04/17/2023
বাংলাদেশ থেকে একটি খবর সোশ্যাল মিডিয়া মারফত পাচ্ছি তা হল শেরপুর জেলার জজ সাহেব বিচারক ইমান আলী ফেসবুক লাইভে এসে বলেন- "নবী-রসুলগণ আল্লাহর সঙ্গে কথা বলে ওহী নাযিল করেছিলেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি আরও বলেন, আল্লাহ, ঈশ্বর, ভগবান সবই কৃত্তিম। কেউ রিয়েল নয়।" বলাইবাহুল্য এই কথা বলার জন্য এই জেলা জজকে প্রতাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে!
বস্তুত বলতে হয় এই জেলা জজ ইমান আলীকে স্যালুট জানাই যে তিনি সত্য কথাটি সঠিক ভাবে ও নির্ভয়ে বলেছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারকে তীব্র ধিক্কার জানাই! যে এই সত্য কথা বলার জন্য একজন মানুষের উপর কেন শাস্তির বিধান নেমে আসবে? বাংলাদেশ সরকারের এই অবস্থানের কারণে দেশ আজ মূর্খ ও জেহাদিতে পরিপূর্ণ! যে দেশে শিক্ষার প্রসার নেই, যে দেশে জ্ঞানীরা সত্য বলার জন্য নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয় আর মূর্খ, ধর্মান্ধরা প্রকাশ্য জনসভায় হুঙ্কার দেয়, সে দেশের হবে কি? তাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন এই মানুষটিকে তাঁর যোগ্য স্থানে ফিরিয়ে দিতে হবে, আর বাংলাদেশের সমস্ত মানবতাবাদী বন্ধুদের এই বিচারকের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ রইল!
এবার আসি আমার কথায়, উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটা পরিষ্কার যে ইসলাম কতটা ক্ষয়িষ্ণু ধর্ম তা এই একটি ঘটনা থেকেই প্রমাণিত- এক সাধারণ মানুষের এক তুচ্ছ সমালোচনাতে এই ধর্মের ভিত্তি নড়ে যায়! বলাইবাহুল্য বিশ্বজুড়ে ইসলামের এই ভন্ডামি প্রকাশ পাচ্ছে তাই হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই ধর্ম ছেড়ে বেরিয়ে আসছে, তাই ইসলাম খুব দ্রুতই 'তাসের ঘরের' মতো ভেঙে পড়বে!
আসলে বর্তমানে নিতান্ত মূর্খ ও ধর্মান্ধ মানুষ ছাড়া কোন সভ্য, সুশিক্ষিত মানুষ আর বিশ্বাস করে না যে- নারী মাত্রই চাষের জমি, তাঁকে যেমন ইচ্ছা কর্ষণ করা যায়। নারীদের বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ, তাঁদের কর্মের অধিকার নেই, বিধর্মীদের কাফের মনে করতে হবে, তাদের ঘৃণা করতে হবে, তাঁদের হত্যা করতে হবে, নবী বোরাকে করে আল্লার কাছে গিয়েছিল, তিনি দুই আঙ্গুল দিয়ে চাঁদ ভাগ করেছিলেন ইত্যাদি ইত্যাদি! এছাড়া নবীর একাধিক পত্নী ও একাধিক যৌনদাসী রাখা এগুলি ও মানুষ মেনে নিতে পারে না! তাছাড়া নৃসংশভাবে যে একের পর এক কাফেলা লুঠ ও গণহত্যা তা ও সাধারণ মানুষ ভালো চোখে নেয় না। বানুকুরায়জার 700-900 পুরুষের গণহত্যা ও তাঁদের নারীদের গণিমতের মাল বানিয়ে ধর্ষণ এটি আজও আধুনিক যুগের অন্যতম কলঙ্কিত অধ্যায়! তাই বর্তমানে ইসলাম সবচেয়ে দ্রুত শেষ হতে যাওয়া একটি ধর্ম!
