29/09/2025
আমরা আপনাকে দিবো সবচেয়ে ভালো বিকল্প, সিলেকশন আপনার কাছে,আপনি কোনটা নিবেন...!
আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করলে বিএনপি অন্তত ৫ টা জিনিস আপনাকে দিবে,যার ধারেকাছেও কোনো দল চিন্তা করতে পারেনি।চলুন আজ জানি সেই ৫ টা জিনিস কি কি?
১.কৃষকদের জন্য "Farmer's কার্ড"
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে ৭০% মানুষ এখনো গ্রামে বাস করে,যেখানে সিংহভাগ মানুষ জড়িত কৃষিকাজে।কিন্তু আমার দেশের মেরুদণ্ড কৃষকদের জীবনই পার হয় সবচেয়ে বেশি দুঃখ দুর্দশায়।অথচ সোনার ফসল ফলিয়ে তারাই আমাদের খাদ্য চাহিদা মেটান।মোটাদাগে আমাদের কৃষকদের সবচেয়ে বড় সমস্যা গুলো হলো---
⭕ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া
⭕অপর্যাপ্ত হিমাগারের জন্য ফসল সংরক্ষণ করতে না পারা
⭕বীজের উচ্চমূল্য
⭕তথ্যের অপ্রতুলতার জন্য ফসলহানি
⭕উৎপাদন খরচ অত্যধিক বেশি
সমাধান:
এ সবগুলো সমস্যা থেকে কৃষকদের মুক্তি দিবে Farmer's কার্ড।কিভাবে??
কৃষি কার্ডের ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে তথ্যের অপ্রতুলতা দূর হবে।কৃষকেরা সারাদেশের বাজার সিস্টেমের সাথে নিজেদের সংযুক্ত করতে পারবে।বিএনপির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সকল ফসলের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা হলে ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে।তাছাড়া কোন কৃষক কি ফসল উৎপাদন করেন,কতটুকু জমি চাষ করেন এসব তথ্য সরকারি ডাটাবেসে থাকার ফলে সরকার আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন করতে পারবে।উপজেলা স্তরে হিমাগারের সংখ্যা বাড়ানো এবং নতুন করে স্থাপন বিএনপির আরো একটা প্রতিশ্রুতি। এর ফলে সারাবছর সব ধরনের ফসল পাওয়া নিশ্চিত হবে।দাম হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হারে কমে যাবে না বা বেড়ে যাবে না।বীজ সংরক্ষণ করতে পারায় বীজের উচ্চ মূল্য দূর হবে।
আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো কৃষকদের সরবরাহ করা কার্ড কৃষি ঋণ প্রাপ্তি সহজলভ্য করবে।সরকারি সহায়তা,সার,কীটনাশক, বীজ সরবরাহ সুনিশ্চিত করবে।
------------------------------------------------------------------------------------
২.প্রতি পরিবারে "ফ্যামিলি কার্ড"
গ্রাম এবং শহর উভয় জায়গাতেই বাংলাদেশের বড় সমস্যা হলো দারিদ্র্য। ২০-৩০% মানুষ এখানে দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে।আরো অন্তত ৩০-৪০% মানুষ এখানে নামে নিম্ন মধ্যবিত্ত,আদতে ঋণে জর্জরিত জীবন নির্বাহ করে।এ বিশালসংখ্যক মানুষ কেবলমাত্র নিজেদের খাদ্য সমস্যা সমাধানেই হিমশিম খায় প্রতিনিয়ত।
উপরে উল্লেখিত ৫০-৭০% পরিবারের এই মানবেতর জীবনে ফ্যামিলি কার্ডের মতো উদ্যোগ হতে পারে যুগান্তকারী একটা বিষয়। মোটাদাগে এই উদ্যোগ প্রতিটি পরিবারে আর্থিক দুর্দশা লাঘব,খাদ্য সমস্যার সমাধান, নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করবে যেহেতু গৃহকর্ত্রীর নামে এই কার্ড সার্কুলেট করা হবে। দারিদ্র্য, দারিদ্র্যসীমার নিচে এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে এই কার্ড আশার আলো হয়ে আসবে।এর আওতাধীন পরিবারগুলোকে মাসিক ভিত্তিতে সরকারি ভাবে খাদ্য সহায়তা,ভাতা,এককালীন আর্থিক সহায়তা করার কথা বলা হয়েছে পরিকল্পনায়।এর ফলে পরিবারগুলোর মৌলিক চাহিদা খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
------------------------------------------------------------------------------------
৩.স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে "Health কার্ড"
একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট হিসেবে স্বাস্থ্যখাতের দুর্দশা আর নাজেহাল অবস্থার কিছুটা হলেও গত দেড় বছরে খুব কাছ থেকে চাক্ষুষ দেখেছি।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে সমস্যা গুলো হলো:
⭕সরকারি হাসপাতাল বাংলাদেশে হাতে গোনা,সরকারি হাসপাতাল গুলোতে পর্যাপ্ত সেবা মিলে না
⭕অর্থাভাবে থাকা আমাদের জনগণ ঠিকমতো চিকিৎসা সেবা পায় না
⭕বিভিন্ন টেস্টের উচ্চ মূল্য বড় বাধা রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে
⭕ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম
স্বাস্থ্য কার্ড কিভাবে সমস্যা সমাধান করবে??
