27/09/2024
কী হচ্ছে এদেশে!!!
আমার ভীষণ মন খারাপ ও লোকজনের চাপের মুখে আছি, তাই লেখালেখি ছেড়েই দিয়েছি। কিন্তু আবার একটু না লিখলেও পারছি না।
বিগত সরকারের আমলে ২০১৪ সালের পর থেকে আমি কোনো টিভি দেখিনি এবং সংবাদপত্র পড়িনি। এদেশের কোনো খোঁজখবর জানতাম না। কোথায় কী হচ্ছে, কে কোন মন্ত্রী কিছুই বলতে পারতাম না। এখন আবার ছেড়ে দিয়েছি।
ছাত্র আন্দোলনের প্রথম দিকে বুঝতে না পেরে আমি তাদের সাথে ছিলাম না। পরে এদেশের জনগণের দ্বিতীয়বার স্বাধীনতার সুফল ভোগের জন্য সাপোর্ট করি এবং অবশেষে জুলুমবাজির সমাপ্তি ঘটে। ৫ই আগস্ট অনেক স্থান ঘুরে দেখি এবং সেদিন জনগণের আনন্দে রাস্তায় নামা দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ি। এরকম আনন্দ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর আর ঘটেনি। অনেক শহীদের ও গাজীদের বিনিময়ে ২য় স্বাধীনতার প্রায় ২ মাস হতে চলেছে।
আমরা কী এই স্বাধীনতা চেয়েছিলাম? এখনো শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আসেনি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমেনি, সিন্ডিকেট ভাঙেনি, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব বন্ধ হয়নি অর্থাৎ গত সরকারের আমলের শুধু ব্যক্তি পরিবর্তন হয়ে হাতবদল হয়েছে। আবার প্রশাসনিক ব্যর্থতায় গত সরকারের রাষ্ট্রপতি, সচিবসহ প্রায় সবাই ফ্যাসিবাদী দোসরদের দ্বারা এদেশ পরিচালনা হচ্ছে। এ সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টাই ইসলাম বিদ্বেষী। সব উপদেষ্টাকে ২/৩টি করে মন্ত্রণালয় দেওয়া হলেও ধর্ম উপদেষ্টাকে শুধু একটাই দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আলেমদের দেওয়ার দরকার ছিলো, তা হয়নি। এদিকে শিক্ষা সংস্কারের কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যে ব্যক্তি তথাকথিত আহলে কুরআন, যারা হাদীসের অস্বীকারকারী। তাই মূলতঃ সে কাফির। সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বীকার করে না এবং হাদীসও মানে না। সে পাঠ্যপুস্তক থেকে হাদীস ও রাসূল সা-এর নাম বাদ দিতে সোচ্চার।
এখন প্রকাশ পাচ্ছে, সমন্বয়কদের ৯ দফা নাকি ছাত্রশিবিরের তৈরি এবং তাদের নেতৃত্বদানকারী কয়েকজন ছাত্রশিবিরের। আর তাদের সমর্থনেই এই উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাহলে যারা ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন না বরং নিষ্ক্রিয় ছিলেন ও যারা ইসলাম বিদ্বেষী এবং তারা এনজিওতে থেকে গত সরকারের প্রতিনিধিত্বকারীর কয়েকজন এই নতুন স্বাধীন মুসলিম দেশের উপদেষ্টা হওয়ার কীভাবে যোগ্যতা রাখে? উপদেষ্টাদের মধ্যে কোনো প্রতিবাদী লোকই নেই। এদেশে কী ভালো মানুষের অভাব পড়েছে? যারা বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের জুলুমের শিকার হয়েছে এবং লেখালেখি করে আন্দোলনকে বেগবান করেছেন এবং স্পৃহা দিয়েছেন তাদের কাউকেই উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আবার এই উপদেষ্টাদের মধ্যে যাদের আওয়ামী প্রীতি রয়েছে তারা এখনো শেখ মুজিবুরের ছবি তাদের অফিসে টাঙিয়ে রেখেছে এবং তারা ১৫০০ শহীদ ও অগণিত আহতদের বিনিময়ে উপদেষ্টা হয়ে বেঈমানি করতে চাচ্ছে। তারা আবার ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন করতে চাচ্ছে এবং তাদেরকে নিষিদ্ধ না করে বরং তাদের পক্ষেই সাফাই গেয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে চাচ্ছে। আমার কথা তারা আর আওয়ামীলীগ নামে নির্বাচনে যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা সংশোধন হয়ে অন্য নামে অংশগ্রহণ করুক।
আবার প্রথমে বলা হলো, ভারতে ইলিশ দেওয়া হবে না। কিন্তু পরে ঠিকই দেওয়া হলো কার চাপে? এদেশের জনগণ ইলিশের স্বাদ না পেলেও ভারতের জনগণ ঠিকই পায়। আবার ইলিশের দাম বিগত বছরগুলোতে যা ছিলো এখনও তাই কেনো? দাম তো কমছেও না এবং সিন্ডিকেট চোরাচালানও বন্ধ হচ্ছে না।
বহু বহু সমস্যা এই এনজিও সরকারের যা সবারই জানার কথা। এগুলো সব লেখার সময় নেই এবং জনগণের পড়ারও সময় হবে না।
ড. ইউনুস জাতিসংঘ বা বিদেশ থেকে টাকা নিয়ে এসে কী জনগণের মাঝে বন্টন করে দিবে! দরকার নেই সেটার। জনগণের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভর্তুকি দিক, বেকারদের সমস্যা সমাধানসহ অন্যান্য জাতীয় ইস্যুগুলো তড়িৎ গতিতে সমাধান ও সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক এটাই আমি চাই এবং এ সরকারের এতো কিছুর পরেও তাদের ভালো কাজগুলোকে সমর্থন করি। আমি চাই এদেশে ইসলামী খেলাফত তথা ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হোক এবং এদেশ সৎ পুরুষ শাসক দ্বারা পরিচালিত হোক।
আমীন।
আল্লাহু আ'লাম।