13/07/2025
বিদেশে পড়াশুনা এবং সেটেলমেন্টের বাস্তবতা আমি এ পোস্টটাতে লিখেছি ... অনেক তিক্ত কঠিন বাস্তবতা মূলক লেখা এটা, তাই এটা যদি ফেস করা সাহস আপনার থাকে তাহলে পোস্টটা পড়তে পারেন.. না হলে ইগনোর করেন
প্রায় তিন বছর পর ফিনল্যান্ডে থাকা এক বন্ধুর সঙ্গে কথা হল। তিন বছর আগে সে বলেছিল—“ভাই, এখনই ভালোভাবে সেটেল হতে পারিনি” আজো সেই লড়াই চলছে।
জবের সংকট, খাওয়া-দাওয়ার সমস্যা, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা সব মিলিয়ে তার চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট।
বিয়েটা পর্যন্ত করতে পারছে না—কারণ সে জানে, বউকে নিয়ে এলে দুজনকেই না খেয়ে থাকতে হবে।
বলছে—“ভাই, স্পাউস আনলে খাওয়াবো কী? আমি তো নিজেই ঠিকমতো চলতে পারছি না।”
অন্যদিকে জার্মানিতে থাকা আমার আরেক বন্ধু—বছর দুই পর ফোন দিল।
চীনে যখন পড়তে এসেছিল, ক্যাম্পাসের সবচেয়ে প্রাণবন্ত আর মেধাবী ছাত্রদের একজন ছিল সে। এখন জার্মানিতে দিন-রাত পরিশ্রম করে কোনভাবে জীবন কাটছে তার..
ডেলিভারির কাজ করে—একটা সময় সে বলল, “ভাই, সত্যি বলছি—কখনো ভাবিনি, এত পড়াশোনা করে আমি একদিন মানুষের দরজায় খাবার পৌঁছে দেবো।
জার্মানরা আমাদের মানুষই মনে করে না, রেসিজম এমনভাবে চিপে ধরে—মনটাই ভেঙে যায়।
যতটুকু রোজগার করি, তার অর্ধেকের বেশি ট্যাক্স চলে যায়, বাকি দিয়ে বাঁচাটা যুদ্ধ।”
অনেকেই আমাকে দেখে ভাবে—“ভাই তো চায়নায় রঙিন লাইফ কাটাচ্ছে, তার মতো আমরাও যাবো…”
কিন্তু বাস্তবতা কি জানেন?
আমি চীনে এসেছি আট বছর আগে। তখনকার সিচুয়েশন এখনকার সাথে তুলনাই চলে না। এ আট বছরের প্রথম কয়েকটা বছর কতটা ভয়াবহভাবে আমার কেটেছে সেটা সম্পর্কে আপনাদের কোন ধারনা নেই.. আমার কাছের কয়েকটা মানুষ ছাড়া কেউই জানে না কোন কিছু..
আপনি যদি এখন আসেন, আপনার জন্য অনেক সুযোগ অপেক্ষা করতেছে এটা যদি আপনি ভাবেন তাহলে আপনি ভুল করছেন...
চাইনিজ স্টুডেন্টরা যে পরিমাণ দক্ষ আর সংখ্যায় বেশি—কোন কোম্পানি এক বিদেশিকে চাকরি দেবে?
যদি না আপনি Sales বা মার্কেটিংয়ের মত জায়গায় কাজ করেন, তাও টার্গেট-ভিত্তিক—যেখানে আজ আছে, কাল নেই।
প্রতিদিন প্রচণ্ড একাকীত্বে, কাজের চাপে, মানসিক ক্লান্তিতে মানুষটা ভেঙে পড়ে।
আমরা দেশে মন খারাপ করলে বন্ধু পাশে বসে থাকে, মায়ের মুখটা দেখি, ভাইয়ের সাথে গল্প করি—
কিন্তু এখানে? কারো সময় নেই, কেউ বুঝে না, কেউ পাশে দাঁড়ায় না।
মন খারাপ থাকলেও কাজে যেতে হয়, অসুস্থ হলেও রান্না করতে হয়, কাঁদলেও কেউ জানতে পারে না।
আমার এক বড় ভাই চীনে আসার সপ্তাহখানেক পর বাবাকে হারিয়েছিলেন। সে দেশে ফিরতে পারেনি।
অসহায় চোখে, চার দেওয়ালের মধ্যে বসে জানাজা লাইভ দেখেছিল।
জানেন, কী ভয়ানক যন্ত্রণা সেটা?
