Pratilipi Bengali

Pratilipi Bengali Discover, read and share your favorite stories, poems and books in a language, device and format of y
(2178)

Discover, read and share your favorite stories, poems and books in a language, device and format of your choice.

21/07/2025

     এক ঝড়ের রাতে বিদ্যুতের চমকের সঙ্গে ভেসে আসছে সানাইয়ের সুর। এক শুভ দিন কিন্তু অশুভ ছায়া। সোনাঝুরি গ্রামের বিশাল জমিদ...
21/07/2025


এক ঝড়ের রাতে বিদ্যুতের চমকের সঙ্গে ভেসে আসছে সানাইয়ের সুর। এক শুভ দিন কিন্তু অশুভ ছায়া। সোনাঝুরি গ্রামের বিশাল জমিদার বাড়ি, চৌধুরীদের বিশাল রাজপ্রাসাদ, বিয়ের আনন্দ, অথচ এক নারীর জীবনে নেমে আসতে চলেছে ভয়াবহ অন্ধকার!ফুলশয্যার ঘর, সাবিত্রী ঘোমটা টেনে অপেক্ষা করছে… হঠাৎ দরজা খুলে গেল। সাবিত্রী দেখল ঘরে তার স্বামী অমিত একা নয়, তার সঙ্গে প্রবেশ করছে তার বাবা কৃষ্ণপ্রসাদ! তার দুই দাদা অজিত আর অভীক!প্রতিশোধ শুরু হতে চলেছে "অভিশপ্ত রাত"— যেখানে প্রতিটি রাত এক নতুন রহস্য… প্রতিটি সম্পর্কের ছায়ায় লুকিয়ে আছে ভয়!

প্রতিলিপি FM প্রিমিয়ম

     মেধাবী এক কলেজ ছাত্রী মেঘলা যার জীবন বন্দী, বাবার লালসা আর সমাজের অন্ধ প্রথার বেড়াজালে। নেশাগ্রস্ত মেঘলার বাবা মেয়ে...
21/07/2025


মেধাবী এক কলেজ ছাত্রী মেঘলা যার জীবন বন্দী, বাবার লালসা আর সমাজের অন্ধ প্রথার বেড়াজালে। নেশাগ্রস্ত মেঘলার বাবা মেয়েকে অসম বয়সী ধনীদের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায়, শুধু টাকার লোভে। মা প্রতিবাদ করলেও, বারবার মার খেয়ে মুখ বুজে সহ্য করেন। পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা নেই, ঘরের দরজা বন্ধ, বাইরে পুরো অচেনা পৃথিবী। মৃত্যু ছাড়া কোনো আশার আলো খুঁজে পায় না মেঘলা। মেঘলার জীবনে একটাই প্রশ্ন যে সে কি তার নিজের জীবনটা নিজের মতো করে বাঁচতে পারবে? বাবার চক্রান্তে এক অন্ধকার জীবনের দিকে তাকে ঠেলে দেওয়া হলে সেখানে এমন এক আগন্তুকে আবির্ভাব ঘটে যে মেঘলার জীবনকে পুরো বদলে দেয়। কে সেই ব্যক্তি? মেঘলা কি পারবে এই অন্যায়, অত্যাচার আর সমাজের শৃঙ্খল ছিঁড়ে নিজের জন্য একটা নতুন জীবন গড়তে? নাকি বাবার লোভের শিকার হবে তার ভবিষ্যৎ?

প্রতিলিপিএফএম উপন্যাস

     চক্রবর্তী গিন্নি নদীর ঘাটে গেলেই আর কারো নামার উপায় থাকে না।প্রায় একঘন্টা লাগে স্নান করতে।পরনের কাপড় খুলে না ধুল...
19/07/2025


চক্রবর্তী গিন্নি নদীর ঘাটে গেলেই আর কারো নামার উপায় থাকে না।
প্রায় একঘন্টা লাগে স্নান করতে।
পরনের কাপড় খুলে না ধুলে ওনার শান্তি হয় না।চারিদিকে শুধু নোংরা আর নোংরা!ওই চক্রবর্তী গিন্নির নাম গীতা ।মুখে বিড়বিড় করতে করতে চলেছেন!
দেখলে হাড় পিত্তি জ্বলে যায়!
এই যে কটা বাড়ি পেরিয়ে আসতে হয় নদীর ঘাটে। ছিঃ ছিঃ একটু বাড়ির সামনে ,বউ গুলো পর্যন্ত গোবর ছড়া দেয় না গো!
কি প্রবৃত্তি গো! সারা দিনের বাসী জামাকাপড় পর্যন্ত ছাড়ে না গো!
এদের কি কোন শিক্ষা নেই!
পায়খানা যায় আবার টুলের মত জায়গায় বসে করে!কমোড না কি বলে! ছিঃ ছিঃ।
কি হল সব দিনে দিনে!
কোথায় গামছা পরে ওই অকাজ কুকাজ করতে হয়!
এখন সব হল কি!
চটি ফটর করে পায়খানা করতে যায়!
আরে বাবা ওই কাজ তো গামছা পরে ,তারপরে করতে হয়!
সেটাও মানে না কেউ!ফিরে এসে কেউ চান না করুক।কোমর অব্দি তো ধুয়ে ফেলা উচিত।
দেখে দেখে ভয় হয়।নিজের ছেলে আছে।মেয়েদুটো তো কবেই শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে সব মেম সাহেব বনে গেছে।
এসে তাই পালাই পালাই করে।
কি অসভ্য।জামাই এর সঙ্গে রাতে শোবার পর কাপড় টুকু ছেড়ে রাখে না।ওরা এলেই গঙ্গা জল ছড়ানোর পরিমাণ বেড়ে যায়।লোক দিয়ে উনি চার ঘড়া গঙ্গা জল আনিয়ে নেন।
জামাই ষষ্ঠী তে নেমন্তন্ন করলে জামাই মেয়ে নানা অছিলায় এড়িয়ে যায়।
উনি নিজেই ভেবে পান না,ওনার রক্ত আছে ওনার দুই মেয়ের গায়ে!
শ্বশুর বাড়ি গিয়েই সব ভোল পাল্টে গেল!
তাই চক্রবর্তী গিন্নি ভাবেন,
মেয়ে জামাই যত না আসে ততো ভালো।
আসলে ওনার বাড়িতে এলে এক তলায় কাপড় জামা ছেড়ে, ওনার রাখা গামছা পরে তারপরে নিজেদের আনা জামা কাপড় পরতে হয়।
সেই জামা কাপড় কে ভালো করে গঙ্গা জল ছিটিয়ে শোধন করা হয়।তারপরে পরার সুযোগ হয়।
বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে অনেক দিন।
মেয়ের বিয়ের সময় মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোক অত তলিয়ে দেখেন নি।মেয়ে দেখতে সুন্দর।আর তখন বি, এ পাস করে গেছে।ওটা দেখেই বউ করে নিয়ে যায়।
মেয়ে শ্বশুর বাড়ি গিয়েই বর কে বলে,
" খবরদার আমাকে বাপের বাড়ি যাবার কথা একদম বলবে না।"

স্বামীর জিজ্ঞাসা,
--- কেন কি হলো?

