Pillow Book

Pillow Book Right time is the present time

ইথানল জ্বালানি মিশ্রিত পেট্রোল পেট্রোল পাম্প থেকে বিক্রি করা হচ্ছে, আর আপনি কষ্টার্জিত টাকা খরচ করে গড়িতে তেল ভরছেন। কি...
18/08/2025

ইথানল জ্বালানি মিশ্রিত পেট্রোল পেট্রোল পাম্প থেকে বিক্রি করা হচ্ছে, আর আপনি কষ্টার্জিত টাকা খরচ করে গড়িতে তেল ভরছেন। কিছুদিন পর দেখলেন আপনার গাড়ির মাইলেজ কমে গেল। এর কারণ কি? জানতে হলে পুরোটা পড়ুন ও অন্যের সাথে শেয়ার করুন।

The Economic Times 17/08/25

মুম্বইবাসী রাহুল বৈদ্য একটি অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন, যা অনেক গাড়ির মালিকের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। ২০১৯ সালে তিনি ভোক্সওয়াগেন ভেন্টো কিনেছিলেন, যা শুরুতে ১১-১২ কিলোমিটার প্রতি লিটার জ্বালানি খরচ করত। কিন্তু কিছুদিন পরে গাড়িটির গড়ে ৭-৮ কিলোমিটারে নেমে আসে। প্রথমে তিনি এটাকে ট্রাফিক ভীড় বা গাড়ির বয়সের জন্য দায়ী করেছিলেন। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন, সমস্যাটা অন্য কিছুতে। গাড়িটি এক্সিলেটর ধীর হয়ে যায়, জ্বালানি গেজ ধীরে ধীরে কমতে থাকে, এবং ইঞ্জিনের শব্দও অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে।

কয়েক মাস পরে সার্ভিস সেন্টারে পরীক্ষা করে জানা যায়, গাড়িটি ইথানল-মিশ্রিত জ্বালানির (E20) ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা ছিল না। ভারতের বাজারে বর্তমানে পেট্রোলে ২০% ইথানল মিশ্রিত হচ্ছে, কিন্তু রাহুলের গাড়ির ইথানল-সংবেদনশীল রবার সিল, ফুয়েল লাইন এবং গ্যাসকেটগুলো এই নতুন জ্বালানি সহ্য করতে পারেনি। ফলে ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

সার্ভিস সেন্টারে গুরুত্বপূর্ণ অংশ বদলানো এবং ইঞ্জিন পুনরায় ক্যালিব্রেশন করার পর গাড়িটির পারফরম্যান্স ফিরে পায়। রাহুল বলেন, “আমি জানতাম না যে আমার গাড়ি E20-এর জন্য প্রস্তুত ছিল না।” তিনি একা নন। ২০২১ সালে কেনা মহেশ নায়েরের গাড়ি সুজুকিও একই সমস্যায় পড়ে। তার গাড়ির একসিলেটর স্পিড কমে যায়, পিক-আপ দুর্বল হয়, এবং জ্বালানি খরচ বাড়ে। মেকানিকদের সাহায্যে সে জানতে পারে, নতুন কম্পোনেন্ট এবং ইঞ্জিন টিউনিং দিয়ে সমস্যা সমাধান হয়েছে।

রাহুল এবং মহেশের অভিজ্ঞতা বড় একটি সমস্যার ইঙ্গিত দেয়—ভারতের ইথানল জ্বালানি পরিবর্তন। সরকার ইথানল মিশ্রণ বাড়িয়ে পরিবেশ সংরক্ষণের চেষ্টা করছে, কিন্তু গাড়ির মালিকদের জন্য এটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। অনেক গাড়ি এই জ্বালানির জন্য উপযুক্ত নয়, এবং সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে সচেতন নন। এটি অটোমোবাইল কোম্পানি, তেল কোম্পানি এবং সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণ হয়ে উঠেছে।

