21/07/2024
মানব জীবন নির্দিষ্ট জীবনধারা অনুসারে প্রবাহমান। আমি যেহেতু এই মানব কুলের অতি নগণ্য একজন মানুষ সেই হিসেবে উক্ত ধারা অনুযায়ী আমাকেও চলতে হয়! এর ব্যতিক্রম নয়।
প্রচলিত একটি কথা আছে "আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে" একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বাস্তব কথা। কারণ আমরা প্রত্যেকেই রাজা , যে যার রাজ্যে। সেখানে আমরা কল্পনাই অসম্ভব সুন্দর। কল্পনার জগতে আমাদের জীবনটা কত যে রঙিন! আহ্ কি দারুণ। এই রঙিন ভূবনে রাজা-রানী , বাদশা, উজির, নাজির, রাজপ্রাসাদ এককথায় কোন কিছুরই সেখানে অভাব থাকে না।
একই ভাবে আমার কাল্পনিক জগতে একটা পরিপূর্ণ রাজ্য ছিল, যে রাজ্যে ছিলোনা কোন কিছুর অভাব। একদিন হঠাৎ ঐ কল্পনার রাজ্যে একজন বাস্তব 'রানীর' আগমনে রাজপ্রাসাদ যেনো নানা প্রজাতির জোনাকির আলোয় আলোকিত!
আপনি হয়তো ভাবতে পারেন,রাজ্যে যখন রানীর প্রবেশ তাহলে সেখানে কেন ঝলমলে আলোর পরিবর্তে রাতের আঁধারে ঘুটঘুটে অন্ধকারে জোনাকির আলোয় কেন আলোকিত হলো, ঠিক ধরেছেন এখানেও একটি বিশেষ কারণ রয়েছে।
আমি যখন রাজার ভূমিকায় রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পায়চারী করছিলাম তখন সেখানে রানীর আগমন, আর তখনই আমি রানীকে দেখে তার প্রেমে মাতোয়ারা।
হ্যাঁ, চিরাচরিত নিয়মে মানুষ হয়তো কারোর সুন্দর হাঁসি , সুন্দর চেহারা অথবা সুন্দর কোন গুণাবলী দেখে প্রেমে মাতোয়ারা হয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উল্টো ঘটনা ঘটলো। আমি প্রেমে পড়লাম তার চোখের কাজল গড়ানো অশ্রু দেখে !
একদম সত্য, আপনি যদি লক্ষ করেন তাহলে দেখতে পাবেন, এই কথা বলতে গিয়ে আমার শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেছে। অনেক দিন পর প্রিয় মানুষের কষ্টের কথা মনে করতেই আমার চোখে জল এসে গেল, একটুখানি অপেক্ষা করুন, আমার চোখ মুছে বাকিটা বলছি।.............
চলুন এবার মূল কথায় আসি, যে কথাটা পূর্বেই বলেছিলাম যে উজ্জ্বল ঝলমলে আলোয় আলোকিত কোন সুখ দেখে আমি তার প্রেমে পড়িনি, অর্থাৎ আপন করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার দুঃখে দুঃখিত হয়ে । তার কাজল ভেজা চোখ দেখে তাকে ভালোবেসেছি।
তাইতো আমার রাজপ্রাসাদে নানা প্রজাতির জোনাকির আলোয় আলোকিত কিন্তু চারপাশে ঘুটঘুটে রাতের অন্ধকার।
আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম ঐ পটল চেরা চোখ দুটো যেন কখনো আমার দ্বারা অশ্রু সিক্ত না হয়। চোখের কাজল যেন আর মুছে না যায়।
তার চেহারা যেন সবসময় থাকে হাস্যোজ্জ্বল।
এই প্রত্যয় নিয়ে আমাদের নতুন পথচলা।
রাজা-রানী এক বাস্তব রাজ্যে পদার্পণ করলো তবে রিক্ত হস্তে। আর্থিক অসচ্ছলতা থাকলেও দুইটি প্রানের একটি স্বপ্নময় হৃদয় ও দুই জোড়া কর্মোঠ হস্তকে পুঁজি করে শুরু হয় বেঁচে থাকার লড়াই।
নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে চলতে থাকে জীবনের গতি ধারা। সমাজের অনেক মানুষের আইডল হয়ে উঠলাম দুইটি প্রাণ। মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়ে জীবনের সকল কষ্ট ভুলে থেকে চলতে শুরু করলাম উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায়।
রাজার জীবনে কাল্পনিক রাজ্য থাকলেও বাস্তব জীবনে রাজা ছিল রাজ্য হীন।
রানীর সংস্পর্শে এসে রাজা পেলো পূর্ণতা!
রানীর বুদ্ধিমত্তা এবং রাজার কর্মমুখী মনোভাবে ঘটতে থাকে রাজ্যের প্রসার।
রানী এই সমাজের আর পাঁচজন মেয়ের মতো ঠুনকো স্বভাবের মতো নয়। রানীর কাছে যে কোন কথা নির্দ্বিধায় বলে নিশ্চিত হওয়া যায়, কারন সে অন্য মেয়েদের মতো পেট পাতলা নয়, সে সামাজিকতা বোঝে, সবার সাথে মিলেমিশে চলতে পছন্দ করে। কারো ভুল হলে সে বুঝিয়ে শুধরে দিতে চেষ্টা করে, তার স্বভাবের মধ্যে রাগ বা জিদ খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল।
রানীর উক্ত মানসিকতা রাজার হৃদয়ে মহানায়িকা হিসেবে স্থান করে দিয়েছে।
এতো কথা বলে ফেললাম কিন্তু রানীর নাম জানতে চাইলেন না যে?
দাঁড়ান বলছি,
না থাক,
অন্য কোন একদিন না হয় বলবো এই প্রিয় নামটি।
হাঁ হাঁ হাঁ।
চলুন মূল কথায় ফিরে যায়।
একখানা গায়ের জোরে প্যাডেল কষে চলা সাইকেলে ভর করে শুরু হয় টোনা টুনির সুখের সংসার। হঠাৎ একদিন একটা নতুন মোড় নিতেই পরিবর্তন হলো রাজার চিন্তা ভাবনা।
কারণ সবাই যার যার একটি নির্দিষ্ট চিন্তা নিয়েই চলে , যায়হোক চিন্তা ভাবনাটা গোপন আছে গোপনই থাক,
রানীর বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে রাজার সম্পুর্ণ ভরসা আছে বলেই রানীর সকল সিদ্ধান্তে রাজা হ্যাঁসূচক মন্তব্য প্রদান করেন।
রাজা নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে , দেশ থেকে দেশান্তরে রানীর সিদ্ধান্তে সম্মান প্রদর্শন করেই জীবনের গতিপথ প্রবাহিত করবে।
হঠাৎ দীর্ঘদিনের একটা গ্যাপ আসলেও নতুন করে শুরু হলো রাজা-রানীর একত্রে থাকা নতুন জীবন । দুষ্টু মিষ্টি প্রেমে, মিষ্টি মিষ্টি ঝগড়া, একটু ভুলবোঝাবুঝি সবকিছু মিলিয়ে একজন অন্যজনের কলিজা।
এভাবেই চলতে শুরু হলো জীবনের দীর্ঘ পথ।............................ [ গল্পকার ইয়ামিন হাসান]
(পরবর্তী ঘটনা বিস্তারিত জানতে, কমেন্ট করুন।
পরবর্তী পর্ব পাঠে অপেক্ষা করুন।)