
15/08/2025
🌸🌸 তোমাকে ছাড়া বেঁচে থাকা 🌸🌸
❤❤ রোমান্টিক বাংলা প্রেমের গল্প ❤❤
প্রথম দৃশ্য – কমলাপুর রেলস্টেশন
শীতের ভোর। কমলাপুর রেলস্টেশন কুয়াশায় ঢেকে আছে।
ট্রেনের সিটি, মানুষের হাঁকডাক, গরম চায়ের ধোঁয়া—সব মিলিয়ে এক ব্যস্ত পরিবেশ।
প্ল্যাটফর্মের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে রাফি—২৭ বছর বয়সী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, হাতে একটি ছোট ব্যাগ।
তার চোখে এক ধরনের শূন্যতা, যেন ভিতরে ভিতরে কিছু হারিয়ে গেছে।
দূরে হেঁটে আসছে মায়া—কালো সোয়েটার, গলায় উলের মাফলার, হাতে গরম চা।
রাফিকে দেখে সে থমকে দাঁড়াল।
— “তুমি যাচ্ছ?”
— “হ্যাঁ… চিরদিনের জন্য।”
ফ্ল্যাশব্যাক – প্রথম দেখা
দুই বছর আগে, বনানীর এক বইমেলায় রাফির সাথে মায়ার পরিচয় হয়েছিল।
মায়া ছিল সাহিত্যের ছাত্রী, কবিতা লিখতে ভালোবাসত।
রাফি তখন বই কিনতে গিয়ে ভুল করে মায়ার সাথে ধাক্কা খেয়েছিল, আর হাতে থাকা কফি ছিটকে পড়েছিল মায়ার শাড়িতে।
মায়া রাগ করে বলেছিল,
— “আপনি কি সবসময় বইয়ের দোকানে এসে কফি ছড়ান?”
রাফি হেসে উত্তর দিয়েছিল,
— “শুধু তখনই, যখন ভুল করে কারো জীবনে ঢুকে পড়ি।”
সেই দিন থেকেই শুরু হয়েছিল তাদের গল্প।
দ্বিতীয় দৃশ্য – প্রেমের দিনগুলো
ঢাকা শহরের ছাদে বসে তারা কবিতা পড়ত, কফিশপে আড্ডা দিত, বৃষ্টির দিনে রিকশায় করে নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা ছাড়া ঘুরে বেড়াত।
মায়া বলত,
— “তুমি জানো রাফি, আমি মানুষকে বিশ্বাস করতে সময় নিই, কিন্তু তোমার ক্ষেত্রে প্রথম দিন থেকেই পারছিলাম।”
রাফি উত্তর দিত,
— “হয়তো তুমি আমার অজানা কোনো অংশ চিনে ফেলেছিলে।”
তৃতীয় দৃশ্য – বাস্তবতার আঘাত
এক বছর পর, রাফি জানল তার মা গুরুতর অসুস্থ, বিদেশে চিকিৎসা করাতে হবে।
তার চাকরির আয় দিয়ে তা সম্ভব নয়, আর পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল টানাপোড়েনের।
মায়ার পরিবারও তাদের সম্পর্ক নিয়ে খুব একটা খুশি ছিল না—তারা চাইত মায়া দেশের বাইরে পড়াশোনা করুক।
চাপ বাড়তে থাকল দুই দিক থেকে।
রাফি চেয়েছিল সব ঠিক করতে, কিন্তু সময় ও অর্থ তার পক্ষে ছিল না।
চতুর্থ দৃশ্য – সিদ্ধান্ত
একদিন রাফি মায়াকে বলল,
— “আমরা যদি কিছুদিন যোগাযোগ বন্ধ রাখি… তুমি তোমার স্বপ্ন পূরণ করো, আমি আমার দায়িত্ব শেষ করি।”
মায়া অবাক হয়ে বলল,
— “তুমি কি ভেবেছো ভালোবাসা একটা প্রজেক্ট, যেটা পরে রিজিউম করা যায়?”
রাফি নীরব ছিল, কারণ তার মনে হচ্ছিল—এটাই মায়ার জন্য ভালো হবে।
পঞ্চম দৃশ্য – দূরত্ব
মাসের পর মাস কেটে গেল।
মায়া দেশের বাইরে পড়াশোনা শুরু করল, রাফি মায়ের চিকিৎসায় ব্যস্ত রইল।
তারা আর কথা বলত না, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের আপডেট দেখত—গোপনে, নীরবে।
ষষ্ঠ দৃশ্য – স্টেশনের পুনর্মিলন
দুই বছর পর, রাফির মা মারা গেলেন।
সব দায়িত্ব শেষ করে, রাফি সিদ্ধান্ত নিল অন্য শহরে চলে যাবে—নতুন জীবন শুরু করবে।
ট্রেনের টিকিট হাতে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিল সে, তখনই হঠাৎ মায়া এসে দাঁড়াল।
— “তুমি কি একবারও ভাবোনি আমাকে জানাবে?”
— “আমি ভেবেছিলাম… তুমি তোমার জীবনে ভালো আছো।”
— “তুমি ভুল ভেবেছো।”
সপ্তম দৃশ্য – শেষ কথা
মায়া ধীরে বলল,
— “তুমি যদি এখন চলে যাও, আমরা চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাব।”
রাফি চুপ করে তার দিকে তাকাল—কুয়াশায় ঢেকে থাকা সেই মুখ, যার জন্য একসময় সব কিছু করতে চাইত।
ট্রেনের সিটি বাজল।
রাফি ব্যাগটা মাটিতে রাখল, ধীরে ধীরে মায়ার দিকে এগিয়ে গেল।
— “তাহলে আর কোথাও যাচ্ছি না।”
মায়া হাসল, কিন্তু চোখ ভিজে উঠল।
শেষ দৃশ্য – নতুন শুরু
তারা প্ল্যাটফর্মের চা দোকানে গিয়ে বসল, গরম চায়ের ধোঁয়ায় কুয়াশা মিশে গেল।
বাইরে ট্রেন চলে গেল, কিন্তু ভেতরে তাদের গল্প আবার শুরু হল—
যেন সময় থেমে গিয়েছিল, আর তারা আবার প্রথম দিনে ফিরে এসেছে।
সমাপ্তি
#প্রেমেরগল্প #ভালবাসা #বাংলাপ্রেমগল্প #প্রেমেরচিঠি #মিষ্টিপ্রেম #প্রেমেরডায়েরি