ভারতের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় জ্বালানি মান নির্ধারণ পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু গাড়ির মালিকদের জন্য জ্বালানি বদলের আগে গাড়ি পরীক্ষা করা জরুরি। এই পরিবর্তন সফল হলে পরিবেশের উপকার হবে, তবে গ্রাহক সচেতনতা না বাড়লে সমস্যা থেকে যাবে।

জিম করবেটের জন্ম ১৫০ বছর : এক কিংবদন্তি শিকারী ও সংরক্ষণবাদী সাহিত্যিক✍️: শুভাশিস দত্ত২০২৫ সালে জিম করবেটের জন্মের ১৫০তম...
02/08/2025

জিম করবেটের জন্ম ১৫০ বছর : এক কিংবদন্তি শিকারী ও সংরক্ষণবাদী সাহিত্যিক

✍️: শুভাশিস দত্ত

২০২৫ সালে জিম করবেটের জন্মের ১৫০তম বছর উদযাপনের এই মুহূর্তে, তাঁর জীবন ও রচনার প্রতি নতুন করে দৃষ্টিপাত করা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এডওয়ার্ড জেমস করবেট (১৮৭৫-১৯৫৫), যিনি জিম করবেট নামে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছেন, একজন শিকারী, প্রকৃতিবিদ এবং সংরক্ষণবাদী হিসেবে পরিচিত। তবে তাঁর জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো তাঁর সাহিত্যিক অবদান, যা শিকার কাহিনির মাধ্যমে শুধুমাত্র রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতাই তুলে ধরেনি, বরং প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্কের গভীর দর্শনও উপস্থাপন করেছে। তাঁর রচনাগুলো, বিশেষ করে কুমায়ুনের মানুষখেকো (Man-Eaters of Kumaon), রুদ্রপ্রয়াগের মানুষখেকো লেপার্ড (The Man-Eating Leopard of Rudraprayag), এবং দ্য টেম্পল টাইগার (The Temple Tiger), বিশ্ব সাহিত্যে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে।

👉জিম করবেটের জীবন: শিকারী থেকে সাহিত্যিক

জিম করবেট ১৮৭৫ সালের ২৫ জুলাই ভারতের উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে জন্মগ্রহণ করেন। আইরিশ বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ শিকারী কুমায়ুন ও গাড়োয়াল অঞ্চলের ঘন জঙ্গলে বেড়ে ওঠেন, যেখানে তাঁর শৈশব প্রকৃতি ও বন্যজীবনের সান্নিধ্যে কেটেছে। তাঁর শৈশবের অভিজ্ঞতা তাঁকে প্রকৃতির প্রতি গভীরভাবে আকৃষ্ট করেছিল। ছয় বছর বয়সে তিনি প্রথম লেপার্ড শিকার করেন, যা তাঁর শিকারী জীবনের সূচনা করে। তবে করবেট শুধু একজন শিকারী ছিলেন না; তিনি ছিলেন একজন পর্যবেক্ষক, যিনি প্রকৃতির সূক্ষ্ম সৌন্দর্য ও জটিলতা বুঝতে পেরেছিলেন। তাঁর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি এবং প্রখর স্মৃতিশক্তি তাঁর শিকার কাহিনিগুলোকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছে।
করবেটের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক এল যখন তিনি মানুষখেকো বাঘ ও চিতার শিকারে নামলেন। ১৯০৭ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে তিনি প্রায় ৩৩টি মানুষখেকো বাঘ ও চিতাকে হত্যা করেছিলেন, যারা ১২০০-এরও বেশি মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিল। ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য শিকার ছিল চম্পাবতের মানুষখেকো বাঘিনী, যে ৪৩৬ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিল। তবে করবেট কখনোই নির্বিচারে শিকার করতেন না; তিনি শুধুমাত্র সেই প্রাণীদের হত্যা করতেন যারা মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছিল। তাঁর এই মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর রচনায় প্রতিফলিত হয়েছে।

