01/05/2025
📅 ১ মে - আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস
🔧🧤
আজ সেই দিন, যেদিন আমরা স্মরণ করি তাদের, যাদের ঘামে গড়ে উঠেছে আমাদের শহর, রাস্তা, কারখানা আর ভবিষ্যৎ।
শ্রমিক মানেই কেবল পরিশ্রম নয়—শ্রমিক মানে সম্মান, অধিকার, আর আত্মমর্যাদা।
"শ্রমিক মুন্নার দিন"
ঢাকার এক অচেনা গলির ভিতরে, ছোট্ট একটা টিনের চালের নিচে থাকে মুন্না। বয়স হবে বারো-তেরো।
স্কুলে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি, কারণ ছোটবেলায় বাবাকে হারানোর পরই তার কাঁধে চাপ পড়ে পরিবারের রোজগারের ভার। সে কাজ করে একটা গাড়ি মেরামতের গ্যারেজে। দিনভর কালো তেল, ধোঁয়া আর মাটির গন্ধে ভিজে থাকে তার শরীর, কিন্তু চোখে তার আলো—ভবিষ্যতের স্বপ্ন।
১ মে সকালে মুন্না হঠাৎ দেখে, গ্যারেজে আজ কেউ নেই। মালিক বলল, "আজ তো মে দিবস—তুমি ছুটি নাও।" ছুটি? মুন্না কখনো 'ছুটি' শব্দটার মানে বোঝে না, তার জন্য প্রতিদিনই কাজের দিন।
বসে থাকতে থাকতে পাশের মাঠে একটা মিছিল দেখতে পেল সে। হাতে ব্যানার: "শ্রমিকের অধিকার চাই, ন্যায্য মজুরি চাই!" কৌতূহলী হয়ে সে একটু এগিয়ে গেল। একটা বৃদ্ধ শ্রমিক তাকে জিজ্ঞেস করলেন, "তুই কি জানিস আজকের দিনটা কিসের?"
মুন্না মাথা নাড়ল।
বৃদ্ধ বললেন, "আজ ১ মে, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। আমরা যারা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, কঠিন পরিশ্রম করে জীবন চালাই—এই দিনটা আমাদের জন্য। একসময় শ্রমিকদের কাজ করতে হতো দিনে ১২-১৬ ঘণ্টা, বিনা ছুটি, বিনা নিরাপত্তায়। অনেক লড়াই করে আমরা ছুটি আর অধিকার ছিনিয়ে এনেছি।"
মুন্না কিছুটা অবাক হলো। "তাহলে... আমারও কি কোনো অধিকার আছে?"
বৃদ্ধ হেসে বললেন, "অবশ্যই আছে। তুই তো একজন প্রকৃত শ্রমিক—তোর শ্রমেই শহরটা চলে।"
মুন্না ওই দিন প্রথমবার বুঝেছিল, তার কাজটা শুধু পেটের দায় মেটানো নয়—তার সম্মান, অধিকার, আর একটা পরিচয়ও আছে। ১ মে তার জীবনে শুধু একটা ছুটির দিন নয়, নিজের অস্তিত্ব বুঝে ওঠার দিন হয়ে গেল।
ছোট্ট মুন্নার মতো হাজারো মানুষ আজও বাঁচে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে।
এই দিনে আসুন, আমরা কণ্ঠ মিলিয়ে বলি—
সব শ্রমিকের জন্য হোক নিরাপদ কর্মস্থল, ন্যায্য বেতন ও মানবিক মর্যাদা।
❤️ শ্রমিক আছে বলেই সমাজ চলে। সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি।
ে #শ্রমিক_দিবস #শ্রমিকের_অধিকার