10/10/2025
জীবনে ছোট ছোট এচিভমেন্ট গুলি সেলিব্রেট করার চেয়ে আমার কাছে ট্রু রিফ্লেকশন করাটা অনেক মিনিংফুল মনে হয়।
আজকে তেমনি একটা দিন, আমার কাছে ডিপলি ইমোশনাল একটা সময়। আজকে হয়তো শিবলী, আব্বু থাকলে একটা পরিপূর্ণ দিন মনে হত কিন্তু অপুর্নতার মধ্যেও যে অসম্ভব ভালবাসা অনুভব করতে পারা যায় সেটাও রিয়েলাইজশন হল। আমি জানিনা আমার এই অল্প লেখায় আমার মনের গভীরতা কতটা প্রকাশ করতে পারব৷
আমার লাইফে আজ পর্যন্ত পড়াশোনা বা চাকরি যেটা যখন করেছি, এই ব্যাপারে যে ডিসিশন নিয়েছি কোন ব্যাপারেই বিন্দুমাত্র রিগ্রেট নাই। না, বিন্দুমাত্র রিগ্রেট নাই। প্রতিটি ডিসিশন ভুল বা ঠিক হোক, প্রত্যেক টা জায়গায় শিখেছি। আমার অভিজ্ঞতা, ব্যাক্তিত্ত, আমার চিন্তা, আমার চলা বলা সবকিছু মিলেই তৈরি হয়েছে - আজকের এই আমি।
আমার জন্য ডিসিশন মেইক করা সবচেয়ে দুরুহ কাজ ছোটবেলা থেকেই। পি এইচ ডি করার সময় এতই কনফিউশান এ ছিলাম, কি করছি কেন করছি। এগ্রিকালচারের বাইরে গিয়ে এনিমেল সায়েন্স বুঝতে বুঝতে পিএইচডি র সময় শেষ হয়ে গেল। ২০১৫ তে যখন ফ্লোরিডায় ওয়ান অফ দ্য মোস্ট লারজেস্ট এবং প্রেস্টিজিয়াস কনফারেন্স (ADSA-ASAS) টুরে প্রায় ২৫০-৩০০ বিখ্যাত সায়েন্টিস্ট, রিসারচার এর সামনে নাইভ আমি ছোট খাট রিসার্চার!
আমার পেপারস এর অরাল প্রেজেন্টেশন করলাম,যেটাতে সামনে বসা এক্সপার্টস, প্রফেসরস, ইন্ডার্স্ট্রি প্রফেশনালস বেশ ইন্টারেস্ট পেল। অনেক কঠিন প্রশ্ন প্রেজেন্টেশন শেষে, গলা কাপতে কাপতে উত্তর দিলাম। পোস্টার ও ছিল -যেটা আমার লাইফের মাইলস্টোন অভিজ্ঞতা ছিল। পুরো জার্নি টা ট্রাইল এন্ড এরর এ গেছে, নতুন দেশ নতুন অভিজ্ঞতা।
কনভোকেশনের দিনেও বুঝিনাই কিভাবে পি এইচ ডির সময় টা শেষ হয়ে গেল, নেক্সট এ কি করব। আবার রিসার্চ এ যাওয়া তে একটুকুও মন বসে নাই। শিখেছি বাইরের কালচার, বাইরের মানুষ কিভাবে ভাবে ইত্যাদি ইত্যাদি আর মেইন যে স্কিল গুলি সেগুলি ত ছিলই কিন্তু সেগুলি কিভাবে কাজে লাগাব এগুলি কুল কিনারা খুজে পেতাম না। পি এইচ ডি ইটসেল্ফ আ হিউজ জার্নি। ব্রেক নিলাম, কোন ভিসন ই নাই কি করব। কানাডায় আসার পর আরেক যুদ্ধ, কালচারালি বাংলাদেশি কমিউনিটি তে বেশ এক্টিভ, রিটেইল জব করে ভালই সময় যাচ্ছিল। কারন তেমন কোন এম্বিসন নাই আর।
বাট সবচেয়ে বেশি যে স্কিল টা গ্রো করলো রিটেইল জবে- পিউপল স্কিল, কমিউকেশন, সেলিং, কাস্টমার সার্ভিস, প্রব্লেম সলভিং স্কিল। বাংলাদেশের মানুষেরা তখনও এই টা মেনে নিতে পারত না, লজ্জা পেত রিটেইলে জবের কথা প্রকাশ করতে কারো কাছে। আমাদের দেশের মানুষ বরাবরই বেশিরভাগই নাক উচু, নাক সিটকানো অভ্যাস, সততা তাদের কাছে দুর্বলতা আর হিপোক্রেসিতে তারা কমফোর্টেবল।
আজকে বলি, কেন এই আমার সোনার বাংলাদেশ ছেড়েছি: অনেক টা মোরাল এবং নিরাপত্তা ইস্যু তে। মনুষ্যত্ব থাকা মানুষের দেশে ষ্টে করা একটা স্ট্রাগল, সরি টু সে।
