21/07/2025
"আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি শহীদ"
দুনিয়ায় একজন মানুষ যখন আগুনে পুড়ে, আমরা কেবল তার চিৎকার শুনি, দেখি তার দগ্ধ চামড়া, তার ছটফটানি—আর হয়তো শেষে নিথর দেহটা। কিন্তু আমরা কি জানি—এই যন্ত্রণার ভেতরেও আছে এক মহিমান্বিত মর্যাদা? আছে আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশেষ ঘোষণা?
আগুনে পোড়া মৃত্যু শহীদের মর্যাদা পায়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: “আগুনে পোড়া ব্যক্তি শহীদ ” (আবু দাউদ: ৩১১১)
এই হাদীসটা কোনো সাধারণ হাদীস নয়, এটা এক বুক জ্বালার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা স্বস্থির আশ্বাস। যে মানুষটা আগুনে পুড়ে তীব্র কষ্টের মধ্যে প্রাণত্যাগ করল—তার মৃত্যুটা আল্লাহর কাছে সাধারণ মৃত্যু নয়, সে "শহীদ"।
আগুনে দগ্ধ হওয়া মানে এক নিঃসীম যন্ত্রণা। সেকেন্ডে সেকেন্ডে ত্বক ফেটে যাচ্ছে, শরীরের প্রতিটি কোষ চিৎকার করে উঠছে। এ যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়।
এমন সময় কেউ যদি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলতে পারে, কিংবা নিজের অন্তরে আল্লাহকে স্মরণ করে বিদায় নিতে পারে—তাহলে তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে রাখা হয়। এটা আল্লাহর ন্যায়বিচার—যিনি কষ্ট দিয়েছেন, তিনিই তার প্রতিদান দিয়েছেন শহীদের সম্মানে।
কুরআনে শহীদদের মর্যাদা নিয়ে আল্লাহ বলেন: “তোমরা কখনোই ভাবো না যে, যারা আল্লাহর রাহে শহীদ হয়েছে, তারা মৃত। বরং তারা জীবিত, তাদের রবের কাছে তারা রিজিকপ্রাপ্ত।”— (সূরা আলে ইমরান: ১৬৯)
যদিও এই আয়াত সরাসরি যুদ্ধে শহীদদের নিয়ে বলা হয়েছে, কিন্তু হাদীস আমাদের জানায়—যারা আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান, তাঁরাও শহীদি মর্যাদার অংশীদার। এমন মৃত্যুকে অপমৃত্যু নয়, বরং সম্মানের চোখে দেখা উচিত। শহীদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো উচিত এবং বেশি বেশি দোয়া করা উচিত।
হে আল্লাহ, যেভাবে আপনি শহীদদের মর্যাদা দেন, আগুন দগ্ধ প্রতিটি মুমিন প্রাণকে তেমনি শহীদের সম্মান দান করুন। তাদের কষ্টগুলো আপনার কাছে কবুল করে নিন। নিষ্পাপ শিশুদের জন্য, বুক খালি হওয়া মায়েদের জন্য আপনি যথেষ্ট হয়ে যান।