
21/09/2025
#সহেনা_যাতনা_তোমার
#লেখনীতে_সানজিদা_ইসলাম_সূচনা
#পর্ব : ৩১ (ক)
আজ শুক্রবার, বাংলা বর্ষপঞ্জিকায় পৌষ মাসের পঁচিশ তারিখ। সময়টা এখন সন্ধ্যা। শীতের প্রকোপ খুব বেশি। কনকনে ঠান্ডা বাতাসের দাপাদাপি চারদিকে। কুয়াশায় অন্ধকারে আচ্ছন্ন বাইরের পরিবেশ। তবুও এই শীতে গায়ে চাদর জড়িয়ে বাইরে ও চায়ের স্টলে মানুষের আড্ডা, হাসি আর ঠাট্টা বিদ্যমান। রোজকার হয়ে আসছে এমনটা। তিমিরে আচ্ছাদিত এহসান বাড়ির সকল দৃশ্যপট। শুধু মৃদু হলদেটে ড্রিম লাইটের কৃত্রিম আলোয় একটু দৃশ্য স্পষ্ট ইফতি এহসানের বেলকনিতে। সাথে দৃশ্যমান জলন্ত সিগারেট ও তার ধোঁয়ার কুন্ডলী। বিষন্ন মনে পাশের বারান্দায় তাকালো ইফতি। মাওয়াদের বাড়িটা আজ হৈচৈ আর আলোয় ভরপুর। ইফতি সেদিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসে। হাতের সিগারেটটা দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে দিল তৎক্ষনাৎ। লাল অক্ষিপট ঝাপটিয়ে দাঁতে দাঁত পিষে ক্রোধ নিয়ে কিছু একটা বিরবির করে বলে ওঠে সে। তন্মধ্যে দরজায় বিশাল শব্দের করাঘাত। ওপাশ থেকে চিৎকার করে ডাকছে ইরতিজা।
—’ দরজা টা একটু খোল ভাইয়া। বিষয়টা ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখ না। মার কিন্তু শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ’
ইফতি কথাগুলো শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। প্রায় বিকেল থেকে একনাগাড়ে ডেকে যাচ্ছে ইরতিজা। দুপুরের দিকে দরজায় খিলি দিয়ে বসে ছিল সে। সুষমা বেগম আজকে জানিয়েছেন, মাওয়ার সাথে তার বিবাহ ধার্য করা হয়েছে। এবং আজকে রাতের বেলায় তাদের বিয়ে পড়ানোর কথা। বিমূঢ় প্রতিচ্ছবি ধারণ করে আজ প্রথম মায়ের দিকে তাকিয়ে হুংকার মেশানো গলায় কিছু কথা বলে ফেলেছে ইফতি। সে চায়না মাওয়া তার জীবনে আসুক। কিন্তু মায়ের সহমত পোষণ দেখে সে দরজায় খিলি দিয়ে বসে আছে। করবে না সে বিয়ে। কিন্তু ইরতিজার এতো ডাকাডাকি আর মায়ের কথা শুনে অবশেষে দরজা খুলে বেরিয়ে এলো ইফতি এহসান। গোমড়া মুখে ইরতিজার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে যায় মায়ের রুমের দিকে। সেখানে গিয়ে রাগ একটু চড়াও হলেও চুপসে গেল কিছুটা। টয়া সুষমা বেগমের শিয়রে বসে আছে। ইফতি মায়ের পাশে বসে।
—‘ বাংলা সিনেমার দৃশ্য বানিয়ে দিয়েছ রুমটাকে। এখন আবার বলো না, 'তুই বিয়ে করতে রাজি হয়ে যা বাবা। না হলে আমার মরা মুখ দেখবি'। ’
এহেন কথায় অসুস্থ শরীর নিয়েও সুষমা বেগম হেসে উঠলো। সাথে ইরতিজা আর টয়াও। ইফতি বিরক্তিকর মুখের আদল নিয়ে 'চ' উচ্চারণ করে উঠলো। তাকে কেন সবাই সিরিয়াস নেয় না? সুষমা বেগম উঠে বসেন। আদুরে ভঙ্গিতে ছেলের মুখে হাত বুলিয়ে বলে উঠেন,
