাস বাড়তি কিছু ইনকাম তো হবেই।
আইসক্রিমের দোকানে ছেলেটার কাজ খুব সহজ। মানুষকে আইসক্রিম দিতে হবে। সমস্যা হলো, মানুষ অনেক সময় আইসক্রিম মুখ থেকে মাটিতে ফেলে। এতে দোকান নোংরা হয়।
সে তো আর এতো কিছু জানে না। তার লক্ষ্য হলো- ওই মেয়েকে ইমপ্রেস করা। তো কাজের প্রথমদিনেই ছেলেটা যখন ডিউটি শেষ করে বের হতে যাবে, তখন দোকানের মালিক তাকে ডাকলো।
মালিক বললো, ‘চলে যাওয়ার আগে মাটিতে যে আইসক্রিমগুলো মানুষ ফেলে গেছে, তা পরিষ্কার করে দিয়ে যাও।’
ছেলেটা তাকিয়ে দেখে যে তার ওই পছন্দের মেয়েটা ঠিক দোকানটার সামনে দাঁড়ানো। এখন মাটিতে পড়ে থাকা আইসক্রিম পরিষ্কার করতে হলে তাকে হাঁটু গেড়ে বসতে হবে, তারপর স্ক্রেপার দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সেগুলো তুলতে হবে।
স্বাভাবিকভাবেই ছেলেটা মেয়েটার সামনে তা করতে চাইলো না। আইসক্রিমের দোকানের মালিককে বললো, আমি তো এখানে আইসক্রিম সার্ভ করার কাজ নিয়েছি। মাটিতে পড়ে থাকা আইসক্রিম পরিষ্কার করার কাজ নেইনি।
মালিক এ উত্তর শোনার পর ছেলেটাকে বলে দিলো – ঠিক আছে। কাল থেকে তোমাকে আর আসতে হবে না।
এ ঘটনাটা ছেলেটার মধ্য অদ্ভুত এক অনুভূতির জন্ম দিলো। সে অনুভব করলো, পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে। এক ধরনের মানুষ- মালিক, আর আরেক ধরনের মানুষ – তাদের কর্মচারী। সেদিন থেকেই তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয়ে গেলো। সে জীবনটাকে নিয়ে গেলো ভিন্ন পথে। ব্যবসার দিকে।
তারপর বহুবছর কেটে গেছে। এখন তাকে দুনিয়াজোড়া প্রায় সবাই চেনেন। তিনি কেভিন ও’লিয়ারি। খ্যাতনামা উদ্যোক্তা। স্টিভ জবসের মতো মানুষের সঙ্গে কাজ করে আসা ব্যক্তি। তিনি এখন শার্ক ট্যাংকের বিচারক। প্রতিদিন নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তার দেখা হয়, তাদের ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেন তিনি।
মজার ব্যাপার হলো, কেভিন ও’লিয়ারি সফল হওয়ার পর ওই আইসক্রিমের দোকানে ফিরে গিয়েছিলেন। চেষ্টা করেছিলেন ওই মালিকের সঙ্গে দেখা করার। তাকে ধন্যবাদ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ততোদিনে আগের মালিক আইসক্রিমের দোকানটি বিক্রি করে দিয়ে অন্য কোথাও চলে গেছেন।
কেভিন ও’লিয়ারি জীবনের এ ঘটনাটা এখনও স্মরণ করেন এবং তিনি মনে করেন, তার উদ্যোক্তা জীবনের জার্নিটা আসলে ওই ঘটনা থেকে শুরু হয়েছিল।
ওই আইসক্রিমের দোকানের মেঝেতে থাকা টাইলসের একটা অংশ কেভিন ও’লিয়ারির কাছে আছে। তিনি সেটি সযত্নে সংগ্রহ করে রেখেছেন। সেটি তিনি মাঝেমধ্যেই দেখেন।
নিচে আপনাদের জন্য ছবি দিয়ে দিলাম। সম্প্রতি তিনি দ্য ডায়েরি অফ আ সিইও পডকাস্টে এসে ঘটনাটা জানিয়েছেন। ছবিগুলো ওই পডকাস্ট থেকে নেওয়া।