
09/03/2025
আমরা যখন তোমাকে নিয়ে অনলাইন টনলাইন ইত্যাদিতে খুব কান্নাকাটি করছি, তুমি কিন্তু ততক্ষণে সবকিছু থেকে দূরে, একটা পাখি হয়ে উড়ে গেছো মায়ের চিরপরিচিত বুক ছেড়ে।
তোমার আট বছর বয়সী কচি শরীরটা ছিল ক্ষতবিক্ষত, রক্ত ঝরেছে একটানা; তোমার কচি বুকে- গলায় নখের আঁচর আবিস্কার করে ডুকরে উঠেছিল তোমার মা। তোমার হতবিহ্ববল বড় বোন তোমার ছোট্ট শরীরে হাত বুলিয়ে বুলিয়ে আরাম দিতে চেয়েছিল!
তখন তোমার খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তখন তোমার শরীরের নিচের অংশ ব্যাথায় অবশ। আর তোমার সমস্ত মন ভয়ে আতংকে নিঃসার। তুমি চোখ মেলতে পারো নাই। যদি চোখ মেলতে, তবে দেখতে পেতে, মায়ের এক জোড়া জলভরা করুণ উদগ্রীব চোখ তোমাকে দেখছে। সেই মা, যে তার মণিকে তিল তিল করে গর্ভে নিয়ে ঘুরেছে নয় মাস। এরপর এক রক্তস্রোতের ভেতর দিয়ে তোমার জন্ম হয়েছে। তুমি বড় হয়েছ মায়ের হাতের তালুতে, বুকের ওমে ওমে, নিঃশ্বাসের ভেতরে।
সেই মণি কি ম*রে গেল? মা তো তাকে হাতের পাতায়, বুকের খাঁজের খুব কাছে আটকে রাখতে চেয়েছিল, ডাক্তারের কাছে অনুময় বিনয় করেছিল বার বার। হতবাক ডাক্তার তখন তোমার ছিঁড়ে ফেড়ে যাওয়া কচি যোনী সেলাই করছেন সূঁচ দিয়ে। কত শত ওষুধ দিচ্ছেন। অক্সিজেন মাস্ক আনছেন। ছুটছেন। কাঁপছেন। একটা রোগা দুর্বল কচি শরীর কি দ্রুত গতিতে ধেয়ে যাচ্ছে বেহেশতের দিকে, কি দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে মায়ের সময়...
মায়ের মণির রক্তাত্ত ছেঁড়া শরীর হাতে নিয়ে ডাক্তার ভাবে, আর কত কত যোনী সেলাই করে তবে তার ছুটি হবে? কবে তার মুক্তি মিলবে?
[অনেকেই জানিয়েছে মাগুরার বাচ্চাটা লাইফ সাপোর্টে। অবশ্য আমি জানি না, এই বেঁচে থাকা আসলে কেমন বেঁচে থাকা! ]