28/03/2023
কানে কম শোনা কিংবা না শোনার পরীক্ষা এবং চিকিৎসা সম্মন্ধে প্রাথমিক ধারণা ও করনীয়ঃ
আগের দিনের আলোচনায় আমরা কারণ সম্মন্ধে কিছু ধারণা পেয়েছি। আজকে রোগ নির্ণয়, প্রতিকার ও চিকিৎসা সম্মন্ধে অলোচনা করব।
১. রোগ ও রুগীর ইতিহাস জানা।
ক। গর্ভধারণের পর থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত মায়ের অবস্থা সঠিকভাবে জানতে হবে যেমন বহুমূত্র, ভাইরাসের সংক্রমণ, জন্ডিস, মেনিনজাইটিস ইত্যাদি।
খ। শিশুর জন্মের পর বিভিন্ন সময় তার আচরণ ও বিকাশের দিক পর্যায়ক্রমে খেয়াল রাখতে হবে যেমন ওজন, বিকলংগতা ইত্যাদি ১। শব্দ দূষণের প্রভাব যেমন শিল্পকারখানায় কাজ, সব সময় চিৎকার, চেচামেচি ও হাটবাজারে থাকা, রাস্তা ঘাটের গাড়ি কিংবা এ ধরনের যান্ত্রিক আওয়াজ, গুলির কিংবা বোমার শব্দ ইত্যাদি।
২। কানের, ব্রেইনের ঝিল্লির (মেনিনজাইটিস ) কিংবা ব্রেইনের (এনসেফালাইটিস) প্রদাহজনিত রোগ।
৩। ভাইরাসের সংক্রমণ।
৪। ঔষধের পার্শ প্রতিক্রিয়া।
৫। মেটাবলিক বা বিপাকীয় রোগ।
৬। মিনিইয়ারস রোগ।
৭। আঘাত জনিত।
৮। কান, নাক, গলা, ঘাড়, মাথা বা ব্রেইনের টিউমার বা টিউমার জনিত রোগ।
৯। হঠাৎ কানে কম বা না শোনা কোনো কারণ ছাড়াই।
১০। এখনো অনেক কারণ উদঘাটন করা যায় নাই (ইডিওপ্যাথিক)
সুতরাং এধরনের রোগ নির্ণয়ে ইতিহাস জেনে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে।
পরীক্ষাঃ প্রয়োজন অনুযায়ী যেটি বিশেষজ্ঞ মনে করবেন সেই পরীক্ষা করা দরকার। রুগী কিংবা রুগীর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এটি নির্ধারণ করা যায়। আবার অনেক পরীক্ষা বিশেষজ্ঞের চেম্বারেই করা হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু পরীক্ষা বিশেষজ্ঞের পরামর্শমত হিয়ারিং সেন্টার এবং হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো করে থাকে।
প্রতিকার ও চিকিৎসাঃ ১। গর্ভকালীন সময়ে মায়ের সঠিক ইতিহাস জানা, রোগ নির্ণয় করা, চিকিৎসা ও পরিচর্যা।
২। যে সমস্ত কারণগুলো বলা হয়েছে সেগুলোর প্রতি নজর রাখা এবং যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা।
৩। দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। অনেক রোগ সার্জারীর মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।
৪। বর্তমানে হঠাৎ কানে কম শোনা কিংবা না শোনার ক্ষেত্রে পি আর পি (Platelet Rich Plasma) থেরাপি কানে দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত গবেষণায় অনেক রুগী ভালো হওয়ার রেকর্ড আছে। কানে কম শোনা কিংবা না শোনার চিকিৎসা বাংলাদেশেই সম্ভব।
আমি সব সময় একটা পরামর্শ দিতে চাই, আপনারা দয়া করে এ রোগকে আমলে নিয়ে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং আপনি/আপনার পরিজন কানে শুনুন ও শিশু কিশোরদের বধিরতা থেকে মুক্ত করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হন।