16/10/2025
*ভক্ত প্রহ্লাদ ও নারসিংহ অবতার — ভক্তির এক অমর কাহিনি*
*“যেখানে ভক্তি নিঃস্বার্থ, সেখানে ঈশ্বর নিজেই আবির্ভূত হন।”*
🔹অনেক দিন আগের কথা। পৃথিবীতে রাজত্ব করতেন এক অসুর রাজা—*হিরণ্যকশিপু*। তিনি ছিলেন পরাক্রমশালী, অহঙ্কারী এবং দেবতাদের চরম বিরোধী। ব্রহ্মার কাছ থেকে তিনি এমন এক আশীর্বাদ পেয়েছিলেন—
কেউ তাকে হত্যা করতে পারবে না:
- না মানুষ, না পশু,
- না দিনে, না রাতে,
- না ঘরের ভিতরে, না বাইরে,
- না অস্ত্রে, না নিরস্ত্রে।
এই আশীর্বাদে ভর করে সে নিজেকে *অমর* ভাবতে শুরু করে। তার একটাই দাবি ছিল—*"আমাকেই ঈশ্বর মানো!"*
কিন্তু তার ছেলেই ছিল ভিন্ন মতের। ছোট্ট *প্রহ্লাদ*, কোমল হৃদয়ের এক শিশু, সারাক্ষণ শুধুই ভগবান *বিষ্ণুর নাম* জপ করত।
সে বলত,
*“সত্যিকারের ঈশ্বর একজনই—তিনি ভগবান বিষ্ণু।”*
এই কথায় হিরণ্যকশিপু রেগে আগুন!
নিজের ছেলেকে বারবার শাস্তি দেয়—
১.আগুনে ফেলে,
২. হাতির তলায় চাপা দেয়,
৩.বিষধর সাপ ছাড়ে,
৪. পাহাড় থেকে ফেলে দেয়—
কিন্তু কিছুতেই প্রহ্লাদের কিছু হয় না।
কারণ সে ছিল *ভক্ত*।
আর ভক্তকে *ভগবান নিজে রক্ষা করেন।*
শেষে একদিন রাজসভার মাঝখানে হিরণ্যকশিপু জিজ্ঞেস করে,
*“তোর ঈশ্বর কোথায়?”*
প্রহ্লাদ শান্তভাবে উত্তর দেয়,
*“তিনি সর্বত্র আছেন—এমনকি এই স্তম্ভেও।”*
রাগে অন্ধ হয়ে হিরণ্যকশিপু সেই স্তম্ভ ভেঙে ফেলে!
আর তখনই —
গর্জন করে বেরিয়ে আসেন *ভগবান নারসিংহ* — অর্ধ-সিংহ, অর্ধ-মানব রূপে!
তিনি আসেন সূর্যাস্তের ঠিক সময় (না দিন, না রাত),
দরজার চৌকাঠে (না ভিতরে, না বাইরে),
নিজের নখ দিয়ে (না অস্ত্র, না নিরস্ত্র)
হিরণ্যকশিপুকে কোলে তুলে নিয়ে বধ করেন।
সব শর্ত ভেঙে দিয়ে তিনি প্রমাণ করেন—
*অহঙ্কার যতই শক্তিশালী হোক, সৎভক্তির কাছে সে শেষমেশ হারে।*
✨ এরপর প্রহ্লাদকে আদরে বুকের কাছে তুলে নিয়ে বিষ্ণু বলেন—
*“ভক্ত যদি একবারও ডাকে, আমি তাকে কখনো একা ফেলি না।”*
---
*📜 শিক্ষণীয় বার্তা:*
ভগবান কেবল তাদের সঙ্গেই থাকেন না, যারা মন্দিরে পূজা করে, বরং তাদের সঙ্গে থাকেন যারা *সত্য, বিশ্বাস আর ভক্তি নিয়ে* হৃদয় দিয়ে ডাকতে জানে।
*ভক্তি কখনও হারায় না — সঠিক সময়েই ঈশ্বর সাড়া দেন।*
#প্রহ্লাদ #নারসিংহ #ভক্তির_জয় ゚