
17/09/2025
রুকুনুজ্জামান সেলিম, স্টাফ রিপোর্টের :
প্রসাশনের সেল্টারে টঙ্গী তে জমজমাট মাদক ব্যবসা
ছাত্র জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গাজীপুরের টঙ্গীতে মাদক বিরোধী অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা না থাকায় স্বাধীনভাবে মাদক বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা।
টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী অঞ্চলের পূর্ব ও পশ্চিম থানাধীন প্রতিটি ওয়ার্ডে অবস্থিত বস্তিসহ আবাসিক এলাকার অলিতে-গলিতে প্রকাশ্যে মাদক দ্রব্য বেচা-কেনার কার্যক্রম গতিশীল রাখতে প্রতিটি ওয়ার্ডেই গড়ে তুলেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট বাহিনী। আর এই সিন্ডিকেট সদস্যরা মোবাইল নেটওয়ার্ক ও মোটরযানের যোগে হোম ডেলিভারিতে মাদক পৌঁছে দিচ্ছে সেবনকারীদের । এবং বস্তিগুলোতে ইয়াবা সেবনের জন্য, ঘর রয়েছে এগুলেতে সারাদিন বিভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েরা ইয়াবা সেবন করছে।
শিল্পনগরীর এই অঞ্চলে হাত বাড়ালই পাওয়া
যায় গাঁজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, দেশি, বিদেশি মদ, প্যাথেডিন, চৌরশ, আফিম প্রভৃতি।
নাম না প্রকাশশর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানায়, গত ৫ ই
আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাদক বিরোধী
অভিযানে কঠোরভাবে ভুমিকা না রাখায় টঙ্গীর পূর্ব ও পশ্চিম থানাধীনের প্রতিটা ওয়ার্ডের বস্তিসহ আবাসিক এলাকার অলিতে-গলিতে প্রকাশ্যেই মাদক দ্রব্য বেচা-কেনা হলেও হয়রানির ভয়ে এদেরকে কেউই বাধাও দিচ্ছে না। অনেকটাই স্বাধীনভাবে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম গতিশীল রেখেছেন। এতে টঙ্গীর রেললাইন সহ বিভিন্ন পরিত্যক্ত জায়গায় উম্মুক্তভাবে মাদক সেবন করছে মাদক সেবীরা।
তারা আরও জানায়, গণ-অভ্যুত্থানের পর বহু
ব্যক্তিদের বাড়ি-ঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর, উচ্ছেদ সহ
পুড়িয়ে দেওয়া হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মাদক কারবারিরা অনেকটাই নির্ভয়ে তাদের মাদক বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। প্রায় সময়ই মাদকের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় মারামারি, হত্যাকান্ডসহ চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ক্রমাগতই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অনুসন্ধানে ও নির্ভরশীল সূত্রে জানাযায়, টঙ্গী অঞ্চলের
অন্যতম মাদক পল্লী নামে পরিচিত ৪৬ নং ওয়ার্ডের
কেরানীরটেক বস্তিতে কাদিরের মেয়ে রুনা ও তার স্বামী সুমন মিয়া, ছেলে রিফাত ও কাদিরের আরেক মেয়ে কারিমা। আলার মেয়ে কুলছুম ও স্বামী সিরাজ। নারগিস ও স্বামী কামাল । রহিমা, কদবানুর মেয়ে আকলী ও তার স্বামী সোর্স আনু। বাবলু ও স্ত্রী স্বর্নালী, নাজমা, খালেদা, লেংটার মেয়ে আখি ও স্বামী সুমন। গান্জার ডিলার আমির আলী, বিক্রিতা সেহেরজান, মনির ও স্ত্রী মর্জিনা, মৃত রুকির ছেলে রহিম । তারা সবাই দীর্ঘদিন যাবৎ ওই এলাকায় গাজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকারের মাদক দ্রব্য বেচা-কেনা
করছে। তাদের মাদক ব্যবসায় আর্থিক সহায়তা করছে ওই
এলাকার সমিতির নামে সুদি জাকির। বিগতদিনে অনেকেই
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে
জেলহাজত খেটেছেন কিন্তু বর্তমানে তারা জামিনে এসে
স্বাধীনভাবে মাদক বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা
জানায়। এই পল্লীর পাশে গড়ে উঠেছে চার তারকা মানের
আবাসিক হোটেল জেভান। ঐখানে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না ·করেই অল্প বয়সী কিশোর ও যুবকদের কাছে মদ বিক্রি
করাসহ বহিরাগতদের কাছেও দেদারছে বিদেশি মদ বিক্রি
করছে। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে ওই হোটেলে রাতভর উঠতি
বয়সের তরুণ তরুণীদের উম্মাদনার নৃত্যসহ নারীদের যৌন
ব্যবসা পরিচালনা করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। এতে এলাকার
সচেতনমহল তাদের সন্তানদের নিয়ে বিষণ্নতার সহিত উদ্বেগ
প্রকাশ করলেও ঐ হোটেলে অবৈধ মদ বিক্রিসহ অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধ করতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন।
এতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ৫৬ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আরেক মাদক পল্লী নামে পরিচিত সমবায় ব্যাংক মাঠ বস্তিতে মাদক সম্রাজ্ঞী মোমেলা ও তার স্বামীর জাহাঙ্গীর। তাদের সিন্ডিকেটে ফেন্সিডিল বিক্রি করছে আনোয়ার ও রাসেল । ইয়াবা বিক্রি করছে কল্পনা, রানী, বাচ্চু, তার স্ত্রী, বাদলের মা। প্যাথেডিন, ফেন্সিডিল, গাজা বিক্রি করছে মিনারা। অপরদিকে আওয়ামী লীগের নেত্রী ময়না ও পুত্র বধু রুজির সিন্ডিকেটে ফেন্সিডিল বিক্রি করছে তাজু,নারগিস, রাসেল, রাব্বানী ও মা রানী, মুক্তি ও মুক্তির স্বামী সোহেল একজন চিহ্নিত ছিনতাইকারী।