05/02/2024
ব্যবসার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার কৌশল
ব্যবসা শুরু করা যতটা সহজ, ব্যবসাক্ষেত্রে টিকে থাকা কিন্তু ততটা সহজ নয়। এ ক্ষেত্রে রয়েছে অনেক প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই আপনাকে টিকে থাকতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন কিছু কৌশল। ব্যবসার অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, তবে শুরুর আগেই তো আর অভিজ্ঞতা আসবে না; এ জন্য আগে শুরুটা তো হোক।
প্রথমেই চাই পরিকল্পনা
ব্যবসাক্ষেত্রে টিকে থাকতে হলে চাই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। পরিকল্পনা ছাড়া ব্যবসায় নামলে আপনার টিকে থাকাই কষ্টকর হয়ে যাবে। ‘প্রথমে ঠিক করতে হবে কী ধরনের ব্যবসা আপনি করতে চান, সে অনুযায়ী মূলধন আপনার আছে কি না। উৎপাদনমুখী ব্যবসা হলে ঠিক করতে হবে আপনার উৎপাদিত পণ্য কী হবে। এর জন্য যে যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল ও লোকবল প্রয়োজন হবে, তা আছে কি না। বিপণনমুখী ব্যবসা করতে চাইলে যেসব জিনিস বাজারজাত করতে চান, তার চাহিদা বা উপযোগিতা, লাভের সম্ভাবনা কতটুকু-এসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়ন
একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য সুনির্দিষ্ট ও সুষ্ঠু নীতিমালা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এ নীতিমালা লিখিত হওয়াই ভালো। এর আলোকেই আপনার প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে।
বিনিয়োগ করুন জায়গামতো
‘ব্যবসার জন্য এমন একটি বিষয় বেছে নেওয়া উচিত, যার মাধ্যমে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তা না করে যদি আপনি এমন একটি ব্যবসা বেছে নেন বাজারে যার কোনো চাহিদাই নেই, তাহলে কিন্তু আপনার শ্রম, মূলধন, সময়-সবকিছুই বৃথা যাবে। তাই যে কাজটি করতে হবে তা হলো, আপনাকে গ্রাহকের চাহিদা বুঝতে হবে। গ্রাহকদের চাহিদা, পছন্দ, আগ্রহ, সামর্থ্য-এসব বিষয় মাথায় রেখে আপনাকে এগোতে হবে।
বীমা করাটাও জরুরি
ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে, জমি বিক্রি করে বা আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে অর্থ ধার নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেন। ব্যবসা বেশ ভালোই চলছিল; কিন্তু হঠাৎ করেই বিপদ হলো। দুর্ঘটনা তো আর বলে-কয়ে আসে না! তাই বীমা করাটাও জরুরি।
প্রয়োজনে পরিকল্পনা পরিবর্তন
বাজারে কোনো পণ্যের চাহিদা যে সব সময় থাকবে তা কিন্তু নয়। আজ যে পণ্যের চাহিদা অনেক, কাল তা না-ও থাকতে পারে। আর এই মন্দাভাব কাটিয়ে উঠতে চাইলে প্রয়োজনে আপনাকে ব্যবসায়িক পরিকল্পনার পরিবর্তন করতে হবে।
লাভের একটি অংশ সঞ্চয় করুন
অনেক ব্যবসায়ীই ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়েন সঞ্চয় না থাকার কারণে। অনেকেই লাভের প্রায় পুরো অংশই তাঁর পুরোনো ব্যবসায় বিনিয়োগ করে ফেলেন। তাই তাঁর বিনিয়োগ করা টাকা ছাড়া মূলধনের আর কোনো উৎস থাকে না। তাই কোনো কারণে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি সেখান থেকে উত্তরণের কোনো পথ খুঁজে পান না। শুধু ব্যবসায়িক মনমানসিকতা থাকলেই হবে না, আপনাকে সঞ্চয়ীও হতে হবে। কথায় বলে সঞ্চয়েই সমৃদ্ধি।
পরিচিতি বাড়ান
ব্যবসাক্ষেত্রে টিকে থাকতে হলে প্রতিষ্ঠানের পরিচিতিটাও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ধরে নেওয়া যাক, পাশাপাশি দুটি প্রতিষ্ঠান একই ধরনের পণ্যসেবা দিয়ে থাকে। একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি বেশি, অন্যটির কম। কার বিক্রি-ব্যবসা ভালো জমবে? নিশ্চয়ই সেই প্রতিষ্ঠানের বিক্রি বেশি হবে, যেটির পরিচিতি বেশি। এজন্য ব্যবসার পরিচিতি বাড়ানো জরুরি।
ভেঙে পড়লে চলবে না
আপনি ছোট-বড়-মাঝারি যে ব্যবসায়ীই হোন না কেন, ব্যবসায় ঝুঁকি থাকবেই। কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভেঙে না পড়ে ক্ষতির কারণ খুঁজে বের করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন এ রকম না হয়, সেদিকে সচেতন হতে হবে। ব্যবসার ক্ষতি যেটা হয়ে গেছে, তা নিয়ে বেশি হতাশ না হয়ে কীভাবে নতুন করে ব্যবসা দাঁড় করানো যায়, সেদিকে মনোযোগী হতে হবে।