Pratilipi Bengali

Pratilipi Bengali Discover, read and share your favorite stories, poems and books in a language, device and format of y
(2175)

Discover, read and share your favorite stories, poems and books in a language, device and format of your choice.

06/11/2025

     শীতের রাতে ঘড়ির কাঁটা অনুসারে  আন্দাজ এগারোটার সময় সমগ্র ভারতবর্ষের সাথে যোগাযোগ স্থাপনকারী হাওড়া স্টেশনের সামনে...
01/11/2025


শীতের রাতে ঘড়ির কাঁটা অনুসারে আন্দাজ এগারোটার সময় সমগ্র ভারতবর্ষের সাথে যোগাযোগ স্থাপনকারী হাওড়া স্টেশনের সামনে একটা বিশাল বড় সাদা BMW গাড়ি এসে দাঁড়ায় , গাড়ি দরজা খুলে নেমে আসে একজন মহিলা , বয়স আন্দাজ তিরিশ বছর, ফরমাল dressed up করা , পরণে হালকা আকাশী রঙের শার্ট এন্ড ব্ল্যাক কালারের ফরমাল প্যান্ট , শার্টের উপর একটা গ্রে কালারের ব্লেজার, কাঁধে একটা লেডিস ব্র্যান্ডেড ব্যাগ। মহিলা গাড়ি থেকে নেমে সোজা স্টেশন এর দিকে হাঁটতে শুরু করে , মহিলার আশপাশ থেকে বিভিন্ন ধরনের হকার বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করার জন্য চিৎকার করে যাচ্ছে, মহিলা কাউকে পাত্তা না দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে গিয়ে লক্ষ্য করে স্টেশন এর ঢোকার মুখে একজন হকার চিৎকার করে " The voice " ম্যাগাজিন বিক্রি করছে, মহিলা লোকটাকে দেখে সামান্য হাসে, তারপর স্টেশনের ভিতরে ঢুকে পড়ে ।

স্টেশনে ঢুকে সে দেখে একটা জায়গায় বেশ লোকজনের ভিড় , অনেক মানুষ সেদিকে জড়ো হয়েছে, তার কারণ , " নিশান্ত রায়" বর্তমান যুগের বেঙ্গলী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একজন famous Hero... যার ফ্যান ফলোয়ারের সংখ্যা অগণিত, সেইরকমই কিছু ফ্যান তাকে ঘিরে সেলফি তোলার জন্য ভিড় করেছে, নিশান্তকে ঘিরে রেখেছে তার চার পাঁচজন বডিগার্ড , যারা তার ফ্যানদেরকে নিশান্ত এর ধারে কাছে আসতে দিচ্ছে না । ভিড় আস্তে আস্তে বাড়ছে।

মহিলার নাম অদ্রিজা মজুমদার , সে "The voice" ম্যাগাজিনের chief Editor and management head ..... একটা বিশেষ কাজের জন্য সে আজ হাওড়া স্টেশনে এসেছে । অদ্রিজা ভীষণ কাঠখোট্টা, আর একরোখা স্বভাবের মেয়ে, কারোর কথা শোনে না , নিজে যেটা মনে করে সেটাই করে । কিন্তু নিজের কাজের জগতে সে ভীষণ দক্ষ, তার বিচার বিবেচনাকে কেউ টক্কর দিতে পারে না ।

অদ্রিজা স্টেশনে ঢুকে একবার ভালো করে চারিদিকটা দেখে নেয়, তারপর কাউকে একটা কল করে, " Hello, where are you ? Why are you late ..... যার জন্য এখানে কাজে আসা সে অলরেডি এখানে এসে পড়েছে, ট্রেন টাইম মত ছেড়েও দেবে , come fast ......." বিরক্তি নিয়ে সে ফোন রেখে দেয়। তারপর স্টেশনের backside এ পনেরো নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে এগিয়ে যায়, সেখানে গিয়ে দেখে অলরেডি হাওড়া থেকে দিল্লীগামী রাজধানী এক্সপ্রেস দাড়িয়ে রয়েছে । সে একবার নিজের রিস্টওয়াচ এর দিকে তাকায়, তারপর নিজের সিট নম্বর অনুযায়ী নিজের কেবিনে উঠে পড়ে ।

অদ্রিজা কেবিনের জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে নিশান্ত রায় তার বডিগার্ড দের সাথে ট্রেনে ওঠার জন্য এদিকে আসছে, অদ্রিজা বিরক্ত হয়ে আবার ঘড়ির দিকে তাকায়, " এই বরুণ যে কখন আসবে god knows ..... বার বার করে টাইম বলে দিলাম, তাও সময়ে এসে পৌঁছতে পারল না , এরকম একটা সুবর্ণ সুযোগ হাত থেকে বেরিয়ে যাবে । আমার কাছে একদম পাক্কা খবর আছে নিশান্ত রায়ের ব্যাপারে, কিন্তু বরুণ না এলে কাজটা করবে কে? এমনিতে অদ্রিজা কোন কিছু নিয়ে টেনশন করে না, তার কাছে ফুলপ্রুফ প্ল্যান রেডি থাকে কিন্তু আজ অদ্রিজার মনে হচ্ছে, তার প্ল্যান ভেস্তে যাবে, এত তাড়াতাড়ি সবটা অ্যারেঞ্জ করতে হয়েছে যে, সে প্ল্যান B রেডি করতে পারে নি । এখন বরুণ সময় মত এখানে পৌঁছালে হয় ।

অন্যদিকে ঠিক এই সময় কলকাতার বড় বাজার থেকে হাওড়া ব্রিজে ওঠার আগে ফ্লাইওভারের নিচে পুলিশ রেড করে, সেখানে এক দিন আগেই একজন খুন হয়েছে, তাই পুলিশ ঘন ঘন সেখানে রেড করছে, ফ্লাইওভারের নিচে কতকগুলো লোক শুয়ে ছিল , পুলিশের হুইসিলের শব্দ শুনে লোকগুলোর মধ্যে তাড়াহুড়ো লেগে যায়, যে যেখানে পারে ছুট লাগায়, ওই লোকগুলোর মধ্যে একজন পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী লোক শুয়ে ছিল, লোকটাকে দেখে মনে হবে অনেকদিন খাওয়া দাওয়া হয়নি , মাথায় বড় বড় চুল, দাড়ি গোঁফ অনেকদিন কাটা হয়নি মনে হচ্ছে , বাকি লোকগুলো দৌড়াতে শুরু করলে সেও দৌড়াতে শুরু করে, লোকটা হাওড়া ব্রিজের উপর দিয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়াচ্ছে, একজন পুলিশ লোকটার পিছন পিছন দৌড়াচ্ছে, এবং বার বার তাকে থামতে বলছে , কিন্তু লোকটা কোনো কথা না শুনে দৌড়াচ্ছে , হাওড়া স্টেশনের মুখের কাছে এসে লোকটার সামনে আচমকা একটা বাইক এসে পড়ে, লোকটার ধাক্কার আঘাতে বাইকের আরোহী ছিটকে পড়ে যায়, লোকটা সেদিকে একবার তাকায় কিন্তু সেদিকে বেশিক্ষণ লক্ষ্য না দিয়ে স্টেশনের ভিতর ঢুকে পড়ে ।

বাইক থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়া লোকটা অতিকষ্টে উঠে দাড়ায়, তারপর যে লোকটা তাকে ধাক্কা মেরেছিল, তার উদ্যেশ্যে একটা গরম গালাগালি দেয়, নিজের গায়ের ধুলো ঝাড়ে, সে দেখে একজন পুলিশ ওই লোকটার পিছন পিছন ছুটে গেলো । সেদিকে একবার তাকিয়ে দেখে ,সে নিজের বাইকটাকে মাটি থেকে টেনে তুলে আনে , তারপর ভালো করে বাইকটাকে খুঁটিয়ে দেখে, না বাইক একদম ঠিক আছে , এইসময় তার কিছু একটা মনে পড়ে যায়, " এই যা এই সবের জন্য তো আমার অনেকটা late হয়ে গেলো, অদ্রিজা ম্যাম খুব রাগারাগি করবেন , সব ওই লোকটার জন্য । এতক্ষণে মনে হয় ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে , কাজটা কে করবে তাহলে .......

