
26/05/2025
প্রিয় বোনেরা,
তোমরা যারা শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে মেনে নিতে পারো না, বিয়ের পরদিনই আলাদা হয়ে থাকার কথা বলো।
তোমাদের বলি, তোমরা নিজেরাই বুঝতে পারছো না, কত বড় ভুল করছো। কারণ, স্বামীর বাবা-মা বা পরিবার তোমার জন্য হতে পারে এক বড় সম্পদ।
আজ তুমি একা, কিন্তু যখন তোমার একটা সন্তান হবে, তখন বুঝবে এই মানুষগুলো কতটা কাজে আসতে পারতো। যখন বাচ্চা সারারাত কাঁদবে, তখন তুমি নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো সময়ও পাবে না। টয়লেটে যাওয়া, খাওয়া, এমনকি নিজের সৌন্দর্যের কথাও ভুলে যাবে। তোমার পৃথিবী সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে একটা ঘরের মধ্যে।
তোমার স্বামী সারাদিন অফিস করে, বাজার করে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরবে। তুমি মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতেও পারবে না।
যদি তোমার সিজার হয়, তবে পরদিনই তোমাকে বিছানা থেকে উঠে বাচ্চা কোলে নিতে হবে, ডায়াপার পরাতে হবে, খাওয়াতে হবে। তখন মনে হবে, যদি কেউ পাশে থাকতো, একটু গরম খাবার দিত, একটু কথা বলার মতো কেউ থাকতো, বাচ্চাটা একটু নিত, তাহলে কতটা উপকার হতো। তখন বুঝবে, তুমি সবকিছু একা করে কতটা ক্লান্ত।
এই অবস্থায় তুমি হঠাৎ করে হতাশায় (ডিপ্রেশন) ভুগতে পারো, বুঝতেই পারবে না কী হচ্ছে তোমার সাথে।
আমরা যতই বাবার বাড়িকে আপন ভাবি না কেন, আসল পরিবার হয় স্বামী আর তার পরিবার। কথাটা ছোট হলেও এর গভীরতা অনেক।
একবার যদি তুমি স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি ফিরে যাও, তখন যখন মানুষ নানা কথা বলবে, সেটা তুমি সহ্য করতে পারবে না।
সব সমস্যার সমাধান মিলতে পারে যদি তুমি স্বামীর পরিবারকে নিজের পরিবার ভাবো, আপন করে নাও। তাহলেই সব সহজ হয়ে যাবে। এই পৃথিবীতে কেউ খারাপ হয়ে জন্মায় না, পরিস্থিতিই মানুষকে খারাপ বানিয়ে ফেলে।
একজন মা তার সন্তানকে অনেক কষ্টে বড় করেন। আর তুমি বিয়ের পরদিনই আলাদা হয়ে থাকতে চাও! তখন তোমার কাছে স্বামীর পরিবারই খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু একদিন তুমি নিজেই মা হবে, আর কেউ যদি তোমার ছেলেকে তোমার থেকে আলাদা করতে চায়, তখন তুমি সেটা মানতে পারবে?
একদিনে কিছুই বদলায় না। ভালোবাসা, বিশ্বাস আর ধৈর্যের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাই ধৈর্য ধরো, কথায় কথায় ঝগড়া নয় সমঝোতা খুঁজে বের করো।
আমি বিশ্বাস করি, তুমি অনন্য। তুমি চাইলে সব কিছুই পারো। বাবার বাড়ি আর শ্বশুরবাড়ির মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখতে পারো। ভালো ব্যবহার দিয়ে মন জয় করে নিতে পারো। তখন একা থাকলেও কেউ তোমার পাশে দাঁড়াতে পিছপা হবে না, বরং সবাই এগিয়ে এসে তোমাকে সাহায্য করবে।
একটা বিষয় কখনও ভুলে যেও না, তোমার সন্তানের জীবনেও দাদা-দাদীর ভালোবাসা, শিক্ষা আর ছায়া থাকা ভীষণ জরুরি।
তারা শুধু পরিবারের অভিভাবকই নন, তারা হয় এক নির্ভরতার আশ্রয়, জীবন অভিজ্ঞতার শিক্ষক, আর নিঃস্বার্থ ভালোবাসার উৎস। তুমি যখন ব্যস্ত থাকবে, ক্লান্ত থাকবে, তখন সেই বৃদ্ধ মানুষগুলোর স্নেহভরা কোলে তোমার সন্তান খুঁজে পাবে নিরাপত্তা, শিখবে আদব-কায়দা আর পারিবারিক মূল্যবোধ।
কলমে✍️: Rumana Yasmin
#পরিবার_হোক_ভালোবাসার_জায়গা
#শ্বশুরবাড়ি_শত্রু_নয়
#মাতৃত্বের_ভ্রমণ
#ভালোবাসা_ও_সম্মান