10/08/2025
রংপুরে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন
---------------------------------
“রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা এবং সম্পদের উপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করবো” — এই স্লোগানকে ধারণ করে রংপুরে পালন করা হয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। শনিবার (৯ আগস্ট ২০২৫) বিকাল ৪টায় নগরীর সুমি কমিউনিটি সেন্টারে রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন রংপুর জেলা শাখার সমন্বয়ক চিনু কবির এবং সঞ্চালনা করেন জেলা শাখার সংগঠক কনক রহমান।
শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা অ্যাডভোকেট রায়হান কবীর।
আলোচনা সভায় বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলন রংপুর জেলার সমন্বয়কারি তৌহিদুর রহমান, নাগরিক ঐক্য রংপুর জেলার আহ্বায়ক মাহি আজাদ, জেএসডি রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এবিএম মশিউর রহমান, গণ অধিকার পরিষদের রংপুর জেলা সংগঠক আশিকুর রহমান, কবি ও সংগঠক আশেকুল ইসলাম সবুজ, এনডিএফ নেতা মো: কামরুজ্জামান, ভূমিহীন আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক আব্দুল হামিদ, রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক মো: আরিফুল ইসলাম জুয়েল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন রংপুর জেলা সংগঠক জহুরুল ইসলাম ও সুমন ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা সভাপতি শাকিল খান এবং নারী নেত্রী ও সংগঠক লিপি দেবগুপ্ত, নাফিদা নওরীন, ওয়াসিফা জামান অদ্রি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো জনগণের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া এবং দেশের সম্পদের উপর জনগণের পূর্ণ মালিকানা নিশ্চিত করা। তারা মনে করেন, বর্তমান শাসন কাঠামোতে সাধারণ মানুষের ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে, যা পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা আরও বলেন, রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক ও জনগণকেন্দ্রিক করতে হলে জনগণের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি একটি ন্যায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। তারা মনে করেন, জনগণকে মালিকানা থেকে বঞ্চিত রেখে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে সেটি টেকসই হয় না।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতারা এ সময় আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। তারা জানান, আগামী দিনে মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানো, তৃণমূল পর্যায়ে জনসংযোগ বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের দাবিতে জনমত গঠনের জন্য ধারাবাহিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।
নারী নেত্রী লিপি দেবগুপ্ত, নাফিদা নওরীন ও ওয়াসিফা জামান অদ্রি তাঁদের বক্তব্যে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তারা বলেন, রাষ্ট্রের কাঠামো পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় নারীর সমান ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় বক্তারা রাজনৈতিক মতাদর্শে পার্থক্য থাকলেও দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তারা বিশ্বাস করেন, জনগণ যদি রাষ্ট্রের মালিকানা ও ক্ষমতা পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে একটি সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন সম্ভব।
অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কেক কেটে সকল অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।