08/07/2025
রাসুল (সা)-এর শেষ মুহূর্ত"
দুনিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ানক মুহূর্ত ছিল সেই দিন। যেদিন আসমান-জমিন কাঁপে উঠেছিলো। ফেরেশতারা থমকে গিয়েছিলো। জান্নাতের দরজা বন্ধ, জাহান্নামের আগুন নিভে গিয়েছিলো। কারণ আজ মৃত্যুর ফেরেশতা মালাকুল মউত এসেছেন দুনিয়ার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটির জান কবজ করতে।
মদিনার সেই দুপুর। রাসুল বিছানায় শুয়ে আছেন। চেহারা বিবর্ণ, শরীর ঘামছে। সাহাবীরা এক পাশে বসে কাঁদছেন। আর মা ফাতিমা (রাযি.) কাঁদতে কাঁদতে বলছেন,
"আব্বা, আপনাকে এত কষ্ট কেন?"
রাসুল বললেন,
"ফাতিমা, মৃত্যুর স্বাদ এত কঠিন... এত কঠিন... যে পাহাড়ের চূড়ায় যদি রেখে দেয়া হয় তবে তা গুঁড়িয়ে যাবে।"
আসমান থমকে গেছে। ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) দাঁড়িয়ে। চোখ থেকে টপটপ অশ্রু পড়ছে। এমন দৃশ্য কোনো ফেরেশতা জীবনে দেখেনি। মালাকুল মউত এসে সালাম করলেন,
"ইয়া রাসুলাল্লাহ, আল্লাহ আমাকে হুকুম দিয়েছেন। আপনার রূহ কবজ করতে। তবে অনুমতি ছাড়া আমি স্পর্শও করতে পারবো না।"
প্রিয় নবী চোখ তুললেন। বললেন,
"ওহে মালাকুল মউত, আমার উম্মতের মৃত্যু কেমন হবে?"
মালাকুল মউত মাথা নিচু করে বললেন, "ইয়া রাসুলাল্লাহ, কোনো কোনো উম্মত ভয়ানক আযাবে পড়বে। চোখ উল্টে যাবে। জিহ্বা বেরিয়ে আসবে। দুনিয়া তাদের জন্য অভিশাপ হয়ে যাবে।"
রাসুল
কেঁদে দিলেন। বললেন,
"হে আল্লাহ! আমার উম্মতের আযাব আমার উপর দিয়ে দাও। আমি নিতে রাজি। তাদের ক্ষমা করো।"
এ কথা শুনে ফেরেশতারা কেঁপে উঠলো। মালাকুল মউত এগিয়ে এসে রাসুল-এর জান কবজ করতে গেলেন।
তখনই নবীজি বললেন, "জিবরাইল, এবারও কি তুমি থাকছো?"
জিবরাইল (আ.) বললেন,
"ইয়া রাসুলাল্লাহ, এটাই আমার শেষ দেখা। এরপরে দুনিয়াতে আমার আসা হবে না।"
নবীজি বললেন,
"তাহলে একবার আল্লাহর কাছে বলো, উম্মতকে ক্ষমা করে দিন।"
এরপর রাসুল মাথা তুলে আসমানের দিকে তাকিয়ে বললেন,
"উম্মতী... উম্মতী..."
আর সেই সাথে রূহ মালাকুল মউতের হাতে তুলে দিলেন। চোখের কোণে অশ্রু, ঠোঁটে নামাজের কথা।
সেই মুহূর্ত... আকাশ অন্ধকার, বাতাস থমকে যায়। জান্নাত-জাহান্নাম স্তব্ধ। ফেরেশতারা হাউমাউ করে কাঁদছে।
পুরো মদিনায় কান্নার আওয়াজ।
শিক্ষা:
রাসুল মৃত্যুর সবচেয়ে কঠিন যন্ত্রণা নিজের জন্য নিলেন, শুধু যেনো আমরা জাহান্নামের ভয়াবহতা থেকে বাঁচি। আর আমরা কী করছি? নামাজ, গুনাহ, ভুলে যাওয়া...
আজো সময় আছে ভাই... ফিরে এসো। একবার সিজদায় পড়ে বলো, "ইয়া আল্লাহ! রাসুলের উম্মত হয়ে তোমার কাছে ফিরতে চাই।"♥️🤲