--- আর কি হল।
জানো পায়খানা গেলেই ওই গামছা পরতে হয়।তাই আমরা দুই বোন যুক্তি করে করতাম কি জানো?
ওখানে গিয়ে ইচ্ছে করে জামা কাপড় খসখস শব্দ করতাম।তারপরে গামছা ধুয়ে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে আসতাম।জল নিতাম এক বালতি।শীত গ্রীষ্ম সব সময় মায়ের হুকুম ছিল পায়খানা করতে হবে গামছা পরে।তারপরে চান করে বেরোতে হবে।
আচ্ছা বলতো?
যখন পেট খারাপ হতো তখন পর্যন্ত রেহাই ছিল না। আমরা একটা আলাদা গামছা রেখে দিতাম।আদৌ জামা কাপড় ছাড়তাম না।লুজ মোশন হলে কি করবো বলতে পারো?
বাবা বুদ্ধি দিয়েছিলেন,
চান করার অভিনয় করবি । আরে বাবা পায়খানা পেট এর মধ্যে থাকলে কোন সমস্যা নেই।বের হলেই যত কাণ্ড!
বাবার অভয় বাণী শুনে আমরা দুই বোন ওই করতাম।
আমাদের পায়খানা ঘর কত বড় দেখেছ তো? আঠেরো ফুট লম্বা।আর পনেরো ফুট চওড়া !
একদিকে গঙ্গা জল রাখা থাকে।একটা বেদি মত করা আছে সেখানে।
ওটা মায়ের নির্দেশে বানানো।
তাই তো সুবিধে।ইচ্ছে মত টাইম পাস করে আমরা ফিরে আসি। জল গুলো সব প্যানের মধ্যে ঢেলে আর কিছু ছড়িয়ে দিয়ে চলে আসি।যত দেরি হয় তত মায়ের মুখ আনন্দে চক চক করে।
আমরা কোন বোন কাপড় ছাড়ি না।আর চান করি না।
মায়ের এটা বাতিক গো।তাই তো বলছি আমাকে একদম বাড়ি যাবার কথা বলবে না।
আমাদের হোস্টেল এ রেখে বাবা পড়িয়েছে।আর বলেছে,
" তোরা মায়ের মত হোস না।বাইরের পৃথিবী তে তাহলে এডজাস্ট করতে পারবি না।হোস্টেল এ তিন বছর ছিলাম।সেখানে কেউ কি গামছা ব্যবহার করতো! "

"আচ্ছা তোমার বাবা কি করে সহ্য করেন বলতো?
ওটা তো ওনার ম্যানিয়া!"

"বাবা শান্তি প্রিয় মানুষ।তাই বাবা ওই একই কাণ্ড করেন।ঠিক আমাদের মত।ভাই কেও আমরা ওই ভাবে করতে বলেছি।কিন্তু একটা ভয় হচ্ছে জানো ?"
---- কেন ভাইকে নিয়ে ভয় কেন?

"আরে বাবা,
ভাই এর বিয়ে হলে কোন মেয়ে এসে কি থাকতে পারবে আমার মায়ের সঙ্গে?
আমরা মেয়ে হয়ে পারিনা।আর বাইরের মেয়ে এসে সহ্য করবে কি করে?সেটাই তো ভয় হয়!"

আবার হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ছে।
ও যাকে বিয়ে করবে সে কি আমাদের বাড়িতে একটা বেলা এসে থাকতে পারবে মনে হয় তোমার? বাবা তো মায়ের কাছে মোক্ষদা পিসি কে রেখে দিয়েছে।আর বাইরের কাজ কর্ম করার জন্যে রেখেছে হরি কাকা কে।ওরা মায়ের সব কাজ করে দেয়।আর মা যা বলে সব শোনে।
মা তো নিজের ওই বাতিক নিয়েই আছে। কারো র নিষেধ করার উপায় নেই।
বাবা তো মাসে মাত্র দুবার আসে।ওই বাতিক গ্রস্ত মায়ের হাত থেকে বাঁচার জন্য।
তবে আমাদের জায়গা জমি যা আছে ,আর সম্পত্তির পরিমাণ আছে, তার থেকে হেসে খেলে চলে যায়।
তবে মায়ের মন খুব ভালো।সবাই কে দিয়ে থুয়ে তারপরে খায়।তাই মায়ের অনেক ভক্ত আছে সেটা কি জানো?

বড় জামাই সব শুনে বলে,
---- মায়ের কিন্তু চিকিৎসা করার খুব দরকার।

"এত বছর হলো।কেউ তো কখনো চিকিৎসার কথা বলে নি।এখন তো মনের মধ্যে গেঁথে বসে গেছে ওই গুলো।কোন ডাক্তারের সাধ্য নেই মাকে মায়ের ভাবধারা থেকে বের করে আনে!"

ছেলে সোমনাথ বাড়িতে এসেছে।
ওই হোটেল এর একজন সহকর্মী সঙ্গে এসেছে।
সোমনাথ সব কথা বলেই এনেছিল।
নাম সুজয় গোস্বামী।বামুন না হলে মা আবার কি কেলোর কীর্তি করে বসেন তার ঠিক নেই।
তাই বামুন বন্ধু কে সব বলে নিয়ে আসে।
সুজয় আসলে মনোবিজ্ঞানী।
হোটেল এ ডাক্তার থেকে মনোবিজ্ঞানী সবাই কে রাখা হয়েছে।পাঁচ তারা হোটেল।নাম" মেঘবর্ণা!"
সোমনাথ মায়ের সব কথা একমাত্র সুজয় কে কথায় কথায় বলেছিলো।
সুজয় বলেছিল একটা বার সোমনাথ এর মায়ের সঙ্গে আলাপ করার জন্যে যাবে।আর তার সঙ্গে ওনার মনের ভিতর কি চলছে সেটাও দেখবে।তবে বন্ধু হিসেবেই যাবে।আর থাকবে সোমনাথ যতদিন থাকবে।ঠিক ততদিন।
সোমনাথ আসার আগে বাবাকে বলেছে চলে আসতে।আর সুজয় কিসের জন্যে আসছে সেটাও জানাতে ভোলে নি।
বাবা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বলেছেন,
"কি হবে বল? আমরা তো ওই শুচি বাই এর জন্যে সারাক্ষণ তটস্থ হয়ে থাকি।তোর বন্ধু যদি এর মূল সমেত উপড়ে আনতে পারে তাহলে সারা জীবন ওর কাছে আমি কেন আমরা সবাই কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবো।তবে দেখিস তোর মা কোনোভাবে যেন বুঝতে না পারে!"

ছেলে সোমনাথ বা সমু বলে,
"তুমি চলে এসো বাবা।তুমি থাকলে মা খুব খুশি থাকে।তাই তোমার সাহায্যের খুব দরকার হবে।"

সোমনাথ এর বাবা শিবনাথ, ছেলের কথা মত কদিনের ছুটির দরখাস্ত জমা দিয়ে এলেন বাড়ি তে।
সোমনাথ এর মা অবাক।
"সে কি কোন দিকে সূর্য উঠলো গো? ছেলে আসবে বলেছে।তার আগেই ছেলের বাবা উপস্থিত!
তোমরা তো আমাকে এড়িয়ে থাকতে চাও।সেটা আমি বুঝি না মনে কর?
আমি সব বুঝি।আমার শুচি বাই এর জন্যে মেয়েরা আসে না।জামাই দুটো তো এই মুখো হয় না!
কিন্তু আমি তো নিজেকে পাল্টাতে পারবো না।আর তুমিও আমাকে বাদ দিয়ে নতুন করে বিয়ে পিঁড়ি তে বসতে পারবে না।ওই বলি কি ওই বলে না? লং ডিটেন্স সম্পর্ক ওটাই চলুক।আমি বাঁচি।আর তোমরা বাঁচো!"
"সে কি কথা বলছো গিন্নি?
আমাদের কি ভালো লাগে বলতো?....
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

চক্রবর্তী গিন্নি নদীর ঘাটে গেলেই আর কারো নামার উপায় থাকে না। প্রায় একঘন্টা লাগে স্নান করতে। পরনের কাপড় খুলে ন.....

