World Barua Organization-বিশ্ব বড়ুয়া সংস্থা

World Barua Organization-বিশ্ব বড়ুয়া সংস্থা সকল বড়ুয়াদের একতাবদ্ধ হওয়া।

04/09/2025
সবার সর্বপ্রকার জয়মঙ্গল হউক
03/22/2025

সবার সর্বপ্রকার জয়মঙ্গল হউক

জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক
03/22/2025

জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক

"অনিচ্চা বত্ সাংখারা"দীগন্ত তোমার এই মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না😭। এটা কি হয়ে গেলো ভাই? একের পর এক প্রিয় জনের ম...
07/14/2024

"অনিচ্চা বত্ সাংখারা"

দীগন্ত তোমার এই মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না😭। এটা কি হয়ে গেলো ভাই? একের পর এক প্রিয় জনের মৃত্যু। তোমার শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা আমাকে বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছে। এতো কিসের তাড়া ছিলো ভাই😭?

আমার অত্যন্ত প্রিয়জন যিনি আমাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও সম্মান করতেন। যাকে আমি খুবই স্নেহ করতাম, আমার প্রিয় সহযোদ্ধা, যিনি প্রতিনিয়ত মানবিক কাজে সম্পৃক্ত থেকে মানবতার কাজ করে যেতেন। ২০২০ সালে করোনা কালীন সময়ে যিনি নিজের জীবনের মায়া মমতা ত্যাগ করে, আমাদের চট্টগ্রাম বৌদ্ধ দাহক্রিয়া সৎকার কমিটির সদস্য হয়ে, করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিদের সৎকার করেছিলেন। যার ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস স্থাপন করে প্রতিনিয়ত ধর্মীয় কাজ করতেন। যেকোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করতেন। অত্যন্ত অমায়িক ও সুন্দর মনের অধিকারী, রাউজানস্থ বৃহত্তর হোয়ারাপাড়া গ্রামের জন্মজাত কৃতি সন্তান, এক মায়ের এক সন্তান প্রিয়ভাজন দীগন্ত বড়ুয়া আজ আনুমানিক ৫:৩০ এর সময় শাকপুরা মোটরসাইকেল ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু বরণ করেছেন😭 আমি বিশ্বাস করতে পারছি না দীগন্ত আর আমাদের মাঝে নাই। এইতো কিছুদিন আগেও চান্দগাঁওতে যখন মোবাইলের রিচার্জ করতেছিলাম সে হুট করে পেছন থেকে এসে শ্রদ্ধান্বিত হয়ে বন্দনা করে কুশল বিনিময় করলো। দীগন্তের সাথে বহু স্মৃতি জড়িত আছে আমার সাথে😭 ভাই কেন আমাদের ফেলে এতো তাড়াতাড়ি চলে গেলে😭 তোমার পরিবারকে শান্তনা দেওয়ার মতো ভাষা আমাদের নাই। তোমার হাসিমাখা মুখখানি আর দেখব না ভাই😭। প্রিয় বিয়োগের যন্ত্রণা আর কত সহ্য করব?😭😭😭

পরপারে ভালো থেকো ভাই। তোমার এই অকাল প্রয়াণ আমাকে ভিশন কষ্ট দিচ্ছে😭। তোমাকে দেওয়ার মতো কিছুই নাই। তোমার শেষ যাত্রাপথে, তোমার পারলৌকিক সদগতি কামনায় পূণ্যরাশি দান করছি। ভালো থেকো পরপারে ভাই😭। তোমাকে ভিশন মিস করব ভাই😭😭

ডক্টর দীপঙ্কর ভান্তের প্রয়াণ আত্মহত্যা নাকি হত্যা? প্রয়াণের পর দেহ প্রত্যক্ষ্যদর্শীর অভিমত।-Bhante Dharmalankar.ডক্টর দী...
07/14/2024

ডক্টর দীপঙ্কর ভান্তের প্রয়াণ আত্মহত্যা নাকি হত্যা? প্রয়াণের পর দেহ প্রত্যক্ষ্যদর্শীর অভিমত।
-Bhante Dharmalankar.
ডক্টর দীপঙ্কর ভান্তের সাথে ঘনিষ্ঠতা কলকাতার পটারি রোডের বিদর্শন শিক্ষা কেন্দ্র থেকে। তখন দীপঙ্কর ভান্তে, অরুণজ্যোতি ভান্তে, সুমনপাল ভান্তে কলকাতা সংস্কৃত কলেজে পালি বিষয়ে অনার্স করছিলেন। পরবর্তীতে ডক্টর ডিগ্রি অর্জন পূর্বক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনজনেই প্রভাষক পদের জন্য পরীক্ষা দিয়ে কুট বুদ্ধি সম্পন্ন কিছু শিক্ষকের কারণে স্বর্ণ পদকে ভুষিত যোগ্যতম ডক্টর ডিগ্রি সম্পন্ন হয়েও ওনারা ঐ পদ লাভ করতে না পেরে মনোক্ষুন্ন হয়ে অরুণজ্যোতি ভান্তে, সুমনাপল ভান্তে ভারতে ফিরে গেলেও দীপঙ্কর ভান্তে দেশেই থেকে গেলেন। বরাবরেই উনি প্রতিবাদী ছিলেন সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে। তাই পালি বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে চেয়েছিলেন। বিষয়টা নিয়ে আমার সাথেও আলাপ হয়েছিল। শেষে আমার মতের সাথে একমত হয়ে ঐ ঝামেলায় আর না জড়িয়ে সাধনায় মনোনিবেশ করার মনস্থির করে অতঃপর গহীন অরণ্যে পাড়ি দিলেন।
যাওয়ার প্রাক্কালে একান্ত আলাপে উনার ব্রজ্র কঠোর সংকল্পের কথাও আমাকে ব্যক্ত করেছিলেন যে, "মৃত্যু হয় হোক তবুও উনি আর লোকালয়ে অবস্থানের জন্য ফিরে আসবেন না "। সত্যিই আজ উনি প্রয়াত হলেন সেই গহীন অরণ্যেই। ফিরলেন না আর আমাদের লোকালয়ে। উনার অধিগত জ্ঞান সাধারণ মানুষকে প্রদান পূর্বক সকল প্রকারের অন্যায়, অকুশল কর্ম থেকে স্থানীয় তথা দেশ বিদেশের মানুষকে মুক্ত করতেগিয়ে বিপতগামী পাহাড়ীদের অত্যাচারের মুখে পড়তে হয়েছে বার বার। উনার কুঠির পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবুও উনি নিজের অধিগত ধর্মরস মানুষকে বিতরণ করা থেকে বিরত হননি। সর্বশেষ আজ উনার প্রাণটাও দিয়ে দিতে হলো।
এখন প্রশ্ন উনি কি আত্মহত্যা করেছেন না কি উনাকে হত্যা করা হয়েছে?
আমাদের সামাজিক মাধ্যমে ছবি দেখেই অনুমান করে নিতে অসুবিধা হয়নি উনি আত্মহত্যা করেননি, উনাকে হত্যা করা হয়েছে। উনার আত্মহত্যার নোট দেখেও উনার সাথে লেখাপড়া করা ভিক্ষুরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। একজন ভদ্র মহিলা কতৃক আত্মহত্যার নোটটা পড়ার সময়ের আচরণও প্রশ্নবিদ্ধ। আত্মহত্যার নোটের নীচে সাদা রিমুভার দিয়ে লেখা মুছে দেওয়াও প্রশ্নবিদ্ধ। এক কথায় আত্মহত্যার প্রতিটা প্রমান প্রশ্নবিদ্ধ।
এখন আসি জুলন্ত অবস্থা থেকে নামানোর পর প্রত্যক্ষ্যদর্শীর দেখা শরীর এবং ওখানকার সকলের আচরণ বিষয়ে।
একটু আগে প্রত্যক্ষ্যদর্শীর সাথে বিস্তারিত আলাপ হলো। প্রথমে আসি ওখানে থাকা সবার আচরণ নিয়ে। ভান্তের শিষ্যরা সকাল থেকে যে ভান্তে পিণ্ডাচরণে যাননি, আহার গ্রহণ করেননি তাঁর কোনো খবরই নেননি। দুপুর দুইটার সময় খবর নিতে যাওয়া প্রশ্নবিদ্ধ। ওখানে থাকা জনেরা ভান্তের শরীর দেখতে দিচ্ছিলো না। অনেক অনুরোধ করার পর ভান্তের শরীর দেখে শুধুমাত্র গলায় রশির কঠিন দাগ ছাড়া বাকি সব স্বাভাবিক ছিল যা সাধারণত আত্মহত্যাকারীর স্বাভাবিক থাকে না। প্রশাসন, ডাক্তার থেকে সবাই সেটাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ প্রচেষ্টা করেছেন এবং করছেন। দেহ প্রত্যক্ষ্যদর্শী আরো আশংকা প্রকাশ করেছেন আজ বাংলাদেশ সময় সকাল নয়টার পর হয়তো প্রকাশ করা হবে উনি আত্মহত্যা করেছেন।
এত প্রশ্নের পরও কি বুঝতে অসুবিধা হওয়ার আছে যে উনি আত্মহত্যা করেননি, উনাকে হত্যা করা হয়েছে?
শুধুমাত্র দীপঙ্কর ভান্তে নয় আরো অনেক বড়ুয়া গোত্রে জন্ম নেওয়া ভিক্ষু পাহাড়ে অবস্থান করতে গিয়ে অকালে প্রাণ দিতে হয়েছে।
সুষ্ট ও ন্যায় বিচার কামনা করছি।

মিথ্যাদৃষ্টি কি........মিথ্যা অর্থে যা সত্য নয়; অসত্য, ভ্রান্ত, অযৌক্তিক, অমূলক, ভিত্তি হীন, নিষ্ফল, অনর্থক, বৃথা ইত্যাদ...
07/10/2024

মিথ্যাদৃষ্টি কি........

