
02/08/2025
জীবন কত আনপ্রেডিক্টেবল সেটা যদি বোঝা যেত তাহলে অনেক কোলাহলই স্থিমিত হয়ে যেত। বছর তিনেক আগে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির কার্ডিওলজির এক প্রফেসরের ছুরির নিচে শশুরকে রেখে এলাম। শশুর মশাই কঠোর পরিশ্রমি অবসর প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন,বাহ্যিক ভাবে চলাফেরায় বোঝার উপায় ছিলো না যে হৃদপিণ্ড থেকে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন কারী দুটি ক্যারোটিড আর্টারির একটি প্রায় শত ভাগ ব্লক আর দ্বিতীয় টি অর্ধেকের মত ব্লক। প্রফেসর সাহেব মহাখালীর একটি মেডিকেল সেন্টারে চুক্তি ভিত্তিক বাইপাস সার্জারি করেন, রোগী ভেদে ৪-৬ লাখ টাকার চুক্তি করতেন ওই সময়ে। আমাদের সাথে এরকম অংকেরই একটা চুক্তি হলো এবং অর্থ পরিশোধ পূর্বক অস্ত্রোপচার সম্পাদন হলো। পরের দিন সকালে সম্বিৎ ফিরলে কথা বলে অফিসে গেলাম এবং সন্ধ্যায় আবার অফিসের গাড়িতে হাসপাতালের সামনে নামলাম। কিন্তু আর কোন কথা হয়নি, বুঝতেই পারিনি যে ওই সকালের কথাই আমার সাথে উনার জীবনের শেষ কথা। ডাক্তারের ভাষ্যমতে ওইদিন বিকেলেই নাকি ব্রেন স্ট্রোক করেছিলেন। তারপরে আরো এক সপ্তাহ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ২ আগষ্টে বিদায় নিলেন......
এতো কিছুর বলার একটা ক্ষুদ্র কারন আছে। উনার জানাজায় উনার গ্রামের কোন এক ভাই এসেছিলেন। উনি আফসোস করছিলেন যে ভাই সাহেব তো ভালোই ছিলেন, এতো গুলা টাকা খরচ করে ওরা তাড়াতাড়ি মেরে ফেললো। অপারেশন না করলে যে কয়দিন হায়াত থাকত এমনেই বাঁচতেন।
আসলে বাইপাস সার্জারি তে যাওয়ার উদ্যেশ্য টা কি ছিলো? যে কয়দিন উনি বাঁচেন সেটা যেন সুস্থ ভাবে বাঁচেন। কারন ব্রেন স্ট্রোকের, হার্ট এটাকের মারাত্মক ঝুঁকিতে ছিলেন। কিন্ত স্রষ্ঠার সিদ্ধান্ত ছিলো অন্যরকম।
সারমর্ম টা আমার কাছে এরকম- আপনার অর্থসঙ্গতি থাকলে তা খরচ করবেন,না থাকলে করতে পারবেন না কিন্ত আপনাকে বিদায় নিতে হবে নির্দিষ্ট সময়েই। এক বিন্দু আগেও না পরেও না....
আল্লাহ আমার পরলোক গত শশুর কে ক্ষমা করুন। আর যারা মা বা হারিয়েছেন তাদের মা বাবার প্রতি ও ক্ষমাশীল হোন.. আমীন