👉সাহিত্যিক জীবন: শিকার কাহিনির শিল্প

জিম করবেটের সাহিত্যিক জীবন শুরু হয় তাঁর জীবনের শেষ দশকে। তিনি পেশাদার লেখক হওয়ার কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করেননি, তবে তাঁর অভিজ্ঞতাগুলো এতটাই রোমাঞ্চকর ও শিক্ষণীয় ছিল যে সেগুলো লিখিত রূপে প্রকাশ করা ছাড়া তাঁর কাছে আর কোনো পথ ছিল না। ১৯৪৪ সালে প্রকাশিত কুমায়ুনের মানুষখেকো তাঁর প্রথম বই, যা তাঁকে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি এনে দেয়। এই বইটি শুধু শিকার কাহিনির সংকলন নয়, বরং প্রকৃতি, মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর মধ্যে জটিল সম্পর্কের একটি দার্শনিক বিশ্লেষণ।
করবেটের রচনার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল তাঁর বর্ণনার শৈলী। তিনি সহজ, সরল এবং প্রাঞ্জল ভাষায় লিখতেন, যা পাঠককে তাঁর অভিজ্ঞতার মধ্যে ডুবিয়ে দিত। তাঁর বর্ণনায় রোমাঞ্চ, ভয়, সাহস এবং প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধার এক অনন্য মিশ্রণ ছিল। উদাহরণস্বরূপ, রুদ্রপ্রয়াগের মানুষখেকো লেপার্ড-এ তিনি যে চিতার শিকারের বর্ণনা দিয়েছেন, তা শুধু শিকারের গল্প নয়, বরং স্থানীয় মানুষের ভয়, আতঙ্ক এবং তাঁর নিজের মানসিক দ্বন্দ্বের একটি প্রাণবন্ত চিত্র। তিনি লিখেছিলেন, “There are events in one’s life which, no matter how remote, never fade away from memory,” যা তাঁর অভিজ্ঞতার গভীরতা এবং স্মৃতির প্রভাবকে তুলে ধরে।
তাঁর রচনায় প্রকৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং বন্যপ্রাণীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। তিনি মানুষখেকো প্রাণীদের শিকার করলেও, তাঁর লেখায় প্রাণীদের প্রতি কোনো বিদ্বেষ ছিল না। তিনি বুঝতেন যে এই প্রাণীরা প্রায়শই মানুষের কারণে বা আঘাতের ফলে মানুষখেকো হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি ধারণা করেছিলেন যে পানারের মানুষখেকো চিতা আঘাতের কারণে তার স্বাভাবিক শিকার ক্ষমতা হারিয়ে মানুষের উপর আক্রমণ শুরু করেছিল।

জিম করবেটের রচনা শুধুমাত্র শিকার কাহিনি হিসেবে নয়, বরং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য জনসাধারণের প্রতি একটি শক্তিশালী আহ্বান হিসেবে কাজ করেছে। তাঁর বইগুলো বিশ্বব্যাপী পাঠকদের মধ্যে প্রকৃতি সংরক্ষণের প্রতি সচেতনতা বাড়িয়েছে। তাঁর নামে নামকরণ করা জিম করবেট জাতীয় উদ্যান, যা ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তাঁর সংরক্ষণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির একটি প্রতীক। এই উদ্যানটি ভারতের প্রথম জাতীয় উদ্যান এবং বাংলার বাঘ সংরক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রথম প্রকল্প।

করবেটের রচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল তাঁর স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি সম্মান। তিনি স্থানীয় হিন্দি ভাষায় কথা বলতেন এবং কুমায়ুন ও গাড়োয়ালের মানুষের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর বই মাই ইন্ডিয়া (My India) ভারতের গ্রামীণ জীবন, সংস্কৃতি এবং মানুষের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসার প্রতিফলন। তিনি শুধু একজন শিকারী বা লেখক ছিলেন না, বরং ভারতীয় উপমহাদেশের একজন সন্তান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।

