
26/08/2025
খুব কাছ থেকে দেখা আমার প্রিয় একজন শিক্ষক ।
তিনি একটু রাগী, তবে হুট করে কখনো রাগতেন না, হাস্যোজ্জ্বল মুখ, পরিচিতদের অকপটে গল্প শোনাতেন। কাজের ব্যাপারে তিনি ছিলেন স্টেট ফরওয়ার্ড ব্যক্তি । আমি যে সময় ছাত্র ছিলাম_ ০৫ থেকে ১০ সালের দিকে, তিনাকে দেখতাম তিনি সময়ের দিকে খুব খেয়াল রাখতেন । ৯টা ১৫মিনিটে স্কুল, অথচ ওই সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো ছিল না, এখনকার মত অটো, টুকটুকি, মোটরসাইকেল, খুব একটা ছিলো না, তিনার চায়না ফনিক্স সাইকেল নিয়ে তিনি সময়ের
অনেক আগেই চলে আসতেন। এরপর কিছুদিন পরে হঠাৎ ডায়াবেটিস ধরা পড়ে, তারপর থেকে তিনি সকালবেলায় ঠাকুরগাঁও হাজীপাড়া থেকে হেঁটে অনেক সময় স্কুল পর্যন্ত আসতেন। বাসায় যাবার সময় হয়তো বাসে বা ভ্যানে যেতেন। তিনাকে আমি অনেক সময় দেখেছি কলা পারুটি নিয়ে আসতেন হয়তো খুব সকালে বাড়ী থেকে বেড়িয়ে আসতেন না খেয়ে। আমার বাড়ী যেহেতু স্কুলের পাশেই তাই আমি সব সময় মাঠেই থাকতাম বেশি । তিনি মাঝেমধ্যেই আমাকে খাবার পানি আনতে বলতেন আমি পানি নিয়ে আসলে কলা পারুটি খেতে বলতেন আমি মাঝেমধ্যেই তা খেতাম তিনার সাথে। তিনি সিংগিয়া এলাকার অনেকেরই শিক্ষক । এমন হয়েছে আমার বয়সী ছাত্রদের বাপ দাদার শিক্ষক ছিলেন সিংগিয়া এলাকায় ছিলেন তিনি অতি সম্মানিত ব্যক্তি গত ৩ বছর আগে আজকের এই দিনে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান। খুব কাছে থেকে দেখলাম প্রিয় শিক্ষক এর নিথর দেহ পড়ে আছে বারান্দায়। চারপায়া খাটের চার পাশে ভির করছে সজনেরা, সহকর্মী সহপাঠি ছাত্র/ছাত্রীরা । কিন্তু তিনি ঘুমাচ্ছেন হাস্যজ্জল নূরানী চেহারা নিয়ে । বার বার আমার মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ পরেই ঘুম ভেঙ্গে বলবেন জামির কখন আসলা বস । কারণ তিনি রিটায়ার্ড করার পরেও আমার সাথে তিনার যোগাযোগ ছিলো । বেশ কয়েকবার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য আমি গিয়েছিলাম তিনার বাসায় । স্যার আমার এলাকার অনেকে খোজ খবর নিতেন আমার কাছে । অথচ সেদিন মৃত্যুর খবর শুনে রাতেই ছুটে গিয়েছি স্যারের বাসায় । নিথর দেহ সাদা কাপড়ে মোড়ানো সুয়ে আছে খাটে । আমি বিভিন্ন স্যারের স্মৃতি মনে করছি চোখ গুলা ভিজে পানি আসছি পর দিন সকালে যানাজা শেষে চিরো বিদায় 😭😭😭
আমরা ব্যক্তিগতভাবে তিনার জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন উনাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন আমিন