অন্যদিকে লোকটা ছুটতে ছুটতে হাওড়া স্টেশনে ঢুকে পড়ে, রাত হওয়ার জন্য স্টেশনে তুলনামূলক ভিড় কম, লোকটা পনেরো নম্বর প্লাটফর্ম এসে পড়ে, সে দেখে প্লাটফর্ম থেকে একটা ট্রেন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে, লোকটা ছুটতে ছুটতে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছে, কিন্তু রাজধানী এক্সপ্রেসের সব কেবিনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ।

অদ্রিজা কেবিনের জানলা দিয়ে এতক্ষণ বাইরের দিকেই তাকিয়ে ছিল, যাতে বরুণ এলে সে দেখতে পায়, কিন্তু না বরুণ এর কোনো দেখা নেই , শুধু একটা ঝাঁকড়া চুলের লোককে সে ছুটে আসতে দেখে, অদ্রিজা জানলা দিয়ে লোকটার মুখ ভালো ভাবে দেখে , লোকটার মুখ দেখেই সে চমকে উঠে ।
অদ্রিজা উঠে গিয়ে নিজের কেবিনের দরজা খুলে দেয়। লোকটা ছুটে এসে দরজার হাতল ধরে ট্রেনে উঠে পড়ে । আর সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন প্লাটফর্ম থেকে বেরিয়ে স্পিড নিয়ে নেয়, পুলিশটা প্লাটফর্ম এর মধ্যে দাড়িয়ে পড়ে, " ইস একটুর জন্য লোকটাকে ধরতে পারলাম না "

লোকটা ট্রেনে উঠে জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে পুলিশটাকে দেখার চেষ্টা করে যাচ্ছে , অদ্রিজা এক দৃষ্টিতে লোকটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে , লোকটা এবার অদ্রিজার দিকে ঘুরে দাঁড়ায়, অদ্রিজা লোকটাকে সিটে বসতে বলে, লোকটা কোনো কথা না বলে চুপচাপ বসে পড়ে , আর বলে, " Thank you আমাকে হেল্প করার জন্য ।

অদ্রিজা এবার প্রথম কথা বলে......
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

The voice 🎤 পর্ব: ১ ভারতবর্ষের অন্যতম ব্যস্ত শহর কলকাতা, এখানে মানুষজন যেন প্রতিনিয়ত দৌড়ে বেড়াচ্ছে , কেউ কারোর দিকে ত....

     সালটা ছিল ১৮০০ , সেই সময় রঘুগড়ের রাজা ছিলেন বিক্রম সিং । তিনি ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু এবং সাহায্যকারী রাজা । বিক্রম ...
01/11/2025


সালটা ছিল ১৮০০ , সেই সময় রঘুগড়ের রাজা ছিলেন বিক্রম সিং । তিনি ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু এবং সাহায্যকারী রাজা । বিক্রম সিং কে সবাই খুব ভালবাসতেন । বিক্রম সিং এর জন্ম হয় কৃষ্ণের জন্ম অর্থাৎ জন্মাষ্টমীর দিন । ওই শুভ দিনে জন্মেছিল এই বিক্রম। একেই পুজো দিন , তার ওপর পুত্র সন্তান । আগেকার দিনে পুত্র সন্তানের হলেই তাদের পরিবারকে সবাই ভালো চোখে দেখত । আর তখনকার দিনে কন্যা সন্তান হলে তাদের পরিবারকে দুরচাই করত । তবে যুগ পাল্টেছে , এখন আর পুত্র - কন্যা আলাদা করে দেখা হয় না । এখন সবাই সমান ।

যাই হোক গল্পে আসা যাক ……

ছোট থেকেই বিক্রম সিং ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু , মেধাবী এবং সবাইকে খুব সাহায্য করতেন । তবে বিক্রম সিং ছিল ছোট থেকে অত্যন্ত সাহসী । কোন কিছুকে সে ভয় পেত না । আর কখনো মিথ্যের আশ্রয় সেই নিত না । এই সমস্ত গুণ তার বাবার কাছ থেকে পাওয়া । বিক্রম সিংহের বাবা হলেন বিশ্বনাথ সিং । তিনি অত্যন্ত ভালো রাজা ছিলেন তাই জন্য তার সন্তান অর্থাৎ বিক্রম সিং অত্যন্ত ভালো মানুষ ।

বিক্রম এরকমই একদিন বন্ধুদের সাথে খেলতে খেলতে তাদের খেলার গুলি জঙ্গলের মধ্যে চলে যায় । বন্ধুদের মধ্যে এ বলে আমি যাব , ও বলে আমি যাব না , এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হতে থাকলে ; বিক্রম নিজে সেখানে বলে ওঠে যে , আমি সেখানে যাব । এই বলে সে সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গলের মধ্যে চলে যায় । তাদের খেলার গুলি খুঁজতে খুঁজতে সে জঙ্গলের অনেকটা ভেতরে চলে যায় । জঙ্গলে ভেতরে যাওয়ার সময় পাতার মচমচানি শব্দে একটা তপস্যায় বসা মুনির ধ্যান ভঙ্গ করে দেয় । সেই মুনি বলে ওঠেন , কে ? কে আমার এই তপস্যা ভঙ্গ করলো ? বিক্রম সিং সৎ সাহসের সাথে বললেন , যে খেলতে খেলতে আমাদের খেলার গুলি এখানে চলে এসে । তাই সেই খেলার গুলি খুঁজতেই আমার এখানে আসা । এর সাথে বিক্রম আরো বলেন , যদি আমি এখানে এসে কোন ভুল করে থাকি । তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন ( এই বলে সে হাত জোড় করে প্রণাম জানায় ) । সেই যোগী মুনি তার এই সাহসিকতা দেখে তাকে আশীর্বাদ করলেন ।

বিক্রম জঙ্গলের ভেতরে গিয়ে আসতে অনেক দেরি হওয়ায় , তার বন্ধুরা চিন্তায় পড়ে যায় । আসলে বিক্রম যতই হোক , একজন রাজার ছেলে তার কিছু হয়ে গেলে , তাদের বাবা - মায়ের ওপর বিপদ ঘনিয়ে আসবে । সেটা ভেবে তার বন্ধুরা অত্যন্ত ভয় পাচ্ছিল । তাদের বন্ধুরা ঠিক করছিল , তারাও একবার জঙ্গলে ভেতরে গিয়ে দেখবে , কি হচ্ছে ? যদি তারা জঙ্গলের ভেতরে গিয়ে কোথাও বিক্রমকে খুঁজে না পায় , তাহলে গ্রামের লোক ডেকে এনে বিক্রমকে জঙ্গলের মধ্যে খোঁজাখুঁজি করা হবে । তাদের চার বন্ধুর মধ্যে একজন বলে উঠল , জঙ্গলে ভেতরে যাচ্ছি যদি কিছু বিপদ আসে ? তাহলে আমরা লাঠি যোগাড় করে তারপর যাবো । যাতে আমরা নিজেদের আত্নরক্ষার সাথে , বিক্রমকেও রক্ষা করতে পারি । যেমন বলা , তেমন কাজ । তারা সঙ্গে সঙ্গে পাঁচটি লাঠি জোগাড় করে যেই জঙ্গলে যাবার জন্য প্রস্তুত , সেই সময় হঠাৎ দেখে যে বিক্রম তাদের সেই গুলি নিয়ে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসছে । তাকে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে সবাই শান্ত হলো । তারা বিক্রমের কাছে আগে ছুটে গিয়ে বলল , তুই ঠিক আছিস তো ? তোর কোন বিপদ হয়নি তো ? বিক্রম ভাবলো যে , সে ওই মুনির কথাটা বলবে । কিন্তু বিক্রমের পরক্ষণেই মনে হলো যে , তার বন্ধুরা তাকে নিয়ে অনেক ভাবে , তাই তাদের ওসব কথা বললে চিন্তা করবে । তাই বিক্রম কিছু না বলে চেপে গেলো কথাটা । তবে তার সব থেকে প্রিয় বন্ধু " রঘু " বুঝলে পারলো যে , বিক্রম কিছু লুকিয়ে গেলো । কিন্তু সেও কিছু না বলে সব বন্ধু মিলে বাড়ি ফিরতে লাগলো । যেতে যেতে রঘু বলল , বিক্রম তোর সাথে কি কিছু হয়েছে ? তোকে অন্যমনস্ক লাগছে । বিক্রম কিছুটা চমকে উঠে বলল যে , কই না তো, কিছু হয়নি তো , কি হবে আমার ? সব ঠিক আছে । বিক্রম বলল , আর কথা বাড়াস না । সবাই তাড়াতাড়ি বাড়ি চল । এখনো অনেকটা পথ বাকি ।

