07/10/2024
মিথ্যাদৃষ্টি কি........
মিথ্যা অর্থে যা সত্য নয়; অসত্য, ভ্রান্ত, অযৌক্তিক, অমূলক, ভিত্তি হীন, নিষ্ফল, অনর্থক, বৃথা ইত্যাদি। আর দৃষ্টি অর্থে- জ্ঞান, দর্শন, মতবাদ, সিদ্ধান্ত ইত্যাদি। অর্থাৎ মিথ্যাদৃষ্টি অর্থে- ভ্রান্ত ধারণা, ভ্রান্ত মত, বিভ্রান্তি কর, বিভ্রান্তি আবরণ, বিপরীত দর্শন, অযৌক্তিক মতাদর্শ, নির্বাণ পথভ্রস্ত, সত্যের বিপরীত, সম্যক জ্ঞানের বিপরীত, মুক্তির বিপরীত জ্ঞানই মিথ্যাদৃষ্টি।
মহাচত্ত্বারিংশৎ সূত্রে বুদ্ধ লবছেন- দান নেই, দানের ফল নেই, ইষ্ট নেই, হোত্র নেই, সুকৃ-তদুষকৃত কর্মের ফল ও বিপাক নেই, ইহলোক নেই, পরলোক নেই, মাতা নেই, পিতা নেই, ঔপপাতিক সত্ত্বা নেই, সম্যক গত, সম্যক পন্থী এমন কোন শ্রামণ-ব্রাহ্মণ নেই, যিনি ইহলোক-পরলোক স্বয়ং অভিজ্ঞার দ্বারা সাক্ষাৎ করে উহাদের স্বরূপ প্রকাশ করতে পারেন। হে ভিক্ষুগণ! এরূপেই মিথ্যাদৃষ্টি হয়। ভগবান বুদ্ধ মিথ্যাদৃষ্টিকে বুঝাতে আরো অভিধর্মে এভাবে বর্ণনা করেছেন-
মিথ্যা মতবাদ যাহা দৃষ্টি তাহা হয়
মিথ্যাদৃষ্টি নামে ইহা সদা পরিচয়।
যথার্থ স্বভাবে দৃষ্টি বিরোধীতা করে
অযথা স্বভাবে ইহা বদ্ধ দৃষ্টি ধরে।
প্রাকৃতিক আলম্বনমোহ রাখে ঢাকি
অসত্য স্বভাবে লোভ আকর্ষিতে দেখি।
তথা দৃষ্টি লোভ পক্ষে করে সহায়তা
লোভ মূলে দৃষ্টি জন্মে না হয় অন্যথা।
অর্থাৎ অভিধর্ম মতে- যার মতবাদ মিথ্যা, তাকে বলে মিথ্যাদৃষ্টি। মিথ্যা মতবাদ এক কথায় বলতে গেলে- যা দ্বারা মুক্তি লাভের সমবনা্ভ নেই, যা মুক্তির রাস্তা নয়, তা মুক্তির রাস্তা ও মুক্তির সমাবনা্ভ বলে মনে করাই মিথ্যাদৃষ্টি। যথার্ স্বভাব সম্যক( দৃষ্টি), যা সত্য তা জানার মিথ্যাদৃষ্টি বিরোধীতা করে, বিরূপভাব পোষণ করে। আর যেটা মিথ্যাদৃষ্টি (অযথা স্বভাব), অন্যায় স্বভাব, বিপরীত স্বভাব সে থাকে আঁকড়ে ধরে। যেমনি ভয়ঙ্কর অক্টোপাস তার শিকারকে যেভাবে আঁকড়ে ধরে, ঠিক তদ্রুপই। যেমন, মিথ্যাদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তি নিজের ভ্রান্ত মতকে সার,স্বতঃসিদ্ধ মনে করে, অন্য সমস্ত মতকে হেয় প্রতিপন্ন করে একবাক্যে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয় এবং প্রাকৃতিক আলম্বনকে মোহ ঢেকে রাখে। প্রাকৃতিক আলম্বন বলতে যেমন ধরুন- কোন একজন স্ত্রী বা পুরুষ তার