সাথে সাথে এই আনারি একটু একটু করে লিখে যাওয়া আমার ছোট্ট পেইজে। কোন কিছু ই প্লান নাই, শুধু এতটুকু জানতাম আমি আবার পড়াশোনায় ব্যাক করব। অনেকেই এইটা বললে নিরুৎসাহিত করত, কি করবা আবার পড়ে, টাইম নষ্ট, তোমার ত পি এইচ ডি আছে, পোস্ট ডকে ঢুকে যাও।
বাট আমার গাটস বলে, নাহ! এতে আমি কোন ইন্টারেস্ট পাচ্ছি না। আমার আগে থেকেই অন্য অনেক বিষয়ে লেখাপড়া করতে ইচ্ছে করত, যেমন, ফিলোসোফি বা আর্টসএর বা সায়েন্স এমনকি হার্বস বা ইয়োগা নিয়েও পড়তে ইচ্ছে হত কিন্তু এত ভাবতে ভাবতে কোন কুল কিনারা পেতাম না, মনে হত কেউ যদি আমাকে বলে দিত বিজলী এটা কর, এটা তোমার জন্য ভাল হবে- মনে হত আমার জন্য ডিসিশন নেয়া এত কঠিন কেন?
এরপর ত নিম্ন মধ্যবিত্তদের ইমিগ্রেশন প্রসেস এর প্যারা আছেই, বিশাল বড় ফাইনানশিয়াল বারডেন, সাথে শুরু আব্বুর অসুখ জার্নি। আমার লাইফ নিয়ে কোন মাথাব্যথা নাই, কয়েক বার দেশে গেছি তার জন্য। কৃতজ্ঞ যে পরিবারকে কিছু সময় দিতে পেরেছি।
কানাডায় পি আর হওয়ার পর পড়াশোনায় ঢুকে গেলাম ইউনিভার্সিটি অফ সাস্কেচুয়ানের পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন এ । এক এক জনের এক এক রকম কথা, পিইচডি করে আবার ঢুকছে মাস্টার্স, পরিবার বড় করার কোন মাথাব্যথা নাই। যে পরিমান সময় দিতাম রিডিং এ : এমনিতেই ভোরেসিয়াস রিডার। ক্যাম্পাস লাইফ নতুন করে খুবি ভাল লাগল। মনে হল, এখানে পড়াশোনায় না ঢুকলে জীবনে বড় আফসোস থাকত।
নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করলাম আমার টিচার পিয়ার্স দের ফিডব্যাক শুনে, আমি রিসার্চ এ ভাল, রাইটিং আমার বেশ ভাল, আমার লেখার আইডিয়া ইউনিক ইত্যাদি। একটা একাডেমিং রাইটিং এ ভাল হওয়া চার টা কথা না আমাদের মত বাংলা মিডিয়েমে পড়ে। ভাগ্যিস, চ্যাট জি পি টি ছিল না নাহলে এই কথাই বলতে পারতামনা আজকে। পি.এইচডি যে ক্রিটিকাল আনালাইটিকাল/থিনকিং স্কিল গ্রো করে দিছিল এইটা বের করলাম।
নিজের পকেটের টাকা দিয়ে মাশটার্স কোন বোকায় করে। যারা পড়াশোনা টাকে এত সহজ বস্তু মনে করেন বা টাকা বানানোর মেশিন মনে করেন, আপনারা একাডেমিক মাইন্ডেড না, আপনাদের ভিশন অন্যদিকে। এক এক জনের ফোকাস, ভাললাগা এক এক দিকে থাকে৷ টাকা দিয়ে পড়তে গেলেও এইখানে আপনার কম্পিটিশন করে ঢুকতে হয়, স্ট্রং মোটিভেশান রিজন লাগে। এখানে পড়াশুনা টা খাওয়ার বিষয় না- যে গিল্লেন, ফ্ল্যাশ করলেন, বের হয়ে গেল৷ এখানে পড়াশোনা টা একটা মিনিংফুল লাইফের ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করার কারিগর।
আজকেও আমি বলব, জীবনে যদি জেনুইন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, বাইরে পড়াশুনা করবেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয় আপনার মাইন্ডসেট যেভাবে তৈরি করবে সারাজীবন এর প্রতি গ্রেইটফুল থাকবেন। আরো হাম্বল হবেন। প্লিজ গো ফর ইট, নো সেকন্ড থট। দেয়ার ইস অনলি গেইন, নো লস।