     সময়টা প্রায় মাঝ রাত। শুনশান পিচ ঢালা রাস্তা ধরে পিঠে স্কুলে যাওয়ার ব্যাগটা নিয়ে ছুটে চলেছে সদ্য কৈশোরে পা দেওয়...
19/07/2025


সময়টা প্রায় মাঝ রাত। শুনশান পিচ ঢালা রাস্তা ধরে পিঠে স্কুলে যাওয়ার ব্যাগটা নিয়ে ছুটে চলেছে সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া একটি ছেলে। জুলাই মাসের শেষ দিক,সকাল থেকেই সারাদিন মুষল ধারে বৃষ্টি হয়ে চলেছে।এত বৃষ্টিতে কোন মানুষ বা গাড়ির দেখা পাওয়া দূরস্ত এমনকি রাস্তায় থাকা পশু গুলোও বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য নিজেদের মাথা গোঁজার মত একটা জায়গা বের করে নিয়েছে। চিরকালের ঝড় বৃষ্টিকে ভয় পাওয়া ছেলেটির মনে বাইরের দুর্যোগ আজ আর কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না।

ছুটতে ছুটতে ছেলেটি রাস্তায় থাকা জল কাদায় ভরা একটি গর্তে মুখ থুবড়ে পড়ে গেলে সাথে সাথেই বিদ্যুৎ চমকে সজোরে মেঘ ডেকে উঠে এলাকার বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে রাস্তায় জ্বলতে থাকা হলুদ নিয়ন আলো গুলো নিভে চারিদিক নিকষ কালো অন্ধকারে ছেয়ে যায়, আর বৃষ্টির তীব্রতা সেই সাথে আরো বাড়তে থাকে।

আবার একবার বিদ্যুৎ চমকালে সেই আলোতে ছেলেটি দেখে ওর ডান হাতের কনুই আর হাঁটুতে রাস্তার খোয়া ঢুকে গিয়েছে আর মুখের দিক করে পড়ায় ওর নাকটা শক্ত রাস্তায় সজোরে ঠুকে গিয়ে বাম নাকের ফুটো দিয়ে রক্ত গড়িয়ে এসে মুখ অবধি পড়লে হালকা লবণাক্ত স্বাদ অনুভব হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টির জল সেই শোনিত ধারাকে নিমিষেই ধুয়ে দিচ্ছে।

কোনো রকমে শরীরটাকে টেনে হিঁচড়ে আবার পথ চলতে শুরু করে ছেলেটি।দৌড়ানোর মত বিন্দুমাত্র শক্তি আর তার অবশিষ্ট নেই।খানিক বাদে নিজের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে গেলে লোহার গেট খুলে একটা ছোট একতলা বাড়ির সদর দরজায় জোরে জোরে কড়া নাড়তে শুরু করে। কড়া নাড়ার আওয়াজে ওই বাড়ির গৃহকর্তা ঘুম থেকে ওঠে খানিক সময়ের ব্যবধানে। আলো চলে গিয়ে অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় বিছানায় হাতড়ে মাথার কাছ থেকে টর্চটা খুঁজে পায়। টর্চের আলোয় সদর দরজা অবধি পৌঁছে দরজার খিল খুলে দিয়ে ছেলেটির সামনে এসে দাঁড়ায়।

"জেঠু আমাকে তুমি বাঁচাও।"- এতটুকু বলেই ছেলেটি সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে পড়ে যেতে গেলে উল্টো দিকে থাকা মানুষটি দুই বলিষ্ঠ হাতে ওকে ধরে নিয়ে অবাধ পতনের হাত থেকে রক্ষা করে।
***********************************
কয়েক মাস পরে আবার এই একই ভয়ানক দুঃস্বপ্নের পুনরাবৃত্তিতে বিখ্যাত জার্নালিস্ট স্পন্দন রায়ের ঘুম ভেঙে গেলে সে ধড়ফড় করে উঠে বসে।ঘর ঠান্ডা করার বাতানুকুল যন্ত্র তার নিজের কাজ করে গেলেও স্পন্দনের গায়ে থাকা ভি নেকের সাদা পাতলা টি শার্টটা ঘামে ভিজে জবজবে হয়ে গিয়েছে। শোওয়ার ঘরে এই মুহুর্তে থাকাটা অসম্ভব মনে হলে বাইরে বেরিয়ে এসে ড্রয়িং রুমের আলো জ্বালিয়ে সোফাটার উপর গিয়ে অন্যমনস্ক ভাবে খানিকক্ষণ বসে থাকে তারপর কি মনে হতে রাস্তার দিকের জানলাটা খুলে দিয়ে গ্রিল ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে।

পনেরো তলার এই ফ্ল্যাটটা থেকে নিচে রাস্তার যানবাহন গুলোকে খেলনা গাড়ির মতই মনে হচ্ছে। নতুন অফিস থেকে পাওয়া সল্টলেকের এই বিলাস বহুল ফ্ল্যাটে স্পন্দন গতকালকেই শিফ্ট করেছে। দিল্লি ক্রান্তি নিউজপেপারের স্টার রিপোর্টার যে প্রিন্ট মিডিয়া ছেড়ে ডিজিটাল মিডিয়ায় আসতে চলেছে, সেই খবর সামনে আসতেই তাই নিয়ে সারাদেশের গণ মাধ্যমগুলো বেশ কয়েক মাস ধরেই সরগরম ছিল।কিন্তু স্পন্দন যে কোনো লিডিং ন্যাশানাল মিডিয়া হাউস জয়েন না করে কলকাতার একটি রিজিওনাল বাংলা নিউজ চ্যানেল পি.বি.বি বা পশ্চিমবঙ্গ বার্তা চ্যানেলের এডিটর ইন চিফ হিসাবে নিজের কর্মজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করবে সেটা স্পন্দনের অতি বড় হিতাকাঙ্খী থেকে সমালোচক কেউই নিজেদের চিন্তায় আনতে পারেনি।

স্পন্দন নিজের এই চৌত্রিশ বছরের জীবনে গুটি কয়েক মানুষকেই নিজের আদর্শ মনে করে। তার জীবনে এরকমই একজন মানুষ হলেন দিল্লি ক্রান্তি সংবাদপত্রের সম্পাদক কুণাল পণ্ডিত।

জার্নালিজম পাশ করে বছর তেইশের সদ্য যুবক স্পন্দন যখন জুনিয়র অ্যাপ্রেন্টিস হিসাবে দিল্লি ক্রান্তিতে এসেছিল জহুরির চোখ হীরে চিনে নিতে বেশি সময় নেয়নি। কুণাল নিজে হাতে ধরে স্পন্দনকে সাংবাদিকতার অ আ ক খ সবটাই শিখিয়েছে। কালে কালে ক্রাইম রিপোর্টার স্পন্দন রায় আর তার দিল্লি ক্রান্তি দুটোই একসাথে লোকের মুখে মুখে উচ্চারিত হতে থাকলো।

স্পন্দনের জীবনের উত্থান ,পরপর তিনবছর বর্ষ সেরা সাংবাদিকের শিরোপা বিজয় থেকে শুরু করে বিতর্কের শৃঙ্খলে জড়িয়ে পড়া সবটারই একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী কুণাল পণ্ডিত।

কুণাল জানে স্পন্দন লম্বা রেসের ঘোড়া।বর্তমানে গতিশীল যুগে প্রিন্ট মিডিয়াতে ওকে আটকে রাখাটা স্পন্দনের প্রতিভার সাথে খানিকটা ইনজাস্টিসই করা হবে বৈকি! তাই দেশের নামকরা ন্যাশানাল মিডিয়া হাউস গুলো থেকে যখন স্পন্দনের কাছে বিশাল স্যালারি প্যাকেজ আর অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সহ চাকরির প্রস্তাব আসতে থাকে কুণাল নিজে ভাতৃসম স্পন্দনের দ্বিধা কাটিয়ে দিয়েছিল।

মজা করে ও স্পন্দনকে বলেছিল -....
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

সময়টা প্রায় মাঝ রাত। শুনশান পিচ ঢালা রাস্তা ধরে পিঠে স্কুলে যাওয়ার ব্যাগটা নিয়ে ছুটে চলেছে সদ্য কৈশোরে পা দে.....