প্রাকৃতিক আলম্বনে (দৈহিক ধর্ম) রূপ রং নিয়ে বেড়ে উঠে এবং তার সেই রূপ-রঙে মানুষ আসক্তিগ্রস্ত হয়, বিশেষ করে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি। সেই রূপ-লাবণ্যের প্রতি যে মানুষের একটা আসক্তি, সেটা হচ্ছে মোহ। কিন্তু আসলে স্ত্রী-পুরুষের দেহ একটা অত্যন্ত ঘৃণ্য অশুচি (৩২ প্রকার অশুচি) অশুভতে পরিপূর্ণ। সে প্রাকতিকৃ আলম্বনে (রূপে) মুগ্ধ হয়ে আসল প্রাকৃতিক সত্যকে (অশুচি) মোহ ঢেকে রাখে। অর্থাৎ মোহ জ্ঞানচক্ষুর ওপর অযথা আবরণ ঢেকে দেয়, বিষয়ের যথার্ স্বভাবকে (অশুচি, অশুভ) বুঝতে দেয় না, মিথ্যাকে প্রদর্শন করায়। ফলে যতই ভোগে (আসক্তি) তৃপ্তি খুঁজে, তার ততই আসক্তি ঘনীভূত হয়। বিষয় বস্তুর প্রতি(অসত্য) লোভ প্রবল হয়; লোভ তার মনকে আকর্ষিত করে। তখন মিথ্যাদৃষ্টি বা ভ্রান্তমত মনকে অধিকার করে। তাই, বুঝা যাচ্ছে লোভের কারণে মিথ্যাদৃষ্টির উদ্ভব যখন কোন একটা লোভযুক্ত কাজ করা হয়, সেখানে অবশ্যই মিথ্যাদৃষ্টি থাকে। সে জন্য অভিধর্মে যে আট প্রকার লোভচিত্ত দেখা যায়, তম্মধ্যেও মিথ্যাদৃষ্টি সংযুক্ত। এই জন্য লোভ মোহের সঙ্গে মিথ্যাদৃষ্টির সর্ম্পক অবিচ্ছেদ্য। মিথ্যাদৃষ্টি না থাকলে লোভ সেখানে কাজ করতে পারে না। লোভের সঙ্গেই তার সম্বন্ধ মূখ্য। তাই বলা হয়েছে-
“মিচ্ছাদিট্ঠি লোভ মূলেনা জায়তি,” অর্থাৎ মিথ্যাদৃষ্টির উৎপত্তির মূলে লোভ। মিথ্যাদৃষ্টির সঙ্গে লোভ-মোহের সম্বন্ধ যেমনি অবিচ্ছেদ্য, তেমনি মান বা অহংকারের সঙ্গে মিথ্যাদৃষ্টির সম্পর্কও অতি নিবিড়।তাই, এটাও বলা যায় অহংবোধের মূলেও মিথ্যাদৃষ্টি জন্মে। মিথ্যাদৃষ্টি বান্তভ্রা-ধারণার আচ্ছন্ন মন নাম-রূপ বা পঞ্চস্কন্ধ, আমি বা আমার আত্মা বলে মনে করে। অযৌক্তিক বিষয়ে আগ্রহ যুক্ত মনঃসংযোগই মিথ্যাদৃষ্টির লক্ষণ। তাই এই মনোবৃত্তি (মিথ্যাদৃষ্টি) সংসারের সত্ত্বগণকে ভবচক্রে ধরে রাখতে সমর্থ। যেমন, ভ্রান্ত ধারণায় অভিভূত মন অনিত্য সংসারকে নিত্য, ধ্রুব বলে প্রতিভাত হয়, দুঃখময় জগতকে সুখের লীলাভূমি বলে মনে করে এবং দেহ মন ও বিষয় বস্তুকে আমি, আমার, আত্মা বলে দৃঢ় প্রত্যয় জন্মে। এক কথায়, ভ্রান্ত মতের বেড়াজালে মিথ্যা দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি অক্টোপাসের শিকারের মতো সংসারচক্রে জড়িয়ে