মিথ্যা অর্থে যা সত্য নয়; অসত্য, ভ্রান্ত, অযৌক্তিক, অমূলক, ভিত্তি হীন, নিষ্ফল, অনর্থক, বৃথা ইত্যাদি। আর দৃষ্টি অর্থে- জ্ঞান, দর্শন, মতবাদ, সিদ্ধান্ত ইত্যাদি। অর্থাৎ মিথ্যাদৃষ্টি অর্থে- ভ্রান্ত ধারণা, ভ্রান্ত মত, বিভ্রান্তি কর, বিভ্রান্তি আবরণ, বিপরীত দর্শন, অযৌক্তিক মতাদর্শ, নির্বাণ পথভ্রস্ত, সত্যের বিপরীত, সম্যক জ্ঞানের বিপরীত, মুক্তির বিপরীত জ্ঞানই মিথ্যাদৃষ্টি।

মহাচত্ত্বারিংশৎ সূত্রে বুদ্ধ লবছেন- দান নেই, দানের ফল নেই, ইষ্ট নেই, হোত্র নেই, সুকৃ-তদুষকৃত কর্মের ফল ও বিপাক নেই, ইহলোক নেই, পরলোক নেই, মাতা নেই, পিতা নেই, ঔপপাতিক সত্ত্বা নেই, সম্যক গত, সম্যক পন্থী এমন কোন শ্রামণ-ব্রাহ্মণ নেই, যিনি ইহলোক-পরলোক স্বয়ং অভিজ্ঞার দ্বারা সাক্ষাৎ করে উহাদের স্বরূপ প্রকাশ করতে পারেন। হে ভিক্ষুগণ! এরূপেই মিথ্যাদৃষ্টি হয়। ভগবান বুদ্ধ মিথ্যাদৃষ্টিকে বুঝাতে আরো অভিধর্মে এভাবে বর্ণনা করেছেন-

মিথ্যা মতবাদ যাহা দৃষ্টি তাহা হয়

মিথ্যাদৃষ্টি নামে ইহা সদা পরিচয়।

যথার্থ স্বভাবে দৃষ্টি বিরোধীতা করে

অযথা স্বভাবে ইহা বদ্ধ দৃষ্টি ধরে।

প্রাকৃতিক আলম্বনমোহ রাখে ঢাকি

অসত্য স্বভাবে লোভ আকর্ষিতে দেখি।

তথা দৃষ্টি লোভ পক্ষে করে সহায়তা

লোভ মূলে দৃষ্টি জন্মে না হয় অন্যথা।

অর্থাৎ অভিধর্ম মতে- যার মতবাদ মিথ্যা, তাকে বলে মিথ্যাদৃষ্টি। মিথ্যা মতবাদ এক কথায় বলতে গেলে- যা দ্বারা মুক্তি লাভের সমবনা্ভ নেই, যা মুক্তির রাস্তা নয়, তা মুক্তির রাস্তা ও মুক্তির সমাবনা্ভ বলে মনে করাই মিথ্যাদৃষ্টি। যথার্ স্বভাব সম্যক( দৃষ্টি), যা সত্য তা জানার মিথ্যাদৃষ্টি বিরোধীতা করে, বিরূপভাব পোষণ করে। আর যেটা মিথ্যাদৃষ্টি (অযথা স্বভাব), অন্যায় স্বভাব, বিপরীত স্বভাব সে থাকে আঁকড়ে ধরে। যেমনি ভয়ঙ্কর অক্টোপাস তার শিকারকে যেভাবে আঁকড়ে ধরে, ঠিক তদ্রুপই। যেমন, মিথ্যাদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তি নিজের ভ্রান্ত মতকে সার,স্বতঃসিদ্ধ মনে করে, অন্য সমস্ত মতকে হেয় প্রতিপন্ন করে একবাক্যে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয় এবং প্রাকৃতিক আলম্বনকে মোহ ঢেকে রাখে। প্রাকৃতিক আলম্বন বলতে যেমন ধরুন- কোন একজন স্ত্রী বা পুরুষ তার প্রাকৃতিক আলম্বনে (দৈহিক ধর্ম) রূপ রং নিয়ে বেড়ে উঠে এবং তার সেই রূপ-রঙে মানুষ আসক্তিগ্রস্ত হয়, বিশেষ করে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি। সেই রূপ-লাবণ্যের প্রতি যে মানুষের একটা আসক্তি, সেটা হচ্ছে মোহ। কিন্তু আসলে স্ত্রী-পুরুষের দেহ একটা অত্যন্ত ঘৃণ্য অশুচি (৩২ প্রকার অশুচি) অশুভতে পরিপূর্ণ। সে প্রাকতিকৃ আলম্বনে (রূপে) মুগ্ধ হয়ে আসল প্রাকৃতিক সত্যকে (অশুচি) মোহ ঢেকে রাখে। অর্থাৎ মোহ জ্ঞানচক্ষুর ওপর অযথা আবরণ ঢেকে দেয়, বিষয়ের যথার্ স্বভাবকে (অশুচি, অশুভ) বুঝতে দেয় না, মিথ্যাকে প্রদর্শন করায়। ফলে যতই ভোগে (আসক্তি) তৃপ্তি খুঁজে, তার ততই আসক্তি ঘনীভূত হয়। বিষয় বস্তুর প্রতি(অসত্য) লোভ প্রবল হয়; লোভ তার মনকে আকর্ষিত করে। তখন মিথ্যাদৃষ্টি বা ভ্রান্তমত মনকে অধিকার করে। তাই, বুঝা যাচ্ছে লোভের কারণে মিথ্যাদৃষ্টির উদ্ভব যখন কোন একটা লোভযুক্ত কাজ করা হয়, সেখানে অবশ্যই মিথ্যাদৃষ্টি থাকে। সে জন্য অভিধর্মে যে আট প্রকার লোভচিত্ত দেখা যায়, তম্মধ্যেও মিথ্যাদৃষ্টি সংযুক্ত। এই জন্য লোভ মোহের সঙ্গে মিথ্যাদৃষ্টির সর্ম্পক অবিচ্ছেদ্য। মিথ্যাদৃষ্টি না থাকলে লোভ সেখানে কাজ করতে পারে না। লোভের সঙ্গেই তার সম্বন্ধ মূখ্য। তাই বলা হয়েছে-