এরপর ২০২০ আমার দিক ঘুরে গেল ৩৬০ ডিগ্রি এংেলে, পাব্লিক এডমিন এ কন্টিনিউ করাটা করোনার মধ্যে খুব ই চ্যালেঞ্জিং হয়ে গেল, সাথে আব্বুর অসুস্থতা। আমি মানষিক ভাবে একটা খুব টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। এরপর সাহস করে ঢুকলাম একাউন্টিং এ ডিপ্লোমা করতে আর সাথে মাস্টার্স টাও কন্টিনিউ করলাম সার্টিফিকেটের জন্য। আগের বার পিএইচডি থেকে মাস্টার্স এ নামছিলাম, এখন আরো ডাউনগ্রেড ডিপ্লোমা য়। মাই গড।
আপনাকে নতুন ডিসিপ্লিনে ঢুকতে হলে স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ
দিয়ে শুরু করতে হবে, রাইট? কেন যেন আমি এত ডিস্কারেজড হইছি বেশির ভাগ মানুষের কাছে, বাট আমি একাউন্টিং খুব এ এঞ্জয় করছি পড়তে। আই থিনক এগ্রিকালচার নিয়ে পড়তেও আমার এত মজা লাগেনাই, তখন ত তেমন পড়তাম ই না।
এবার বুঝে পড়লাম, বেশি বয়সে পড়াশোনা করাটা যেন ভাললাগা হয়ে উঠল। ইট ওয়াজ এ ওয়াইল্ডেস্ট রাইড ফর শিঊর। বাট এভ্রি সিংগেল এফর্ট ওয়াজ ওয়ার্থ ইট ইন দি এন্ড। বিসশাস করেন ২ টা বছরে যত টাইম দিয়ে ডিপ্লোমা শেষ করছি এটাতে আমার মাথার চুল, ঘুম, চোখের জ্যোতি, চেহারা সবই ড্রাস্টিকালি অনেক খারাপ হইছে বাট এন্ড রেজাল্ট ছিল অদ্ভুত ভাললাগার। নিজের প্রতি আত্নবিশ্বাস এত বেড়ে গেল যে নতুন করে জানলাম নিজেকে-আমার এখনো কষ্ট করার স্টামিনা আছে, আমি অন্য বিষয় নিয়ে পড়তে পারি, দক্ষতা অর্জন করতে পারি।
আমার ভাগ্য বরাবরই অনেক বেশি টাফ টাইম দেয়, পথচলা থামবেনা এটুকু বিসশাস ছিল শুধু। কাজ করে যাব, ফলাফলের কথা, যোগ বিয়োগ করিনাই। এইত এক্টু যখন হাটি হাটি পা করে আগাচ্ছি, ২০২৩ এ এক বিশাল ঝড় এসে আমাদের জীবনের বেচে থাকার শক্তি নিয়ে গেল। সব কিছু যেন শেষ, কিচ্ছু নাই, পারপাস নাই, জীবনে সবকিছু অলট পালট।
সবকিছু থেকে আইসোলেটেড হয়ে যাওয়া, কেউ একটু কোল্ড সাইন দেখালে দূরত্ব সৃষ্টি করতাম কারন শোকের মধ্য দিয়ে যে যায়নি সে কিচ্ছু বোঝেনা, তাই আমার নীরবে লুকিয়ে থাকাটাতেই কমফোর্ট তৈরি হল। কিন্তু স্টাডি করা ছাড়িনি, যখন যে লাইফে সিচুয়েশন এসেছে সে বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করার চেষ্টা করেছি। আমি ভেবেছি আমার জীবনে কিছু যদি নাও থাকে, রাস্তায় নামি, পৃথিবীকে জানা ছাড়ব না, শেখা ছাড়ব না।
২০২৩ এর আগস্ট থেকে ২০২৫ এর মার্চ পর্যন্ত কিসের মধ্যে ছিলাম এটা লিখতে গেলে মনে হয় নিসশাস ই বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু হিল করার অনেক চেষ্টা করেছি, সাথে শুধুমাত্র একটা চেষ্টাই করেছি কানাডায় গভার্নমেন্ট জবে ঢোকা। কানাডার সিটিজেনশিপ পাওয়া,পড়াশোনা কম্পলিট করে এমনিতেই দেশ্টার প্রতি মায়া, সম্মান দুটো ই বেড়ে গেছে। এত বছর পর যখন সরকারি চাকরির চেষ্টা করছি তখন আমার কপাল খারাপ, এত মন্দা সময়ে চাকরি খুজছি যখন কানাডায় এত এত ক্রাইসিস, জব মার্কেট, হাউজিং সবকিছুর অবস্থা খুবই নাজুক।