👉সমালোচনা ও বিতর্ক:

করবেটের রচনা নিয়ে কিছু সমালোচনাও উঠেছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন যে তাঁর গল্পগুলো কতটা তাঁর নিজের লেখা এবং কতটা অন্য কারো সাহায্যে রচিত। তবে তাঁর সহজ, প্রাঞ্জল এবং বিশদ বর্ণনা এই সন্দেহকে অনেকাংশে নিরসন করে। তাঁর লেখায় যে সত্যতা ও অভিজ্ঞতার গভীরতা প্রকাশ পায়, তা কেবলমাত্র একজন প্রত্যক্ষদর্শীরই সম্ভব।

👉শেষকথা:

জিম করবেটের জন্মের ১৫০তম বছরে তাঁর সাহিত্যিক অবদানকে পুনরায় মূল্যায়ন করা আমাদের জন্য একটি সুযোগ। তিনি শুধুমাত্র একজন শিকারী বা সংরক্ষণবাদী ছিলেন না, বরং একজন সাহিত্যিক ছিলেন, যিনি তাঁর অভিজ্ঞতার মাধ্যমে প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্কের একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন। তাঁর রচনা আজও পাঠকদের মুগ্ধ করে, তাঁর গল্পগুলো আজও কুমায়ুনের জঙ্গলে প্রতিধ্বনিত হয়। জিম করবেটের জীবন ও রচনা আমাদের শেখায় যে, সাহস, শ্রদ্ধা এবং মানবতার মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির সঙ্গে একটি সুরেলা সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি। তাঁর এই উত্তরাধিকার আগামী প্রজন্মের জন্যও প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

তথ্যসূত্র: জিমকরবেটের বিভিন্ন বই ও ইন্টারনেট
ছবি: ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত
© Subhasis Dutta

স্থূলতা চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত: ওজন কোনো সমস্যাই নয়!✍️: শুভাশিস দত্ত ওজন কমানো মানেই কি শুধুমাত্র ব্যায়ামের কষ্ট আর নিত...
30/05/2025

স্থূলতা চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত: ওজন কোনো সমস্যাই নয়!

✍️: শুভাশিস দত্ত

ওজন কমানো মানেই কি শুধুমাত্র ব্যায়ামের কষ্ট আর নিত্য নতুন লজ্জাজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়া? যাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন বা স্থুলতা বাসা বেঁধেছে, তারা প্রায়শই এই সমস্যার মুখোমুখি হন। কিন্তু যদি এমন একটি ঔষধ আসে যা এই সমস্যাগুলো দূর করে ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তোলে? সম্প্রতি এক নতুন ঔষধের পরীক্ষামূলক ব্যবহার হয়েছে, যা স্থূল মানুষের জন্য এক নতুন আশার আলো নিয়ে এসেছে। এই ঔষধটি 'নিডেল ফোবিয়া' বা সুঁই ভীতিযুক্ত (ইনজেকশন ভীতি) রোগীদের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর হতে চলেছে, যাদের মাউন্টাজারো (Mounjaro) বা ওয়েগোভির (Wegovy) মতো ইনজেকশন নিতে ভয় লাগে।

নোভারটিস নর্ডিস্ক (Novo Nordisk) এবং এলি লিলি (Eli Lilly) বিশ্বজুড়ে স্থূলতার চিকিৎসায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সম্প্রতি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এই ঔষধের কার্যকারিতা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলে প্রমাণিত হয়েছে। এলি লিলির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে, বিভিন্ন দেশ যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত এবং মেক্সিকো-র ৩,৫০০-এরও বেশি টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগী অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী যে রোগীরা ৩.২ মিলিগ্রাম বা ১২ মিলিগ্রাম ঔষধ গ্রহণ করেছিলেন, তাদের গড় ওজন কমেছে ৭.২ কেজি।

অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক একটি দৈনিক ব্যবহৃত নতুন ঔষধের কথা ঘোষণা করেছে, যা ৩.২ মিলিগ্রাম বা ৫.২ মিলিগ্রাম ডোজের উপর পরিচালিত হয়েছিল। এই ট্রায়ালে দেখা গেছে যে, প্রতিদিনের ১২ মিলিগ্রাম বা ৩৬ মিলিগ্রাম ঔষধ গ্রহণের ফলে রক্তে শর্করা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এছাড়াও, ৩৬ মিলিগ্রাম ডোজের সাথে গড় ওজন ৭.৯% কমেছে। এই ফলাফলগুলো নিশ্চিতভাবে স্থূলতা চিকিৎসায় একটি বিপ্লবী পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।

নোভারটিস নর্ডিস্কের ওয়েগোভির নতুন অনুমোদিত ইনজেকশনও ট্রায়ালে ১৫% এরও বেশি ওজন কমানোর কথা জানিয়েছে। ফলে, এই ঔষধগুলো স্থূলতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন শক্তি যোগাচ্ছে।

এলি লিলি ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিকস বলেছেন যে এই ঔষধটি স্থূলতা এবং ডায়াবেটিস উভয় ক্ষেত্রেই কার্যকর হবে এবং এটি সহজলভ্য হবে। তিনি আরও বলেছেন যে এটি একটি ওরাল ট্যাবলেট, যা রোগীদের জন্য আরও সুবিধাজনক হবে। এটি একটি নতুন ধরনের ট্যাবলেট, যা প্রচলিত ঔষধগুলির সাথে অতিরিক্ত সুবিধা দেবে।

ডঃ মোহনস ডায়াবেটিস স্পেশালিটিজ সেন্টার, চেন্নাই-এর প্রধান ডঃ অনুপ মিশ্র বলেছেন, এই ঔষধটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে এবং অনেক মানুষকে সাহায্য করবে।

অর্গোলিগ্রন, যা একটি নন-পেপটাইড জিএলপি-১ (GLP-1) অ্যাগোনিস্ট, এটি শরীরে এমন একটি প্রোটিন তৈরি করে যা পাচক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ওরালি গ্রহণ করা যায়, যা ইনজেকশনের চেয়ে অনেক বেশি সুবিধাজনক।

এলি লিলি আত্মবিশ্বাসী যে তাদের ঔষধটি বিশ্বব্যাপী দ্রুত চালু করা সম্ভব হবে। তারা বিশ্বাস করে যে এই নতুন ঔষধটি মানুষকে একটি নতুন বিকল্প দেবে এবং এর উৎপাদন দ্রুত বাড়ানো হবে।

এই নতুন ঔষধের আগমন স্থূলতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি নতুন আশার সঞ্চার করছে এবং চিকিৎসা পদ্ধতির ভবিষ্যতকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছে।

তথ্যসূত্র:
* প্রবন্ধটি এপ্রিল 2025 এ দি ইকোনমিক টাইমস প্রকাশিত একটি নিউজ কে অনুসরণ করে লেখা।
* প্রবন্ধে উল্লেখিত কোম্পানি: এলি লিলি (Eli Lilly) এবং নোভারটিস নর্ডিস্ক (Novo Nordisk)।
* উল্লিখিত ঔষধ: মাউন্টাজারো (Mounjaro), ওয়েগোভির (Wegovy), অর্গোলিগ্রন (Orforglipron)।
* ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য, যেখানে টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং স্থূলতার রোগীদের উপর পরীক্ষা করা হয়েছে।
* বিশেষজ্ঞের মন্তব্য: ডেভিড রিকস (এলি লিলি ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী) এবং ডঃ অনুপ মিশ্র (মোহনস ডায়াবেটিস স্পেশালিটিজ সেন্টার, চেন্নাই)।

