09/08/2025
মৌসুমি, শাবনুরের পরে আমার আর কাউকে নায়িকা মনে হয়নি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি আমি অপু বিশ্বাস আর বুবলির কোনো মুভি দেখিনি।
আসলে যখন অপু বিশ্বাসের রাজত্ব তখন আমি অনার্সে পড়ি, হোস্টেলে থাকি, এদিকে শাকিবের মেকাপ করা আলু চেহারা দেখার রুচিই হয়নি আর।
তাই আলদাভাবে অভিনেত্রী হিসাবে বা নায়িকা হিসাবে এদের কোনো মার্ক দিতে পারছি না। আবার সমালোচনাও করছি না।
তবে নারী হিসাবে যেটা কানেক্ট করতে পারছি সেটা হচ্ছে অপু বিশ্বাসের কষ্ট। মেয়েটা চলচিত্র জগতে এলো, শাকিবের সাথে মুভি করল, প্রেম করল, বিয়ে হলো, সংসার করল, সন্তানের মা হলো। একেবারে সাধারণ মেয়েদের মতো প্রেম, বিয়ে, সংসার, সন্তান।
শাকিব খানের সাথে অপু বিশ্বাসের টিনেজ বয়স থেকে পরিণত বয়স পর্যন্ত একটা আত্মীক সম্পর্ক তৈরি হলো, যেটা বিচ্ছেদের পরও সে ভুলতে পারেনি। যতই সুন্দরী, গ্ল্যামারাস নায়িকা হোক দিন শেষে কিন্তু সেও আমার আপনার মতো রক্তে-মাংসে গড়া স্বাধারণ নারী। নারীরা একদিন সংসার করা স্বামীকে ভুলতে পারে না। এই জন্যই আমরা নারী। মমতা, মায়া আর প্রেম দিয়ে ঘেরা।
একজন পুরুষ একজন নারীকে, অথবা একজন নারী একজন পুরুষকে তখনই ত্যাগ করে যখন তার বিকল্প কেউ থাকে। না হয় যতই অভিযোগ বা অনুযোগ থাকুক কেউ কাউকে ছেড়ে যায় না।
ঠিক কোন মুহূর্তে শাকিব খান অপু বিশ্বাসকে ছেড়ে গেছে চিন্তা করতে পারেন। ফিগার হারিয়ে, ক্যারিয়ার হারিয়ে একটা মেয়ে যখন ভালোবাসার ফসল সন্তান জন্ম দিয়েছে। সন্তান জন্মের পর মেয়েদের কত ধরনের মানসিক ট্রমা থাকে, শারিরীক সমস্যা থাকে সে সময় মেয়েরা স্বামীর ভালোবাসা চায়, স্পর্শ চায়, সামর্থন চায় ঠিক সে সময়।
ইস! আমি এখনো ভুলতে পারি না আট মাসের ছেলেকে কোলে নিয়ে অপু বিশ্বাস যখন টিভির সামনে কেঁদেকেটে নিজের এবং সন্তানের স্বীকৃতি দাবী করেছে সেই মুহূর্তের কথা। তখন অপু বিশ্বাসের ভাঙা মন, শরীর এসব আমি কল্পনাও করতে চাই না। সে কতটা অসহায় হলে তখন টিভি সেটের সামনে উপস্থিত হয়েছে। সে বুঝতে পেরেছে তার শখের ব্যাটা যার জন্য সে ধর্মান্তরিত হয়েছে, ক্যারিয়ার হারিয়েছে যাকে ভালোবেসে তার সন্তানের মা হয়েছে তাকে সে হারিয়ে ফেলেছে।
তাকে আর ফেরানো সম্ভব নয়। পরকীয়ার বিষ বাষ্পে সে বিবেক বর্জিত হয়েছে। সে কেবল তখন দেশবাসির কাছে তার সন্তানের বৈধ স্বীকৃতি চেয়েছে।
বুবলি যদি বিবাহিত শাকিবকে এভাবে আটকে না রাখতো, তাদের মধ্যে যদি পরকীয়া না হতো শাকিব কোনোদিনও অপুকে ছেড়ে যেত না।
একারণে বুবলিকে আমার মেয়ে হিসাবে বড্ডো অবিবেচক মনে হয়। তার কোনো কিছুই আমার ভালোলাগে না। বরং মেয়ে হিসাবে তার প্রতি ঘেন্না কাজ করে।
সবাই গতকাল অপুকে নিয়ে ট্রল করেছে, কেন জানি আমি করতে পারিনি। অপু বিশ্বাসের কষ্টের কথা মনে পড়ে বারবার আদ্র হয়েছে আমার মন। পরকীয়ার ছোবলে পড়ে কীভাবে সে পরাজিত হয়েছে। সেসব ভেবে অপুর জন্য দোয়া করেছি, আল্লাহ তার সহ্য শক্তি এবং ধৈয্য শক্তি বাড়িয়ে দিক।
আমার আইডিতে এক মহিলা আছে। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর সে স্বামী স্বামী করে পাগল হয়ে গিয়েছিল। রাতের পর রাত ঘুমায়নি, দিনের পর দিন খায়নি। সন্তানদের প্রতি উদাসিন ছিল। একটা সময় সে মনকে শক্ত করে ফেলেছে।
সে বলে যার একটা ফোনের আশায় রাতের পর রাত বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছি এখন বছরের পর বছর সে ফোন দিলেও ধরতে ইচ্ছে করে না। যার কণ্ঠ শোনার জন্য ব্যকুল ছিলাম এখন সে কাছে থাকলেও কিছু হয় না, দূরে গেলেও না। আল্লাহ মনকে এত পাথর বানিয়ে দিয়েছে।
আমার মনে হয় অপু বিশ্বাসের মনও এখন পাথর হয়ে গিয়েছে, সে আর এমন নোংরা প্রতিযোগিতায় নামবে না।
কারণ বুবলির সাথে শাকিবের এত প্রেমময় ছবি অপুর পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয়।
সবাই বলবেন তাদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে, সেসব তো কাগজে কলমে। মন থেকে তো আপু শাকিবকে সরাতে পারেনি। তাই ভুলতেও পারছে না।
আল্লাহ্ কাউকে তার স্বামী হারানোর কষ্ট দিও না।
Kamrun Nahar Mishu
Collected