18/06/2025
*ইস্তেগফার প্রসঙ্গে দশটি হাদিস*
*(১) সহীহ মুসলিম (২৭৪৯)*
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
“সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! যদি তোমরা গোনাহ না করতে, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে সরিয়ে দিতেন এবং এমন এক জাতিকে নিয়ে আসতেন, যারা গোনাহ করত, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইত, আর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দিতেন।”
*(২) সুনান ইবনে মাজাহ (৪২৪৮)*
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“তোমাদের গোনাহ যদি আকাশ পর্যন্ত পৌঁছেও যায়, তারপর যদি তোমরা তাওবা কর, আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের তাওবা কবুল করবেন।”
*(৩) শু'আবুল ঈমান (৬৩৯)*
হিশাম ইবনে উরওয়া, তার পিতা থেকে, যিনি জুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি চায় তার আমলনামা তাকে খুশি করুক, সে যেন তার আমলনামায় অধিক পরিমাণে ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) সংযুক্ত করে।”
*(৪) মুসনাদ আহমদ (১১২৪৪)*
আবু সাঈদ আল-খুদরি (রাঃ) বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি:
“ইবলীস তার রবের উদ্দেশ্যে বলল, ‘আপনার ইজ্জত ও মাহাত্ম্যের কসম! যতক্ষণ তাদের দেহে প্রাণ আছে, আমি আদম সন্তানের পথভ্রষ্টতা থেকে বিরত থাকব না।’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘আমার ইজ্জত ও মাহাত্ম্যের কসম! যতক্ষণ তারা আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে যাবে, আমি তাদের ক্ষমা করে দেব।’”
*(৫) সুনান তিরমিযি (৯৮১)*
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“যখন দুই রক্ষাকারী ফেরেশতা রাত বা দিনের আমল লিপিবদ্ধ করে আল্লাহর কাছে পেশ করে এবং আল্লাহ প্রথম ও শেষ অংশে ভাল কিছু পান, তখন আল্লাহ বলেন: ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি আমার বান্দাকে তার আমলনামার শুরু ও শেষের মাঝের সবকিছু ক্ষমা করে দিলাম।’”
*(৬) সুনান ইবনে মাজাহ (৩৮১৮)*
আবদুল্লাহ ইবনে বুসর (রাঃ) বলেন, নবী করীম ﷺ বলেছেন:
“ধন্য সেই ব্যক্তি, যে তার আমলনামায় অধিক পরিমাণে ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) দেখতে পাবে।”
*(৭) সুনান ইবনে মাজাহ (৩৮১৯)*
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি ইস্তিগফারে দৃঢ় থাকবে, আল্লাহ তাকে প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির পথ, প্রতিটি সংকট থেকে বের হওয়ার রাস্তা করে দিবেন এবং এমন জায়গা থেকে রিযিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারেনি।”
*(৮) সুনান তিরমিযী (৩৫৪০)*
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি:
“আল্লাহ তাআলা বলেন: হে আদম সন্তান! যতক্ষণ তুমি আমাকে ডাকবে ও আমার প্রতি আশা রাখবে, আমি তোমার সব গোনাহ মাফ করে দেব, আমি এতে কিছুই পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! যদি তোমার গোনাহ আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে, এরপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমার গোনাহ ক্ষমা করে দেব। আমি কিছুই পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! যদি তুমি পৃথিবী পরিমাণ গোনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো, কিন্তু আমার সঙ্গে কোনো অংশীদার না করো, তবে আমি তোমাকে পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা দিয়ে দেব।”
*(৯) সুনান তিরমিযী (৩৪৬০)*
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি এই দুনিয়ায় বলে: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’, ‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’—তাঁর সব গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মতোই বিশাল হয়।”
*(১০) সহীহ মুসলিম (২৭০২)*
আল-আঘার আল-মুযানী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“নিশ্চয়ই আমার হৃদয়ে মাঝে মাঝে ধোঁয়াচ্ছন্নতা দেখা দেয় (আলস্য বা মনোযোগহীনতা), এবং আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে শতবার ইস্তিগফার করি (ক্ষমা চাই)।”
আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব হাদীস অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দিন।
✍️ *জামী:*
মো: আরিফ উল্লাহ ( আউতো-টোকিও)
16/06/25