--কার্ডের আওতাভুক্ত মানুষগুলো বাৎসরিক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সহায়তা পাবে চিকিৎসার জন্য। তাছাড়া দরকারি মেডিসিন সরবরাহ করা হবে সরকারি উদ্যোগে।কার্ডের ইনফো ব্যবহারের মাধ্যমে ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রাম সফল করা যাবে,এর ফলে তথ্য ঘাটতি থাকবে না।নির্দিষ্ট এলাকায় কোন রোগের প্রকোপ বেশি সরকার সে তথ্য কাজে লাগিয়ে প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।
"Health কার্ড" কিভাবে কাজ করবে??
-- পশ্চিমবঙ্গে মমতার সরকার ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে জিতে "স্বাস্থ্য সাথী" নামে এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।পুরো রাজ্যে এখন তা বিস্তৃত হয়েছে।ভারত সরকারও "আয়ুষ্মান ভারত" নামে এ ধরনের কর্মসূচি চালু করেছে অনেক দিন আগে।উদ্দেশ্য দরিদ্র মানুষগুলো যেন স্বাস্থ্যসেবা পায়।এ উদ্যোগ গুলোর সুফল সেখানে মানুষ ভালোভাবেই পাচ্ছে। তাছাড়া আমেরিকার ওবামা কেয়ার কিংবা যুক্তরাজ্যের পাবলিক হেলথ ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করলেও এ বিষয়টা নিয়ে আরো ক্লিয়ার ধারনা পাওয়া সম্ভব।
(বিস্তারিত লিখবো আরেক দিন)
------------------------------------------------------------------------------------
৪.এক কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি
বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা গুলোর একটি বেকারত্ব। লাখ লাখ শিক্ষিত ছেলে বেকার ঘুরছে।চার দেয়ালের অন্তরালে চোখের পানি ফেলে হাজার হাজার স্নাতক সার্টিফিকেট ধারী।চাকরির পরীক্ষা দিতে দিতে ক্লান্ত কত তরুণ।সুতরাং সরকার যেই চালাক এ সমস্যার সমাধান করতেই হবে,সেটা যেভাবেই হোক।
প্রশ্ন হলো, এক কোটি কর্মসংস্থান তৈরি করা কি সম্ভব??
-- আমির খসরু এ প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন,"সম্ভব না হলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি নাকি?"
সম্পূরক প্রশ্ন : কিভাবে সম্ভব?
--বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতেই অন্তত ৫ লাখ পদে নতুন করে নিয়োগ দিতে পারবেন,যে পদগুলো শূণ্য হয়ে আছে।
--তারেক রহমানের ভাবনা বাস্তবায়ন হলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক লেবেলে স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা গুলোতে অন্তত একজন করে ভাষা বিষয়ক, একজন খেলাধুলা বিষয়ক, একজন সংস্কৃতি বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।আপনি জানেন কি সারাদেশে কতগুলো প্রাথমিক,মাধ্যমিক লেবেলের স্কুল এবং মাদ্রাসা আছে??
সংখ্যা টা ১ লক্ষ ৫০ হাজারের আশেপাশে। তাহলে হিসাব করেন এই খাতে কতজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে?
