20/09/2025
১৯৭৯ সালের অক্টোবরে একবার দলীয় মিটিংয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান প্রায় ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিলেন,"সবাই মন্ত্রী হতে চায়,দল করবে কে?
এতো এতো হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে সেদিন শুধু ৩৩ বছর বয়সী এক নেতা দাঁড়িয়ে বলেছিলেন,"আমি দল করতে চাই"।
সেই নেতা আর কেউ নয়, তিনি ছিলেন যশোর তথা খুলনার উন্নয়নের রূপকার,বিএনপির প্রয়াত স্থায়ী কমিটির সদস্য এম তরিকুল ইসলাম।
১৯৮৮ সালে বিএনপির কাউন্সিলের সময় স্বয়ং বেগম খালেদা জিয়া তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তরিকুল ইসলামকে বিএনপির মহাসচিব হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
ওই সময়ে তরিকুল ইসলামের ঢাকাতে থাকা ও যাতায়াতের জন্য নিজের কোনো বাড়ী-গাড়ী না থাকায় তিনি সেই প্রস্তাব বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখান করেন। অবশ্য তরিকুল ইসলামের জন্য রাজধানীতে থাকার ব্যবস্থাও করতে চেয়েছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
কিন্তু তরিকুল ইসলাম কোনোকিছুতেই রাজী হননি। উল্টো তিনি বেগম খালেদা জিয়ার বাসায় গিয়ে তার কাছে ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারকে মহাসচিব করার অনুরোধ করে আসেন।
২০০৯ সালে জাতীয় কাউন্সিলের সময় তরিকুল ইসলামকে আবারও মহাসচিব করার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।
তিনি একদিন হঠাৎ করে সকল আলোচনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দলের বর্ষীয়ান নেতা খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে দলের চেয়ারপারসনকে বলেছিলেন যে, ‘দলের দু:সময়ে খোন্দকার সাহেব দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন বিধায় তাঁকেই পুনরায় মহাসচিব রাখা হোক।’
এই তরিকুল ইসলামরাই ছিলো বিএনপির নেতা ও প্রাণ। আজ আবার সবাই এমপি মন্ত্রী হতে চায় কিন্তু কেউ দলটা করতে চায় না।
এমপি মন্ত্রী হওয়ার ভূত এমনভাবে সবার মধো চেপেছে প্রয়োজনে দল এবং সিনিয়র নেতাদের নিয়ে বিষেদাগার করবে তারপরও সবাইকে এমপি মন্ত্রীই হতে হবে।
দল নিয়ে প্রতিদিন মিডিয়া ট্রায়াল, নেগেটিভ লেভেলিং,অপপ্রচার দেদারসে হচ্ছে কিন্তু এগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর নূন্যতম আগ্রহ এসব তথাকথিত নেতাদের মধ্যে নেই।
দল থাকলে একদিন এসব নেতারা হয়ত এমপি মন্ত্রী হবে নিশ্চিত। যেমন ভাবে তরিকুল ইসলামরা হয়েছেন কিন্তু যদি দলই না থাকে তাহলে এরা এমপি মন্ত্রী হবে কীভাবে?
যদি নিজেকে দলের চেয়েও উর্ধে ভাবেন তাহলে বি চৌধুরী, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, শাহাজাহান ওমর,শমসের মুবিন চৌধুরীর মতো হেভিওয়েট নেতাদের জায়গায় কল্পনা করুন নিজেকে তাহলেই আপনার অবস্থান বুঝতে পারবেন।
সর্বোপরি বিএনপির এই ক্রান্তিকালে তরিকুল ইসলামদের মতো বীরসেনানীদের আরো একবার প্রয়োজন যারা নিজের স্বার্থকে একপেশে রেখে সিংহের মতো গর্জন দিয়ে বলবে,"আমরা এমপি মন্ত্রী হতে চাই না,দল করতে চাই"।
আগে এমন কিছু করার মুরোদ দেখান, দলের জন্য কাজ করেন তারপরেরটা দলই বিবেচনা করবে যেমনটা তরিকুল ইসলামের ক্ষেত্রে হয়েছে।
এই বিএনপিতে ছাত্রদলের শুধু জেলা মহানগরীর ৩২ জন সাবেক ছাত্রনেতাদের একসাথে নমিনেশন দেওয়ার ইতিহাসও আছে।
আপনারা দলের নিবেদিত প্রাণ হলে দল আপনাকে হতাশ করবে না, এই বিশ্বাস খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের উপর রাখুন। তরিকুল ইসলামরা খালেদা জিয়ার উপর এই বিশ্বাস রেখেছেন বলেই জাতীয় নেতা হতে পেরেছেন।