“মিচ্ছাদিট্‌ঠি লোভ মূলেনা জায়তি,” অর্থাৎ মিথ্যাদৃষ্টির উৎপত্তির মূলে লোভ। মিথ্যাদৃষ্টির সঙ্গে লোভ-মোহের সম্বন্ধ যেমনি অবিচ্ছেদ্য, তেমনি মান বা অহংকারের সঙ্গে মিথ্যাদৃষ্টির সম্পর্কও অতি নিবিড়।তাই, এটাও বলা যায় অহংবোধের মূলেও মিথ্যাদৃষ্টি জন্মে। মিথ্যাদৃষ্টি বান্তভ্রা-ধারণার আচ্ছন্ন মন নাম-রূপ বা পঞ্চস্কন্ধ, আমি বা আমার আত্মা বলে মনে করে। অযৌক্তিক বিষয়ে আগ্রহ যুক্ত মনঃসংযোগই মিথ্যাদৃষ্টির লক্ষণ। তাই এই মনোবৃত্তি (মিথ্যাদৃষ্টি) সংসারের সত্ত্বগণকে ভবচক্রে ধরে রাখতে সমর্থ। যেমন, ভ্রান্ত ধারণায় অভিভূত মন অনিত্য সংসারকে নিত্য, ধ্রুব বলে প্রতিভাত হয়, দুঃখময় জগতকে সুখের লীলাভূমি বলে মনে করে এবং দেহ মন ও বিষয় বস্তুকে আমি, আমার, আত্মা বলে দৃঢ় প্রত্যয় জন্মে। এক কথায়, ভ্রান্ত মতের বেড়াজালে মিথ্যা দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি অক্টোপাসের শিকারের মতো সংসারচক্রে জড়িয়ে পড়ে, ফলে আসল সত্যের পথ খুঁজে পায় না। সংসারচক্রে পরিভ্রমণ করতে করতে দুঃখভোগ করে থাকে। তাই এখানে পালি অট্‌ঠকথার আচার্য্যে এক সুন্দর কাহিনী এখানে প্রণিধান যোগ্য বলে মনে করছি। কোন এক দেশে জনৈক ধনাঢ্যের গৃহে অন্ধ, খঞ্জ ও দীন দুঃখীদেরকে মাঝে মাঝে ভিক্ষা দেওয়া হত। ভিক্ষায় ভাল ভাল দ্রব্য ও সুস্বাদু খাদ্য বিতরণ করা হত। এই সংবাদে এক ছল চাতুর লোকের মনে বড় লোভ জন্মিল। একদিন ঐ ধনাঢ্যের গৃহে ভিক্ষা গ্রহণের পর সমস্ত অন্ধকে একস্থানে সমবেত করে চতুর লোকটি বললঃ “হে আমার অন্ধ ভাইগণ! শুনেছ, অমুক গ্রামে অমুক ধনীর গৃহে অদ্য বিকেলে বিরাট নিমন্ত্রণ। গৃহস্বামী তোমাদের সবাইকে নিয়ে যাবার জন্যে আমাকে পাঠিয়েছে। তোমরা যাবে তো?” অন্ধগণ নিমন্ত্রণের কথা শুনে বড় হর্ষোৎফুল্ল হল এবং বললঃ “না যাবার কি আছে ভাই?” তখন চতুর লোকটি বললঃ “তোমরা বহু অন্ধ, আর আমি একমাত্র পথ-দ্রষ্টা। তোমাদের একটু ভাল করে নিয়ে যেতে হবে তো,- যা’তে পথে তোমাদের কোনরূপ কষ্ট না হয়। পথতো অনেক দূর। এখানে বসে সকলে একটু জলযোগ করে নাও।” চতুরের কথায় অন্ধগণ নিজ নিজ পুঁটুলি পাট্‌লি খুলে জলযোগ করতে গিয়ে বসল, অমনি অন্ধগণের অজ্ঞাতসারে চতুর লোকটি তাদের ভাল সুস্বাদু খাদ্য দ্রব্যগুলো বেছে বেছে সব গলাধঃকরণ করল এবং কতক থলিয়ায় পুরে নিল।অতঃপর বললঃ “দেখ বেশী দেরী করো না যেন। নিমন্ত্রণের বাড়ী গিয়ে পৌঁছতে রাত হয়ে যাবে, তাতে পথে কষ্ট হবে।” তারপর সমস্ত অন্ধগণকে সারিবদ্ধ করে দাঁড় করাল এবং একজনকে অন্যজনের হাত ধরিয়ে দিয়ে নিজে পথ প্রদর্শক হিসেবে সর্ব্বাগ্রে চলল। এতে অন্ধগণের এক দীর্ঘ পংক্তি সূচিত হলো। চলতে চলতে ছল চতুর লোকটি পলায়নের ফন্দী আঁটতে ও উপায় খুঁজতে লাগল। অনেক গ্রাম, নগর, জনপথ অতিক্রম করার পর হঠাৎ সম্মুখে গোলাকার বিশিষ্ট এক বিরাটাকার মাটির উঁচু স্তুপ দৃষ্টি গোচরে আসল। চতুর ভাবল, “এইতো বুঝি আমার পালাবার উপায়।” এই ন্তাচি করে মাটির স্তুপের চতুষ্পার্শ্বে কুণ্ডলাকারে ভ্রমণ করতঃ অতি সংকুচিতভাবে সর্বাগ্রগামী অন্ধের হাত সকলের পশ্চাদগামী অন্ধের হাতে জড়িয়ে দিল এবং এই বলে চলে গেল- “তাড়াতাড়ি হাঁট, এখনো বহুদূর।” অন্ধগণ নিমন্ত্রণোল্লাসে প্রাণপনে হাঁটতে লাগল। হাঁটতে হাঁটতে দিন গেল, রাত্রি আসল, কোথায় গেল পথ দ্রষ্টা, গন্থব্যস্থলই বা কোথায়, কোথায়ই বা নিমন্ত্রণ? শুধু অবিশ্রান্ত ঘূর্ণায়মান। মিথ্যাদৃষ্টি পরায়ণ ব্যক্তিগণ ঠিক তদ্রুপই। কখন যে এই ঘূর্ণায়মান চক্র থেকে বেড়িয়ে মুক্তি পথের খোঁজ পেয়ে দুঃখ হতে মুক্ত হতে পারবে, কেউ বলে দিতে পারেন না এমন কি স্বয়ং সম্যক সম্বুদ্ধও নয়।

বুদ্ধ বলেছেন- এই জগতের মধ্যে মানুষ যে সকল স্বকৃত কর্ম করে তা যদি মিথ্যাদৃষ্টি সম্পন্ন না হত তাহলে প্রত্যেক মানুষ নির্বাণগামী হত, নির্বাণ পথের পথিক হত। এই পৃথিবীতে নানা মত থাকত না। মিথ্যাদৃষ্টির কারণে নানা মুনির (দার্শনিক) নানা মত দেখা যায়। বুদ্ধের মতে- সেই নানা মুনির নানা মতবাদই হচ্ছে “মিথ্যাদৃষ্টি”।

আমাদের তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ লক্ষাধিক চারি অসংখ্যকল্প পারমী পূর্ণ করে যে সর্বজ্ঞতা জ্ঞান (বুদ্ধত্ব) লাভ করেছেন; সেই বুদ্ধত্ব লাভের জন্য যে পারমী পূর্ণ করেছেন, সেটাসম্যকদৃষ্টি হতে উদ্ধৃত। তাই যার মিথ্যাদৃষ্টি থাকে না সে দুঃখমুক্তির সঠিক রাস্তা খুঁজে পান এবং সেই স্তরা অনুসরণ করে সেই (নির্বাণ) পথের পথিক হন। এই সম্যকদৃষ্টিই বোধিসত্ত্ব পারমী পূর্ণ করার ভূমিকা রাখে। অথবা প্রত্যক্ষ জীবনে আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ পথকে সুন্দররূপে আচরণ করে বর্তমান বা প্রত্যক্ষ জীবনেও সে যদি মার্গফল লাভের চেষ্টা করেন এবং সে চেষ্টা অনেকটা সাফল্যমন্ডিত হয়। যার মিথ্যাদৃষ্টি প্রবল বোধিসত্ত্ব পারমী পূর্ণ করার এবং বহুজনের হিতের, বহুজনের সুখের জন্য কাজকরা তাদের মনে চেতনা জাগ্রত হয় না। আর প্রত্যক্ষ জীবনেও সঠিক মুক্তির পথ অন্বেষণ করে সঠিক ঠিকানায় উপনীত হবে, দুঃখ মুক্তির পথ খুঁজে বের করবে, সে ন্তাওচি তার মনে জাগ্রত হয় না। মিথ্যাদৃষ্টিপরায়ণ ব্যক্তি দুর্লভ মানব জীবনটাকে উপলব্ধি করে না, যা জীবনের করণীয়সমূহ মুক্তির জন্য মানবের চেষ্টা করা প্রয়োজন, তাও সে মনে করে না। মানুষ পরপোকারের জন্য অনেককিছু কাজ করে, কিন্তু মিথ্যাদৃষ্টিপরায়ণ ব্যক্তির দৃষ্টি সম্পূর্ণ আলাদা। তাদের লক্ষ্য হল, শুধু জীবিকা নির্বাহের জন্য নিজের স্বচ্ছল অবস্থাকে ঠিকিয়ে রাখা, স্বচ্ছলস্থানে উপনীত করা এটাই শুধু মিথ্যাদৃষ্টিপরায়ণ লোকের লক্ষ্য উদ্দেশ্য দেখা যায়। কিন্তু মানুষের এমন একটা মহৎ লক্ষ্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে যেমন, মানব জীবন কতই দুর্লভ সেটা উপলব্ধি করা। সেই দুর্লভ জীবনটাকে স্বার্থক করার জন্য সদা কুশল কর্মে রত থাকা। যেমন, কর্ম ও কর্ম ফলের প্রতি বিশ্বাস করে ইহ-পারলৌকিক জীবনকে সুন্দর ও সুখময় করার জন্য সদা দান, শীল, ভাবনায় রত থাকা। সংযম আচরণ করা, সৎ কর্ম সম্পাদন করে কুশল-পুণ্যাদি অর্জন করে নির্বাণ লাভের হেতু উৎপন্ন করা এটাই হচ্ছে মিথ্যাদৃষ্টির বিপরীতসম্যকদৃষ্টি। কিন্তু মিথ্যাদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তির কাছে এই ধারণা আশা করা বাতুলতা মাত্র। কারণ মিথ্যাদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তির দৃষ্টি সীমাবদ্ধ। যেমন লোকনীতিতে দৃষ্ট হয়-

কূপ মণ্ডুক না দেখিয়া সাগরের নীড়

কূপ জলকে ভাবে সে অতি সুগভীর,

সেই রূপ পন্ডিত মানী লভি অল্প জ্ঞান

নিজে নিজে মনে করে যেন সে প্রধান।

অর্থাৎ গভীর কুয়ার মধ্যে যদি কোন একটা ব্যাঙ থাকে, তার জানা থাকে শুধু সেই কুয়ার পরিমান জলটার কথা। বিশাল সমুদ্রের কথা তার অজানা থাকে। অজানা থাকে আরো নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর, উপসাগর ও মহাসাগরের কথাও, এবং সে কথা তার বুঝারও কোন জ্ঞান (উপায়) নেই। তাই সে মনে করে এই পৃথিবীর মধ্যে কুয়ার জলটাই সর্বশ্রেষ্ঠ গভীর, এর চেয়ে গভীর জল আর কোথাও নেই; এই মনে করে সে আর কিছুই বুঝার চেষ্টাও করে না। ঠিক দ্রুপই,ত অল্পজ্ঞানী (মিথ্যাদৃষ্টি) ব্যক্তিগণই উক্ত কুয়ো ব্যাঙের মতই। নিজে সামান্য জ্ঞানে অহংকারে স্ফীত হয়ে নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী বলে প্রকাশ করে। মিথ্যাদৃষ্টি ব্যক্তিগণের দৃষ্টিও কুয়ো ব্যাঙের মতই এতই অদূরদর্শী যে, শুধু ইহকালের কথা ছাড়া পরকালের কিংবা দুঃখমুক্তির কথা সে ভাবতেই পারে না। আবার কেউ কেউ মুক্তি লাভের আশায় ধ্যান-সাধনা করলেও তাদের মিথ্যাদৃষ্টি প্রবল বিধায় ভূলপথে অগ্রসর হয়ে প্রতীত্য-সমুৎপাদনীতির চক্রকারে বা ঐ অন্ধগণের নিমন্ত্রণোল্লাসে প্রাণপনে হাঁটা অথচ মাটির স্তুপের চতুষ্পার্শ্বে ভ্রমণের ন্যায় বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে ঘুরতে থাকে। তাদের মুক্তির পথই বা কোথায়? এই হলো মুক্তির নামে বৃথা পণ্ডশ্রম।

(ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত ও আষাঢ়ী পূর্ণিমা অর্থ কথা )__________________________________________(ক)আষাঢ়ী পূূর্ণিমা থেকে আশ্বিন...
07/03/2024

(ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত ও আষাঢ়ী পূর্ণিমা অর্থ কথা )
__________________________________________
(ক)
আষাঢ়ী পূূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূণিমা পর্যন্ত তিন মাসকে বৌদ্ধরা বর্ষাবাস হিসেবে পালন করে থাকেন। বলা যায় বর্ষাঋতু উদ্যাপন করেন। শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা দিনে শুরু হওয়া বর্ষাব্রত শেষ হয় শুভ আশ্বিনী পূর্ণিমা বা প্রবারণা পূর্ণিমার মাধ্যমে। রাজকুমার সিদ্ধার্থ গৌতমের জন্মের এক সপ্তাহ পরে তাঁর মাতৃদেবী অর্থাৎ বুদ্ধমাতা স্বর্গবাসী হয়েছিলেন। তখন সিদ্ধার্থকে পুত্র স্নেহের লালন পালন করেন বিমাতা মহাপ্রজাপতি গৌতমী। কথিত আছে মহাপ্রজাপতি গৌতমী কর্তৃক লালিত পালিত হয়েছিলেন বলে তথাগত বুদ্ধ গৌতম বুদ্ধ নামে সমধিক খ্যাত। পরে তিনি ঘটনা প্রবাহে কালক্রমে পারমী অনুসারে বুদ্ধত্ব লাভ করেন ৩৫ বছর বয়সে।

(খ)
বুদ্ধমাতা মহামায়া মৃত্যুর পরে তাবতিংস স্বর্গে জন্ম নিয়েছিলেন। প্রত্যেক সম্যক সম্বুদ্ধ গণের মাতা সন্তান জন্মের এক সপ্তাহের মধ্যে স্বর্গবাসী হয়ে থাকেন। কারণ বুদ্ধ মাতার গর্ভে দ্বিতীয় কোন সন্তান আসতে পারে না। মূলত বোধিসত্ত্বের মাতৃগর্ভে প্রতিসিদ্ধ গ্রহণ, সিদ্ধাথের গৃহত্যাগ এবং সর্বপ্রথম ধর্মচক্র প্রবর্তনের ঘটনাবলী আষাঢ়ী পূর্ণিমাকে তাৎপর্য মণ্ডিত করে তুলেছে। রাজকুমার সিদ্ধার্থ এই দিনে সংসার ত্যাগ করেন। সাধনালব্দ জ্ঞান প্রথম আষাঢ়ী পূর্ণিমা দিনে প্রচার করেন।

(গ)
গৃহত্যাগঃ কপিলাবস্তুর শাক্যবংশীয় রাজা শুদ্ধোধনের ঔরষে এবং রাজরাণী মহামায়ার গর্ভে জন্ম হয়েছিলেন রাজকুমার সিদ্ধার্থের। তিনি ছিলেন তাদের অনেক সাধন, ভজন, ও আরাধনার সন্তান। রাজপরিবারে ভোগ বিলাসের কোন কমতি না থাকলেও ছিল পিতৃ বুকের হাহাকার এবং মাতৃ হৃদয়ের “মা’ ডাকের শূন্যতা। পরবর্তীতে সেই শূন্যতা পূরণ হল পারমী পূর্ণ সিদ্ধার্থ নামের শিশুটির জন্মের মাধ্যমে। রাজকীয় অতিশয্যে বড় হতে লাগলেন কুমার সিদ্ধার্থ। ভোগ বিলাসের মাঝে বেড়ে উঠলেন, অথচ ভোগ বিলাসের লালসা তাঁকে স্পর্শ করতে পারল না। উনিশ বছর বয়সে মোহের বাঁধনে বাঁধা হলেন, অর্থাৎ সংসারে আবদ্ধ করা হল। কিন্তু সংসারিক বাঁধন তাঁর ত্যাগ শক্তি দিয়ে তিনি বেড়িয়ে এলেন সংসার নামক মোহের খোলস থেকে। ঊনত্রিশ বছর বয়সে তিনি সারথি ছন্দক সহ অশ্ব কন্টকের পিঠে চড়ে সংসার ত্যাগ করলেন। সেদিন ছিল শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমার জ্যোৎস্না স্নাত রাত।

(ঘ)
ধর্মচত্র প্রবর্তননঃ গৃহ ত্যাগের পর রাজ নন্দন সিদ্ধার্থ সাধনায় নিমগ্ন হলেন। শুরু হল দুঃখ মুক্তির অদম্য প্রচেষ্টা। ছয় বছর কঠোর সাধনার বলে অবশেষে তিনি অবর্তীণ হলেন কঠিন যাত্রায়। খুঁজে পেলেন মুক্তির পথের ঠিকানা। মানুষ কেন জন্ম-মৃত্যুর কবলে পড়ে, কে কোথায় যায়, কোথা হতে আসে, ইত্যাদি রহস্যময়তার সমাধান পেলেন। বুদ্ধত্ব লাভের পর প্রথমে তিনি চিন্তা করেছিলেন যে, তিনি ধর্ম প্রচার করবেন না। কারণ সাধারণ তৃষ্ণাতুর মানুষেরা এই তৃষ্ণাক্ষয়ী নৈর্বাণিক ধর্ম বুঝবে না। কিন্তু দেব-ব্রক্ষার অনুরোধে স্বর্গ-মর্ত্য সবার কল্যাণে ধর্ম প্রচার করার চিন্তা মনে স্থান দিলেন। অবশেষে বুদ্ধ সারনাথে সর্বপ্রথম ধর্মচক্র প্রবর্তন করলেন। এটার প্রাচীন নাম ঋষিপতন মৃগদায়। ঋষিগণ গন্ধমাধব পর্বত থেকে আকাশ পথে এসে সেখানে অবতরণ করতেন। ঋষিদের পতন স্থান বলে সারনাথের অপর নাম ছিল ঋষিপতন। হত্যা করার জন্য আনীত মৃগদের সেখানে ছেড়ে দিয়েছিলেন বলে ইহার আরেক নাম মৃগদায় অর্থাৎ মৃগবন। প্রত্নতত্ত্ব সম্পর্কীয় বিষয়ের জন্য সারনাথ সু-প্রসিদ্ধ। অশোক স্তুপের পূর্ব পাশে যে মন্দিরের চিহ্ন বিরাজমান, এটিই ধর্মচক্র প্রবর্তন স্থান। প্রত্যেক সম্যক সম্বুদ্ধগণের এই স্থানই প্রথম ধর্ম প্রচার স্থান। এই স্থান অপরিবর্তনীয়। প্রথম ধর্মদেশনায় আঠার কোটি দেব-ব্রহ্মা জ্ঞান লাভ করেছিলেন। মানুষের মধ্যে একজন মাত্র জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম হয়েছিলেন যার নাম কৌন্ডিন্য। সেদিন ছিল শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা। শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা দিনে বুদ্ধের জীবনে আরেকটি অলোকিক ঘটনা ঘটেছিল। সেই নান্দনিক ঘটনাটি হল বুদ্ধের ঋদ্ধি প্রদর্শন ও স্বর্গারোহন।

