09/10/2025
আত্মউপলব্ধির সময়: বিএনপির সামনে জাতীয় নির্বাচনের বাস্তবতা
এসকে হোসাইন:
ডাকসু নির্বাচন শেষ হয়েছে। ফলাফলকে ঘিরে দেশের রাজনীতিতে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তবে এই নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে বিএনপির ভেতরে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনোভাবেই ডাকসু নির্বাচনের প্রতিচ্ছবি নয়। বরং এটি একটি সতর্কবার্তা, যা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিএনপিকে নতুন কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
ডাকসু নির্বাচনে দেখা গেছে, বিভিন্ন ছোট-বড় সংগঠন ও আদর্শভিত্তিক ছাত্রশক্তি প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। জাতীয় রাজনীতিতেও বিএনপির সামনে একই প্রশ্ন তারা কি এককভাবে লড়বে, নাকি জোট ও ঐক্যের পথে হাঁটবে? বাস্তবতা হলো, বিভক্ত বিরোধী রাজনীতি কখনো জাতীয় নির্বাচনে ইতিবাচক ফল আনতে পারেনি।
তবে, বর্তমান প্রজন্মের ভোটাররা সংখ্যায় বিশাল। এর সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী এবং প্রবাসী পরিবারের প্রভাবও গুরুত্বপূর্ণ। এই ভোটব্যাংককে আকৃষ্ট করতে হলে বিএনপিকে প্রয়োজন একটি ইতিবাচক, স্পষ্ট ও বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ।
এদিকে, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সবসময় আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান এবং আঞ্চলিক শক্তিগুলোর স্বার্থ বিএনপির কৌশলকে প্রভাবিত করবে। সময়োপযোগী কূটনীতি না চালালে মাঠের লড়াই দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
অপরদিকে, ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল বিএনপির জন্য আনন্দ বা হতাশার জায়গা নয়, বরং আত্মউপলব্ধির জায়গা। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আন্দোলন, নির্বাচন নাকি উভয় পথ মিলিয়ে কৌশল সাজানো হবে। নেতৃত্বের স্পষ্টতা ছাড়া বিএনপির সামনে টেকসই ভবিষ্যৎ তৈরি করা সম্ভব নয়।
সারকথা, বিএনপিকে এখন আবেগ নয়, বরং বাস্তবতার মাটিতে দাঁড়িয়ে পথ নির্ধারণ করতে হবে। প্রতিপক্ষকে অবমূল্যায়ন নয়, বরং শক্তি-দুর্বলতা সমন্বিত বিশ্লেষণই হতে পারে আগামীর সঠিক পথ।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।