06/09/2025
মৃত্যুর ৮ বছর পর কেউ কিভাবে জমি বিক্রির দলিলে সাক্ষর করলেন ? সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে থানার দ্বারস্থ কদমতলা ব্লকের ফুলবাড়ির শাহিন আহমেদ চৌধুরী।
জালিয়াতি ও ভুতুড়ে কান্ডের শিরোনামে ধর্মনগর মহকুমার সাব-রেজিষ্টি অফিস।মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষরে এক ব্যক্তির জায়গা অপর ব্যক্তির নামে।অভিযোগ,থানায় মামলা।
দীর্ঘ আট বছর পূর্বে মৃত ব্যক্তিও ভুমি বিক্রি করতে পারে!দালাল চক্র এতটাই সক্রিয় যে,উক্ত ভূমি নামজারি করে আবার নিজের স্ত্রীর নামে হস্তান্তরও করে দিয়েছে।এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা উঠে আসলো উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলা ব্লক এলাকার ফুলবাড়ি এলাকা থেকে।সেই সাথে ধর্মনগর মহকুমা অফিসের চরম জালিয়াতি আরো একবার প্রকাশ্যে বেরিয়ে এলো।অভিযোগ এক ব্যক্তির জায়গা অপর এক ব্যক্তির নামে নামজারি হয়ে গেছে,অথচ আট বছর পূর্বে মৃত ব্যক্তি ওই জায়গার দলিলে স্বাক্ষর করেছেন বলেও উল্লেখ রয়েছে। এমনই এক ভূতুড়ে কান্ড সংগঠিত হলো ধর্মনগর মহকুমাধীন কদমতলা ব্লক এলাকার ফুলবাড়ি পঞ্চায়েতের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহীন আহমেদ চৌধুরীর সাথে। তিনি সহ উক্ত ভূমির উত্তরাধিকারীরা দীর্ঘ লাঞ্ছনার পর শনিবার সকালে সংবাদ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয়ে সমস্ত ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি জানান, উনার মা আজিনা বিবির নামে ১৪০ শতক(৭০ গন্ডা) টিলা,ও লুঙ্গা জমি রয়েছে। কিন্তু ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে উনার মা অর্থাৎ,ভুয়ো জমি বিক্রেতা ঐ মহিলা মৃত্যুবরণ করেছেন।তারপর যথারীতি ওই জায়গার উত্তরাধিকারী হিসাবে শাহীন আহমেদ সহ অন্যান্যরা মালিকানাধীন গ্রহণ করেন।কিন্তু ২০১৬ সালের ১৩ই জুলাই উক্ত জায়গা এলাকারই প্রভাবশালী বর্তমান শাসক দলীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মকরম আলী বলে এক ব্যক্তি দখল করে এবং নিজের নামে দলিল ও পর্চা বাগিয়ে নেয়। আশ্চর্যের বিষয় ওই দলিল ও পর্চায় মৃত মহিলা তথা শাহীন আহমেদের মা আজিনা বিবির স্বাক্ষর রয়েছে। কিন্তু তখন সেই ঘটনা প্রকাশ্যে না আসলেও ইদানিংকালে দেখা যায়, মকরম আলী উক্ত জায়গা নিজের স্ত্রীর নামে এবং অবৈধ বাংলাদেশী এক মহিলা সাহিদা আক্তার এর নিকট বিক্রি করছেন।আর তাতে বাঁধা দিতে গেলে বেরিয়ে আসে আসল রহস্য।অভিযোগকারী শাহীন আহমেদ চৌধুরী সহ উক্ত জমির মালিকানাধীন সকলের কাছে সম্পূর্ণ প্রমাণ পত্র রয়েছে।তাই তারা
বিষয়টি নিয়ে চুরাইবাড়ি তহশীল অফিস ও ধর্মনগর মহকুমা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে সম্পূর্ণ ঘটনা খতিয়ে দেখেন এবং দেখতে পান উক্ত ৭০ শতক(৩৫ গন্ডা) জায়গা মকরম আলীর নামে রয়েছে। এতে তিনি হতবাক হয়ে পড়েন ! তাছাড়াও উক্ত পর্চা ও দলিলের ডিড রাইডার হিসাবে বাবুল নাথের স্বাক্ষর রয়েছে। উক্ত ঘটনায় সমস্ত ফুলবাড়ী এলাকার মানুষ হতবাক হয়ে পড়েন,কি করে আট বছর পূর্বে একজন মৃত মহিলা উক্ত দলিল ও পর্চায় স্বাক্ষর করতে পারেন ? এভাবে চরম জালিয়াতি ও ভুতুড়ে কান্ডের একাধিক নজির রয়েছে ধর্মনগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস তথা মহকুমা শাসক অফিসে। এর পূর্বেও একাধিকবার সংবাদের শিরোনাম দখল করেছে এমন ন্যক্কার জনক কান্ড।এদিকে চুরাইবাড়ি তহশীল অফিসের কথা না বলাই ভালো। বহু মানুষ নিজের জায়গা সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগতে থাকেন স্থানীয় কিছু ভুমি মাফিয়া তথা দালালের কারণে। অর্থের বিনিময়ে তারা এক ব্যক্তির জায়গা অপর ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে পারে। এমনকি মৃত ব্যক্তির নামেও কাগজ করে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে উক্ত ঘটনার ন্যায় বিচার ও নিজের জায়গা পুনরায় ফিরে পেতে শাহীন আহমেদ চৌধুরী প্রথমে চুরাইবাড়ি থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন মকরম আলীর বিরুদ্ধে। এছাড়াও মহকুমা শাসক অফিসেও নালিশ জানিয়েছেন উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এখন তিনি সংবাদ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয়ে ন্যায় বিচার ও নিজের জায়গা ফিরে পেতে জেলা প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।এখন দেখার বিষয় মহকুমা প্রশাসন এ বিষয়ে কি ভূমিকা গ্রহণ করেন।