ওদিকে দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যে হয়ে যাচ্ছে বাচ্চাদের অর্থাৎ বিক্রম ও তার তার বন্ধুদের ফেরার কোন নাম নেই । তারা দুপুর বেলা খেতে পর্যন্ত আসেনি । এই সকালবেলা সব বন্ধু মিলে খেলতে বেরিয়েছিল । আর এখন সন্ধ্যা হতে চলল । গ্রামের লোক নিজের সন্তানদের এর ওর বাড়ি খোজার পর কেউ যখন খুঁজে পায় না । তখন সবাই ঠিক করল যে , তারা রাজার বাড়ি যাবে । কারণ , তাদের ছেলেদের বন্ধু হচ্ছে রাজার ছেলে বিক্রম । এদিকে রাজার বাড়ি তো সেই একই অবস্থা । তাদের ছেলেকে গ্রামের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । যখন গ্রামে সেই লোকরা অর্থাৎ বিক্রমের বন্ধুর মা বাবারা এলেন , তখন তারা এটা শুনে কান্নাকাটি করতে লাগলেন । রাজা তাদের সান্তনা দিয়ে বললেন , তোমরা চিন্তা করো না, আমি যেখান থেকে পারব আমার ছেলের সাথে তোমারদের সকলের ছেলেদের খুঁজে নিয়ে আসবো । এদিকে রাজা সঙ্গে সঙ্গে প্রহরী পাঠায় । গ্রামে চারদিকে আনাচে - কানাচে খোঁজা শুরু হয়ে যায় । কিন্তু সব প্রহরী ব্যর্থ হয়ে রাজবাড়ীতে ফিরে আসে । রাজা তাকে ফিরে আসতে দেখে বলে তোমরা সব জায়গা কি খোঁজনি ? প্রহরীরা বলে , হ্যাঁ , রাজা মশাই আমরা সমস্ত জায়গা খুঁজেছে শুধু উত্তরের জঙ্গল বাদে । রাজা তখন বললেন , আমার ছেলে যে পরিমাণ দুষ্ট সে হয়তো সবাইকে নিয়ে ওই জঙ্গলে খেলতে গেছে । তোমরা ওখানে গিয়ে একবার খোঁজো । প্রহরীরা রাজার কথায় সম্মতি জানিয়ে যেই রাজবাড়ীর বাইরে পা দিল ।
প্রহরীরা এটা দেখে রাজার ছেলে অর্থাৎ বিক্রমের সাথে তার বন্ধুরা ফিরে আসছে । সেটা দেখে প্রহরীরা ছুটে রাজবাড়ি ভেতরে গিয়ে রাজামশাই কে সেই খবর দেয় । রাজা হাতে একটা লাঠি নিয়ে বিক্রমের জন্য অপেক্ষা করছিলেন । বিক্রম যেই তার বাবার সামনে এলো তার বাবা অর্থাৎ রাজা বিশ্বনাথ সিং বললেন কোথায় গিয়েছিলে ? বিক্রম উত্তর দেয় , আমরা উত্তরের জঙ্গলে গিয়েছিলাম এবং সেখানে আমাদের খেলার গুলি জঙ্গলে ভেতরে চলে যাওয়ায় । সেখান থেকে খুঁজে আনতে দেরি হয়ে গেছিল । তাই আমাদের ফিরতে দেরি হয়ে যায় । বিক্রমের এই সততা দেখে রাজা শান্ত হয় এবং বলেন যে এর পরেরবার থেকে একজন প্রহরীকে সাথে নিয়ে যেতে ।

চলবে ✍????????️ …
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

( গল্পে উল্লিখিত সমস্ত জায়গা , চরিত্র , নাম এমনকি গল্পটাও কাল্পনিক ভাবে লেখা । বাস্তবের সাথে এই গল্পের কোন মিল নেই .....

     মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখে একমনে পাঞ্চালি কাজ করলেও ওর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিচ্ছে, পিছনে বসে ডাঃ আকাশ রক্ষিত একদৃষ্টে ...
01/11/2025


মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখে একমনে পাঞ্চালি কাজ করলেও ওর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিচ্ছে, পিছনে বসে ডাঃ আকাশ রক্ষিত একদৃষ্টে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। ছেলেটা ঠিক কি ভাবছে বুঝতে না পারলেও এটুকু অনুমান করতে পারছে যে ওর চোখে মুখে একরাশ মুগ্ধতা ছড়িয়ে আছে। এসব নিয়ে এখন খুব একটা আমল দেয় না পাঞ্চালি। ছোটবেলা থেকে শুনে আসছে ওর পাঞ্চালি নামকরণ সার্থক। স্বভাবতই গায়ের রং কালো হলে বর্তমান সমাজেও যে ট্যারা কথা শুনতে হয়, সেসব কোনোদিন ওকে শুনতে হয়নি। বরং নানা লোকে নানাভাবে ওকে বলেছে, এই রঙের জন্যই ওর সৌন্দর্য্য যেনো চতুর্গুন বেড়ে গেছে। যেখানেই গেছে সেখানেই ওর রূপের আগুনে পুড়েছে ওর কাছাকাছি আসা পুরুষ। একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়লেও আবার কাজে মন দেয়।

আকাশ প্রায় মিনিট দশ পনেরো আগেই ল্যাবে এসেছে। ম্যাডামকে সুখবরটা দেওয়ার জন্য আকুপাকু করছে কিন্তু ম্যাডামের কাজই শেষ হচ্ছে না। ম্যাডাম এমনই, যখন কাজ করেন তখন বাহ্যজ্ঞান লুপ্ত হয়ে যায়। একবার শুধু ওরদিকে তাকিয়ে একটা মোহিনী হাসি উপহার দিয়ে ইশারায় অপেক্ষা করতে বলেছেন। আকাশ একদৃষ্টে পিঠের উপর পড়ে থাকা কালো মোটা বিনুনির দিকে তাকিয়ে ছিল। যেটা ম্যাডামের নড়াচড়ার সাথে সাথে মৃদু মন্দ দোল খাচ্ছিল।

