03/10/2025
✈️ ছদ্ম পরিচয়ের আড়ালে: জাল পাসপোর্টের অন্ধকার বাজার
তারিখ: ৩ অক্টোবর ২০২৫
সংক্ষেপ: আন্তর্জাতিক অপরাধজাল, মানবপাচার ও পরিচয় জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত জাল পাসপোর্টের চক্র বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সতর্কতা — অবৈধ কাগজপত্র ব্যবহারকারীদের কঠোর শাস্তির সতর্কবার্তা।
ঢাকা/বিশ্ব — সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পারাপার, মানবপাচার ও আর্থিক অপরাধে জাল পাসপোর্টের ব্যবহার বাড়তে দেখা যাচ্ছে। জনস্বার্থ ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, কাগজপত্রের আধুনিক নিরাপত্তা ফিচারগুলো কেড়ে নেওয়া বা নকল করা কঠিন হলেও অপরাধী জালিয়াতি চালাতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে — যার ফলে সাধারণ মানুষও ঝুঁকিতে পড়ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ইমিগ্রেশন বিভাগের সূত্রে জানা যায় যে, জাল পাসপোর্ট কেবল কাগজের সমস্যা নয়; এর সঙ্গে জড়িত থাকে ট্রান্সন্যাশনাল অপরাধী নেটওয়ার্ক, নকল পরিচয়বহুল ব্যাঙ্কিং লেনদেন, এবং অবৈধ ভ্রমণ-চ্যানেল। এসব নেটওয়ার্ক কখনো সম্পূর্ণ নকল পাসপোর্ট তৈরি করে, কখনো চুরি বা অননুমোদিতভাবে বৈধ পাসপোর্ট ব্যবহার করে কার্যক্রম চালায়।
অভিবাসন ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন যে, আধুনিক পাসপোর্টে থাকা হোলোগ্রাম, মাইক্রো-টেক্সট, বায়ো-চিপ এবং ইনফ্রারেড ল্যামিনেশন—এই ধরনের সুরক্ষা চিহ্নগুলো অনন্য অথচ জাল করা কঠিন। তবে কাগজপত্র যাচাইয়ে দেরি, দুর্বল অনলাইন রেকর্ডিং ব্যবস্থা বা দুর্নীতির সুযোগ থাকলে জালিয়াতি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
আইনগত বিচারের ফলাফল মারাত্মক। জাল নথি তৈরির ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার, জরিমানা, ও কারাদণ্ডসহ পরবর্তিতে ভিসা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়া পর্যন্ত জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা নাগরিকদের সতর্ক করে বলেন—চলতি সময়ে কোনো অস্বাভাবিক “সহজ উপায়ে পাসপোর্ট” দেওয়ার প্রস্তাব পাওয়া গেলে তা লাল পতাকা হিসেবে দেখুন এবং আনুষ্ঠানিক কর্তৃপক্ষকে জানাতে দ্বিধা করবেন না।
কীভাবে চিনবেন (সতর্কতামূলক নির্দেশনা)
পাসপোর্ট বা পরিচয়পত্রে দেখা অস্বাভাবিক টেক্সচার, অসামঞ্জস্যপূর্ণ টাইপফেস বা অনির্দিষ্ট ল্যামিনেশন হলে সন্দেহ করবেন।
ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্টে যদি আবেদনকারী পূর্বের ভ্রমণ রেকর্ড দেখাতে না পারে বা পরিচয়ের সঙ্গে ছবি-মিল না করলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়।
(মন্তব্য: এখানে কোনও ধরনের নকল কৌশল শেখানো হচ্ছে না—শুধু সতর্কতা ও চিহ্নের বিষয়েই আলোকপাত করা হয়েছে।)
জনসাধারণের জন্য পরামর্শ
কেবল সরকারিভাবে অননুমোদিত উৎস থেকে কোনও পাসপোর্ট বা পরিচয়পত্র গ্রহন করবেন না।
পাসপোর্ট হারালে বা চুরি হলে দ্রুত স্থানীয় ইমিগ্রেশন অফিস ও পুলিশকে জানান।
বিদেশে ভ্রমণের সময় স্থানীয় দূতাবাস/কনসুলেটের নির্দেশনা অনুসরণ করুন।
অভিবাসন বা ভিসা সংক্রান্ত সহায়তার জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত আইনজীবী বা পরিচিত এজেন্টের সঙ্গে কাজ করুন।
বিশ্লেষক মন্তব্য:
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সরকারিভাবে ডেটাবেস সমন্বয়, অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানো অপরিহার্য। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হলে জাল নথির চাহিদা ও ব্যবহার দুটোই কমানো সম্ভব।
সমাপ্তি:
জাল পাসপোর্ট শুধু এক ফাঁকি নয়—এটি মানবপাচার, অর্থপাচার এবং জাতীয় নিরাপত্তার বৃহত্তর হুমকির একটি অংশ। তাই ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সরকার একসঙ্গে সতর্কতা ও প্রতিরোধ নিলে এই চক্র ভাঙা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।