একদিকে শোকের অধ্যায়, আরেকদিকে একটু একটু করে সরকারি চাকরির ইন্টারভিউ দিই। এক একটা প্রসেস হতে সময় লাগে ৬-৭ মাস তারপরে একটা পুলে রাখে। ২০২৪ এ মোটামুটি দেখি আমার ফেডারেল গভার্মেন্টে ৯ টা পুলে কোয়ালিফাইড ক্যান্ডিডেট হিসেবে আমি সিলেক্টেড হই বিভিন্ন একাউন্টটিং আর ফাইনান্স পজিশন এ। একটু ভেতরে ক্ষিন আশা তৈরি হল এই মন্দার বাজারে। আই থিনক যারা এই সময় গভমেন্ট জব এপ্লাই করবেন তারা বুঝবেন কেমন লেন্দি জার্নি এটা।
গত ৪ মাস যাবত ফাইনান্স স্পেশালিষ্ট হিসেবে কাজ করছি ফেডারেল গভার্মেন্টে এবং ট্রুলি এভ্রি লিটিল এফর্ট ম্যাটার্স। আমার কাজের জায়গা, পরিবেশ, সম্মান, রেকগনিশন : প্রতিটি ব্যাপার, প্রতিটি মুহুর্ত আমাকে আরো হাম্বল করতে শেখায়। আমার কাজ আমার কাছে খুবি ইন্টারেস্টিং লাগে, যতক্ষণ কাজে থাকি খুব ভাল লাগে, ডোপামিন হরমোন কাজ করে। আমি ঠিক এই জায়গাটাতেই বিলং করতে চেয়েছি। পুরো এগ্রিকালচার থেকে একাউন্টটিং/ ফাইনান্স-এটা বিগ ট্রান্সিশন, বিগ চ্যালেঞ্জেস ছিল লাইফে।
কিন্তু এখন যে জব করি আমার পুরো একাডেমিক ফাউন্ডেশন, আমার প্রতিটি অভিজ্ঞতা এই জবের কাজগুলোকে কমপ্লিমেন্ট করে৷
আজকে আমার সুপারভাইজার যখন শুধুমাত্র আমার কাজের জন্য না আমাকে মানুষ হিসেবে আমার পারসোনালিটি, আমার সততা, আমার হিউম্যান স্কিল, আমার শিক্ষা, আমার ইন্টেগ্রিটি : এই স্ট্রং মোরাল গুনের জন্য যেভাবে এপ্রিসিয়েট করে, রেস্পেক্ট করে,আমাকে অন্যের সামনে এত দারুণভাবে প্রেজেন্ট করে,কমপ্লিমেন্ট দেয়-: আমার দুচোখ ভরে পানি এসে যায়, আমার সম্মানে মাথা নিচু হয়ে যায়। কানাডায় সফট স্কিল কতটা গুরুত্বপূর্ণ এটা যারা আছেন বলতে পারবেন।
আব্বা আম্মার একটা কড়া শাসনে বড় হইছি। আব্বা কেন যেন আমাকে ওত এপ্রিসিয়েট করতোনা বা হয়তো অত প্রকাশ করতে পারত না।
আজ থাকলে হয়ত একটু হলেও মেয়েকে নিয়ে ভাবত। শিবলী র সাথে কত কিছু বলতাম, কত ধরনের প্রশ্ন করত আমাকে।
শেষ কিছু কথা: জীবন কে এক্সপেরিমেন্ট করেন নিজেকে বোঝার জন্য আর ভাল ট্রেইট গুলি আয়ত্ত করেন, ভাল মানুষ হোন।
Dont get discouraged by challenges or by anyone’s opinion. People will always speak from their own experiences, limitations, and understanding not yours. What they say often reflects their world, not your potential.
Stay close to what you truly want to do. Trust your intuition. Don’t doubt your journey. You may not see the destination now, but every little effort, every quiet step, will one day make sense.
Don’t chase money, fame, or power. Focus on your inner growth, your skills, and becoming a good human being. That’s the greatest gift and the truest achievement life can offer.
Be honest with yourself. Don’t lie to your heart. Reflect often, stay open to learning, remain humble, and always be kind because those are the values that will carry you through everything.
Thank you for taking your time to read this long post.