(ঙ)
যমক ঋদ্ধি প্রদর্শন ও তাবতিংস স্বর্গে গমনঃ বুদ্ধের সময়ে আরো ছয় জন শাস্তার কথা দেখা যায়। তাঁরা হলেন, পূরণ কশ্যপ, মক্খলি গোশাল, অজিত কেশকম্বল, পকুধ কচ্চায়ন, নির্গ্রন্থনাথ পুত্র, ও সঞ্জয় বেলট্ঠ। তাঁরা নিজ নিজ মতবাদ প্রচার করতেন। তাঁদেরও অনেক অনুসারী ছিলেন। কিন্তু কেউ সত্য জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন না। তারা তৃষ্ণামুক্ত বিমুক্ত পুরুষও ছিলেন না। তাঁদের খানিকটা ঋদ্ধি জ্ঞান ছিল। তাই তাঁরা এবং তাদের শিষ্য-প্রশিষ্যরা বেশি আস্ফালন করতেন। বুদ্ধের অনুসারীদের কটাক্ষ করতেন। বুদ্ধগণ এর ধর্মতা হল বিনাকারণে ঋদ্ধি প্রদর্শন না করা। বুদ্ধ অকারণে ঋদ্ধি প্রদর্শন করে কাউকে প্রলোভিত না করার জন্য শিষ্যদের উপদেশ দিতেন। তাই বুদ্ধের ঋদ্ধিবলের অসাধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে প্রথম প্রথম অনেকের ধারণা ছিল না। কোশলরাজ প্রসেনজিত বুদ্ধ ও তীর্থিকদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান আয়োজন করলেন। আগে থেকে ঘোষনা করা হল যে শ্রাবস্তীতে বুদ্ধ ও তীর্থিকদের মধ্যে ঋদ্ধি প্রদর্শন প্রতিযোগিতা হবে। বিশাল মন্ডপ সু-সজ্জিত করা হল। পূর্ব থেকে ঘোষণা দেওয়ায় অসংখ্য মানুষের সমাগম হল। তীর্থিকরা যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে নিজ নিজ ঋদ্ধি ক্ষমতা প্রদর্শন করলেন। বুদ্ধ একটু বিলম্বে গেলেন। ততক্ষনে তাঁরা অনেকে অনেক ধরণের মন্তব্য করে বসলেন। সবার দৃষ্টি বুদ্ধ আসার পথের দিকে স্থির হয়ে রইলেন। বুদ্ধের জন্য সু-সজ্জিত আসনে বুদ্ধ কিভাবে আরোহন করলেন তা কেউ দেখেন নি। বুদ্ধের প্রথম ঋদ্ধি দেখে সবাই মুগ্ধ হলেন। তার পর শুরু করলেন যমক ঋদ্ধি প্রদর্শন একদিকে আলোর রশ্মি আরেকদিকে অন্ধকার, একদিকে আগুন আরেকদিকে পানি এভাবে জোড়া জোড়া বহুধরনের ঋদ্ধি প্রদর্শন করলেন। উপস্থিত সবাই বুদ্ধের অভাবনীয় ঋদ্ধি প্রতিহার্য্য দেখে মুগ্ধ হলেন। বেশির ভাগ মানুষ বুদ্ধ ভক্ত হয়ে পড়লেন। মূলত বুদ্ধ এসব কারণে বিনা প্রয়োজনে ঋদ্ধি প্রদর্শন করতেন না। সম্যক সম্বুদ্ধের ঋদ্ধি আর পৃথগজনের ঋদ্ধি এর মধ্যে আকাশ-পাতাল প্রভেদ আছে। এদিকে উপস্থিত দর্শকবৃন্দ তীর্থিকদের ধিক্কার দেওয়া শুরু করলেন। নানা ভাবে বঞ্চনা করলেন। তীর্থিক পূরণ কশ্যপ ক্ষোভ আর অপমানে জলে ডুব দিয়ে আত্নহত্যা করলেন এবং অবীচি নরকে গমন করলেন। শ্রাবস্তীর গন্ডাম্র বৃক্ষমূলে যমক ঋদ্ধি প্রতিহার্য প্রদর্শন করে বুদ্ধ আকাশ মার্গে অদৃশ্য হয়ে তাবতিংস স্বর্গে গমন করলেন। সেখানে দেবরাজের পান্ডু-কম্বল সিংহাসনে বর্ষাবাস অধিষ্ঠান করেন। সেটি ছিল বুদ্ধের সপ্তম বর্ষাবাস। স্বর্গে তিনমাস ব্যাপী মাতৃদেবীকে অভিধর্ম দেশনা করে তাঁকে ধর্মজ্ঞানে প্রতিষ্ঠিত করে মাতৃ কর্তব্য প্রতিপালন করেন। কথিত আছে মাতৃদেবীকে কেন্দ্র করে তিন মাস অবধি অভিধর্ম দেশনার মাধ্যমে আশি কোটি দেব-ব্রহ্মার ধর্মচক্ষু উৎপন্ন করেছিলেন। বুদ্ধের দেবলোক গমন মাতা এবং দেবব্রহ্মাদের জন্য মুক্তির ঠিকানা এনে দিয়েছিলেন। এই জন্য তিনমাস পরে বুদ্ধ মর্ত্যলোকে অবতরণের সময় দেবতারা বুদ্ধের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ স্বরূপ এক অদ্ভুদ কান্ড করেছিলেন। বিভিন্ন ধরণের হৃদয়ছোঁয়া ঘটনাবলির কারণে আষাঢ়ী পূর্ণিমা একটি অনন্য পূর্ণিমা তিথির নাম। বৌদ্ধদের জন্য আষাঢ়ী পূর্ণিমা পূণ্যের সুভাসী বারতা নিয়ে হাজির হয়।

(চ)
আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই তিনমাস ভিক্ষুসংঘের পাশাপাশি বৌদ্ধ উপাসক-উপাসিকারাও বর্ষাবাস পালন করে থাকেন। এই সময়ে তারা প্রতি উপোসথ দিবসে অষ্টশীল গ্রহণ, দানকর্ম, ভাবনাকার্য সহ ইত্যাদি পূণ্যকর্মের মাধ্যমে বর্ষাবাস পালন করে থাকেন। এই সময়ে পূজনীয় ভিক্ষুসংঘরা তথ্য বহুল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মদেশনা উপাসক উপাসিকাদের দান করেন। পাপকর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য সাধারণ গৃহীরা সাধ্যমত চেষ্ঠা করেন। প্রাণী হত্যা থেকে বিরত থাকেন। এমনকি এই তিন মাসের মধ্যে সামাজিক অনুষ্ঠান বিয়ের অনুষ্ঠানও হয় না, যার কারণ গৃহীরাও বর্ষাবাস অধিস্থানে থাকায়। এমন কি এই তিনমাসে কাক পঙ্খীরাও বাসা বাঁধে না। ভিক্ষুসংঘরাও বর্ষাবাস চলাকালীন সময়ে কেউ বিহারের বাইরে থাকতে পারেন না। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে থাকার নিয়ম থাকলেও এক সপ্তাহের মধ্যে ফিরে আসতে হয়। এই এক সপ্তাহের জন্য বর্ষাব্রত জায়গা ছেড়ে যেতে হলেও অধিস্থান করে যেতে হয়।

(ছ)
আবার এই এক সপ্তাহের মধ্যে বর্ষাব্রত জায়গাতে ফিরে আসতে না পারলেও ভিক্ষুদের বর্ষাবাস (ওয়া) নষ্ট হয় না। অন্য ভিক্ষুদের মত বর্ষাবাস (ওয়া) পাওয়া যায়। কারণ বর্ষাবাস হচ্ছে ভিক্ষুদের আয়ু। তাই আয়ু নষ্ট হওয়ার কোন কারণ থাকে না। তবে কঠিন চীবর দানের সময় কঠিন চীবরটি গ্রহণ করতে পারবে না। কঠিন চীবর ব্যতীত (আরাইং) চীবরগুলো গ্রহণ করতে পারবে।

জীবন ক্ষণস্থায়ী, বিলয়প্রাপ্ত স্বাভাবিক....... উৎপন্ন হেতুই বিলয়ের কারণ, প্রাণী মাত্রই চরম পর্যায়ে মৃত্যুর শিকার। ভবিতব্য...
06/29/2024

জীবন ক্ষণস্থায়ী, বিলয়প্রাপ্ত স্বাভাবিক.......
উৎপন্ন হেতুই বিলয়ের কারণ, প্রাণী মাত্রই চরম পর্যায়ে মৃত্যুর শিকার। ভবিতব্য অনিশ্চিত জীবন প্রতি পদে পদে দুঃখসত্য শিক্ষা প্রদান করে। যতক্ষণ পর্যন্ত একজন যোগী স্বীয় পঞ্চস্কন্ধ ও কামনাবাসনা বিহীন হতে সক্ষম হবে না ততক্ষণ তিনি মৃত্যু ভয়ে আতংকিত থাকবে। আর যখনই কোন পণ্ডিত, পুণ্যবান যোগী বা সত্ত্বা এমনো মৃত্যু ভয়ে সংবেগ উৎপাদন করে পাপের প্রতি অনিহাবোধ করতো অধিক থেকে অধিকতর ত্যাগবান, অল্পসন্তুষ্টির আশ্রয়ে কায়-বিবেক সুখ ভোগ করেন, (নির্জন প্রিয় হয়ে একাকী ধ্যানাভিরমিত হন), তিনি যদিওবা মার্গ লাভ করতে সক্ষম হননি, তারপরও তিনি চিত্ত বিবেকে স্থির, প্রসন্ন, সম্যক প্রচেষ্টায় ধ্যানরত থাকেন, (মানসিক সুখে ধ্যানময় জীবন অতিবাহিত করেন), এতে তিনি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসী ও আর্য্য অষ্টাঙ্গিক মার্গের পথ নির্বাচিত অভিযাত্রিক রূপে অঘোষিত মার্গানুদর্শনের চর্চা করেন।।।।

