07/07/2025
অপূর্ণতার কাব্য,
সন্ধ্যা নেমে আসছিল ধীরে ধীরে। শহরের নিয়ন আলোয় যখন রাস্তাগুলো ঝলমল করছে, তখন আমার পৃথিবীটা ডুবে যাচ্ছিল এক গভীর অন্ধকারে। প্রিয়জনের হাত ধরে হেঁটে যাওয়া পথগুলো আজ বড্ড অচেনা লাগছে। প্রতিটি পদক্ষেপে যেন বুক চিরে বেরিয়ে আসছে অব্যক্ত যন্ত্রণা।
আমাদের ভালোবাসার শুরুটা ছিল বসন্তের প্রথম ফুলের মতো স্নিগ্ধ। একরাশ স্বপ্ন আর অগণিত প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমরা একে অপরের হাত ধরেছিলাম। ভেবেছিলাম, এই পথ অনন্ত, এই ভালোবাসা অমর। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সব রঙ ফিকে হতে শুরু করলো। ছোট ছোট অভিমান, ভুল বোঝাবুঝি আর না বলা কথাগুলো যেন দেয়াল হয়ে দাঁড়াল আমাদের মাঝে।
আমি চেষ্টা করেছি, বারবার চেষ্টা করেছি সেই দেয়াল ভাঙতে। কিন্তু তুমি হয়তো ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলে, অথবা তোমার পথটা অন্য কোথাও বাঁক নিয়েছিল। একসময় যে চোখগুলোয় আমার জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা দেখতাম, সেই চোখেই আজ শুধু শূন্যতা। যে কণ্ঠস্বর আমার নাম ধরে ডাকলে হৃদয়ে সুর বাজতো, সেই কণ্ঠেই আজ শুধু নীরবতা।
ভালোবাসা যখন শেষ হয়, তখন শুধু একজনই কাঁদে না। দুজনেই কাঁদে, তবে ভিন্ন উপায়ে। একজন হয়তো চিৎকার করে কাঁদে, তার কষ্টগুলো প্রকাশ পায় চোখের জলে। আর অন্যজন নীরবে কাঁদে, তার কষ্টগুলো চাপা পড়ে যায় হাসির আড়ালে। আমি ছিলাম সেই দ্বিতীয়জন। সবার সামনে হাসিমুখে থাকলেও, রাতের নিস্তব্ধতায় আমার বালিশ ভিজে যেত চোখের জলে।
সবচেয়ে কষ্টকর ছিল সেই স্মৃতিগুলো, যা এখন শুধুই অতীত। তোমার সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি হাসি, প্রতিটি স্পর্শ—সবই এখন তীক্ষ্ণ তীরের মতো বিঁধে। মনে হয় যেন বুকের ভেতরটা কেউ শূন্য করে দিয়েছে। এক বুক শূন্যতা নিয়ে আমি আজ দাঁড়িয়ে আছি একাকী, বৃষ্টির ফোঁটাগুলো আমার চোখের জলের সাথে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। এই বৃষ্টি যেন আমার ভেতরের কষ্ট আর যন্ত্রণার প্রতিচ্ছবি।