01/02/2024
বৃষ্টি হয়ে নামো
৫৪.
হিংস্র জন্তুর মতো গর্জে উঠছে বৃষ্টি। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আকাশ জুড়ে।জানালা দুটো খোলা। জানালা দিয়ে আসা বাতাস রুমটিকে ঘিরে প্রেতাত্মার কান্নার মতো হু হু শব্দ করে ঘুরপাক খাচ্ছে। ধারা ফ্লোরে বসে আছে,দেয়ালে হেলান দিয়ে।বারংবার শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে ঠান্ডায়।বিভোরের উষ্ণতার বৃষ্টি পাওয়ার জন্য হৃদয়টা শুকিয়ে খরা লেগে গেছে। বুকে ঝড় বইছে। যে ঝড় দেখা যায়না। শুধু অনুভব করা যায়। দু'হাতে মুখ ঢেকে কেঁদে উঠলো সে।আর্তনাদ করে বললো,
--- "কেনো আসছোনা তুমি!"
তাঁর কিছুক্ষণ পর ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। মিহির নানু এসেছেন সেদিন।অপেক্ষায় ঘুম আসেনা চোখে।তাই লুকিয়ে চারটা ঘুমের ট্যাবলেট নিয়ে আসে। মিহিকে বলে ঘুমের ট্যাবলেট যে এনেছে। মিহি বোঝায় ট্যাবলেট না খেতে।ধারা শুনেনি। মিহি ছোট হওয়ায় জোর করার সাহস পায় না। সকাল এগোরাটায় ঘুম ভাঙে ধারার। ছয়দিন শেষ। ফলাফল খুবই কুৎসিত। ফ্রেশ হয়ে নিজের বাসায় চলে আসে। ড্রয়িংরুমে সবাই ছিল।কেউ কি নিজেদের কাজে যায়নি! ধারা প্রশ্ন করলোনা। উপরে উঠে যেতে নিলে শেখ আজিজুর ডাকেন,
--- "ধারা এদিকে আসো।"
ধারা আসে।আজিজুর বসতে বলেন।ধারা বসে।মাথা অবনত।সামিত বলে,
--- "এখন তোর মত কি?"
ধারা জবাব দেয়না গাঁট হয়ে বসে আছে।আজিজুর বলেন,
--- " ছেলে সুবিধার না।ছয়দিনে একবারো খুঁজতে আসেনি।সেই ছেলের হাতে মেয়ে তুলে দেব কোন সাহসে।আশা করি তুমি বুঝতে পারছো আমাদের মনের অবস্থা।ছয়দিন.... সময়টা দীর্ঘ।এবার আর জেদাজেদি করোনা।আমরা যা বলি শুনো।"
ধারা চোখ তুলে তাকায়।চোখের কার্ণিশে জল চিকচিক করছে।সে বিভোরকে এক বিন্দুও অবিশ্বাস করছেনা।বরং কষ্ট হচ্ছে এটা ভেবে যে, বাবা, ভাইদের সামনে আর কখনো উচ্চারণ করার সাহস পাবেনা সে বিভোরকে ভালবাসে।ধারা নিস্তরঙ্গ গলায় বললো,
--- "কি শুনবো?"
শেখ আজিজুর থমকে যান।কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করেন।এরপর বলেন,
--- "ডিভোর্স টা শেষ করে ফেলো।আমরা তোমার আবার বিয়ে দেব।"
ধারাত চোখ থেকে টুপ করে জল গড়িয়ে পড়ে।এতো বড় সিদ্ধান্ত!তবুও সাহস পাচ্ছেনা বলার,আমি বিয়ে করতে পারবোনা আর আমি ভালবাসি বিভোরকে।
ঢোঁক গিলে মনের কথা হজম করে নেয়।বলে,
--- "বলছিলে তোমরা আমাকে দেখতে পারবে।বিয়ের প্রয়োজন নেই।এখন কেনো চাইছো?বোঝা হয়ে গেছি? "
সাফায়েত বলে,
--- "আরেএ না না এসব কিছু না।আচ্ছা বিয়ে দেবনা।আমাদের কাছে থাকবি।ডিভোর্স টা দিয়ে দে।আজাইরা একটা প্রতারক ছেলের বউ হয়ে কেন থাকবি।
ধারার কথা বলতে ইচ্ছে