আমরা যদি প্রতিদিন একবার এ-ই জীবন ক্ষণস্থায়ী, অনিত্য ও দুঃখময় চিন্তা করি, তাহলে প্রতিবার চিন্তনে আমাদের দেহ ও মন একবার করে কম্পিত হবে, হৃদয়ে নারা দিবে, অহো এ-ই নশ্বর মানবদেহ নিয়ে কীভাবে আমরা কালাতিপাত করে সময় অতিবাহিত করে যাচ্ছি। সময়ের কাজ যেমন সময়ে শেষ না করলে পরে যেমন চাপ পেতে হয় তেমনি কৈশোরে, যৌবনে যে খেলায়, পারিবারিক ও বিনোদনের মাধ্যমে অতিবাহিত করে শেষ বয়সে যদি ধর্মের আশ্রয় খুঁজি তাহলে সেই ফলস্বরূপ লাভ হয়, পরিপূর্ণ পক্ক না হয়ে বৃন্তচ্যুত ফলের ন্যায়। যার স্বাদ হয় ফেকাসে ও পরিত্যক্ত। তাই আসুন, এখনই সেই অবসর সময়, যেই যেখানে থাকুন কেন, ধর্মচেতনা উৎপাদন করে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা দুবেলা বন্দনা ও পঞ্চশীল গ্রহণ করি, খণ্ডকালীন অনুস্মৃতি ভাবনা অনুশীলন করি ( মৈত্রী ভাবনা, বুদ্ধানুস্মৃতি ভাবনা, মরণানুস্মৃতি ভাবনা), প্রাতিষ্ঠানিক পাঠদানের অবসরে ধর্মীয় শিক্ষামূলক বিষয় আলোচনা করি (জাতক বই বা যেকোন বৌদ্ধধর্মীয় পড়ার উৎসাহিত করা, এতে পরিবারের মধ্যে নৈতিকতা নিয়ে ছোটদের মৌলিক জ্ঞান অর্জন হবে), প্রতি অমাবস্যা-পূর্ণিমা তিথিতে অষ্টশীল পালন করি, পাশাপাশি সামর্থ্য অনুসারে প্রতিবেশী বা অসহায়, অনাথদের সহযোগিতা করি, প্রাণীর জীবন অবমুক্তকরণের পুণ্যফল সম্পর্কে অবগত করে প্রতিমাসের নির্দিষ্ট একটা সময়ে সেই পুণ্যকর্মে পরিবার নিয়ে অংশগ্রহণ করি এভাবে সৎকর্মের সুফল ও পাপকর্মের প্রতি ভয়, কুফল সম্পর্কে যত আলোচনা হবে ততই চিত্তে ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও জানার আগ্রহ সৃষ্টি হবে। সেভাবে কুশলচেতনায় বেড়ে ওঠা প্রতিটি সন্তানের মনে মানবিক মনুষ্যত্ব বিকাশিত হবে ও মাতাপিতার বিশ্বাসভাজন হবে এবং ভরণপোষণের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করবে।।।

পঞ্চ আসক্তি  ত্যাগ করতে না পারলে ভাবনা করা যায় না,ভাবনা করতে হলে আগে পঞ্চ আসক্তি  ত্যাগ করতে হবে। ত্যাগ করতে না পারলে ভা...
06/28/2024

পঞ্চ আসক্তি ত্যাগ করতে না পারলে ভাবনা করা যায় না,
ভাবনা করতে হলে আগে পঞ্চ আসক্তি ত্যাগ করতে হবে। ত্যাগ করতে না পারলে ভাবনা ফলপ্রসূ হবে না। পঞ্চ আসক্তি কি কি তার নিম্নে বর্ণনা দেয়া হল।

( কামাসক্তি )
কামের প্রতি যে আসক্তি । কোন কোন ব্যক্তি যৌন বিষয়ে মোহগ্রস্ত থাকে। এরকম হীন আচরণে মানুষের মুক্তি পথে বিরাট বাদা সৃষ্টি করে। কাম সুখ স্বপ্ন তুল্য কিন্তু দুঃখ অধিক । এটি নিতান্ত বর্জনীয়।

( কর্মাসক্তি )
কর্মের প্রতি যে আসক্তি । কোন কোন লোক আছে দিন- রাত, সপ্তাহ - মাস প্রতিনিয়ত কাজ করতে ভালোবাসে। এরূপ কর্মাসক্তি ব্যক্তিরা মুক্তির পথ পায় না। এটি একান্ত বির্জনীয়।

( নিদ্রাসক্তি )
ঘুমের প্রতি যে আসক্তি । অনপক লোককে দেখা যায় অধিকাংশ সময় ঘুমিয়ে কাটায়। তারা কোন কারাগারে আছে জানে না। বুদ্ধ ঘুমকে কারাগারের সাথে তুলনা করেছেন। নিদ্রাসক্ত ব্যক্তি ভাবনা করতে পারে না। তাই এটিও নিতান্ত বর্জনীয়।

( ইন্দ্রিয়াসক্তি )
ইন্দ্রিয়ের প্রতি যে আসক্তি । কোন কোন লোককে দেখা যায় পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের প্রতি অত্যধিক আসক্ত থাকে। তারা চক্ষু দ্বারা সুদর্শনীয় বস্তু গ্রহণ করে লোভ মোহ পরায়ণ থাকে। তারা কর্ণ দ্বারা শ্রুতি মধুর শব্দ গ্রহণ করে লোভ মোহ পরায়ণ হয় । জিবহা দ্বারা মনসব সম আস্বাদ গ্রহণ করে লোভ মোহ পরায়ণ হয় । কা বা ত্বক দ্বারা নকোমল বা আরাম দায়ক বস্তু গ্রহণ করে লোভ মোহ পরায়ণ হয় । পঞ্চ আসক্তি বা লোভী ব্যক্তিরা তাদের ইন্দ্রিয় ভোগের বিপরীত হলে দ্বেষ পরায়ণ হয় । তারা লোভ, দ্বেষ, মোহ পরায়ণ হয়ে নানা দুঃখ ভোগ করে এবং মুক্তির পথ অন্বেষণ করতে পারে না। সেজন্য ইন্দ্রিয় আসক্তি ত্যাগ করা একান্ত উচিত ।

( মিত্রাসক্ত )
সঙ্গী বা মিত্রের প্রতি যে আসক্তি । কেউ কেউ সঙ্গী বা মিত্রের সাথে নানা আলাপ করে দিনের পুরো সময়টাই কেটে দেয়। তারা সময়ের মূল্য দিতে পারে না। মিত্রাসক্তি ব্যাক্তিরা মুক্তির পথ খুঁজে পায় না। সুতরাং মিত্রাসক্তি নিতান্তই বর্জনীয়। মহাসতিপটঠানে ভাবনার ছয়টি প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ আছে । ক) কর্মাসক্তি খ) বাক্যসক্তি গ) নিদ্রাসক্তি ঘ) মিত্রাসক্তি ঙ) ইন্দ্রিয়াসক্তি চ) আহারাসক্তি।

এই তৃষ্ণার কারণে সত্বদেরকে জন্ম হতে জন্মান্তরেননদীর স্রোতের মত একবার ডুবিয়ে একবার ভাসিয়ে অসহ্য দুঃখ যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় । একথা চিন্তা করে করুণাঘন বুদ্ধ জন্ম নিরোধ, চিত্ত নিরোধ, চিত্ত নিরোধ করার উপদেশ প্রদান করেছেন ।

জীবন ক্ষণস্থায়ী, বিলয়প্রাপ্ত স্বাভাবিক....... উৎপন্ন হেতুই বিলয়ের কারণ, প্রাণী মাত্রই চরম পর্যায়ে মৃত্যুর শিকার। ভবিতব্য...
06/25/2024

জীবন ক্ষণস্থায়ী, বিলয়প্রাপ্ত স্বাভাবিক.......
উৎপন্ন হেতুই বিলয়ের কারণ, প্রাণী মাত্রই চরম পর্যায়ে মৃত্যুর শিকার। ভবিতব্য অনিশ্চিত জীবন প্রতি পদে পদে দুঃখসত্য শিক্ষা প্রদান করে। যতক্ষণ পর্যন্ত একজন যোগী স্বীয় পঞ্চস্কন্ধ ও কামনাবাসনা বিহীন হতে সক্ষম হবে না ততক্ষণ তিনি মৃত্যু ভয়ে আতংকিত থাকবে। আর যখনই কোন পণ্ডিত, পুণ্যবান যোগী বা সত্ত্বা এমনো মৃত্যু ভয়ে সংবেগ উৎপাদন করে পাপের প্রতি অনিহাবোধ করতো অধিক থেকে অধিকতর ত্যাগবান, অল্পসন্তুষ্টির আশ্রয়ে কায়-বিবেক সুখ ভোগ করেন, (নির্জন প্রিয় হয়ে একাকী ধ্যানাভিরমিত হন), তিনি যদিওবা মার্গ লাভ করতে সক্ষম হননি, তারপরও তিনি চিত্ত বিবেকে স্থির, প্রসন্ন, সম্যক প্রচেষ্টায় ধ্যানরত থাকেন, (মানসিক সুখে ধ্যানময় জীবন অতিবাহিত করেন), এতে তিনি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসী ও আর্য্য অষ্টাঙ্গিক মার্গের পথ নির্বাচিত অভিযাত্রিক রূপে অঘোষিত মার্গানুদর্শনের চর্চা করেন।।।।

