21/07/2025
একটা বোতাম চাপলেই ফিরে যেতে পারতেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির।
ফিরে যেতে পারতেন পরিবারে, জীবনের কাছে।
নিজেকে বাঁচানোর সুযোগ তাঁর ছিল।
জরুরি পরিস্থিতিতে প্যারাসুট নিয়ে বিমানের ককপিট ত্যাগ করা সম্ভব ছিল তাঁর পক্ষে, কিন্তু তিনি তা করেননি।
শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন বিমানটিকে জনবহুল এলাকা থেকে দূরে নিতে, যেন তাঁর মৃত্যু অন্তত আরও মৃত্যুর কারণ না হয়।
তাঁর চালানো বিমানটি ছিল একটি পুরনো F-7 যুদ্ধবিমান—একটা ভাঙাচোরা প্রযুক্তি, যার আসন ২০২৫ সালের আকাশে থাকার কথা নয়। তবু সেটিই উড়ছিল, কারণ দুর্নীতি এখনও উড়ছে এই দেশের আকাশে। আর সেই দুর্নীতির ভার বইছে সাহসী তরুণেরা, যাদের কাছে জীবন মানেই কর্তব্য, আত্মত্যাগ, নিঃস্ব হয়ে যাওয়া।
তৌকির আকাশে মারা যাননি।
তিনি মরে গিয়েছিলেন সেই দিন,
যেদিন বাজেট চুরি হয়েছিল,
যেদিন সিদ্ধান্ত হয়েছিল ১৯৭৬ সালের বাতিল যুদ্ধবিমান দিয়েই চলবে আধুনিক যুগের প্রশিক্ষণ।
এই রাষ্ট্র তাঁর জন্য রাখেনি নিরাপত্তা,
রাখেনি বিকল্প—
শুধু রেখে গেছে মরচে ধরা লোহা, বিপজ্জনক মিশন, আর এক তরুণ অফিসারের নিশ্চিত মৃত্যু।
উত্তরার এই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তৌকির একা নন, প্রাণ হারিয়েছেন আরও নিরপরাধ মানুষ, আমাদের কলিজার টুকরো সন্তানেরা।
আমরা তাঁদের সবার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি, তাঁদের পরিবার-পরিজনের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা। আহতদের জন্য দোয়া করি, আল্লাহ যেন তাঁদের দ্রুত আরোগ্য দান করেন, আমিন।
আর যেন কোনো তৌকিরকে, একটা মরচে ধরা বিমানের সঙ্গে জীবন বিসর্জন দিতে না হয় 🙏।