—‘ মেয়েটা সত্যিই অনুতপ্ত বাবা। ও তোকে খুব ভালো রাখবে। কিছু ভুল শুধরে এগিয়ে গেলেই তো ভালো হয়। আর কিছু ভুলকে মাফ করলেই সব সহজ হয়। ’
—‘ আন্টি ঠিক বলছে ইফতি। আমি ওর চোখে তোর জন্য ঠিক ভালবাসা দেখেছি। সে খুব অনুতপ্ত। যা তোর চোখে পড়ছে না। ’
সুষমা বেগমের কথা শেষ হতেই টয়া কথা গুলো বলে ইফতির উদ্দেশ্যে। ইফতি দুজনের কথার বিপরীতে কাঠকাঠ গলায় বলে ওঠে,
—‘ করতে পারব না আমি এই বিয়ে। মাওয়াকে দেখলেই আমায় সেই দুর্ধর্ষ স্মৃতি গুলো তাড়া করে বেড়ায়। যা আমি একা একা অন্তরে যাতনার পাহাড় বানিয়ে সহ্য করেছি। ’
সুষমা বেগম ছেলের পিঠে হাত বুলালেন। সে বুঝলো ছেলের কষ্ট। কিন্তু এটাও সত্য এখন সে সুখী হবে। মাওয়া বুঝতে পেরেছে নিজের ভুল। তিনি এও জানেন। ইফতির মনের কোথাও না কোথাও মাওয়ার অস্তিত্ব এখনো রয়েছে। সে পারবে অভিমান ভুলে সব মেনে নিতে। সুষমা বেগমের এখনো মনে পড়ে, সদ্য প্রেমে পড়া ইফতির মুখাবয়ব। মাওয়াকে ঘিরে তার সকল অনুভূতি। যে নিজের মনের সকল কথা মা-বাবা কে বলে বেড়াত। প্রেমে পড়া বারণ, এই কথাটা ছিল ইফতির অন্তস্থলে লেখা। যা চিড়ে বাধ্য হয়েছিল সে মাওয়া তে মন দিতে। একটা সময় সে মাওয়ার, তার প্রতি করা পাগলামিতে অভস্ত হয়ে পরে। মাওয়ার লাইফে জুড়ে থাকা সকল ছেলেদের তার বিষাক্ত লাগত। ইফতি সবসময় চাইতো। মাওয়ার চোখ দুটি যেন শুধু তাকে দেখেই চলে। অন্যসব কিছু বাদ। মেয়েটার স্বাধীন ভাবে চলাফেরা নিয়েও তার হয় যত অনীহা। এই ভেবে, মাওয়া যেন বদলে না যায়। অতিরিক্ত ওভার পজেসিভ হয়েছিল ইফতি এহসান। সুষমা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। অকপটে জানতে চাইলেন,
—‘ এখনো কি সেই অনুভূতি মন গহীনে লুকায়িত আছে? ’
ইফতি মাথা তুলে সুষমা বেগমের দিকে প্রশ্নবিদ্ধ চেহারা নিয়ে তাকিয়ে আছেন। উত্তর দিতে আগ্রহী নয় সে। যেন গত প্রশ্নের জবাব সুষমা বেগম থেকে শুনে নিতে চাইল। টয়া আর ইরতিজা নিরব দর্শক শুধু। তারা দেখতে থাকলো ইফতির অভিব্যক্তি।
ইফতি করুন হেসে মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,
—‘ কি শুনতে চাও মা? আমি তাকে ভালোবাসি কি না? ’
সুষমা ছেলের কাতর গলা পরোক্ষ করলেন। কন্ঠ যেন ভেঙে আসছে। ইফতি উঠে দাঁড়ায়। সবাইকে পিছু দিয়ে সামনে তাকালো সে। হয়তো তার কাতর দৃষ্টি আর মলিন মুখ তাদের দেখাতে প্রস্তুত নয় সে। সাত বছর আগের ইফতিকে সে নিজের ভেতর ঢুকতে দেবেনা। নিজেকে সে গম্ভীর করে তুলেছে। যার খোলশ সে ভাঙতে দেবে না। নিস্তব্ধতা মুড়িয়ে ইফতি আবার বলে উঠলো,
