24/07/2025
🔥 এক ইতিহাস, এক অনুপ্রেরণা — সিন্ধি হিন্দুদের মহাকাব্য 🔥
বেদনা ছিল, ঘর ছিল না। কিন্তু আত্মসম্মান ছিল অটুট।
ঘর ছিল না, সম্মান ছিল
ঘর পুড়েছিল। মন্দির ভাঙা হয়েছিল। ভাষা উপহাসিত হয়েছিল।
তবুও, সিন্ধি হিন্দুরা রাস্তায় নামেনি।
ভিক্ষা নয়, হাঙ্গামা নয়, কোনো দাবিও নয়।
একটাই কথা— "নতুন করে শুরু করব। এখনই।".. এবং তারা তাই করেছিল।
এক রাতেই শেষ
১৯৪৭ সালের এক গরম সন্ধ্যা।
সিন্ধে হাসিমুখে রাতের খাবার খাচ্ছে পরিবারগুলো।
পরদিন সকালে… সবকিছু পাল্টে যাবে। চিরদিনের জন্য।
সেই ভয়াবহ দরজার শব্দ
"পালাও!" — এক মুসলিম প্রতিবেশীর সতর্কবার্তা।
গয়না হাতে, ছেঁড়া কাপড়ে, কাঁদার সময়ও ছিল না।
কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ রাত্রির পোশাকে।
সিন্ধ আর তাদের ছিল না।
এক ভাইয়ের শেষ স্মৃতি
মাত্র ১০ বছরের এক ছেলে দেখল, তার দাদা গুরুদোয়ারার সামনে গুলিতে লুটিয়ে পড়েছে।
সে কাঁদেনি। ছোট বোনকে নিয়ে পালিয়েছে।
আজ ৮৫ বছর বয়সেও সেই স্মৃতি ঝাপসা হয়নি।
তবুও সে তৈরি করেছে ৪টি দোকান। এক নতুন ভবিষ্যৎ।
বিদায়, সিন্ধু মা
পবিত্র সিন্ধু নদীর দিকে শেষবার তাকিয়ে ছিল তারা।
না ছিল বিদায়ের সময়, না ছিল শেষ প্রণাম।
একটা মাটির টুকরো, যা ছিল বিশ্বাস, শৈশব, ও পরিচয়ের প্রতীক।
হাভেলি থেকে খাপড়া ঘর
ভারতে তাদের জন্য ছিল না কোনো সংবর্ধনা।
"রিফিউজি" ট্যাগটা যেন চিরস্থায়ী দাগ হয়ে গেল।
শাড়ি ধার করে, ধুলোর মধ্যে বাস শুরু।
ভাষা নিয়ে হাসাহাসি। চোখে অপমান।
যাদের কোনো রাজ্য নেই
বাঙালির ছিল পশ্চিম বাংলা।
পাঞ্জাবির ছিল পূর্ব পাঞ্জাব।
কিন্তু সিন্ধি হিন্দুরা?
কোনো রাজ্য নয়। কোনো রাজনৈতিক কণ্ঠ নয়।
শুধু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে— উলহাসনগর, আজমের, গান্ধীধাম, আদিপুরে।
হারাতে হারাতে হারিয়ে যাওয়া ভাষা
ছেলে-মেয়েরা জন্ম নিয়েছে অন্য রাজ্যে।
হিন্দি, গুজরাতি, মারাঠি— নিয়েছে জায়গা।
"সিন্ধি বলো" — বলত ঠাকুরমা।
কিন্তু ভাষাটা মুখে নয়, মনে খুঁজতে হয় এখন।
তবুও তারা উঠে দাঁড়াল
কোনো সাহায্য ছাড়াই— ব্যবসা গড়ে তুলল।
দোকান, স্কুল, মন্দির, হাসপাতাল— সব নিজেরাই করল।
অশ্রুজলই হয়ে উঠল তাদের সাফল্যের সিমেন্ট।
শরণার্থী থেকে হয়ে উঠল শিল্পপতি।
তারা শুধু ব্যবসায়ী নয়, তারা ভারত নির্মাতা
জয় হিন্দ কলেজ। হিন্দুজা হাসপাতাল। নারী শক্তি ট্রাস্ট।
উলহাসনগর থেকে লন্ডন, আজমের থেকে ক্যালিফোর্নিয়া—
তারা তৈরি করেছে স্কুল, পাঠাগার, কমিউনিটি কিচেন।
দানে, চুপিসারে— এক বিপ্লব।
কোটার পেছনে নয়, কর্মে বিশ্বাসী
কোনো রাজনৈতিক জোট নয়। কোনো হাঙ্গামা নয়।
যে ভাষা দরকার, সেই ভাষা শিখেছে।
যে শহরে গেছে, সেখানেই শিকড় গেড়েছে।
শুধু কর্ম। আত্মসম্মান। ধর্ম।
এল. কে. আদবানি: এক শূন্যতা থেকে শিখরে
করাচিতে জন্ম। দেশভাগে ছিন্নমূল। শিবিরে বেড়ে ওঠা।
ছিল না কিছু— কেবল ছিল সংকল্প।
তিনিই তৈরি করলেন বিজেপির ভিত্তি।
আজকের ভারত গড়ার অন্যতম কারিগর।
সিন্ধ আজও বেঁচে আছে হৃদয়ে
আজও সিন্ধি বৃদ্ধারা বলেন, “আমাদের মসজিদ আর মন্দির পাশাপাশি ছিল।”
রেসিপিতে, লালাবাইয়ে, শাড়ি পরার ভাঁজে— সিন্ধ এখনো জেগে আছে।
📜 এটা শুধুই ইতিহাস নয়— এটা জীবনচর্চার মানচিত্র
সিন্ধি হিন্দুদের গল্প শুধু বেদনার নয়।
এটা আত্মসম্মানের কাব্য। স্থিতধীর শোকের অনুপ্রেরণা।
তারা দাবি করেনি, তারা দিয়েছিল।
এটাই বাঁচার উপায়— মর্যাদা নিয়ে।
---
একটা জাতির ঘুরে দাঁড়ানোর গাথা— আজকের ভারতকে জানাতে হবে।
Credits Dibyendu Dalal