আজ প্রায় বছর তিনেক হলো এই ল্যাবটা চালায় দুজনে মিলে। যদিও বিল্ডিং প্রেমিসেসটা আকাশের বাড়ির নিচের তলা। তবুও এখানে ডাঃ পাঞ্চালি গণেশন আর ডাঃ আকাশ রক্ষিত ফিফটি ফিফটি পার্টনারশিপে কাজ করে। পাঞ্চালি ম্যাডাম ওর থেকে ছয় সাত বছরের সিনিয়র। আকাশ বত্রিশ আর ম্যাডামের চল্লিশ ছুঁই ছুঁই। যদিও ম্যাডামকে দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। বয়স দাঁড়িয়ে আছে ত্রিশের কোঠায়। আকাশ যে আস্তে আস্তে ম্যাডামের প্রতি অবসেসড হয়ে পড়ছে সেটা বেশ বুঝতে পারছে। মন আর মস্তিষ্কের টানাপোড়েনে জেরবার হয়ে গিয়ে ভবিতব্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছে নিজেকে।

ঘটনার সূত্রপাত বেশ কয়েক বছর আগে। আকাশ তখন সবে জুনিয়র রিসার্চার হিসাবে ব্যাঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে নিযুক্ত হয়েছে। সেখানকার সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ডাঃ পাঞ্চালি গনেশন তখন বেশ কিছু গবেষণায় খ্যাতি লাভ করেছেন। ওদের মেন্টর এক হওয়ায় দুজনের মধ্যে পরিচয় হয়ে যায়। পরে আকাশ জানতে পারে ওখানকার ডিপার্টমেন্ট ডিরেক্টর ডাঃ এস. পি. গণেশনের স্ত্রী উঁনি।

বরাবরই অসাধারণ মেধাবী আকাশ। বছর খানেকের মধ্যেই এখানেও নিজের জায়গা করে নেয়। পেইন্টের একটা নতুন ফর্মুলা আবিষ্কার করার জন্য রাতারাতি আকাশকে নিয়ে তুমুল হই চৈ পড়ে যায়। এরপরই আকাশের কাছে আসে একটা বেসরকারি কোম্পানীর কাছ থেকে প্রজেক্টের অফার। এই সরকারী প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থেকে কোনোভাবেই ওই প্রজেক্ট করা যাবে না সেটা আকাশ জানে। তারজন্য দরকার নিজস্ব একটা ল্যাব। কিছুদিন বিভিন্ন রকম চিন্তা ভাবনায় আকাশ অস্থির হয়ে থাকে। কিছুতেই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে না।

সেইসময় পাঞ্চালিও বৈবাহিক সম্পর্কে তিতিবিরক্ত হয়ে সম্পর্কে ইতি টানতে চায়। সব ছিঁড়েখুঁড়ে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য আর এই জায়গাও ছেড়ে দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কথা প্রসঙ্গে পাঞ্চালিকে প্রস্তাবটা দিতেই ও একপ্রকার রাজি হয়ে যায়। ততদিনে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক আগের থেকে অনেকটাই বন্ধুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পরদিন কথা ফাইনাল করতে কাজের শেষে দুজনে একটা ক্যাফেতে গিয়ে বসে,

" হ্যাঁ, ডাঃ আকাশ! এবার তোমার প্রস্তাবটা একটু বিশদে বলো শুনি। বুঝতেই পারছ সব আবার নতুন করে শুরু করতে হবে আমাদের। আগে থেকে একটা আইডিয়া থাকলে সুবিধা হবে।"

" ঠিকই বলেছেন ম্যাডাম! এই দেখুন ওদের অফার লেটারটা। আমি এখনো কোনো রিপ্লাই করিনি। আসলে একা ঠিক সাহস পাচ্ছি না বলতে পারেন। আপনাকে সাথে পেলে দুজনে মিলে ঠিক উৎরে যাবো।"

ডাঃ পাঞ্চালি মন দিয়ে লেটারটা পড়ে মনে মনে খুশি হয়। তার উপর আকাশের মনে ওকে নিয়ে নির্ভরতার জায়গাটা রয়েছে, সেটা জেনেও ভালো লাগে। কিন্তু মানুষের মন বড় বিচিত্র আর জটিল। এর তল পাওয়া ভগবানেরও অসাধ্য। পরক্ষণেই মনটা বিষাদে ছেয়ে যায়। সিনিয়র হিসাবে অফারটা ওর কাছেই আসা উচিৎ ছিল। এরমধ্যে পাঞ্চালিও অনেক প্রশংসনীয় কাজ করেছে। ওকে টপকে আকাশের অফারটা পাওয়া মন থেকে মেনে নিতে পারে না। পাঞ্চালির পরবর্তী পদক্ষেপে তার যেনো কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। যেটা এতটাই সূক্ষ্ম যে আকাশের চোখে ধরা পড়ে না।

" কংগ্রেচুলেশন, ডাঃ আকাশ রক্ষিত! আমি তোমার প্রস্তাবে রাজী। তবে আমার একটা শর্ত আছে। আসলে এটা ঠিক শর্ত নয়, আমার বহুদিনের লালিত স্বপ্ন বলতে পারো! এই ল্যাবের ডিরেক্টরের পোস্টটা আমার চাই। তুমি সেইভাবেই রেজিস্ট্রেশন করাবে। যদিও আর কোনো এডভান্টেজ আমার চাই না। আমরা ফিফটি ফিফটি পার্টনারশিপেই কাজ করবো। ভেবো না আমি জোর করে তোমার উপর চাপিয়ে দিচ্ছি! তুমি সময় নিয়ে ভাবো। তারপর যদি এগ্রি থাকো তাহলে আমিও রাজী। আসলে কি জানো তো, একবার এই ল্যাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে শুরু করার পর আর নতুন করে আলাদা ল্যাব করার চিন্তা আমার মাথায় আসবে না। সুতরাং স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।"

" আমার নতুন করে ভাবার কিছু নেই ম্যাডাম! আমি রাজি। সিনিয়র হিসাবে ওই পোস্ট আপনারই প্রাপ্য। আমি সেইভাবেই সব ফরমালিটিস করবো। আর এগ্রিমেন্ট কপিটাও আপনাকে পাঠিয়ে দেব। আমি সামনের সপ্তাহেই আমার রেজিগনেশন প্লেস করবো। তারপর কলকাতায় ফিরে গিয়ে বাকি কাজ করে ফেলবো। মাস দুয়েকের মধ্যেই সব হয়ে যাবে। আপনি সেইমত তৈরি থাকবেন। বাই দ্যা ওয়ে ম্যাডাম, আপনি ওখানে কোথায় গিয়ে উঠবেন? আপনার বাবা মায়ের কাছে?"

" না আকাশ! আমাদের বাড়ি থেকে নয়। তুমি ল্যাবের কাছাকাছি একটা ফ্ল্যাট ঠিক করে দিও প্লীজ! এক কামরার হলেও কোনো অসুবিধা নেই! এটা তোমার কাছে আমার অনুরোধ। আমি যেনো গিয়ে ওখানেই উঠতে পারি। এটুকু আমার জন্য কোরো প্লীজ! ফান্ড আমি তোমার একাউন্টে পাঠিয়ে দেবো।"

" ওকে ম্যাডাম! সে ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তবে আপনি ইচ্ছা করলে আমার বাড়িতেও থাকতে পারেন। আমাদের বাড়িটা বিরাট! লোক বলতে শুধু আমি। নিচের তলা ল্যাবের জন্য ছেড়ে দিলেও উপরে পাঁচ ছটা ঘর আছে। আপনি বললে আপনার জন্য সেপারেট ব্যবস্থা করে দিতে পারি।"

" ইউ আর সো থটফুল! বাট নো - ও! ভুলে যেও না ওটা কিন্তু বেঙ্গালুরু নয়, ওটা কলকাতা। আর তাছাড়া আমার ঠিক লাগছে না। তুমি বরং কাছাকাছি একটা ফ্ল্যাট দেখে রেখো।"

" ঠিক আছে ম্যাডাম, আপনি যেরকম বলবেন। আমি ওখানে গিয়ে আপনাকে ওভার ফোন ইনফর্মেশন আপডেট করতে থাকবো।"