—‘ হ্যাঁ ভালোবাসি আমি তাকে। খুব ভালোবাসি। যতোটা ভালোবাসলে কারো কাছে নিজের অস্তিত্ব বিলীন করা যায়। ’
ইফতির সহজ স্বীকারোক্তি। যা একটুখানি চমকে দিল তিন জোড়া নয়ন। আদেও সে সত্যিই ইফতি তো? যে বরাবরই নিজের অনুভূতি বোঝাতে ব্যর্থ? ইফতি আবার বলে,
—‘ কিন্তু সেই অস্তিত্ব বিলীন করা ভালোবাসা, আমার প্রখর ঘৃণার নিচে চাপা পড়ে নিজেই অস্তিত্ব হীন হয়ে আছে। ’
শেষে কথাগুলো কঠিন স্বরে হুংকার মেশানো গলায় বলে উঠলো ইফতি। বুক উঠানামা করছে তার দ্রুত গতিতে। নিজেকে ধাতস্থ করে ইফতি বলে,
—‘ আমাকে ভালোবাসার পথ দেখিয়ে সে নিজই পিছিয়ে গেছে। আমাকে সে ভালোবাসতে পারেনি। যেমনটা আমি নিজে তাকে ভালোবেসেছি। আমার অস্তিত্ব শুধু তার কথাই সর্বদা জানান দিত। আমার জীবনে তখন সবাইকে ছাড়িয়ে ভালোবাসার প্রথম মানুষটা হয়ছিল মাওয়া। যাকে একদিন আমি দেখতে না পেলে দমবন্ধর অনুভূতিতে জ্বলতে হতো। আমার প্রায়োরিটি লিস্টে যার নাম ছিল খোদাই করা। সেখানে আমি তার মনের মতোও হতে পারলাম না? তার প্রায়োরিটিতে আমি কেন থাকবো না? বন্ধু মহল, আড্ডাবাজি, সবকিছু ছিল তার আমার থেকেও উর্ধে। যা আমি মানতে পারিনি। তাই মাওয়াকে শুধু আমি আমার প্রতি ফোকাস করাতে চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু সে উল্টো আমাকে ব্লাক লিস্টে রেখে দিল? আমার ফিলিংস তার কাছে অহেতুক ছিল? আদেও কি সে আমার ভালোবাসা বুঝেছিল? আমার চোখের ভাষা বুঝেছিল? সামন্য বিষয়ে সব ক্লোজ করে দিয়েছিল। হাত না লাগিয়েও শ্বাসরুদ্ধকর করে মেরে ফেলেছিল সে আমাকে। ’
ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলে ইফতি মায়ের দিকে ফিরে। সুষমা সহ সবাই এখন একটু দুঃখী দেখালো। তারা উপলব্ধি করতে পারলো কষ্টটা তার কোথায়? ইফতির এই ওভার পজেসিভ কি তাহলে তাদের সম্পর্ক ভাঙনের মূল কেন্দ্র? তাই বলে ব্রেকআপ কেন? ব্রেকআপ বাদে অন্য কোনো ভাবে কি ইফতিকে বোঝাতে পারতো না মাওয়া? সবার ভাবনা থেকে হুঁশ আসে ইফতির শেষ কথায়।
—‘ আমি যাকে আমার জীবনে সবার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি ভেবেছিলাম, তার জীবনে আমি শুধু অহেতুক হয়েছিলাম। যার কাছে ছিল, আমার থেকেও বেশি ইমপোর্টেন্স নিজের ফ্রেন্ড সার্কেল আর স্বাধীনতা নামক উগ্র চলাচল। তারপরও এখন আমায় তাকে মানতে হবে। যার কাছে আমার কোনো রেসপেক্ট ছিলনা। ওয়েল, বিয়ে করবো আমি ওকে। তোমরা যেমনটা চাও তেমনটাই হবে। কিন্তু আমি যে তাকে আগের সম্পর্কের সম্মান করবো। সেই আশা তাকে রাখতে বলো না। আমি সাধারণ ভাবে সবটা ভুলে, সুন্দর মনের মানুষ নিয়ে বাকিটা জীবন সুন্দর সংসার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু? যাইহোক, তাহলে তোমাদের ইচ্ছায় সারাজীবন মাওয়ার সঙ্গে আমার জটিল সংসারই হোক। ’