তাঁর ফল হিসাবে আমরা দেখতে পাই ইরানে হিজাবের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন, আফগানিস্তানে তালিবানদের বিরুদ্ধে সে দেশের নারীদের প্রতিবাদ, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্বে যেভাবে মুক্তচিন্তার আন্দোলন বেগবান হচ্ছে তা থেকে এটা নিশ্চিত খুব দ্রুতই এই জরা, জীর্ণ ধর্মান্ধ সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন হয়ে আধুনিক সমাজ ব্যবস্থার প্রবর্তন হবে। আর এটা বলায় যায় ইসলাম শেষ হয়ে গেলে পৃথিবী থেকে ধর্মের উগ্রতা ও শেষ হয়ে যাবে!
আসলে ইসলাম টিকে আছে তিনটি বিষয়ের উপর প্রশ্ন করা যাবে না, প্রশ্ন করলেই ঈমান নষ্টের ভয়, এখন প্রশ্ন হল ঈমান কথার অর্থ কি? ঈমান কথার অর্থ হল বিশ্বাস। এখন প্রশ্ন হল যুক্তি দিয়ে যদি বিচার বিশ্লেষণ করে ধর্মকে গ্রহণ করা হয়, তাতে সমস্যা কি? তাতে সমস্যা হল এতে সমস্ত গোপন রহস্য ফাঁস হয়ে যাবে। এরপর যদি কেউ প্রশ্ন করে তখন তাঁকে বলা হবে তুই কাফের হয়ে গেছিস তুই জাহান্নামের আগুনে পুড়ে মরবি এভাবে ভয় দেখানো হয়, যাতে কেউ প্রশ্ন করতে সাহস না পায়। এতে যদি কেউ না দমে ও প্রশ্ন করে তখন তাঁকে বলা হবে এ মুরতাদ (ধর্ম ত্যাগী) হয়ে গেছে আর একে কতল (হত্যা) করা যে কোন মুসলমানের কাছে ওয়াজিব (ঈমানি কর্তব্য)!
এভাবেই এই ঘৃণার ধর্ম এতদিন টিকে রয়েছিল কিন্তু এভাবে আর বেশি দিন নয়! যুগ যুগ ধরে এভাবে অন্ধত্বকে লালন পালন করে বাঁচিয়ে রাখা যায় না! গ্যালিলিওকে চার্চ শাস্তি দিয়েছিল কারণ গ্যালিলিও বলেছিল- 'পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে', চার্চ কি পেরেছিল সূর্যকে পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরাতে? সত্য বলার কারণে ব্রুনোকে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, বেশি প্রশ্ন করত বলে সক্রেটিসকে 'হেমলক বিষ' দিয়ে হত্যা করা হয়!
এভাবে তখন ও কি সত্যকে চেপে রাখা গিয়েছিলে? যা সত্য তা ঠিকই প্রকাশিত হবে এবং জগত একদিন সত্যকে ঠিকই স্বীকার করবে। বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে তাই চাপাতির ভয় দেখিয়ে কল্লা কেটে আর সত্যকে চেপে রাখা যাবে না, যা সত্য তা একদিন ঠিকই প্রকাশিত হবে! মানুষকে হত্যা করা যায় কিন্তু মতাদর্শকে হত্যা করা যায় না, একটা রাজীব হায়দার, ওয়াশিকুর রহমান, নীলয় নীল, অভিজিৎ রায় প্রমুখকে হত্যা করলে হাজার হাজার অভিজিৎ রায়েরা তৈরি হবে, তাই দমন পীড়ন করে মুক্তচিন্তার এই আন্দোলনকে শেষ করা যাবে না, তাই সাধু সাবধান! এসব দেখে তাই মনে হয়।
'রাত্রির আধার যতই কালো হোক না কেন ভোর সন্নিকটে!'
পরিশেষে কবিগুরুর অমোঘ বাণী দিয়ে বলতে চাই - "ধর্ম কারার বজ্র প্রাচীরে আঘাত হানো, এ অভাগা দেশে জ্ঞানের আলো আনো!"