এরপরই কয়েক মাসের ব্যবধানে ওরা কলকাতা চলে আসে। এই তিন বছরে ওরা অনেক কাজই করেছে কিন্তু স্বাধীন ভাবে ল্যাব চালানোর মত টাকা দুজনের কারোরই নেই। অনেকদিন ধরে সরকারি গ্রান্ট পাওয়ার আশায় রয়েছে।

এর মধ্যে আজই আকাশ জানতে পেরেছে, বিভিন্ন দেশের কিছু তরুণ সায়েন্টিস্টদের একটা টিম তৈরি করা হয়েছে বিশেষ কনফিডেন্সিয়াল কিছু রিসার্চের জন্য। যাতে ডাঃ আকাশ রক্ষিতের নাম আছে। আকাশ সেই খবরটাই পাঞ্চালি ম্যাডামকে জানাতে এসেছিল।

আকাশ যখন বসে বসে উসখুস করছে, তখনই ম্যাডামের ফোনটা বেজে ওঠে। কথা যত এগোতে থাকে ততই ম্যাডামের মুখটা উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠতে থাকে। আকাশ এক পক্ষের কথা থেকে খুব একটা কিছুই বুঝতে পারে না। তবে ম্যাডামের খুশি মাখা মুখ ওর চোখ দুটোকে টেনে রাখে।

প্রায় মিনিট কুড়ি কথা বলার পর ফোন রেখে পাঞ্চালি ছুটে এসে দু হাত বাড়িয়ে আকাশকে জড়িয়ে ধরে বলে,

" আমাদের জন্য একটা দারুণ সুখবর আছে আকাশ!"

চলবে
-----
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

🔥পর্ব - 1🔥 মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখে একমনে পাঞ্চালি কাজ করলেও ওর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিচ্ছে, পিছনে বসে ডাঃ আকাশ রক্ষ...

     সকাল থেকে আকাশটা মেঘলা ছিল। অনেকক্ষণ পর মেঘ সরে রোদ বেরিয়েছিল। যে যার কাজ করছিল। মেঘ রোদ্দুর নিজেদের মধ্যে খেলা কর...
01/11/2025


সকাল থেকে আকাশটা মেঘলা ছিল। অনেকক্ষণ পর মেঘ সরে রোদ বেরিয়েছিল। যে যার কাজ করছিল। মেঘ রোদ্দুর নিজেদের মধ্যে খেলা করেছে বিকেল অবধি। বিকেল পাঁচটা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কলেজ ছুটির পর টিউশন পড়িয়ে বাড়ি আসা অহনা নিজের ক্লান্ত শরীর টা এলিয়ে দিয়েছে বিছানায়। কলেজ তার শেষের পথে। একটা সেমিস্টারের এর পরীক্ষা বাকি। আর মনের মধ্যে শেষের শুরুর চিন্তা। এসব চিন্তা আপাতত দূরে সরিয়ে রেখে সে ফ্রেশ হয়ে এলো। মা বাবার একমাত্র মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই খুব আদরের। কিন্তু গ্র্যাজুয়েশন যেহেতু শেষের পথে তাই ওর দেখাশোনার কথা কানে এসেছিল। ওর বাবা মা ওকে কিছু না বললেও,ওর মনে মনে এক চিন্তা হয় এই দেখাশোনার ব্যাপারে। মনে মনে ভাবে
" এত পড়াশোনা করেও বিয়ের বাজারে নিজেকে টিপিক্যাল ঘরোয়া মেয়ে হিসেবে হাজির করতে হবে "। ইচ্ছে করে অনার্স নেয়নি যাতে নিজের টাকায় নিজের গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে পারে আর নিজের অন্য প্রতিভাগুলো সঠিক জায়গায় সঠিক সময়ে প্রকাশ করতে পারে । নাহলে চাইলেই বাবার টাকায় বেসরকারি কোনো কলেজে দামী কোনো কোর্স করে নিতে পারত । ও যে খুব গরিবের মেয়ে তা নয়। বাবা বিজনেসম্যান। মা গৃহবধূ। ছোটবেলা থেকেই ওনারা মেয়ের কোনো ইচ্ছা অপূর্ণ রাখেননি। ওনারা মেয়ের বিয়ে নিয়ে বেশি চিন্তিত নন। কিন্তু পাড়ার লোক তো আছে। বলা ভালো পাড়ার কাকিমারা। প্রায়ই ওর মা কে তাড়াতাড়ি মেয়ের বিয়ে দিতে বলে। যদিও নীলাঞ্জনা দেবী তেমন আমল দেন না।কিন্তু অহনা মনে মনে ভাবে ওর মা ই বা আর কত দিন পাড়ার কাকিমা দের কথায় আমল না দিয়ে থাকবে।

ঘড়িতে তখন রাত নটা। টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়েই চলেছে। অহনা পড়তে বসেছিল। হঠাৎ ওর কল্পনায় চোখের সামনে এক উজ্জ্বল মুখ ভেসে উঠলো। আর ও নিজের অন্য এক জগতে হারিয়ে গেল। যেখানে কোনো ভবিষ্যতের চিন্তা নেই , কিছু হারানোর ভয় নেই , আছে শুধু এক আকাশ ভালোবাসা। যার মুখ ভেসে উঠলো ওর চোখের সামনে সে আর কেউ নয়, ড. নীলাদ্রি ভট্টাচার্য। ওর থেকে বছর পাঁচেক এর বড়ো। ওর মামার বাড়ির পাড়ায় বাড়ি তার। সাধারণত ও যখন মামার বাড়ি যায় তখন কথা হয়। কিন্তু কখন যে অজান্তেই অহনার মনের মধ্যে নীলাদ্রির প্রতি ভালোবাসার অনুভূতি তৈরি হয়ে গেছে তা ও বুঝতে পারেনি। ব্যাপার টা খেয়াল করতেই স্বপ্নের জগৎ থেকে সরে গেলো। মনে মনে মুচকি হাসলো। পরক্ষণেই ভাবলো কীসব যাতা ভাবছিল। এত ব্রিলিয়ান্ট একটা ছেলে ওকে কেনো ভালোবাসবে। ও আবার পড়ায় মন দিলো।

ওরা রাতের খাওয়া সেরে মা মেয়ে কিছুক্ষণ কথা বলছিল। অখিলেশ বাবু বিসনেস এর কিছু কাজ করছিলেন।
নীলাঞ্জনা দেবী: এই মাসে একবার তোর মামার বাড়ি যাবো ভাবছি। তুই যাবি আমার সাথে?
অহনা: যদি কলেজ আর পড়ানো না থাকে তাহলে যেতে পারি।
নীলাঞ্জনা দেবী: শনি বা রবিবার দেখে যাবো।
অহনা: ঠিক আছে। গেলে বলবে আমিও চেষ্টা করবো যাতে যেতে পারি।
নীলাঞ্জন দেবী: ঠিক আছে। এখন শুতে যা।
অহনা: হ্যাঁ। কাল বারোটা থেকে কলেজ সকালে ডেকে দিও তাড়াতাড়ি।
নীলাঞ্জনা দেবী: হ্যাঁ। পড়ানো নেই তো কাল ?
অহনা: কাল তো শনিবার। পড়ানোর ছুটি তো।
নীলাঞ্জনা দেবী: ও। ঠিক আছে ডেকে দেবো ।এখন শুতে যা।
অহনা: ঠিক আছে।

ঘড়িতে সকাল সাত টা। নীলাঞ্জনা দেবী ডাকছিলেন মেয়েকে।
মিষ্টি ..... ওঠ মা। সকালে কীসব পড়াশোনার কাজ করবি বলছিলি তো।
মিষ্টি অহনার ডাক নাম। মা এর ডাকে ও তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়লো।

তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিজের কলেজ এর কিছু কাজ করতে বসলো। কাজ শেষ করে স্নানে গেলো। স্নান সেরে এসে রান্নাঘরে গেলো। রান্না করতে ও ভালোই বাসে। রোজ তো রান্না করার সময় পায় না । যতটা পারে করে। আজ যেহেতু বারোটা থেকে কলেজ তাই তাড়াতাড়ি করে ভাত , মাছের ঝোল টা করে নিলো। বাকি রান্না ওর মা করেছে। ও তাড়াতাড়ি খেয়ে কলেজ এর জন্য বেরিয়ে পড়লো। ওই সময় ওর বান্ধবী প্রিয়া ফোন করে বললো বারোটার ক্লাস একটা থেকে হবে তাই একটু পরে বেরোতে। ও তাই বাড়িতে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো।ওরা দুজন বেশিরভাগ দিন একসাথেই কলেজ যায়।
কুড়ি মিনিট পর প্রিয়া ফোন করে ওকে বেরোতে বললো। তারপর ও বেরিয়ে পড়লো। কলেজ ওদের বাড়ি থেকে হাঁটা পথে পনেরো মিনিট লাগে। ওরা দুজন একসাথে কলেজ চলে গেলো। ওদের তিনটে অবধি ক্লাস হবার কথা। ছুটির সময় দুই বন্ধু গল্প করতে করতে বাড়ি ফিরছিল।

প্রিয়া: ওই এবার মনে হয় আমার দেখাশোনা শুরু হবে বাড়ি থেকে।
অহনা: এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলবি !?
প্রিয়া: ধুর! দেখাশোনা হলেই কি আর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে । আগে নিজে কিছু করি তো। দেখাশোনা শুরু হোক না তত দিন।
অহনা: তোর ভয় করে না ?
প্রিয়া: ভয় করলেই আর কি। বিয়ে তো একদিন করতে হবে। আমার আর বাড়ির লোক এর পছন্দ হলে বিয়েতে রাজি হবো নাহলে নয়। ছেলের ফ্যামিলিও তাই নিশ্চই।
অহনা: আমার লাভ ম্যারেজ হলে কি ভালো হতো। কিন্তু পোড়া কপাল আমার। এত বছর কলেজ আসছি এখনও আমি সিঙ্গেল।
প্রিয়া: দেখ আমারও লাভ ম্যারেজ হলে ভালো হতো। কিন্তু সেটা যখন হয়নি আর আমিও যখন সেভাবে কাউকে ভালোবেসে উঠতে পারিনি তখন অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ ই সই। বিয়ের আগে যাই থাকি বিয়ের পর ভালোবাসা পেতে আর দিতে চাই।
অহনা: ঠিকই বলেছিস। তবে নিজে একটা কিছু পার্মানেন্ট কাজ করবি আগে। তারপর বিয়ে করবি।
প্রিয়া: হ্যাঁ রে। একজন পুরুষ মানুষের ওপর আর কত চাপ দেবো। আমি আমার পরিবারের দায়িত্ব নিতে চাই। আমার উল্টো দিকের মানুষ যেন তেমন হয়। আমি জানি হান্ড্রেড পার্সেন্ট মতের মিল হবে না। কিন্তু সম্পর্ক যেন বিশ্বাস,ভরসা,ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হয়।
অহনা: ঠিক বলেছিস। কিন্তু তুই বিয়ে করে নিলে আমি এখানে একা হয়ে যাবো।
প্রিয়া: তুর পাগলি! দেখাশোনা শুরু হলেই কি বিয়ে হয়ে যাচ্ছে নাকি?
অহনা: হতেও তো পারে । এক দেখাতেই দুজনের দুজনকে পছন্দ হয়ে গেল।
প্রিয়া: কিন্তু বিয়ে তো পাঁচ বছর পর করবো।
অহনা: এত দিন সময় নিবি!?
প্রিয়া: হ্যাঁ। আগে বন্ধু হতে চাই।
অহনা: ভালো সিদ্ধান্ত। আমার কী হবে? আমি কি সিঙ্গেল থাকবো সারাজীবন?
প্রিয়া: তোর যখন মনে হবে তুইও দেখাশোনা শুরু করতে বলবি বাড়ি থেকে। আর তার আগে যদি মনের মানুষ পেয়ে যাস তাহলে তো দারুণ ব্যাপার হবে।
অহনা: দেখা যাক কী হয়। তা তোকে দেখতে আসবে কবে ?
প্রিয়া: রবিবার দেখেই আসবে নিশ্চই এলে। ছুটির দিন। তুইও থাকবি সেদিন প্লীজ। তুই সাথে থাকলে আমার ভয় আর অস্বস্তি টা কিছুটা কমবে।
অহনা: ঠিক আছে। থাকবো। তুই না বললে ....
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

সকাল থেকে আকাশটা মেঘলা ছিল। অনেকক্ষণ পর মেঘ সরে রোদ বেরিয়েছিল। যে যার কাজ করছিল। মেঘ রোদ্দুর নিজেদের মধ্যে খেলা ....

     এই বাস দাঁড়াও দাঁড়াও বলে একটি মেয়ে ছুটতে ছুটতে চিৎকার করছে... কিন্তু মেয়েটির আওয়াজ  বোধহয় বাস পর্যন্ত পৌঁছায়...
01/11/2025


এই বাস দাঁড়াও দাঁড়াও বলে একটি মেয়ে ছুটতে ছুটতে চিৎকার করছে... কিন্তু মেয়েটির আওয়াজ বোধহয় বাস পর্যন্ত পৌঁছায়নি। মেয়েটি শেষে হাঁপাতে হাঁপাতে দাঁড়িয়ে পড়ে বলে, যাহ! চলে গেল বাসটা??.

তারপর মুখটা করুণ করে বলে ওঠে, এখন কি করব? বাসটা তো মিস করলাম।

ওই জন্য সবাই বলে, মায়ের কথা শুনতে হয়...মা কতবার বললো, "মুন একটু আগে বেরিয়ে যা নাহলে বাস মিস করবি"...ইস! এখন যদি মা কে বলি আমি বাস পায়নি মা তো আমাকে খুব বকবে।

উফ মুন তোর কবে যে বুদ্ধি হবে??...মা তোকে ঠিকই বলে, "বয়সেই বড়ো হয়েছিস...বুদ্ধি এখনও হাঁটুতে।"

মুন যখন এসব ভাবছে, "তখনই ওর ফোনটা বেজে ওঠে। দেখে মা ফোন করেছে।"...মুন ফোনটা না ধরে silent করে রেখে দেয়...

এই হচ্ছে আমাদের গল্পের নায়িকা মুনমুন ব্যানার্জী....বয়স-21.....খুব রোগাটেও না আর মোটাও না..বেশ মানানসই চেহারা...বেশ লম্বা...সুন্দর মুখশ্রী দেখতে ভীষণ মিষ্টি...তবে দেখতে যতটা মিষ্টি স্বভাবে ভীষণ দুষ্টু.... আর সবকিছুতে দেরি করা ওর স্বভাব...দেখলেন তো এই জন্য বাসটাও মিস করলো...মুনমুন মালদহের মেয়ে কলকাতা
M.sc
করছে...পরশু থেকে ওর ইউনিভার্সিটি শুরু পুজোর ছুটিতে বাড়ি এসেছিল.... ও দুদিন আগেই যাচ্ছে....ও কলকাতাতে একটি বাড়িতে পেইং গেস্ট হিসেবে থেকে পড়াশোনা করছে....