আমরা যদি প্রতিদিন একবার এ-ই জীবন ক্ষণস্থায়ী, অনিত্য ও দুঃখময় চিন্তা করি, তাহলে প্রতিবার চিন্তনে আমাদের দেহ ও মন একবার করে কম্পিত হবে, হৃদয়ে নারা দিবে, অহো এ-ই নশ্বর মানবদেহ নিয়ে কীভাবে আমরা কালাতিপাত করে সময় অতিবাহিত করে যাচ্ছি। সময়ের কাজ যেমন সময়ে শেষ না করলে পরে যেমন চাপ পেতে হয় তেমনি কৈশোরে, যৌবনে যে খেলায়, পারিবারিক ও বিনোদনের মাধ্যমে অতিবাহিত করে শেষ বয়সে যদি ধর্মের আশ্রয় খুঁজি তাহলে সেই ফলস্বরূপ লাভ হয়, পরিপূর্ণ পক্ক না হয়ে বৃন্তচ্যুত ফলের ন্যায়। যার স্বাদ হয় ফেকাসে ও পরিত্যক্ত। তাই আসুন, এখনই সেই অবসর সময়, যেই যেখানে থাকুন কেন, ধর্মচেতনা উৎপাদন করে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা দুবেলা বন্দনা ও পঞ্চশীল গ্রহণ করি, খণ্ডকালীন অনুস্মৃতি ভাবনা অনুশীলন করি ( মৈত্রী ভাবনা, বুদ্ধানুস্মৃতি ভাবনা, মরণানুস্মৃতি ভাবনা), প্রাতিষ্ঠানিক পাঠদানের অবসরে ধর্মীয় শিক্ষামূলক বিষয় আলোচনা করি (জাতক বই বা যেকোন বৌদ্ধধর্মীয় পড়ার উৎসাহিত করা, এতে পরিবারের মধ্যে নৈতিকতা নিয়ে ছোটদের মৌলিক জ্ঞান অর্জন হবে), প্রতি অমাবস্যা-পূর্ণিমা তিথিতে অষ্টশীল পালন করি, পাশাপাশি সামর্থ্য অনুসারে প্রতিবেশী বা অসহায়, অনাথদের সহযোগিতা করি, প্রাণীর জীবন অবমুক্তকরণের পুণ্যফল সম্পর্কে অবগত করে প্রতিমাসের নির্দিষ্ট একটা সময়ে সেই পুণ্যকর্মে পরিবার নিয়ে অংশগ্রহণ করি এভাবে সৎকর্মের সুফল ও পাপকর্মের প্রতি ভয়, কুফল সম্পর্কে যত আলোচনা হবে ততই চিত্তে ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও জানার আগ্রহ সৃষ্টি হবে।

সেভাবে কুশলচেতনায় বেড়ে ওঠা প্রতিটি সন্তানের মনে মানবিক মনুষ্যত্ব বিকাশিত হবে ও মাতাপিতার বিশ্বাসভাজন হবে এবং ভরণপোষণের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করবে।।।

পঞ্চশীল পালন করিবে। পঞ্চশীল থেকে বেশি উত্তম নীতি কোথাও নেই। অর্থ উপার্জন করিবে, অলস হবে না। এক্টিভ ভূমিকা পালন করে বিদ্য...
06/10/2024

পঞ্চশীল পালন করিবে। পঞ্চশীল থেকে বেশি উত্তম নীতি কোথাও নেই। অর্থ উপার্জন করিবে, অলস হবে না। এক্টিভ ভূমিকা পালন করে বিদ্যা অর্জন, অর্থ অর্জন, পুণ্য অর্জন, জ্ঞান অর্জন করা এবং নিজের পরের কল্যাণকর কাজ করে জীবন অতিবাহিত করা। গরিব হওয়া ঠিক নয়, অলস হওয়া ঠিক নয়, অবিদ্যা হওয়া ঠিক নয়, মূর্খ হওয়া ঠিক নয়, ক্রোধি হওয়া ঠিক নয়। যা করিলে চারটা জিনিস লাভ হয় সেরূপ কাজ করিবে। আর্থিক লাভ হয় সে কাজ করিবে, পুন্য লাভ হয় সেরূপ কাজ করিবে, বিদ্যা লাভ হয় সেকাজ করিবে, জ্ঞান লাভ হয় সে কাজ করিবে। মৈত্রী চিত্ত পোষন করিবে, নিজের ও পরের মঙ্গল হয় এমন কাজ করে যাবে। সব সময় নিরলস কর্মী, জ্ঞানী কর্মী হবে।
সব সময় তৎপর হবে। কি তৎপর?

অর্থ লাভে তৎপর, বিদ্যা লাভে তৎপর, পুণ্য লাভে তৎপর, জ্ঞান লাভে তৎপর হওয়া। আর যারা এসব বিষয়ে তৎপর নয় তাদের অর্থ নেই, বিদ্যা নেই, পুণ্য নেই, জ্ঞান নেই তারা সবদিকে শূন্য ও দুর্বল হয়। তাহলে কি লাভ হলো? নিজেরও লাভ নেই, পরেরও লাভ নেই। নিরলস কর্মী হয়ে কাজ করিবে। মস্তিষ্ক কাজে লাগিয়ে এমন বাক্য প্রয়োগ করিবে, যে বাক্য দ্বারা নিজের ও পরের মঙ্গল হয়। এমন করে চিন্তা করিবে লোকহিত চিন্তা, আত্মহিত চিন্তা, উভয় চিন্তা মঙ্গল জনক। নিজের হিত নয়, পরের হিত নয়, সে ধরনের কাজগুলো করাটা হলো বোকামি বা পাপ। সেজন্য পুণ্যকাজে উৎসাহিত হওয়া, বুদ্ধিমান হওয়া, নিরাশ না হওয়া । সময় অপব্যয় না করা, গুরুত্ব দিয়ে সময় কাজে লাগানো চেষ্টা করা। এক মহুর্ত সময় মূল্যবান, যা অতিবাহিত হচ্ছে সে সময় আর ফিরবে না। চলে যাওয়া সময় আর ফিরে আসবে না। ফিরে আসা তার ধর্মতা নয়। নদীর পানি যেমন তল মূখী হয়ে সমুদ্রে চলে যায় পুনরায় ফিরে আসে না। আয়ুটাও সেরকম । তাই আয়ুকে কাজে লাগানো দরকার। জীবনে আয়ুসীমা যতটা সময় আছে তা কাজে লাগিয়ে যদি নিজের পরের উপকার হয় সেটা হলো সবচেয়ে লাভজনক। সেজন্য সময় নষ্ট না করে নিজের ও পরের মঙ্গল জনক কাজে মস্তিষ্ক পরিচালনা করা এবং সময় অতিবাহিত করা। সেজন্য গরিব হয়ে থাকা ঠিক নয়, ধনী হওয়ার চেষ্টা করা। কৃষি, ব্যবসা, চাকরি যে দিক দিয়ে হোক না কেন ভালো ভালো পদক্ষেপ নেয়া, বুদ্ধিমত্তা হিসাব করে কাজ করে যাওয়া। শুধু ভাত খেয়ে দিনটা কাটালে হবেনা। দিবা-রাত্র সব সময় লাভের জন্য কাজ করবে।

নৈতিকতার গুরুত্ব দিবেন। নৈতিকতা হলো আত্ম সংযম। আত্ম সংযমতা গুরুত্ব দিয়ে যাবতীয় কার্য সম্পাদন করলে তাহলে ভূল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কাজের অনৈতিকতা মূখী হলে নিজেরও দুঃখ হয়ে থাকে, পরেরও দুঃখ হয়ে থাকে। নিজের সুখ, পরের সুখ হয় এমন কাজে উৎসাহিত হওয়া। পুরোটা জীবন কাজে লাগিয়ে ইহ-পরলোক সুখে থাকার মত কাজ করতে পারলে তাহলে প্রকৃত মানুষের কাজ হবে।

জিনপঞ্জর_গাথা(সমূলানুবাদ) ==============================♦১. জযাসনাগতা বীরা জেত্বা মারং সবাহিনিংচতুসচ্চ মকরসং যে পিবিংসু ...
06/08/2024

জিনপঞ্জর_গাথা

(সমূলানুবাদ)
==============================

♦১. জযাসনাগতা বীরা জেত্বা মারং সবাহিনিং
চতুসচ্চ মকরসং যে পিবিংসু নরাসভা।
♦২. তণ্হঙ্করাদযো বুদ্ধা অট্ঠবিসতি ন্যক্কার,
সব্বে পতিট্ঠিতো ময্হং মত্থকে তে মুনিস্সরা।

অনুবাদঃ যে জয়াসনে (বোধিপালঙ্কে) বসে নরার্ষভ বীর (বুদ্ধগণ) সবাহিনী /সসৈন্য মারকে পরাজিত করে চারি আর্যসত্যরূপ অমৃত-রস পান করেছেন। তৃষ্ণাঙ্করাদি সে আটাশ লোকনায়ক মুনীশ্বর বুদ্ধগণ আমার মস্তকে প্রতিষ্ঠিত হোক।

♦৩. সিরে পতিট্ঠিতা বুদ্ধা ধম্মো চ মম লোচনে,
সঙ্ঘো পতিট্ঠিতো ময্হং উরে সব্ব গুণাকরো।

অনুবাদঃ বুদ্ধগণ আমার শিরে, ধর্ম আমার নয়নে ও সর্বগুণ সম্পন্ন সংঘ আমার শিরে প্রতিষ্ঠিত হোক।

♦৪. হদযে অনুরুদ্ধো চ সারিপুত্তো চ দক্খিণে,
কোণ্ডঞ্ঞো পিট্ঠিভাগস্মিং মোগ্গল্লানোসি বামকে।
♦৫. দক্খিণে সবণে ময্হং আহুং আনন্দ আনন্দ রাহুলা,
কস্সপে চ মহানামো উভোসুং বামসোতকে।

অনুবাদঃ আমার হৃদয়ে অনুরুদ্ধ, সারিপুত্র দক্ষিণে (ডানে), কৌণ্ডিণ্য পৃষ্ঠে, মৌদ্গলায়ন বামে, দক্ষিণ কর্ণে আনন্দ ও রাহুল এবং কাশ্যপ ও মহানাম আমার বামম কর্ণে প্রতিষ্ঠিত হোক।

