24/07/2025
আমি যখন আমার বাচ্চা টাকে খাইয়ে দিচ্ছি,আদর করছি তখন আমার মাইলস্টোনের বাচ্চাদের জন্য কি যে কষ্ট হচ্ছে সেদিন থেকেই! এই কষ্ট আমরা সহ্য করতে পারছি না ।বাচ্চাদের মা বাবারা না জানি কত কষ্টে সময় পাড় করছে।আল্লাহ, এদেরকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন, বাবা মাদের অন্তরকে আপনার কুদরতের স্পর্শেশীতল করে দিন।
একটা বাচ্চা শুধু তার মা-বাবার অস্তিত্ব নয়, অভ্যাসও বটে ❤️ সন্তান জন্মাবার পর দুটো মানুষের (মা-বাবা) জীবনই যেন পাল্টে যায়। বাচ্চাকে খাওয়ানো, গোসল করানো, ঘুম পাড়ানো এগুলো যেন প্রাত্যহিক জীবনের একেকটা রোমাঞ্চ হয়ে ওঠে। আস্তে আস্তে বাবুগুলো গুটিগুটি পায়ে হাঁটতে শেখে, আধোআধো বোলে মাম্মা - পাপ্পা বলতে শেখে। একেকটা দিন করে বাচ্চা যত বড় হয় বাচ্চার প্রতি মায়া যেন জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে। কখনো কখনো বাচ্চার দুষ্টুমিতে একটু-আধটু রাগ ঠিকই ওঠে কিন্তু ও একটু অসুস্থ হলেই বলি, " সোনাবাবা আমার ওঠ দৌড়াদৌড়ি কর, সব এলোমেলো কর তোকে কিচ্ছু বলবোনা 😰"
আদরের সোনামণিটা যত বড় হয় আস্তে আস্তে তাকে কেন্দ্র করে আমাদের স্বপ্নগুলোও দানা বাঁধতে থাকে। একটা সময় বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করাই। ছোট্ট একটা পুতলসোনা কি সুন্দর করে যে ঘাড়ে স্কুলব্যাগ আর হাতে পানির পট নিয়ে বাবার হাত ধরে স্কুলের গেটে ঢোকে। স্কুলে যাওয়ার সময় আবার ফিরে তাকিয়ে টাটা দেয়, কখনো দৌড়ে ফিরে এসে নিজের মাম্মি/পাপার গালে পাপ্পি দিয়ে বলে " আমার কিন্তু অনেক ভয় করে, তুমি কিন্তু এখানেই থেকো - কোথাও যেওনা "
এভাবেই শুরু হয় সোনামণিদের স্কুল লাইফ, মা-বাবার নতুন ডায়নামিক লাইফ। বুক ভরা আশা, চোখ ভরা স্বপ্ন ~ একদিন ছেলে/মেয়ে আমার মস্ত বড় অফিসার হবে ❤️
মাইলস্টোন ট্রাজিডিতে হারিয়ে যাওয়া অনেক সোনাবাচ্চার মা-বাবারই হয়তো স্বপ্ন ছিল তাদের সন্তান বড় হয়ে মস্ত বড় পাইলট হবে, পরিবার ও দেশের নাম উজ্জ্বল করবে 💔
কিন্তু একটা বিমানই যে তাদেরকে..........😭
একটাবার ভাবুন, একটা বাচ্চাও কি কল্পনাতে প্রস্তুত ছিল? মাত্র ৫ মিনিট পরই ছুটি। কি মজা নিশ্চয়ই স্কুলের গেটে আম্মু দাঁড়িয়ে আছে। "জানিস বন্ধু আজকে স্কুলে আসার আগে আম্মুকে বলে এসেছি চিকেন রান্না করতে, গিয়ে খুব মজা করে খাবোরে”..
আহা! আমাদের বুকের ধনগুলো শেষবারের মত মায়ের হাতের রান্নাটাও খেতে পারলোনা 💔😭
আহা জীবন! আহা নিয়তি!
সন্তান বিয়োগের যে ব্যথা তা এই হতভাগ্য মা-বাবা গুলো কিভাবে সইবেন জানিনা, আর তাদেরকে স্বান্ত্বণা দেয়ার আদিখ্যেতাও আমি দেখাবোনা। কারণ পৃথিবীতে যদি নরকের কোন অস্তিত্ব থেকে থাকে তা হচ্ছে নিজের কলিজার টুকরা সন্তানের বিয়োগ। এনাদের ঘোর আর কখনো কাটবেনা। হয়তো অফিস থেকে হঠাৎ একদিন স্বামী তার স্ত্রীকে কল করে বলবেন, 'এ্যাই শোন আজ তো অফিসে জরুরী একটা মিটিং আছে তাই আমি যেতে পারবোনা, তুমি বাবুর স্কুলে গিয়ে ওকে নিয়ে এসো কেমন " ওপাশ থেকে স্ত্রীর নিরবতায় হয়তো একসাথে দুজনে হাউমাউ করে কেঁদে উঠবেন। অন্যান্য দিনের মত হয়তো কোন মা ভোরবেলা উঠে নাস্তা বানিয়ে, বাবুর ব্যাগ গুছিয়ে বাবুকে ডাকতে গিয়েই পরক্ষণেই চিৎকার করে কেঁদে ফেলবেন। বাবু যা যা খেতে পছন্দ করতো তা হয়তো এই মা-বাবাগুলো আর কোনদিন খাবেনা, বাবুর পছন্দের জায়গায় আর কোনদিন ঘুরতে যাওয়া হবেনা। সব থেকেও কি যেন নেই, কি যেন নেই করতেই কেটে যাবে তাদের বাকিটা জীবন।হে আল্লাহ আপনি দুর্ঘটনা কবলিত প্রতিটি সন্তানকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত করুন, ওদের মা-বাবার অন্তরকে শোক বহন করার জন্য উপযুক্ত করে দিন ~ আমিন ❤️
একটা অনুরোধ, এই বাচ্চাগুলোকে আপনারা কেউ মৃ*ত বলবেন না। স্বয়ং আল্লাহই শহীদদের মৃ*ত বলতে মানা করেছেন। তারা বেঁচে থাকবে তাদের মা-বাবার প্রতিটি নিঃশ্বাসে, প্রতিটি অভ্যাসে ❤️
সংগ্রিহিত(collected)
#মাইলস্টোন কলেজ, ঢাকা উত্তরা।
২১ জুলাই ২০২৫ ( ইতিহাসের কালো অধ্যায়)