     একটা অন্ধকার গলি দিয়ে রুদ্ধশ্বাসে ছুটে একজন মেয়ে। তার পিছনে কিছুক্ষন লোক দৌড়াচ্ছে মেয়েটি কে ধরার জন্য। পিছনের ল...
19/07/2025


একটা অন্ধকার গলি দিয়ে রুদ্ধশ্বাসে ছুটে একজন মেয়ে। তার পিছনে কিছুক্ষন লোক দৌড়াচ্ছে মেয়েটি কে ধরার জন্য। পিছনের লোক গুলো সাধারণ কেউ না, এলাকার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের লোক। মেয়েটি পায়ের জোর কমে আসছে আসতে আসতে, আর দৌড়ানোর মতো ক্ষমতা নেই মেয়েটির। অন্ধকার গলিতে হঠাৎ একটা একটা তীব্র আলোয় আলোকিত হয়ে উঠল গলিটি। একটা গাড়ি প্রবেশ করল গলির ভিতরে, মেয়েটি একপ্রকার হুড়মুড় করে পড়ল গাড়িটির সামনে। মেয়েটিকে পরে যেতে দেখে পিছনে আশা লোক গুলো কিছুটা দূরে থমকে দাঁড়িয়ে গেল। কারণ গাড়িটা ওদের চেনা। লোক গুলো একে অপরের মুখের দিকে তাকালো একবার। ততক্ষনে গাড়ি থেকে নেমে এসেছে একজন সুদর্শন পুরুষ। ঘাড় পর্যন্ত চুল, গায়ের রঙ খুব ফর্সা, আর সব থেকে আকর্ষণীয় হল পুরুষটির চোখ দুটো। উজ্জ্বল নীল বর্ণের চোখ দুটো যে কাউকে আকর্ষণ করে খুব সহজে। পুরুষটির দিকে তাকিয়ে লোক গুলির মধ্যে একজন বলে উঠল,

লোকটি
: এই মেয়েটা কে আমার দায়িত্বে ছেড়ে দে। খোমোখা আমাদের মধ্যে ঢুকিস না।

লোকটির কথা শুনে পুরুষটির ঠোঁটের কোণে একটা বাঁকা হাসি খেলে গেল। ঠোঁটের কোণে হাসি বজায় রেখেই বলে উঠল,

পুরুষটি
: আর যদি না ছাড়ি?

লোকটি
: দেখ, আমাদের কাজে বাঁধা দিস না। মেয়েটাকে আমাদের হাতে তুলে দিয়ে তুই চলে যা এখান থেকে।

কথাটা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই লোকটির নাকে কিছু একটা গন্ধ এসে লাগলো। শুধু ঐ লোকটি না, ওখানে উপস্থিত সকলেই টের পেল সেই গন্ধটা। ওদের বুঝতে অসুবিধা হলো না ওরা ওই পুরুষটির ফাঁদে পড়েছে। ভয়ে গোলা শুকিয়ে আসলো সকলের। সবাই পালানোর জন্য পা বাড়ালেও কেউ একপা নড়তে পারলো না। সবাই ধপ করে পরে গিয়ে সাথে সাথে জ্ঞান হারালো ওখানেই। পুরুষটি একবার সকলের দিকে এগিয়ে গেল মেয়েটির দিকে । মেয়েটির দিকে ভালো করে তাকালো পুরুষটি।আইটির চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ, দেখেই মনে হচ্ছে সারাদিন কিছুই খায়নি মেয়েটি। গাড়ীর সাথে ধাক্কা লাগার ফলে পরে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে মেয়েটি। এমনিতেই দূর্বল শরীর, তারউপর এতটা রাস্তা দৌড়েছে, আর সহ্য করতে পারেনি মেয়েটা। পুরুষটি এগিয়ে গিয়ে মেয়েটির সামনে হাঁটু মুড়ে বসলো। মেয়েটির মুখের সামনে পড়া চুল গুলো অতি যত্ন করে সরিয়ে দিল পুরুষটি। মেয়েটির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল পুরুষটি। মেয়েটির মুখে যেন এক মায়া আছে। পুরুষটির মনে হল মেয়েটির মায়ায় একবার পড়লে সেইখান থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষমতা হয়তো তার আর থাকবে না। পুরুষটি একবার ভালো করে চারপাশে চোখ বুলিয়ে মেয়েটিকে কোলে তুলে নিয়ে নিজের গাড়ীর সিটে শুইয়ে দিল। তারপর গাড়িটা স্টার্ট দিল নিজের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।

সকালের মিষ্টি রোদ চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙ্গে গেল মেয়েটির। ঘুমের মধ্যেই চোখ মুখ কুচকে উঠল মেয়েটির। তারপর আরমোড়া ভেঙ্গে পিটিপিটি চোখে তাকালো মেয়েটি। চোখ খুলতেই নিজেকে অচেনা একটা জায়গায় আবিষ্কার মেয়েটি। নিজের মনেই বলে উঠল,

মেয়েটি
: এটাতো আমাদের বাড়ি না। কোথায় আছি আমি, আর এখানে এলাম বা কি ভাবে? কাল রাতে তো ওই ছেলে গুলো...... ওরা কি আমায় এখানে এনেছে?

কথাটা ভেবেই নিজের পোশাকের দিকে তাকিয়ে মেয়েটি।

মেয়েটি
: আমার পোশাক তো ঠিকই আছে, তাহলে কে এনেছে এখন?

এর মধ্যেই মেয়েটি দরজা খোলার আওয়াজ পেল। সেইদিকে তাকাতেই দেখতে পেল, একজন সুদর্শন পুরুষ প্রবেশ করল রুমের মধ্যে। মেয়েটি বিস্ফারিত চোখে তাকালো পুরুষটির দিকে। অবাক হয়ে বলল,

মেয়েটি
: আ....আপনি? আপনি এখানে কেন? আর.....
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

একটা অন্ধকার গলি দিয়ে রুদ্ধশ্বাসে ছুটে একজন মেয়ে। তার পিছনে কিছুক্ষন লোক দৌড়াচ্ছে মেয়েটি কে ধরার জন্য। পিছন....

     রাত গভীর হতে চলেছে। শহরের নির্জন রাস্তায় প্রায় কোনো মানুষের চলাচল নেই। অমিত রায়, একজন প্রখ্যাত গোয়েন্দা, তার অফ...
19/07/2025


রাত গভীর হতে চলেছে। শহরের নির্জন রাস্তায় প্রায় কোনো মানুষের চলাচল নেই। অমিত রায়, একজন প্রখ্যাত গোয়েন্দা, তার অফিস থেকে বাড়ি ফিরছেন। আজকের রাতটা কেমন যেন অস্বাভাবিক লাগছে। অমিতের মনে অজানা আশঙ্কার সুর বাজছে।

হঠাৎই তার ফোন বেজে উঠল। অজানা নম্বর থেকে ফোন আসছে। অমিত ফোনটি রিসিভ করল।

"হ্যালো," অমিত বললেন।

"মিস্টার রায়, আপনাকে এখনই রূপনগরের পুরোনো বাড়িতে যেতে হবে," এক গম্ভীর কণ্ঠস্বর বলল।

"কেন? আপনি কে?" অমিত প্রশ্ন করলেন।

"আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু অপেক্ষা করছে। এখনই রওনা দিন। সময় কম।" কথা শেষ করেই ফোন কেটে গেল।