পড়ে, ফলে আসল সত্যের পথ খুঁজে পায় না। সংসারচক্রে পরিভ্রমণ করতে করতে দুঃখভোগ করে থাকে। তাই এখানে পালি অট্ঠকথার আচার্য্যে এক সুন্দর কাহিনী এখানে প্রণিধান যোগ্য বলে মনে করছি। কোন এক দেশে জনৈক ধনাঢ্যের গৃহে অন্ধ, খঞ্জ ও দীন দুঃখীদেরকে মাঝে মাঝে ভিক্ষা দেওয়া হত। ভিক্ষায় ভাল ভাল দ্রব্য ও সুস্বাদু খাদ্য বিতরণ করা হত। এই সংবাদে এক ছল চাতুর লোকের মনে বড় লোভ জন্মিল। একদিন ঐ ধনাঢ্যের গৃহে ভিক্ষা গ্রহণের পর সমস্ত অন্ধকে একস্থানে সমবেত করে চতুর লোকটি বললঃ “হে আমার অন্ধ ভাইগণ! শুনেছ, অমুক গ্রামে অমুক ধনীর গৃহে অদ্য বিকেলে বিরাট নিমন্ত্রণ। গৃহস্বামী তোমাদের সবাইকে নিয়ে যাবার জন্যে আমাকে পাঠিয়েছে। তোমরা যাবে তো?” অন্ধগণ নিমন্ত্রণের কথা শুনে বড় হর্ষোৎফুল্ল হল এবং বললঃ “না যাবার কি আছে ভাই?” তখন চতুর লোকটি বললঃ “তোমরা বহু অন্ধ, আর আমি একমাত্র পথ-দ্রষ্টা। তোমাদের একটু ভাল করে নিয়ে যেতে হবে তো,- যা’তে পথে তোমাদের কোনরূপ কষ্ট না হয়। পথতো অনেক দূর। এখানে বসে সকলে একটু জলযোগ করে নাও।” চতুরের কথায় অন্ধগণ নিজ নিজ পুঁটুলি পাট্লি খুলে জলযোগ করতে গিয়ে বসল, অমনি অন্ধগণের অজ্ঞাতসারে চতুর লোকটি তাদের ভাল সুস্বাদু খাদ্য দ্রব্যগুলো বেছে বেছে সব গলাধঃকরণ করল এবং কতক থলিয়ায় পুরে নিল।অতঃপর বললঃ “দেখ বেশী দেরী করো না যেন। নিমন্ত্রণের বাড়ী গিয়ে পৌঁছতে রাত হয়ে যাবে, তাতে পথে কষ্ট হবে।” তারপর সমস্ত অন্ধগণকে সারিবদ্ধ করে দাঁড় করাল এবং একজনকে অন্যজনের হাত ধরিয়ে দিয়ে নিজে পথ প্রদর্শক হিসেবে সর্ব্বাগ্রে চলল। এতে অন্ধগণের এক দীর্ঘ পংক্তি সূচিত হলো। চলতে চলতে ছল চতুর লোকটি পলায়নের ফন্দী আঁটতে ও উপায় খুঁজতে লাগল। অনেক গ্রাম, নগর, জনপথ অতিক্রম করার পর হঠাৎ সম্মুখে গোলাকার বিশিষ্ট এক বিরাটাকার মাটির উঁচু স্তুপ দৃষ্টি গোচরে আসল। চতুর ভাবল, “এইতো বুঝি আমার পালাবার উপায়।” এই ন্তাচি করে মাটির স্তুপের চতুষ্পার্শ্বে কুণ্ডলাকারে ভ্রমণ করতঃ অতি সংকুচিতভাবে সর্বাগ্রগামী অন্ধের হাত সকলের পশ্চাদগামী অন্ধের হাতে জড়িয়ে দিল এবং এই বলে চলে গেল- “তাড়াতাড়ি হাঁট, এখনো বহুদূর।” অন্ধগণ নিমন্ত্রণোল্লাসে প্রাণপনে হাঁটতে লাগল। হাঁটতে হাঁটতে দিন গেল, রাত্রি আসল, কোথায় গেল পথ দ্রষ্টা, গন্থব্যস্থলই বা কোথায়, কোথায়ই বা নিমন্ত্রণ? শুধু অবিশ্রান্ত ঘূর্ণায়মান। মিথ্যাদৃষ্টি পরায়ণ ব্যক্তিগণ ঠিক তদ্রুপই। কখন যে এই ঘূর্ণায়মান চক্র থেকে বেড়িয়ে মুক্তি পথের খোঁজ পেয়ে দুঃখ হতে মুক্ত হতে পারবে, কেউ বলে দিতে পারেন না এমন কি স্বয়ং সম্যক সম্বুদ্ধও নয়।
