02/09/2024
#দয়া_করে_পুরোটা_পড়ুন_জানুন
মণিপুরে শান্তি ফিরে আসেনি, গত প্রায় দেড় বছর ধরে চলছে এক যুদ্ধময় অবস্থা কুকি জনজাতি অসম আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে মৈতৈ জনগোষ্ঠীকে। প্রতিবারই দেখা গেছে যুদ্ধ শুরু হয়েছে কুকিদের পক্ষ থেকে, তারা আলাদা রাজ্য বা সেপারেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন চাইছে। এটা হচ্ছে শুধু পোশাকি কথা আসল কথা হচ্ছে তারা আনইন্টারাপ্টেড অবস্থায় পপি চাষ চালিয়ে যেতে চায়, মৈতৈদের জমি গ্রাম অধিকার করে তাতেও করতে চায় ও পপি প্লান্টেশন। পপি হচ্ছে গিয়ে আফিম এই আফিম চাষ করে মনিপুর কে তথাকথিত ড্রাগের গোল্ডেন ট্রাইঙ্গেল এর অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়াস চলছে কুকিদের পক্ষ থেকে, এই উদ্দেশ্যে গত দেড় বছর ধরে কুকিরা মাইতিদের নির্বিচারে হত্যা করছে, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে, মৈতৈদের গ্রাম অধিকার করে নিচ্ছে। বহু মৈতৈরা তাদের নিজ ভূমিতে পরবাসীর মত দেড় বছর ধরে দিন কাটাচ্ছে রিলিফ ক্যাম্পে। এতদিন ধরেও সরকার তাদের পুনর্বাসনের জন্য কিছুই করেনি। তারা আর কোনদিনও নিজের গ্রামে ফিরে যেতে পারবে কিনা তার ঠিকানা নেই। কিছুদিন আক্রমণ বন্ধ থাকার পর কাল আবার অতর্কিতে নারান সেনা, কৌত্রুক,সেকমাই গ্রামে হামলা করে কুকিরা, এবার সাধারণ আক্রমণ নয় , উচ্চ ক্ষমতাশালী ড্রোনের সঙ্গে বোমা যুক্ত করে মৈতৈদের গ্রামে গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছে কুকিরা, বহু গ্রাম জালিয়ে ফেলেছে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। একটি বউ তার বাপের বাড়িতে গিয়েছিল একদিনের জন্য সেই বউটি ফিরে আসার সময় গুলি লাগে তার শরীরে সেই সঙ্গে তার সাথে যাওয়া তার মেয়ের শরীরেও মেয়েটি এখনো বেঁচে আছে তবে বৌটির মৃত্যু হয়েছে। নিজের চোখের সামনে মাকে গুলি লেগে মরতে দেখেছে যে ছোট শিশুটি সে কি কখনো ভুলতে পারবে এই বুলেট বেদনা এই মৃত্যু যন্ত্রণা! অথচ আশ্চর্য পেরা মিলিটারি ফোর্স নির্বাক দর্শকের মত মানুষের মৃত্যু দেখছে, তাদের নাকি অর্ডার নেই কে দেয় না অর্ডার? মানুষের প্রাণের কি কোন মূল্য নেই, মুখ্যমন্ত্রী কি করছেন এই প্রশ্নটি যদি আমি তুলি, তাহলে আমার চাকরি জায়গায় হবে। গতবার এসব নিয়ে আলোচনা করার কারণে এবং একটি বই লেখার কারণে আমি ফেসবুক থেকেও রেস্ট্রিক্ট হয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুললে হয়তো আমার চাকরিই যাবে! অথচ সমস্ত অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সরকার আর্মি নিরব দর্শকের মত মৈতৈদের মৃত্যু দেখছে। ওরা কি ভারতের সন্তান নয়? প্রশ্ন তাদের মনে আসা স্বাভাবিক। বাংলাদেশ নিয়ে তো অনেক ভারতীয় বুদ্ধিজীবীদের বলতে দেখলাম কিন্তু মনিপুর নিয়ে খুব কম লোকই বলেন। যারাও বলেন তারাও কিছু না জেনেই ভুলভাল লেখেন পত্রিকায়। সোশ্যাল মিডিয়া দেখে সবকিছু জানা সম্ভব নয় একবার কি কেউ গ্রাউন্ড জিরো তে আসবেন। জানতে চাইবেন কেমন করে ডিসপ্লেসড মৈতৈরা কাটাচ্ছে তাদের জীবন রিলিফ ক্যাম্পে দেড় বছর ধরে? তাদের ভবিষ্যতের কোন স্বপ্ন নেই আর সুঁই থেকে জুতো, জুতো থেকে ঠাকুরঘর, সবই তাদের বানাতে হবে আবার নিজেদেরকে একটু জমিন কোথায়? কুকিরা উপজাতি স্ট্যাটাস থাকায় কিছু ভারতীয়দের অনর্থক সহমর্মিতা পাচ্ছে। আপনারা কি জানেন এই কুকিদের অধিকাংশই হচ্ছে মায়ানমার থেকে ভারতের ভিতরে অনুপ্রবেশকারী। এই অনুপ্রবেশ যখন মনিপুর সরকার রোধ করার চেষ্টা করে, পপি প্লান্টেশন এর কিছুটা ধ্বংস করে তখনই কুকীরা বুঝে যায় তাদের অবৈধ বাণিজ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশে বাধা আসছে সেজন্যই তারা মাইতিদের আক্রমণ করে, এ আক্রমণ বারবার কুকিদের পক্ষ থেকে হয়েছে মৈতৈরা শুধুমাত্র নিজেদের রক্ষা করার জন্য অস্ত্র উঠিয়েছে কারণ ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং প্যারামিলিটারি ফোর্স তাদের রক্ষার জন্য কিছুই করছে না নির্বাক দর্শকের মত তাকিয়ে থাকছে বারবার এ অবিশ্বাস্য না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না কিভাবে আর্মির চোখের সামনে মৈতৈদের গ্রাম নির্বিচারে জ্বালিয়ে দিচ্ছে কুকিরা। এবার কি ভারতের বুদ্ধিজীবীদের ঘুম ভাঙবে কেউ কি অন্যান্য ইস্যুর মত মনিপুরের ইস্যুটি কেউ তুলে ধরবেন ? মানুষ কি জানবে কিভাবে মরছে মৈতৈরা দিন দিন? ভারত সরকার কি কোনদিন কোন সঠিক পদক্ষেপ নেবে? না নীরব দর্শক হয়ে ধীরে ধীরে একটি জাতিকে ধ্বংস হয়ে যেতে দেখবে?
~সুপর্ণা লিলিথ দাস
Suparna Das এর টাইম লাইন থেকে