কয়েকদিন আগে জাপানে এক বাংলাদেশী ছেলে নিঃসঙ্গতায় অনাহারে আর ডিপ্রেশনে মা/রা গেছে..
যা হোক আমি এ দিক থেকে অনেক ভাগ্যবান বলতে পারেন, সপ্তাহে আমার ইনবক্সে ৫০০ এর উপরে মানুষ আমার সাথে কথা বলার জন্য মেসেজ দেয়.. এদের মধ্যে ৪০-৫০ জন এমন মানুষ থাকে যারা শুধুমাত্র আমার সাথে কথা বলবে বা তারা আমার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য মেসেজ দেয়.. আমি যদি ভোর চারটায় ও একটা পোস্ট করি তাহলেও কোনো না কোনো পাগল ঠিকই আমার পোস্টে কমেন্ট করে বা রিএকশন দিয়ে বসে থাকে 😱
এ ২৮ হাজার পরিবারের প্রত্যেকটা মানুষ আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এজন্য দেখবেন আমি ইউটিউবের প্রত্যেকটা কমেন্ট রিপ্লাই করি, ফেসবুকের প্রত্যেকটা কমেন্ট/Massage রিপ্লাই করি... আমি যতই ব্যস্ত থাকি না কেন আমি এই জিনিস করতে কখনো ভুল করিনা আপনাদের অনেক ধন্যবাদ ❤️❤️
💔 আমার ছোট অনুরোধ…
যারা দেশে আছেন, যাদের পরিবারে কেউ বিদেশে আছে—মাসে একবার হলেও ফোন দিন।
একটা প্রশ্ন করুন—
“ভাই/আপু, ভালো আছো তো? আজকে খেয়েছো? মন ভালো আছে?”
এই ছোট্ট কথাগুলো একজন প্রবাসীর জন্য আশীর্বাদ।
তারা আপনাদের মতোই মানুষ, শুধু একটু বেশিই নিঃসঙ্গ।
আর যারা বিদেশে আসতে চান—দয়া করে সোশ্যাল মিডিয়ার রঙিন ছবি দেখে সিদ্ধান্ত নিন না।
এজেন্সির মধুর কথায় ভেসে যাবেন না।
বিদেশ মানে প্যারাডাইস না, বরং শুরুটা হয় যুদ্ধের একেবারে প্রথম দিন থেকে।
বিদেশে থাকাটা বিলাসিতা না—এটা একটা পুরোপুরি সারভাইভাল মিশন।
যেখানে আপনি প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করতে করতে নিজের আবেগকে হারিয়ে ফেলেন।
তবুও লড়াই চলতেই থাকে।
🔁 যদি এই লেখাটা আপনার মনের কথা হয়, প্লিজ শেয়ার করুন।
হয়তো কোনো মা-বাবা বুঝতে পারবেন কেন ছেলেটা 2 দিনে ফোন করে না।
হয়তো কোনো বন্ধু বুঝবে কেন বিদেশি বন্ধুটা চুপচাপ হয়ে গেছে…
NB: যা হোক দিন শেষে এটা আমি কখনোই বলবো না যে আপনি বাংলাদেশ থেকে বাইরে আসবেন না বা বাইরে দেশে স্যাটেল হবেন না ... আমি অবশ্যই আপনাকে বলব better লাইফস্টাইল আপনাকে খুঁজতে হবে পরবর্তী জেনারেশনের জন্য কিন্তু এটাও মাথায় রেখে বিদেশে আসতে হবে যে এখানে আপনার লাইভ প্রচন্ড কষ্টের মধ্য দিয়ে যাবে ওই মানসিক এবং শারীরিক স্থিতিশীলতা নিয়েই তারপরে বিদেশে আসবেন এবং আপনাদের পরিচিত প্রবাসে যারা রয়েছে তাদেরও খোঁজ খবর এবং মানসিক স্বাস্থ্যর ব্যাপারটা আপনাদের মাথায় রাখতে হবে তাদেরকে সাহায্য করুন .. সহযোগিতা করুন .. সাপোর্ট করুন
🌸 Want To Study Abroad: Explore With Azam
☠️ Naem Azam Chowdhury
Security Researcher, China 🇨🇳