মুন এখন ভাবছে কি করবে?? পরের বাস তো দু ঘন্টা পরে। কি করবে ভেবে না পেয়ে সিদ্ধান্ত নেয় এই জায়গাটা ঘুরে দেখার ।"

বাসের কথাটা মনে পড়তেই মুখটা করুণ করে বলে,"কিন্তু দু ঘন্টা পরে মানে তো রাত হয়ে যাবে??"...ইস!" আমি কি করে জানব দু মিনিটের জন্য বাস মিস হবে। "

মুনমুন বাস স্ট্যান্ডের পাশে এদিক ওদিক ঘোরার পর ও এক জায়গায় এসে বসে পড়ে। বসার পরে ভাবে "কাউকে একটা ফোন করে কথা যাক।" ইস! কি বোরিং লাগছে। ও ওর প্রিয় বান্ধবী মিমিকে ফোন লাগায়। ফোন করে দেখে, মিমির ফোন সুইচ অফ বলছে।
ফোনে না পেয়ে মুন বলে,এই মিমি টাও ফোন সুইচ অফ করে রেখেছে।

এইসময় একটা মশা এসে মুনকে কামড়ালে বিরক্তকর মুখে বলে,"আর কি করি মশা তাড়াতে থাকি"....মুন যখন এসব ভাবছে তখন পাশ থেকে একটা ছেলের গলার আওয়াজ পেয়ে মুন তাকিয়ে দেখে.... শুট বুট পরা একটি handsome ছেলে ফোনে কাউকে ঝাড় দিচ্ছে....

আপনারা এত careless কি করে??...গাড়িটা খারাপ হয়েছে কতক্ষণ বলেছি....সামান্য একটা গাড়ি arrange করতে পারছেন না??....এখন আপনাদের জন্য আমাকে এসব বাসে করে যেতে হবে??....এই অভিরাজ রায় চৌধুরী কিনা বাসে যাবে??....আমার কলকাতা ফেরা কতটা important জানেন??....ফোনের ওপাশ থেকে কেউ একজন বলছেন, "সরি স্যার আমাদের ভুল হয়ে গেছে"....সরি মানে সরি বললেই ভুল টা মাফ হয়ে যাবে?... অভি আরও রেগে বলে, আমি কলকাতা যায় আপনাদের কাউকে spare করব না....বলেই ফোনটা রেখে দেয় অভি।

(এই হচ্ছে অভিরাজ রায় চৌধুরী গল্পের নায়ক...বয়স-29...দেখতে সুদর্শন...হাইট 6 ফিট...রায় চৌধুরী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান CEO....স্বভাবে ভীষণ রাগী...মনটা ভীষণ ভালো তবে সেটা বুঝতে দেয়না... ও এমন ভাবে থাকে যে সবাই ওকে দেখে সমঝে চলে... ও গতকাল একটা মিটিং এর জন্য কলকাতা থেকে মালদহ এসেছিল...ওর গাড়িটা আজ আসার সময় খারাপ হয়ে গেছে...পরে কোনও কারণে আর গাড়ি arrange করাও যায়নি...বাধ্য হয়ে বাসে যেতে হচ্ছে কারণ ওর কাল important একটা মিটিং আছে....

মুন এতক্ষণ অভির কথা শুনছিল....কথা শুনে মুন বুঝতে পারে ইনি ভীষণ বড়োলোক...আর বাসে যেতে আপত্তি আছে।

মুন যখন এসব ভাবছে ...অভি এসে মুনের কাছাকাছি বসে। মুন এবার কাছ থেকে অভির মুখটা দেখেই চোখ সরিয়ে নিল....মুন এমনি বসে ফোন ঘাঁটতেই পারতো...কিন্তু বেশি ফোন দেখা পছন্দ করে না...ও দুষ্টু হলেও পড়াশোনা তে খুব ভালো... মুন খুব ভালো ছবি আঁকে দারুণ ডিজাইন করতে পারে....আর প্রকৃতির সাথে সময় কাটাতে ভালোবাসে....

অভি বসে বসে ভীষণ বিরক্ত হচ্ছে...আর ফোনে কিছু করছে.... মুন হঠাৎ পাশ থেকে উঠে গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে....আজ পূর্ণিমা তাই জন্য চাঁদের আলোতে সবকিছু খুব মোহময়ী লাগছে...মুন চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে...অভি হঠাৎ ফোন থেকে চোখটা মুনের দিকে চলে যায়...চাঁদের আলো পড়ে মুনের মুখটা কি মায়াবী মোহময়ী লাগছে...মুন এমনিতে তো মিষ্টি দেখতে যেন আরও মিষ্টি লাগছে....অভি একভাবে মুনকে দেখছে....এইভাবে ও যে কতক্ষণ তাকিয়ে ছিল...যদি না বাসের হর্ন বাজতো হয়তো মুন চাঁদকে আর অভি মুনকে দেখতেই থাকতো.... বাসের হর্নে যেন দুজনের ধ্যান ভাঙে....অভি সঙ্গে সঙ্গে চোখটা সরিয়ে নেয়....আর ভাবে ইস! এতক্ষণ আমি কি করছিলাম??

মুন ফোনের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে, এখন সবে আটটা। এখন একটা বাস আছে। এটা অন্য বাস...কলকাতা যাওয়ার বাস রাত 8:30টাতে ।

মুন ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে, মা বাবার অনেকগুলো মিসড কল...মুন শুধু ভাবছে ফোন ধরে কি বলবে?...ফোন ধরলে সত্যি কথা বললেও চিন্তা করবে...আবার ফোন না ধরলেও চিন্তা করবে....ইস এখন যে কি করি??....তারপর কিছু একটা ভেবে ফোন back করে....ফোন করতেই ওর মা ফোন ধরে বলে, ফোন তুলছিলি না কেন??

মুন বলে, "মা শোনো আমার কথাটা!"...আসলে আমি না একটু বাসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম...বাসটা একটু দাঁড়িয়েছে...আর আমি তোমাকে ফোন করলাম।

ওর মা বলে, খেয়েছিস কিছু??...
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:
https://bengali.pratilipi.com/story/v2zfpmumrxnb?location=fb-post&language=BENGALI&utm_source=facebook&utm_campaign=bengali_scheduler&redirectToReader=true&version=10112024

এই বাস দাঁড়াও দাঁড়াও বলে একটি মেয়ে ছুটতে ছুটতে চিৎকার করছে... কিন্তু মেয়েটির আওয়াজ বোধহয় বাস পর্যন্ত পৌঁছায....

     মায়া ছোট্ট শহরের মেয়ে যার চোখে ছিল বলিউডের রঙিন স্বপ্ন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এসে প্রায় নিজেকে বড় পর্দার নায়ি...
01/11/2025


মায়া ছোট্ট শহরের মেয়ে যার চোখে ছিল বলিউডের রঙিন স্বপ্ন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এসে প্রায় নিজেকে বড় পর্দার নায়িকা হিসেবে কল্পনা করতো। মুম্বাই এসে সেই স্বপ্নকে বাস্তব করতে সে নিজের সব জমানো টাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল। কিন্তু স্বপ্নের এই শহর তার জন্য প্রস্তুত ছিল না।

মায়া কয়েকটি অডিশনে অংশ নেয়, কিন্তু বলিউডের অন্ধকার দিক বুঝতে তার দেরি হয়নি। একদিন একটি প্রযোজনা সংস্থার নামী পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি মায়া কে ছবি করার লোভ দেখায়।
মুম্বাইয়ের ঝা চকচকে জগতে পা রেখে মায়া বুঝল, স্বপ্ন আর বাস্তবের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। শহরের চাকচিক্য তাকে হাতছানি দিলেও প্রতিপদে পদে সে ধাক্কা খেতে লাগলো। সর্বস্ব হারানোর পর যখন নিরাশার অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছিল এমন সময়ই মায়ার তার সাথে দেখা। কে সে?