♦৬. কেসন্তে পিট্ঠিভাগস্মিং সুরিযো'ব পভঙ্করো,
নিসিন্নো সিরিসম্পন্নো সোভিতো মুনিপুঙ্গবো।
♦৭. কুমার কস্সপো নাম মহেসী চিত্রবাদকো,
সো ময্হং বদনে নিচ্চং পতিট্ঠাসি গুণাকরো।

অনুবাদঃ আমার পৃষ্ঠ কেশাগ্রে সূর্যের প্রভাকর শ্রীসম্পন্ন মুনিপুঙ্গবো শোভিত সম্বুদ্ধ উপবিষ্ট আছেন। মহান বিচিত্র ধর্মকথক, বিবিধ গুণসম্পন্ন কুমার কাশ্যপ আমার বদনে (মুখে) অবস্থিত থাকুক।

♦৮. পণ্নো অঙ্গুলিমালের চ উপালি নন্দ সীবলী,
থের পঞ্চ ইমে জাতা ললাটে তিলকা মম।

অনুবাদঃ পূর্ণ, অঙ্গুলিমাল, উপালি নন্দ ও সীবলী এ পাঁচ স্থবির আমার ললাটে (কপালে) তিলক সদৃশ অবস্থিত থাকুক।

♦৯. সেসাসী'তি মহাথের বিজিতা জিনসাবকা,
চলন্ত সীলতেজেনা অঙ্গসঙ্গে সুসণ্ঠিতা।

অনুবাদঃ ক্লেশমার বিজয়ী অবশিষ্ট (আশি) জিনশ্রাবক মহাস্থবিরগণের শীল তেজে আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুশোভিত হোক।

♦১০. নতনয়ন পুরতো আসি দক্খিণে মেত্ত সুত্তকং
ধজগ্গং পচ্ছতো আসি বামে অঙ্গুলিমালকং।

অনুবাদঃ আমার পুরোভাগে (সামনে) রতন সূত্র, ডানে (করণীয়) মৈত্রী সূত্র, পশ্চাতে ধ্বজাগ্র সূত্র, বামে অঙ্গুলিমাল আছে।

♦১১. খন্ধক, মোর পরিত্তঞ্চ, আটানাটিয সুত্তকং,
আকাসচ্ছাদনং আসি সেসা পাকান সঞ্ঞিতা।

অনুবাদঃ খন্ধ ও মোর পরিত্রাণ, আটানাটিয় সূত্র আকাশ আচ্ছাদন স্বরূপ আছে, অবশিষ্ট সূত্র সমূহ প্রাকার (প্রাচীর) তুল্য আমার চারিদিকে পরিবেষ্টিত আছে।

♦১২. জুনান বলসংযুত্তে ধম্মপাকার লঙ্কতে,
বসতো মে চতুকিচ্চেন সদা সম্বুদ্ধ পঞ্জরে।
♦১৩. বাতপিত্তাদি সঞ্জাত বাহিরজ্ঝত্তুপদ্দবা,
অসেস বিলযং যন্তু অনন্ত গুণতেজসা।

অনুবাদঃ জিনগণের (বুদ্ধ) প্রভাব (বল) সংযুক্ত ধর্মপ্রাচীর পরিবেষ্টিত সম্বুদ্ধপঞ্জরে চারি কৃত্য (চারি ঈর্য্যাপথে- গমন, শয়ন, দাঁড়ান ও উপবেশন) সমাপণকারী আমার বাত-পিত্ত দ্বারা উৎপন্ন আধ্যাত্মিক (দেহস্থ) ও বাহ্যিক উপদ্রব তাঁদের অনন্ত গুণতেজে বিলয় (ধ্বংস) হোক।

♦১৪. জিনপঞ্জরমজ্ঝট্ঠং বিহরন্তং মহীতলে,
সদা পালেন্তু মং সব্বে তে মহাপুরিসাসভা।

অনুবাদঃ এ জগতে জিনপঞ্জরে বিচরণকারী মহাপুরুষগণ সর্বদা আমাকে রক্ষা করুন।

♦১৫. ইচ্চেবমচ্চন্তকতো সুরক্খো জিনানুভাবেন জিতুপদ্দবো,
বুদ্ধানুভাবেন হতারিসঙ্গো চরামি সদ্ধম্মানুভাবপালিতো।

অনুবাদঃ এই প্রকারে বিশেষভাবে সুরক্ষিত হল, জুনের (বুদ্ধের) প্রভাবে উপদ্রপ জয় কররা হল, বুদ্ধের প্রভাবে শত্রু সমূহ পরাভূত হল, আমি সদ্ধর্মের প্রভাবে সুরক্ষিত হয়ে বিচরণ করব।

♦১৬. ইচ্চেবমচ্চন্তকতো সুরক্খো জিনানুভাবেন জিতুপদ্দবো,
ধম্মানুভাবেন হতারিসঙ্গো চরামি সদ্ধম্মানুভাবপালিতো।

অনুবাদঃ এই প্রকারে বিশেষভাবে সুরক্ষিত হল, জিন/বুদ্ধের প্রভাবে উপদ্রব জয় করা হল, ধর্মের প্রভাবে শত্রু সমূহ পরাভূত হল, আমি সদ্ধর্মের প্রভাবে সুরক্ষিত হয়ে বিচচরণ করব।

♦১৭. ইচ্চেবমচ্চন্তকতো সুরক্খো জিনানুভাবেন জিতুপদ্দবো
সঙ্ঘানুভাবেন হতারিসঙ্গো চরামি সদ্ধম্মানুভাবপালিতো।

অনুবাদঃ এই প্রকারে বিশেষভাবে সুরক্ষিত হল, জিন/বুদ্ধের প্রভাবে উপদ্রব জয় করা হল, সঙ্ঘের প্রভাবে শত্রু সমূহ পরাভূত হল, আমি সদ্ধর্মের প্রভাবে সুরক্ষিত হয়ে বিচরণ করব।

♦১৮. সদ্ধম্মপাকার পরিক্খিতোস্মি অট্ঠরিযা অট্ঠদিসাসু হোন্তি,
এত্থন্তরে অট্ঠনাথা ভবন্তি উদ্ধং বিতানং' ব জিনা ঠিতা মে।

অনুবাদঃ আমি সদ্ধর্ম প্রাকারে (প্রাচীর) পরিবেষ্টিত, আমার আট দিকে আট আর্য পুদ্গল আছেন, তাঁদের অভ্যন্তরে আট নাথও (বুদ্ধ) আছেন, উপরে বিতান (চন্দ্রাতপ) সদৃশ জিনগণের অবস্থান করছেন।

♦১৯. ভিন্দান্তো মারসেনং মম সিরসিঠিতো, বোধিমারুয্হ সত্থা,
মোগ্গল্লানোসি বামে বসতি ভূজতটে, দক্খিণে সারিপুত্তো।

অনুবাদঃ বোধিমূলে আরূঢ় শাস্তা মারসৈন্য মর্দন (পরাজিত) করে আমার শিরোপরি অবস্থান করছেন, মৌদ্গলায়ন আমার বামপার্শ্বে ও সারিপুত্র আমার দক্ষিণ (ডান) পার্শ্বে অবস্থিত আছেন।

♦২০. ধম্মোমজ্ঝে উরস্মিং বিহরতি ভবতো মোক্খতো মোরযোনিং,
সম্পত্তো বোধিসত্তো চরণযুগ্গতো ভাণুলোকেক নাথো।

অনুবাদঃ ধর্ম আমার বক্ষে বিরাজমান, জগতের একমাত্র ত্রাণকর্তা ভবদুঃখ অবসান করবার জন্য বোধিসত্ত্ব ময়ূর যোনিতেও জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

♦২১. সব্বাবমঙ্গলমুপদ্দব-দুন্নিমিত্তং
সব্বীতি-রোগ গহদোসমসেস নিন্দা,
সব্বন্তরায-ভযদুস্সুপিনং অকন্তং
বুদ্ধানুভাব পবরেন পযাতু নাসং।

অনুবাদঃ সকল প্রকার অমঙ্গল, উপদ্রব, দুর্নিমিত্ত, রোগ, গ্রহদোষ, নিন্দা, ভয় ও দুঃস্বপ্ন বুদ্ধের প্রভাবে দূরীভূত হোক।

♦২২. সব্বাবমঙ্গলমুপদ্দব-দুন্নিমিত্তং সব্বীতি-রোগ গহদোসমসেস নিন্দা,
সব্বন্তরায-ভযদুস্সুপিনং অকন্তং
ধম্মানুভাব পবরেন পযাতু নাসং।

অনুবাদঃ সকল প্রকার অমঙ্গল, উপদ্রব, দুর্নিমিত্ত, রোগ, গ্রহদোষ, নিন্দা, ভয় ও দুঃস্বপ্ন ধর্মের প্রভাবে দূরীভূত হোক।

♦২৩. সব্বাবমঙ্গলমুপদ্দব-দুন্নিমিত্তং
সব্সব্বীতি-রোগ গহদোসমসেস নিন্দা,
সব্বন্তরায-ভযদুস্সুপিনং অকন্তং
সঙ্ঘানুভাব পবরেন পযাতু নাসং।

অনুবাদঃ সকল প্রকার অমঙ্গল, উপদ্রব, দুর্নিমিত্ত, রোগ, গ্রহদোষ, নিন্দা, ভয় ও দুঃস্বপ্ন সংঘের প্রভাবে দূরীভূত হোক।

Address

Montreal
Montreal, QC
H3S1G7

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when World Barua Organization-বিশ্ব বড়ুয়া সংস্থা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share