বুদ্ধ বলেছেন- এই জগতের মধ্যে মানুষ যে সকল স্বকৃত কর্ম করে তা যদি মিথ্যাদৃষ্টি সম্পন্ন না হত তাহলে প্রত্যেক মানুষ নির্বাণগামী হত, নির্বাণ পথের পথিক হত। এই পৃথিবীতে নানা মত থাকত না। মিথ্যাদৃষ্টির কারণে নানা মুনির (দার্শনিক) নানা মত দেখা যায়। বুদ্ধের মতে- সেই নানা মুনির নানা মতবাদই হচ্ছে “মিথ্যাদৃষ্টি”।
আমাদের তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ লক্ষাধিক চারি অসংখ্যকল্প পারমী পূর্ণ করে যে সর্বজ্ঞতা জ্ঞান (বুদ্ধত্ব) লাভ করেছেন; সেই বুদ্ধত্ব লাভের জন্য যে পারমী পূর্ণ করেছেন, সেটাসম্যকদৃষ্টি হতে উদ্ধৃত। তাই যার মিথ্যাদৃষ্টি থাকে না সে দুঃখমুক্তির সঠিক রাস্তা খুঁজে পান এবং সেই স্তরা অনুসরণ করে সেই (নির্বাণ) পথের পথিক হন। এই সম্যকদৃষ্টিই বোধিসত্ত্ব পারমী পূর্ণ করার ভূমিকা রাখে। অথবা প্রত্যক্ষ জীবনে আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ পথকে সুন্দররূপে আচরণ করে বর্তমান বা প্রত্যক্ষ জীবনেও সে যদি মার্গফল লাভের চেষ্টা করেন এবং সে চেষ্টা অনেকটা সাফল্যমন্ডিত হয়। যার মিথ্যাদৃষ্টি প্রবল বোধিসত্ত্ব পারমী পূর্ণ করার এবং বহুজনের হিতের, বহুজনের সুখের জন্য কাজকরা তাদের মনে চেতনা জাগ্রত হয় না। আর প্রত্যক্ষ জীবনেও সঠিক মুক্তির পথ অন্বেষণ করে সঠিক ঠিকানায় উপনীত হবে, দুঃখ মুক্তির পথ খুঁজে বের করবে, সে ন্তাওচি তার মনে জাগ্রত হয় না। মিথ্যাদৃষ্টিপরায়ণ ব্যক্তি দুর্লভ মানব জীবনটাকে উপলব্ধি করে না, যা জীবনের করণীয়সমূহ মুক্তির জন্য মানবের চেষ্টা করা প্রয়োজন, তাও সে মনে করে না। মানুষ পরপোকারের জন্য অনেককিছু কাজ করে, কিন্তু মিথ্যাদৃষ্টিপরায়ণ ব্যক্তির দৃষ্টি সম্পূর্ণ আলাদা। তাদের লক্ষ্য হল, শুধু জীবিকা নির্বাহের জন্য নিজের স্বচ্ছল অবস্থাকে ঠিকিয়ে রাখা, স্বচ্ছলস্থানে উপনীত করা এটাই শুধু মিথ্যাদৃষ্টিপরায়ণ লোকের লক্ষ্য উদ্দেশ্য দেখা যায়। কিন্তু মানুষের এমন একটা