অমিত বিভ্রান্ত হলেন। তিনি জানেন, এমন ফোন কল সবসময় সাধারণ কিছু নয়। রূপনগরের পুরোনো বাড়ি বলতে অমিত একটি বাড়ির কথা মনে পড়ল, যেখানে বহুদিন ধরে কেউ থাকে না। বিভিন্ন রকমের ভূতের গল্প এবং অপরাধের কাহিনী নিয়ে সেই বাড়ি প্রচলিত।

কৌতূহল এবং পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকে অমিত সেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। রূপনগর পৌঁছে তিনি লক্ষ্য করলেন, বাড়ির সামনে একটি পুরোনো গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। গাড়ির ভেতর কাউকে দেখা যাচ্ছে না।

অমিত গাড়ি থেকে নেমে ধীরে ধীরে বাড়ির দিকে এগিয়ে গেলেন। বাড়ির দরজা খোলা। ভেতরে প্রবেশ করতেই অমিত দেখতে পেলেন, মেঝেতে রক্তের দাগ। মনে হচ্ছে, কিছুক্ষণ আগেই এখানে কেউ গুরুতর আঘাত পেয়েছে।

তিনি পকেট থেকে টর্চ বের করে বাড়ির ভেতরটি খুঁজতে শুরু করলেন। বাড়ির প্রতিটি ঘর খালি এবং ধূলিমলিন। হঠাৎই তিনি নিচতলার একটি ঘরে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখলেন। লাশটি একজন যুবকের, যার গলায় একটি বড় ছুরি বিদ্ধ।

অমিত লাশটি পরীক্ষা করলেন এবং বুঝতে পারলেন, যুবকটি কিছুক্ষণ আগেই মারা গেছে। লাশের পাশেই একটি ছোট চিরকুট পাওয়া গেল। চিরকুটে লেখা ছিল, "সাসপেন্সের খেলা শুরু হলো।"

অমিত চিন্তিত হলেন। এটা স্পষ্ট, এটি একটি পরিকল্পিত খুন। কিন্তু খুনির উদ্দেশ্য কী? আর কেনই বা তাকে এখানে ডাকা হলো?

ঠিক তখনই অমিতের ফোন আবার বেজে উঠল। আবার সেই অজানা নম্বর।

"মিস্টার রায়, আপনি লাশটি পেয়েছেন, তাই না?" কণ্ঠস্বর বলল।

"হ্যাঁ, কিন্তু তুমি কে? এবং কেন আমাকে এখানে ডেকেছো?" অমিত জিজ্ঞাসা করলেন।

"আমি একজন ভক্ত। আপনার বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতা সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছি। এই খেলাটি আপনাকে উৎসর্গ করলাম। আপনার যদি সত্যিই দক্ষতা থাকে, তাহলে এই খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করুন।" কথা শেষ করেই ফোন কেটে গেল।

অমিত এখন পুরোপুরি সতর্ক। তিনি জানেন, এটি শুধু একটি খুন নয়; এটি একটি চ্যালেঞ্জ। খুনিকে ধরতে হলে তাকে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে।

**পরবর্তী পদক্ষেপ**

অমিত ভাবতে লাগলেন, কীভাবে এই রহস্য সমাধান করা যায়। প্রথমে, তাকে জানতে হবে, মৃত যুবকটি কে। তার পকেটে খুঁজে পাওয়া একটি পরিচয়পত্র থেকে জানা গেল, যুবকটির নাম রাজীব সেন। তিনি একজন স্থানীয় সাংবাদিক। অমিত বুঝতে পারলেন, রাজীব নিশ্চয়ই কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করছিলেন, যার জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে।

রাজীবের বাড়িতে গিয়ে অমিত তার কম্পিউটার পরীক্ষা করলেন। কম্পিউটারে কিছু গোপন নথি পাওয়া গেল, যা শহরের একটি শক্তিশালী মাফিয়া গ্যাং সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করে। রাজীব সেই গ্যাংয়ের অপরাধমূলক কার্যক্রম নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করছিলেন।

অমিত বুঝতে পারলেন, রাজীবের খুনের পেছনে সেই মাফিয়া গ্যাংয়ের হাত থাকতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে, তাকে আরও প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে। রাজীবের ফোন কল রেকর্ড এবং ইমেইলগুলো পরীক্ষা করে অমিত আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেলেন। রাজীব একটি ইমেইলে উল্লেখ করেছেন যে তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী সংগ্রহ করেছেন, যেগুলো মাফিয়া গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে শক্ত প্রমাণ।

**গ্যাংয়ের সদস্যদের খোঁজ**

অমিত সেই সাক্ষী এবং প্রমাণের সন্ধানে নেমে পড়লেন। রাজীবের শেষ ইমেইলটি একটি নির্দিষ্ট লোকেশন নির্দেশ করে, যেখানে সাক্ষীগুলোর সাথে তার সাক্ষাৎ হওয়ার কথা ছিল। অমিত সেই লোকেশনে গিয়ে দেখতে পেলেন, সেখানে একটি পরিত্যক্ত গুদাম। গুদামের ভেতরে প্রবেশ করে তিনি কিছু কাগজপত্র এবং একটি ডায়রি পেলেন, যেখানে গ্যাংয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম এবং সদস্যদের নাম লেখা ছিল।

হঠাৎই, গুদামের ভেতরে কিছু আওয়াজ শোনা গেল। অমিত দ্রুত লুকিয়ে পড়লেন। তিনি দেখলেন, গ্যাংয়ের কিছু সদস্য গুদামে প্রবেশ করছে। তাদের কথাবার্তা থেকে জানা গেল, তারা রাজীবের খুনের পেছনে জড়িত এবং এখন সেই প্রমাণগুলো ধ্বংস করতে এসেছে।

অমিত বুঝতে পারলেন, তার এখনই বেরিয়ে যাওয়া উচিত। তিনি দ্রুত গুদাম থেকে বেরিয়ে পুলিশের কাছে সেই প্রমাণগুলো জমা দিলেন। পুলিশ সেই প্রমাণগুলো দেখে অবাক হয়ে গেল এবং তারা মাফিয়া গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিল।

**চূড়ান্ত মোকাবিলা**

পুলিশের অভিযানে মাফিয়া গ্যাংয়ের অনেক সদস্য গ্রেপ্তার হলো। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অমিত বুঝতে পারলেন যে গ্যাংয়ের মূল নেতা শহরের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি, যার নাম সুমন চৌধুরী। সুমন একজন বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত, কিন্তু তার গোপন অপরাধমূলক কার্যক্রম সম্পর্কে খুব কমই মানুষ জানে।

অমিত এবার সুমনের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিলেন। তিনি জানতেন, এটি সহজ হবে না। সুমন অত্যন্ত চালাক এবং শক্তিশালী ব্যক্তি। কিন্তু অমিতও একজন দক্ষ গোয়েন্দা, যিনি কখনও হাল ছাড়েন না।

একদিন অমিত সুমনের অফিসে গিয়ে তাকে সরাসরি প্রশ্ন করলেন, "মিস্টার চৌধুরী, আপনি কি জানেন রাজীব সেনকে হত্যা করা হয়েছে?"

সুমন শান্তভাবে বললেন, "মিস্টার রায়, আপনি কেন এখানে এসেছেন?".
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

রাত গভীর হতে চলেছে। শহরের নির্জন রাস্তায় প্রায় কোনো মানুষের চলাচল নেই। অমিত রায়, একজন প্রখ্যাত গোয়েন্দা, তার ....