--সারাদেশে থাকা ৩ লক্ষের মতো মসজিদে সরকারি উদ্যোগে অন্তত ৬ লক্ষ মাদ্রাসা ছাত্রের স্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে(একজন ইমাম+একজন মুয়াজ্জিন)।
--সরকারি-বেসরকারি এবং বৈদেশিক বিনিয়োগে নতুন সরকার ১০ টা নতুন ইকোনমিক জোন তৈরি করার উদ্যোগ নিলে সেখানে কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে অন্তত ১০ লক্ষ মানুষের।
-- উপজেলা স্তরে কৃষকদের দুর্দশা লাঘবে সরকারি উদ্যোগে হিমাগার,কৃষি সহায়তা সেন্টার,কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিলে খাত গুলো কৃষকদের সুদিন আনয়নের সাথে কমপক্ষে কয়েক লক্ষ মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা করবে।
-- প্রশিক্ষণ, ভাষা শিক্ষা এবং নির্দিষ্ট কাজে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে বিশাল সংখ্যক বেকার যুবককে মুক্তি দিবে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে
সুতরাং বিএনপির লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা খুব বেশি বাস্তব, দরকার শুধু সাহস,সাহসী মানুষ,গোছানো পরিকল্পনা আর মানুষের সমর্থন।
----------------------------------------------------------------------------------
৫. শিক্ষিত তরুণদের জন্য "বেকার ভাতা"
বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে, যদি তাৎক্ষণিক সেটা নিশ্চিত করতে না পারে তাহলে একাডেমিক পড়াশোনা শেষে অন্তত এক বছর পর্যন্ত মাসিক আর্থিক সহায়তা করা হবে তরুণদের।বেকারত্ব যেন কোনো জীবন কেড়ে নিতে না পারে,হতাশায় যেন ডুবে না যায় আমার দেশের সম্ভাবনাময় জনশক্তি তার জন্য সম্ভাব্য সকল বিকল্প প্রস্তুত।
অন্তত শিক্ষিত ছেলেগুলো যেন নিজেদেরকে সমাজের বোঝা মনে না করে,অন্ন সংস্থানের জন্য, নিজের ভরণপোষণের জন্য পড়াশোনা শেষে পরিবারের ওপর নির্ভরশীল হতে না হয় তার জন্য আর্থিক সহায়তা হতে পারে সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো অপশন,যতদিন না কাজের ব্যবস্থা না হয়।উন্নত দেশগুলো সহ অনেক উন্নয়নশীল দেশেও এই ব্যবস্থা চালু আছে।আমাদের জন্য এটা ভালো লাগার বিষয় হলো অন্তত একটা দল ও সে দলের প্রধান নেতা এ বিষয়টাকে সামনে নিয়ে এসেছেন।
--------------------------------------------------------------------------------
এখন প্রশ্ন আপনার কাছে, আপনি আসলে কি চান??
আমরা সকল বিকল্প আপনাকে দেখাচ্ছি,আমরা বলছি কৃষি সমস্যার সমাধান করবো,কৃষক তার ন্যায্য মূল্য পাবে,খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে(বিএনপি দুর্ভিক্ষ পীড়িত বাংলাদেশকে ১৯৭৫ এর পরে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে দেখিয়েছে),স্বাস্থ্য সুরক্ষা আমাদের প্রতিশ্রুতি, আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি আপনার কর্মসংস্থানের।আমরা কোনো বেকারকে সমাজের বোঝা হতে দিবো না বরং প্রত্যেক কে তৈরি করবো আত্মনির্ভরশীল মানুষ হিসেবে।
আমরা যাকাত কিংবা অনুদানের জন্য বিদেশে হাত পাতবো না,আমরা দেশের ভিতর সম্পদ তৈরি করবো,দেশের সম্পদ সুষমভাবে বন্টনের ব্যবস্থা করবো।আমরা ভিক্ষা করে নয়,কাজ করে আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
প্রশ্ন আপনার কাছে,আপনি কি আমাদের এই যাত্রায় আমাদের সঙ্গী হবেন? সমর্থন দিবেন আমাদের??
আমাদের পরিকল্পনা সুস্পষ্ট, আমাদের কর্মসূচিও প্রকাশ্য, আমরা কি করতে চাই তা আমরা জানি, সে অনুযায়ী পরিকল্পনা এবং কর্মপন্থাও প্রস্তুত।আমাদের দরকার কেবল আপনাদের সমর্থন।
কৃষি,খাদ্য,স্বাস্থ্য,বেকারত্ব সমস্যার সমাধান-আমাদের অঙ্গীকার
সবাই মিলে গড়বো দেশ
সবার আগে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ 🇧🇩