মহৎ লক্ষ্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে যেমন, মানব জীবন কতই দুর্লভ সেটা উপলব্ধি করা। সেই দুর্লভ জীবনটাকে স্বার্থক করার জন্য সদা কুশল কর্মে রত থাকা। যেমন, কর্ম ও কর্ম ফলের প্রতি বিশ্বাস করে ইহ-পারলৌকিক জীবনকে সুন্দর ও সুখময় করার জন্য সদা দান, শীল, ভাবনায় রত থাকা। সংযম আচরণ করা, সৎ কর্ম সম্পাদন করে কুশল-পুণ্যাদি অর্জন করে নির্বাণ লাভের হেতু উৎপন্ন করা এটাই হচ্ছে মিথ্যাদৃষ্টির বিপরীতসম্যকদৃষ্টি। কিন্তু মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তির কাছে এই ধারণা আশা করা বাতুলতা মাত্র। কারণ মিথ্যাদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তির দৃষ্টি সীমাবদ্ধ। যেমন লোকনীতিতে দৃষ্ট হয়-
কূপ মণ্ডুক না দেখিয়া সাগরের নীড়
কূপ জলকে ভাবে সে অতি সুগভীর,
সেই রূপ পন্ডিত মানী লভি অল্প জ্ঞান
নিজে নিজে মনে করে যেন সে প্রধান।
অর্থাৎ গভীর কুয়ার মধ্যে যদি কোন একটা ব্যাঙ থাকে, তার জানা থাকে শুধু সেই কুয়ার পরিমান জলটার কথা। বিশাল সমুদ্রের কথা তার অজানা থাকে। অজানা থাকে আরো নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর, উপসাগর ও মহাসাগরের কথাও, এবং সে কথা তার বুঝারও কোন জ্ঞান (উপায়) নেই। তাই সে মনে করে এই পৃথিবীর মধ্যে কুয়ার জলটাই সর্বশ্রেষ্ঠ গভীর, এর চেয়ে গভীর জল আর কোথাও নেই; এই মনে করে সে আর কিছুই বুঝার চেষ্টাও করে না। ঠিক দ্রুপই,ত অল্পজ্ঞানী (মিথ্যাদৃষ্টি) ব্যক্তিগণই উক্ত কুয়ো ব্যাঙের মতই। নিজে সামান্য জ্ঞানে অহংকারে স্ফীত হয়ে নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী বলে প্রকাশ করে। মিথ্যাদৃষ্টি ব্যক্তিগণের দৃষ্টিও কুয়ো ব্যাঙের মতই এতই অদূরদর্শী যে, শুধু ইহকালের কথা ছাড়া পরকালের কিংবা দুঃখমুক্তির কথা সে ভাবতেই পারে না। আবার কেউ কেউ মুক্তি লাভের আশায় ধ্যান-সাধনা করলেও তাদের মিথ্যাদৃষ্টি প্রবল বিধায় ভূলপথে অগ্রসর হয়ে প্রতীত্য-সমুৎপাদনীতির চক্রকারে বা ঐ অন্ধগণের নিমন্ত্রণোল্লাসে প্রাণপনে হাঁটা অথচ মাটির স্তুপের চতুষ্পার্শ্বে ভ্রমণের ন্যায় বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে ঘুরতে থাকে। তাদের মুক্তির পথই বা কোথায়? এই হলো মুক্তির নামে বৃথা পণ্ডশ্রম।