     ঘড়িতে সময় ৬.৪০,  দামিনী নিজের ব্যালকনিতে রাখা টবের মাটি গুলো একটু খুঁড়ে গাছ গুলোর পরিচর্যা করছে।  সকাল বেলাটা দামিন...
19/07/2025


ঘড়িতে সময় ৬.৪০, দামিনী নিজের ব্যালকনিতে রাখা টবের মাটি গুলো একটু খুঁড়ে গাছ গুলোর পরিচর্যা করছে। সকাল বেলাটা দামিনীর এই গাছ গুলোর পিছনেই কাটে। যদিও খুব বেশি গাছ নেই। এই একটা জবা, দুটো গাঁদা, একটা গোলাপ আর একটা পাতাবাহার। ছোট ব্যালকনি, ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে আর কত টব রাখা যায়! তবে দামিনী সকালে এই গাছ গুলো পরিচর্যা করতে আনন্দ পায়৷ এই সময় ঘরে দামিনীর মোবাইলের রিং টোন শোনা গেল। নোংরা হাতেই দামিনী ঘরে এসে মোবাইলের সামনে গিয়ে দেখল মোবাইল স্ক্রীনে ভেসে আছে... মা... । দামিনী বেসিনে হাত ধুয়ে আসতে আসতে রিং বন্ধ হয়ে গেল। দামিনী নিজেই মাকে ফোন করল৷ দু -তিন বার রিং হওয়ার পরই মা ফোন রিসিভ করে নিল। .. হ্যালো, ফোন করেছিলে কেন, মা? ... আরে, বৃষ্টিকে ফোন করেছিলাম, কিন্তু ওর ফোন রিং হয়ে গেল, ও ধরল না। ... বৃষ্টি ঘুমাচ্ছে তো, আর ওর ফোন নিশ্চয়ই সাইলেন্ট মুডে আছে৷ কেন কি দরকার গো ওর সাথে? .. জন্মদিনের উইশ করতাম। .... জন্ম দিন! ... কেন ভুলে গেছিস নাকি! আজ ৪ঠা আগাস্ট। বৃষ্টির জন্মদিন তো! .. আচ্ছা মা রাখো তো, আমি পরে তোমায় ফোন করব। ... তুই কি রে! নিজের মেয়ের জন্মদিন ভুলে গেলি! তুই ওকে দে না আমি একটু উইশ করে দেই। ... মা, মাগো একটু বোঝ... বৃষ্টি উঠলে আমি বলছি, ও নিজেই তোমায় ফোন করে নেবে। ... আচ্ছা, তবে বলিস কিন্তু। .. হ্যাঁ, গো বলছি। রাখলাম তবে। .. হ্যাঁ, রাখ।
দামিনী নিজেই নিজের কপাল চাপড়ে নিল নিজের ভুলের জন্য । তারপর বৃষ্টির ঘরে গিয়ে ঘুমন্ত বৃষ্টির গাঁ ঘেসে বসে দামিনী আলতো স্বরে বলল, ....
হ্যাপি বার্থ ডে মা, বৃষ্টি। ওঠ মা, একটু আদর করে দেই৷ ... বৃষ্টি উলটো পাশ ফিরে শুয়ে বলল,... যাও, বিরক্ত করো না৷ ঘুমাতে দাও তো।
দামিনী অস্ফুট স্বরে বলল.... কেন যে ভুলে গেলাম! এই জন্য তোর অভিমান হয়েছে, তাই না।
বৃষ্টি এবার আর শুয়ে থাকতে পারল না। উঠে বসে বলল, ... এমন কোন মা আছে যে নিজের মেয়ের জন্মদিন ভুলে যায়! কেমন মা তুমি! নিজেকে নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকলে এই হয়।
দামিনী মাথা নীচু করে বলল, ... আমি নিজেকে নিয়ে কোথায় এত ব্যস্ত থাকি রে, কিন্তু ভুলে যাওয়াটা...
দামিনীর কথা শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টি বিছানা ছেড়ে উঠে বাথরুমে ঢুকে পড়বার জন্য এগিয়ে গেল।
দামিনী চোখের কোণাটা মুছে বৃষ্টির বিছানার চাদর, বালিশ ঠিক করে গুছিয়ে রেখে ঘর থেকে বেরোতে গিয়ে দেখল বৃষ্টি আগেই নিজের আলমারি থেকে একটা সুন্দর চুড়িদার বের করে রেখেছে আজকে পরবে বলে।
দামিনী রান্না ঘরে গিয়ে খাবার বানাতে বানাতে বুঝল বৃষ্টি স্নান সেরে ঘরে ঢুকেছে। দামিনী তখন বৃষ্টিকে উদ্দেশ্য করে বলল.... মা সকালে ফোন করে তোকে জন্মদিনের উইশ করতে চেয়েছিল, তুই তখন ঘুমাচ্ছিলি, বলেছি পরে তুই ফোন করে নিবি।
বৃষ্টি কিছুটা ঝাঁঝ দেখিয়ে বলল, ... দেখ, সবার মনে থাকে, তুমি বাদে।
এরপর বৃষ্টি দিদুনকে ফোন করে বলল, ... বল দিদুন, তুমি আমায় ফোন করেছিলে দেখলাম। মা ও বলল। আসলে আমার ফোন সাইলেন্ট মুডে ছিল। আমি ঘুমাচ্ছিলাম। ... হুউউ, বুঝেছি দিদুভাই। তোমার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। ভালো থেকো, সুস্থ থেকো। অনেক বড় হও। .. প্রণাম নিও দিদুন। ... তা, কবে আসবে এখানে? আর কি চাও গিফটে? .. দেখি দিদুন আজ যদি কলেজ থেকে ফেরার সময়, সময় বের করতে পারি তবে যাব। কিন্তু প্রমিস করছি না, ট্রাই করব। আর গিফট কিচ্ছু চাই না। অনেক বড় হয়ে গিয়েছি, এখন তুমি একদিন তোমার হাতের বানানো রাবড়ি খাইয়ে দিও ব্যাস, তাহলেই হবে। ... সে তো খাবেই দিদুভাই, কিন্তু গিফট তো একটা দিতেই হয়। .. আচ্ছা, দিদুন সে না হয় আমি গিয়ে বলছি। অন্য একটা ফোন ঢুকছে দিদুন, আমি রাখছি। .....হ্যাঁ, আজ তো তোমারই দিন দিদুভাই, অনেক ফোনই আসবে তোমার। .. (একটু হেসে) হুমম, রাখছি দিদুন।
বৃষ্টির মোবাইলে একটার পর একটা ফোন ঢুকছে।
রান্নাঘর থেকে দামিনী দিদুন আর নাতনির সব কথাবার্তাই শুনতে পাচ্ছিল।
দামিনী বৃষ্টির জন্য থালায় খাবার সাজিয়ে ডাইনিং টেবিলে এনে রাখল। বৃষ্টি রেডি হয়ে কোন রকমে তাড়াতাড়ি খেয়ে কলেজের জন্য বেরিয়ে গেল। বেরোনোর সময় বৃষ্টি মাকে বলেও বেরোল না।
দামিনী জানে বৃষ্টি রেগে গেলে এই রকমটাই করে।
দামিনী ভাবল এখন বৃষ্টির জন্য একটু পায়েস বানিয়ে রেখে দেবে৷ এরপর স্কুল থেকে ফিরে এসে পায়েসটা বাটিতে তুলে তাতে গোলাপের পাপড়ি, চেরি এসব দিয়ে ডেকোরেট করে রাখবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ।
দামিনী হাই স্কুলের টিচার। বাড়ি থেকে দশ মিনিটের ওয়াকেবল ডিসট্যান্সেই দামিনীর স্কুল। আর বৃষ্টির কলেজটা অনেক দূর, যেতে প্রায় এক, দেড় ঘন্টা লেগে যায়। তাই বৃষ্টি দামিনীর অনেক আগেই বেরোয়৷ দামিনী রান্না সেরে স্নান করে খেয়ে হাঁটতে হাঁটতে স্কুলে চলে যায়। আজও সেই মত রান্না শেষ হলে একটু খেয়ে দামিনী স্কুলের জন্য বেরোল।
স্কুলে যাওয়ার পথে হাঁটতে হাঁটতে দামিনী ভাবল বাড়ি ফিরে বৃষ্টির জন্য বৃষ্টির পছন্দ মতো বাটার নান আর বাটার চিকেন বানিয়ে নিয়ে বৃষ্টিকে ডিনারে দিলে বৃষ্টি খুব খুশি হয়ে যাবে৷ আর একটা বার্থ ডে কেক মিয়ো আমোরে থেকে কিনে নেবে৷ তখন আর বৃষ্টির রাগ, অভিমান থাকবে না। এই ভাবতে ভাবতে দামিনীর মনটাও ভালো হয়ে গেল।
দামিনী যখন স্কুলে পৌঁছালো তখনও প্রার্থনা হয় নি। এক এক করে ছাত্ররা আসছে৷ দামিনী ধীর পায়ে টিচারস রুমের দিকে গেল৷ এই স্কুল টা ছেলেদের বলে শিক্ষকই বেশি। শিক্ষিকা মাত্র তিন জন। তার মধ্যে দামিনী একজন। টিচারস রুমে ঢুকতে ঢুকতেই সুব্রত স্যার বললেন... গুড মর্নিং ম্যাডাম।
দামিনীও গুড মর্নিং বলে নিজের জায়গায় গিয়ে ব্যাগ রেখে বসল৷ এই টিচারস রুমে শিক্ষিকাদের বসার জায়গাটা আলাদা। সেখানে লিপি বসেছিল। দামিনী লিপির পাশে গিয়ে বসল।
লিপি বলল.... আজ ওয়েদারটা গুমোট হয়ে রয়েছে, মনে হয় বৃষ্টি নামবে৷
দামিনী বলল... বৃষ্টি নামা দরকার৷ প্রচণ্ড গরম পড়েছে৷ রাস্তাঘাটে মানুষগুলোর অবস্থা খুব কাহিল। জানিস তো লিপি, আজ বৃষ্টির জন্মদিন। যেদিন বৃষ্টির জন্ম হয়েছিল সেদিন কলকাতায় খুব ঝড় বৃষ্টি হয়েছিল৷ বোধ হয় সে বছর সেদিনই কলকাতায় বর্ষা ঢুকেছিল। তাই তো আমার শ্বশুর মশাই ওর নাম রেখেছিলেন বৃষ্টি।
লিপি দামিনীর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল, ... বৃষ্টির বয়স কত হল রে?
দামিনী একটু চিন্তা করে বলল, উনিশ৷
এরপর স্কুলে প্রার্থনার ঘন্টা বাজল। লিপি, দামিনী উঠে মাঠের দিকে এগিয়ে যেতে গিয়ে দামিনী বলল... রূদ্রানী আসে নি?
লিপি বলল... না, রুদ্রাণীর শরীর ভালো নেই।
দামিনী বলল... কি হয়েছে? ...
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

