06/05/2024
ফিনল্যান্ডে শুধুই সুখ, দুঃখ নাই কি? আছে
আপনি শুধু জানেন ফিনল্যান্ড সুখী দেশ,বেশি বেশি সুখ। সুখের গল্প সবারই জানা, আজ একটা দুঃখের গল্প করি।
ফিনল্যান্ডে মানুষের বয়স যত বাড়ে নিঃসঙ্গতা ততটাই বাড়তে থাকে। যেমন ১৮ বছরের পর থেকেই ছেলে মেয়েরা যার যার মতো করে জীবন এবং অন্যত্র বসবাস করা শুরু করে। ছেলে মেয়ের বয়স ২৫/৩০ পেরোলো সাধারণত মা বাবার সাথে থাকে না। ৩০ বছর বয়স অথচ মা-বাবার সঙ্গে থাকে, আমি কিরণ ফিনল্যান্ডে যতদিন আছি কখনো চোখে দেখিনি বা কাহারও কাছে শুনিওনি।
ছেলে মেয়ের বয়স যখন ১৮ বছর হয়ে যায় তখন লিগ্যালি তারা ডিসিশন নিতে পারে। অর্থাৎ আপনার সন্তানকে তার ডিসিশনের ওপর ছুরি ঘোড়াতে পারবেন না। উদাহরণস্বরূপ, আপনার সন্তান যদি মনে করে সে বিয়ে করবে আপনি তার বিয়ে বন্ধ করতে পারবেন না। আপনি বলতে পারবেন পর্যন্ত। তাই বলে ছেলে মেয়েরা বাবা-মার কথা শোনে না বিষয়টা এমন না। এই মেয়েরে বিয়ে করলে আমি বিষ খাব গলায় দড়ি দেবো -- বাংলাদেশের মতো এমন না।
বাবা মায়ের নিঃসঙ্গতা মূলত শুরু হয় ১৮ বছরের পর থেকেই। কিন্তু বয়স বা শক্তি সামর্থ্যের কারণে সে সময় অনুভব না হলেও বয়স যখন ৪০/৫০/৬০ বা একটা সময় যখন অসুস্থতা শরীরে জেকে বসে তখনই নিঃসঙ্গতার মাত্রা অনুভব হয় বেশি।
আমাদের দেশে বাবা মায়ের বয়স হয়ে গেলে যেমন নাতিপুত্র নামাজ কালাম এবং সমাজের অন্যান্য ব্যস্ততা বা পারিবারিক ব্যস্ততাই নিজেরা সময় কাটায় এখানে এরকম হওয়ার সুযোগ নেই। বুড়া বুড়ি আলাদা থাকতে হয়, একজন আরেকজনের প্রিয় বন্ধু, কেউ যদি মারা যায় তাহলে অন্যজনের অবস্থান বৃদ্ধাশ্রম ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন অপশন নেই। ছেলেমেয়েরা দেখতে আসে, দেখা পর্যন্তই।
বাস্তব একটা উদাহরণ শেয়ার করি। আমি যে বিল্ডিং এ থাকি ওই একই বিল্ডিং এ এক ভদ্রমহিলা থাকে উনি ফিনিশ নাগরিক। আমার বাচ্চাটাকে যখন সে দেখে এতটাই ভালোবাসে, এতটাই স্নেহ করে এতটাই আদর দেয় যে প্রতিটা সময় সে তার নাতি পুত্রের গল্প করে এবং তার কথা থেকে বুঝতে পারি সে grand children দের খুব মিস করে। তার কথার মাঝে নিঃসঙ্গতা খুঁজে পাই, বলতে পারে না তার এ জীবন ভালো লাগেনা। বুঝতে পারি।
যুগের পর যুগ এমনটাই চলে আসছে। যাহোক ফিনল্যান্ডে যতই সুখ থাকুক না কেন সুখের অন্তরালে দুঃখও আছে অনেক।
আশা করি বোঝাতে পেরেছি।
Kiron Munem
Finland