চুক্তিপত্র সই করতে এসে বুঝতে পারে এটি এক ধূর্ত স্ক্যাম। মায়ার সমস্ত টাকা হাতে নিয়ে লোকটি উধাও হয়ে যায়। নতুন শহরে একা, টাকার অভাবে মেসের মালিকও তাকে রুম ছাড়ার হুমকি দেয়। সেই সময়ে মায়ার জীবনে সেই নতুন ব্যক্তির প্রবেশ। "একজন সফল প্রযোজক সুদর্শন আত্মবিশ্বাসী এবং রহস্য মোরা এক ব্যক্তি"।

মায়া যখন অপ্রস্তুতে পড়ে বলিউডের এ দরজা থেকে ও দরজায় এদিক ওদিক করছে সে কি করবে নিজের চিন্তায় মগ্ন হয়ে এক জায়গায় বসে আছে এমন সময় গাড়ি থেকে নামলেন এক ব্যক্তি। লম্বা-চওড়া সুদর্শন হ্যান্ডসাম গাম্ভীর্য চেহারা তবে গালের সামান্য টোল পরে। তবে না হাসলে সেটা বোঝার সাধ্য কারোর নয়। উনি সোমরাজ বলিউডের একজন সফল প্রযোজক। হঠাৎ করে একদিন সোমরাজের চোখে মায়ার প্রতিফলন নজরে পড়ে।

"কে এই মেয়েটি"? অদ্ভুতভাবে এরকম জায়গায় এখানে বসে আছে এই স্ট্রাগেল পিরিয়ডে এখানে তো একটা বরফকেও গলতে দেওয়া হয় না। কে আপনি? কাকে দরকার আপনার আপনাকে তো মনে হচ্ছে না আমাদের বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে খুব একটা চেনা জানা বলে, আপনাকে অপরিচিতই লাগছে। কিন্তু আপনি এই শুটিং ফ্লোরে বসে আছেন তাই জিজ্ঞেস করছি সরি ডোন্ট মাইন্ড। আপনার প্রয়োজন হলে আপনি উত্তর দেবেন না হলে ইটস ওকে।

হ্যালো, আমি মায়া। আমি কলকাতায় থাকি, বর্তমানে আমি বলিউডে এসেছিলাম বিভিন্ন জায়গায় অডিশনও দিয়েছি বলতে পারেন আমি চাই কোন রোলে অবশ্যই অভিনয় করতে কিন্তু এখানে এসে যেটা দেখলাম বা যেটা আমি অ্যাচিভ করলাম সেটার অভিজ্ঞতা খুবই নগণ্য। একজন প্রযোজক ছিলেন তিনি বলেছিলেন যে এখানেই আসতে তো আমি এর আগেও এসেছি কয়েকবার উনি আমাকে শুটিংয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চুক্তিতেও সই করিয়েছিলেন। তারপর কিছু টাকা পয়সা যেটা আমাকে দিতে হয়েছিল পেমেন্ট তারপর থেকে তার আর কোন খবর নেই। তাই বুঝতে পারলাম এখানকার অন্ধকার জগত সম্পর্কে, বর্তমানে অবচেতন মনে আমার চেতনা ফিরেছে। তাই এখানে বসে ডিসাইড করছি এখানে থাকবো নাকি আমার কলকাতা শহরেই ফিরে যাবো।

দেখুন সাধারণ সচ্ছল ঘরের মেয়ে আমি, আমার বাড়িতে বাবা মা ভাই-বোনেরা আছে, মনের কোণে প্রচুর জমানো স্বপ্ন, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমি বলিউডের পাড়ি দিয়েছিলাম তবে এখানে এসে আমার অভিজ্ঞতাটা প্রথমেই যেখানে ধাক্কা খেলো, সেখানে দাঁড়িয়ে আমি ভাবছি, তাই আপনি আমাকে এখানে দেখতে পেলেন। তবে আপনার কথা আমি শুনেছি অনেকের মুখে আপনি একজন বড় সফল প্রযোজক সোমরাজ রায়।

"তোমার কাজের জন্য কেউ তোমাকে নেবে না, আমি জানি," সোমরাজ বলেছিল সেদিন। "তবে একটা উপায় আছে।"

সোমরাজের শর্ত ছিল সরল অথচ জটিল। তার পরিবারের চাপের কারণে সে কিছুদিনের জন্য বিয়ে করতে বাধ্য। মায়াকে প্রস্তাব দিল সেই হবে তার কন্ট্রাক্ট ওয়াইফ বিনিময়ে মায়ার থাকার জায়গা, অর্থ এবং অভিনয়ের সুযোগ সে নিশ্চিত করবে।

মায়া দ্বিধায় পড়ে গেল। নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য কি সে নিজের জীবনটাকে এমন দুঃসাহসিক পথে নিয়ে যেতে পারবে? কিন্তু পেটের ক্ষুধা, আশ্রয় আর স্বপ্নের টান তাকে রাজি হতে বাধ্য করল।

পরদিন মায়া আর সোমরাজের বিয়ের আয়োজন হয়। সীমিত পরিসরে, শুধু সোমরাজের পরিবার আর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু উপস্থিত ছিল।

"মনে রেখো", সোমরাজ তাকে ফিসফিস করে বলে, আমাদের সম্পর্ক শুধু চুক্তির সীমায়। আমার পরিবারের সামনে মিষ্টি বউয়ের অভিনয় করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে আমরা দুজনেই স্বাধীন। মায়া নীরবে মাথা নাড়ল।

সোমরাজের পরিবারের মায়ার আগমন, সোমরাজের পরিবার মায়াকে খুশি মনে গ্রহণ করলেও মায়ার জন্য এটি যেন এক অগ্নিপরীক্ষার শুরু। তার শাশুড়ি প্রতিমা দেবী ছিলেন প্রচণ্ড রক্ষণশীল সন্দেহ প্রবন প্রকৃতির। প্রথম দিনেই মায়াকে শর্ত দেওয়া হলো "আমাদের পরিবারে সম্মানের প্রশ্ন, তুমি যদি কোন ভুল করো, তার ফল ভালো হবে না"।

মায়া হাসিমুখে সব সহ্য করতে লাগলো কারণ তার সামনে ছিল স্বপ্নের সেই বলিউডের সোনালী পর্দা। মায়া আবেগে জড়িয়ে ছিল।

কিন্তু সোমরাজের বাড়ির পরিবেশ একটা চাপা রহস্যে মোড়া ছিল। বাড়ির কাজের লোকেরা ফিসফিস করে কিছু বলত, সোমরাজের ভাই সোমনাথ তাকে এড়িয়ে চলত। এমনকি সোমরাজ ও যেন কিছু লুকাচ্ছিল।

এক রাতে মায়া আচমকা শুনে ফেলে সোমরাজ কারোর সাথে কথোপকথন করছে।

"হ্যাঁ, আমি জানি এটা ঝুঁকির কাজ, কিন্তু আমি সামলে নেব। তুমি শুধু তাকে এখন নজরে রেখো"।

মায়ের বুক কেঁপে উঠল। সোমরাজের গলায় এক অদ্ভুত শীতলতা স্পষ্ট ছিল। মায়া ঘুমানোর চেষ্টা করছিল, কিন্তু মাথায় সোমরাজের কথাগুলো ঘুরপাক খাচ্ছিল।

"হ্যাঁ আমি জানি এটা ঝুঁকির কাজ, কিন্তু আমি সামলে নেব। তুমি শুধু তাকে এখন নজরে রেখো.."

তার শরীরে শিহরণ বয়ে গেল। কার কথা বলছিল সোমরাজ ? তাকে নিয়েই কি কথা হচ্ছিল? নাকি অন্য কাউকে নিয়ে? ....
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

মায়া ছোট্ট শহরের মেয়ে যার চোখে ছিল বলিউডের রঙিন স্বপ্ন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এসে প্রায় নিজেকে বড় পর্দার না...

Address

Nasadiya Technologies Private Limited, Sona Towers, 4th Floor, No. 2, 26, 27 And 3, Krishna Nagar Industrial Area, Hosur Main Road
Bangalore
560029

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Pratilipi Bengali posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Pratilipi Bengali:

Share