ঘড়িতে সময় ৬.৪০, দামিনী নিজের ব্যালকনিতে রাখা টবের মাটি গুলো একটু খুঁড়ে গাছ গুলোর পরিচর্যা করছে। সকাল বেলাটা দামিন....

     আজ গুনগুন এর রেজাল্ট বেরিয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের। যদিও সেই নিয়ে কোনো উচ্ছ্বাস নেই ওর মধ্যে। কারণ ও তো জানে কোনো আহামর...
19/07/2025


আজ গুনগুন এর রেজাল্ট বেরিয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের। যদিও সেই নিয়ে কোনো উচ্ছ্বাস নেই ওর মধ্যে। কারণ ও তো জানে কোনো আহামরি রেজাল্ট হয়নি। হয়তো নামে মাত্র পাস টুকু করে যাবে। কিন্তু এখনও জানতে পারেনি কত নম্বর পেয়েছে। স্কুলে এসেছে সেটাই জানার জন্য। বোর্ড ঝুলিয়েছে সামনেই। কিন্তু প্রচুর ভিড়। ও কয়েকবার ঠেলেঠুলে ঢোকার চেষ্টা করেছে কিন্তু সবাই ওকে আবারও বের করে দিয়েছে ফলে দেখতে পায়নি এখনও কি রেজাল্ট হয়েছে। গুনগুন এক বন্ধু সুস্মিতা….একটু আগেই এসেছে। ওর সঙ্গে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে একটু দূরের দিকে। ঠিক সেই সময় ওদের এক ক্লাস মেট এসে বলে,

“এই গুনগুন তোকে অতীন স্যার ডাকছেন। স্টাফ রুমে আছেন উনি।”

“যাচ্ছি।”

“যাচ্ছি না এক্ষুনি যেতে বললেন স্যার।”

“হুম।”

মেয়েটি চলে যেতেই সুস্মিতা গুনগুন কে বললো “কি ব্যাপার স্যার এখন তোকে ডাকছে কেনো!! পাস করিসনি নাকি!! আমার খুব ভয় করছে রে।”

গুনগুন স্মিত হেসে বললো “ভয় তো আমার পাওয়ার কথা। তুই পাচ্ছিস কেনো!!”

সুস্মিতা বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে বললো “তুই জানিস না তোর বাবা কেমন জল্লাদ মানুষ!! মাধ্যমিক এর সময় তোকে কতো মেরেছিল।”

“ওসব আমার সয়ে গেছে রে। তুই দাঁড়া, আমি দেখে আসি বাবা কেনো ডাকছে।”

“আমিও তোর সঙ্গে যাচ্ছি।”

“না না তোকে যেতে হবে না। তুই বরং দেখার চেষ্টা কর রেজাল্ট কি হয়েছে!!”

অনিচ্ছা সত্বেও সুস্মিতা মাথা নেড়ে সায় দিলে গুনগুন দুরুদুরু বুকে স্টাফ রুমের দিকে এগিয়ে যায়। মনের মধ্যে ভয়ের দামাদা বাজছে। কে জানে আজও হয়তো খুব মারবে বাবা। গুনগুন এর বাবা অতীন মাজি এই হাই স্কুলের অঙ্কের স্যার। গ্রামে যথেষ্ট নাম ডাক আছে। সবাই জানে মাস্টার মশাই ভীষণ রাগী কিন্তু খুব ভালো পড়া বোঝায়। ওনার বাকি দুই ছেলে মেয়েও পড়াশোনায় খুবই ভালো। কিন্তু গুনগুন যে কেনো এমন গবেট হয়েছে কে জানে!! এই নিয়ে ওনার রাগ, দুঃখ কম নেই। যার প্রভাব প্রায়শই দেখা যায়। উনি গুনগুন কে মারধোর করে সেই শোধ তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু মারলেই কি গুনগুন পড়াশোনায় ভালো হয়ে যাবে!! গুনগুন কিছুতেই কাউকে বোঝাতে পারে না….পড়াশোনা ওর একদম ভালো লাগে না। ওর তো সারাক্ষণ অলীক কল্পনার জগতে থাকতে ভালো লাগে। রান্না করতে ভালো লাগে, ঘর গুছাতে ভালো লাগে, পশু পাখি ভালো লাগে, গাছ পালা ভালো লাগে।

মনের মধ্যে হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে গুনগুন স্টাফ রুমের দরজায় টোকা দিয়ে বললো,

“আসবো স্যার!!”