কথাটা বলে ঝড়ের গতিতে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে গেলো ইফতি। তন্মধ্যে চোখের সামনে ভাসলো কান্নারত মুখশ্রী। ধক করে উঠলো বক্ষপিঞ্জরের হৃদপিণ্ড। কাজল কালো অশ্রুসিক্ত আঁখি জোড়া। ছলছল নয়নে অনুতপ্ত নিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। ইফতি দৃষ্টি নিগুঢ় করে। হালকা বেগুনি রঙের শাড়ি পরেছে মাওয়া। চুল গুলো হাত খোপা করা। মেকআপ বিহীন সামান্য কাজল চোখে। এক অন্য রকম মাওয়া। যাকে দেখতে ইফতির কত আফসোস ছিল। সেই বেশে আচমকা চলে আসাতে ইফতি সামান্য টললেও নিজের গাম্ভীর্যের খোলশ ছাড়ল না। ভ্রু কুঁচকে নিরেট তাকিয়ে আছে। মুখে ফুটতে দিল না মুগ্ধতা। নিজের উপর সম্বিত ফিরিয়ে এনে চলে গেল সামনে থেকে। মাওয়া ভগ্ন হৃদয় নিয়ে তাকিয়ে দেখল ইফতির যাওয়ার পানে। নিজেকে আর কত ভাবে ধিক্কার, তিরস্কার করবে সে জানা নেই। একাকী তার অতীত নিয়ে ভাবলে নিজেকে মেরে ফেলতে মন চায় মাওয়ার। এমন ভাগ্য করে পাওয়া পুরুষকে পায়ে ঠেলে সড়িয়ে দিয়েছিল সে। কি করে পেরেছিল এমনটা? হতভাগি পদবি সে নিজেই লাগিয়ে নিল। যে চোখ দুটি তে সে সবসময় মায়া, ভালবাসা, কোমলতা খুঁজে পেত, সে চোখ দুটিতে আজ তার জন্য অসীম ঘৃণার বসবাস। ভাবতেই কেঁপে উঠলো মাওয়ার। এত কিছু সহ্য করার পরে কেন ইফতি তাকে বিশ্বাস করবে? সে হলে তো কখনো এমন কাউকে সুযোগ দিতো না দ্বিতীয় বার। তাহলে ইফতির দোষ কোথায়? মাওয়ার রিজেকশনের পরে ইফতি গলাকাটা মুরগির মতো ছটফট করে ছিল। কিন্তু কাউকে হয়তো তা বুঝাতে ও দেখাতে পারেনি সে। মাওয়া এই অসীম ঘৃণা ও কষ্ট পাওয়ার যোগ্য জেনেও, তা সহ্য করতে পারছে। তাহলে, ইফতি কোনো দোষ না করে কিভাবে এই যাতনা সহ্য করছে। তার দেওয়া যাতনা ইফতি এহসান কে খুব পুড়িয়েছে। যা ছিল সহ্য করার বাইরে। সুষমা বেগমের ধাক্কায় মাওয়া হুঁশে এলো। টলমল দৃষ্টি আর টলমলে পায়ের নড়বড়। ইরতিজা মাওয়া কে ধরে খাটের সাইডে বসালো। সুষমা মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠলো,
—‘ দেখলে তো ইফতি রাজি হয়েছে। চিন্তা করো না। বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যাবে। ’
মাওয়া কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখলো সুষমা বেগম আর টয়াকে। তাদের অবদান ভুলবার মতো নয়। একটা মেয়ের এমন কৃতকর্মের জন্য কোনো মা'ই তার সন্তানের আশেপাশে এমন মেয়েকে দ্বিতীয় বার ভিড়তে দেবে না। কিন্তু সুষমা বেগম যেন অন্যরকম। যে মেয়ে ছলনা করেছে তাকেই কেন সে তার ছেলের জীবনে সুযোগ দিচ্ছে?