ভিতর থেকে ভরিক্কি গলায় অতীন বাবু বললেন “এসো।”

গুনগুন দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই দেখলো শুধু অতীন মাজি নেই সেই সঙ্গে ওদের হেড স্যার প্রভাস স্যার ও আছে। তাহলে কি ফেল’ই করে গেলো শেষ পর্যন্ত!! কিন্তু ও যে কাউন্ট করেছিল প্রত্যেকটা বিষয়ে ত্রিশ নম্বর তো উঠেই যাবে। গুটি গুটি পায়ে দুই স্যারের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই হেড স্যার বললেন,

“বসো….তোমায় কিছু বলার আছে।”

গুনগুন চুপটি করে বসে পড়লো। ভয় ভয় চোখে বাবার দিকে তাকালো যার হাতের মুঠি শক্ত হয়ে এসেছে। কপালের দুই পাশের শিরা গুলো বারবার উঁচু নীচু হচ্ছে। ভয়ে ঢোক গিললো গুনগুন। হেড স্যার বললেন,

“আজ তোমায় কিছু কথা বলার জন্য ডেকেছি গুনগুন। আশা করি কথা গুলো মাথায় রাখবে।”

গুনগুন মাথা নাড়ালো। স্যার বললেন “রেজাল্ট দেখেছো তুমি!!”

“না স্যার…. মানে ওখানে খুব ভিড় ছিল তাই দেখতে পারিনি এখনও।”

হেড স্যার ওর কথা শুনে ওর রেজাল্ট টা বের করে বললেন “তুমি এবারে 47% নম্বর পেয়ে পাস করেছো। মাধ্যমিকের থেকে দুই পার্সেন্ট বেড়েছে মাত্র।”

প্রথমের কথাটা শুনে গুনগুন এত চোখ দুটো উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। তাহলে পাস তো করে গেছে। কিন্তু হেড স্যারের মুখ দেখে ওর সেই উজ্জ্বল মুখটা এই রইলো না। বুঝতে পারছে এবার কোনো ঝড় বয়ে আসবে।

“তুমি নামে মাত্র পাস করে গিয়েছ গুনগুন। আমাদের স্কুলে এই প্রথম কেউ এত কম নম্বর পেয়ে পাস করলো। তোমার বন্ধু সুস্মিতা 80% নম্বর পেয়েছে। মাধ্যমিকে ও এত কম নম্বর ছিল যে তুমি কোথাও চান্স পেতে না। শুধুমাত্র আমাদের স্কুলের ছাত্রী বলে আমরা ফেলে দিতে পারিনি। এছাড়াও অতীন স্যারের একটা মান সম্মান আছে। তোমায় কত করে বোঝালাম এবার একটু মন দিয়ে পড়াশোনাটা করো, কিন্তু তুমি তো শুনবে না। এই নম্বর নিয়ে তুমি কোনো কলেজে সিট পাবে না সেটা কি জানো তুমি!! শুধু তোমার জন্য অতীন স্যার কারও কাছে মুখ দেখাতে পারছেন না। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম সুস্মিতার সঙ্গে মিশছো যখন একটু হলেও উন্নতি হবে। কিন্তু কিছুই হলো না। তোমায় নিয়ে কি করবো গুনগুন বলতে পারো!! এ শুধু অতীন স্যারের লজ্জা না….এটা তো আমাদের স্কুলেরও লজ্জা। আমরা কেউ কখনও ভাবিনি এমন দিনও আসবে।”

হেড স্যারের শ্লেষ মেশানো কথা গুলো গুনগুন মাথা নীচু করে হজম করছে। ভয় হচ্ছে বাবার শরীরের মৃদু কম্পন দেখে। এরপর ওর পিঠে চ্যালা কাঠ পড়বে নির্ঘাত। বেশ কিছুক্ষণ পর হেড স্যার বললেন,

“গুনগুন আমি কিন্তু তোমায় কোনরকম অপমান বা তিরস্কার করছি না। ভেবো না তোমার খারাপ চাই আমরা। তোমার ভালো চাই বলেই এত গুলো কথা বললাম। তুমি শুধুমাত্র অতীন স্যারের মেয়ে বলে আমি তোমার ভালোর জন্য বলছি। এরপর কি করবে কিছু ভেবেছো!!”

গুনগুন মাথা নেড়ে না বলে। হেড স্যার বললেন,

“তোমার জন্য আমি একটা শেষ চেষ্টা করতে পারি….আমার এক পরিচিত আছে তাকে বলে কলেজে চান্স পাইয়ে দিতে পারি। কিন্তু তোমায় কথা দিতে হবে তুমি ভালো করে পড়াশোনা করবে। কলেজে গিয়ে অন্তত বাবার বা আমাদের মুখটা রেখো। খুব ভালো না হোক অন্তত চেষ্টা টুকু করো।”

গুনগুন আবারও মাথা হেলালো।

“আমার কথা গুলো মাথায় রেখো, আর রেজাল্ট নিয়ে বাড়ি যাও। এদিক ওদিক ঘুরে সময় নষ্ট করো না।”

গুনগুন স্যারের থেকে রেজাল্ট নিয়ে প্রণাম করে বেরিয়ে গেলো। বাইরে সুস্মিতা ওর জন্য ওয়েট করছিল। গুনগুন আসতেই ওকে ধরলো। কিন্তু গুনগুন এর মুখ দেখে আর কিছু বলার সাহস পেলো না। ওরা চুপচাপ বাড়ির দিকে রওনা দিল। আগে সুস্মিতার বাড়ি পড়ে তাই ও বন্ধুকে টাটা করে বাড়ি ঢুকে গেলো। গুনগুন তখনও ওদের বাড়ি পেরোয়নি। রাস্তা থেকেই শুনতে পেলো সুস্মিতার মা বলছে,

“তুই আবার ওই মেয়ের সঙ্গে মিশেছিস!! আজকের পর ওর সঙ্গে কেনো কোনো যোগাযোগ না রাখতে দেখি। নিজে তো পড়াশোনা করবে না আমার মেয়েটাকে ও গোল্লায় পাঠানোর সখ।”

“মা আস্তে বলো না ও শুনতে পেলে কষ্ট পাবে।”

“উহ ওর আবার কষ্ট!! এতই যখন কষ্ট পায় পড়াশোনা কেনো করে না!! শোন ওর থেকে দূরে থাকবি। তোকে ভালো কলেজে ভর্তি হতে হবে। ওর সঙ্গে মিশলে তুইও উচ্ছন্নে যাবি।”

নাহ্ আর কিছু শোনেনি গুনগুন দ্রুত পা চালিয়ে বাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। বাড়িতে ঢুকেই মায়ের মুখে পড়ে কিন্তু ওর মা পূর্ণিমা দেবী মেয়ের মুখ দেখেই যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন তাই আর কিছু বললেন না। গুনগুন চুপচাপ ব্যাগটা মায়ের হাতে দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলো। গুনগুন এর মায়ের দীর্ঘশ্বাস পড়লো এসব দেখে।

সারাটা দিনই প্রায় কেটে গেলো। গুনগুন এর বাবা স্কুল থেকে ফেরেননি। ওর মা পায়চারি করে যাচ্ছে এদিক ওদিক। চিন্তায় একদণ্ড চুপ করে বসতে পারছেন না। কেউ খায়নি দুপুরে। গুনগুন নিজের ঘর থেকে আর বেরোয়নি। ঘড়ির কাঁটা যখন তিনটের দিকে। এমন সময় অতীন বাবু রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে হাতে একটা সরু কঞ্চি নিয়ে হুড়মুড় করে ভিতরে ঢুকে এলেন।....
পুরো গল্পটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে:

আজ গুনগুন এর রেজাল্ট বেরিয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের। যদিও সেই নিয়ে কোনো উচ্ছ্বাস নেই ওর মধ্যে। কারণ ও তো জানে কোনো আহ.....

Address

Bangalore

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Pratilipi Bengali posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Pratilipi Bengali:

Share