—‘ কেনো এতো ভালোবাসেন আমাকে আন্টি? আমি কি এই ভালোবাসার যোগ্য? অন্য কেউ হলে তো তার ছেলের জীবনে সেকেন্ড চান্স কি, সেকেন্ড সময় আমার মুখও তার ছেলের সামনে আনতো না। আপনি কেন আমাকে সাপোর্ট করছেন। ’
সুষমা বেগম ম্লান হাসলেন। মাওয়ার চোখের পানি মুছে শান্ত গলায় বলে উঠলেন,
—‘ তোমাকে নিয়ে ইফতির মনের সকল অনুভূতি আমি জানতাম। ছেলেটা নিজের মনের সব কথা আমাকে বলতো। আমার ছেলেটা যে তোমাকে কতটা ভালোবাসতো তুমি সেটা নিজেও হয়তো কোনোদিন উপলব্ধি করোনি। ইফতির সাথে টয়ার বিয়েতে আমি খুশিই ছিলাম। তারপরও আমার মন খারাপ হতো ছেলের সদ্য প্রেমের পাগলামি অনুভূতি গুলো মনে করে। আমার সবসময় মনে হতো ইফতি এখনো তোমাকে ভালোবাসে। এবং আমার ধারণাটাও সত্যি হলো। ’
এর মধ্যে টয়াও মাওয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে মিষ্টি হেসে বলে উঠলো,
—‘ সত্যি বলতে তোমাকে আমার কোনো সময় পছন্দ ছিল না মাওয়া। তোমার চলাফেরা ভাবনাচিন্তা সব কিছুতেই। কিন্তু সবটা জানার পর ও তোমাকে দেখার পর এইবার মনে হচ্ছে তুমি সত্য। ইফতির সাথে আমার বিয়ে তার কথা মতো ঠিক হলেও সে উদাসীন হয়ে থাকতো সবসময়। আমি রিয়েলাইজ করলাম। ইফতির আমাদের সম্পর্কের থেকেও বেশি এক্টিভ ছিল, কিভাবে তোমাকে কষ্ট দেওয়া যায় সে ধান্দায়। ও তোমাকে এখনো ভালোবাসে ঠিক। কিন্তু এখনো তোমাকে বিশ্বাস করতে পারছেনা। ’
মাওয়া চুপচাপ কথা গুলো শুনলো। ইফতির আজকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মাওয়া বুঝতে পারছে সবটা। ইফতি তাকে এখনো খুব ভালোবাসে। যা ঘৃণা এবং অভিমানের চাদরে ঢাকা পড়ে আছে। মাওয়া এটাও বুঝতে পারলো। ইফতি তাকে ভালোবাসে বলে যে ক্ষমা করে দেবে তেমনটা নয়। আত্মসম্মানীয় ব্যাক্তি ইফতি এহসান নিজের ভালোবাসাকে আটকে রেখে ঘৃণা, অভিমান, ইগোটাকে আর রাগ টাকে প্রাধান্য দিবে বেশি। সামনে এই বিয়ে সংসার হবে শুধু ঘৃণা, অসম্মানের। মাওয়া তা ভেবেও যেন শান্তি পেলো। সারাজীবন পায়ে পড়ে থাকবে সে ইফতির। এতেই শান্তি প্রবাহিত হয়ে যাবে তার মনে। না পাওয়ার চেয়ে তার অতি আপন ঘৃণার ব্যাক্তি হওয়াটাও সুখের মন হলো মাওয়ার। সে সহ্য করবে ইফতির দেওয়া সকল যাতনা। সহ্য করবে অবহেলা, আর যত অভিনয়ের অভিমান।
,
চলবে................