© Subhasis Dutta (30/05/2025)
( পড়ে ভালো লাগলে লেখকের নাম সহ শেয়ার করুন)

তুতেনখামেনের সমাধির রহস্য উন্মোচন: নিক রিভসের নতুন তত্ত্ব✍️: শুভাশিস দত্ত।প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হ...
29/05/2025

তুতেনখামেনের সমাধির রহস্য উন্মোচন: নিক রিভসের নতুন তত্ত্ব

✍️: শুভাশিস দত্ত।

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হলো ফারাও তুতেনখামেনের সমাধি। এই সমাধির রহস্য উন্মোচন নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে গবেষণা ও বিতর্ক চলে আসছে। 2022 সালে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক নিক রিভস একটি নতুন তত্ত্ব প্রস্তাব করেছেন যা এই রহস্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। তিনি দাবি করেছেন যে, তুতেনখামেনের সমাধি পূর্বে নেফারতিতি ও ফারাও কেপেরখেপেরুর জন্য নির্মিত হয়েছিল এবং সেখানে একটি গোপন কক্ষ থাকতে পারে।
রিভসের প্রস্তাব অনুযায়ী, তুতেনখামেনের সমাধির প্রধান চেম্বারের পিছনে একটি অব্যবহৃত দরজা থাকতে পারে, যা একটি গোপন কক্ষের দিকে নিয়ে যায়। তিনি এক্স-রে এবং অন্যান্য স্ক্যানিং পদ্ধতির মাধ্যমে সমাধির ভেতরের চিত্র বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তার মতে, এই গোপন কক্ষটি ফারাও নেফারতিতি বা কেপেরখেপেরুর বিশ্রামাগার হতে পারে। এই কক্ষটি তুতেনখামেনের সমাধির পশ্চিম দিকে অবস্থিত, যেখানে প্রাচীন মিশরীয় আমর্না রাজপরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সমাধি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই প্রস্তাবের সমর্থনে রিভস সমাধির চিত্র এবং এর নির্মাণশৈলীকে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, সমাধির প্রাচীরের চিত্রকর্ম, বিশেষ করে তুতেনখামেনের "ফ্যারাওনিক স্মৃতিরোমন্থন" এবং "ওপেনিং দ্য মাউথ" অনুষ্ঠান, পূর্বে নির্মিত সমাধির উপর একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। তার মতে, এই চিত্রকর্মগুলো পূর্ববর্তী ফারাওদের জন্য নির্মিত হয়েছিল, এবং পরে তুতেন খামেনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন যে, সমাধির কার্টুশগুলির কিছু অংশে নেফারতিতির কার্টুশের অসম্পূর্ণ চিহ্ন রয়েছে, যা এই তত্ত্বকে সমর্থন করে।
রিভসের তত্ত্ব যদি সত্য হয়, তাহলে এটি প্রাচীন মিশরীয় প্রত্নতত্ত্বে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার হবে। এটি শুধু তুতেনখামেনের সমাধির রহস্যই উন্মোচন করবে না, বরং নেফারতিতি এবং কেপেরখেপেরুর মতো গুরুত্বপূর্ণ ফারাওদের সম্পর্কে নতুন তথ্যও প্রদান করবে। তবে, এই তত্ত্ব এখনও বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক এই প্রস্তাবকে সমর্থন করছেন না এবং আরও নিবিড় গবেষণা ও প্রমাণ দাবি করছেন।
এই আবিষ্কারের গুরুত্ব অপরিসীম। যদি রিভসের তত্ত্ব প্রমাণিত হয়, তবে এটি মিশরীয় প্রত্নতত্ত্বের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচন করবে এবং ফারাওদের জীবন ও তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে পুনর্নির্মাণ করবে। এই বিতর্কিত কিন্তু আকর্ষণীয় প্রস্তাবটি এখন বিশ্বজুড়ে প্রত্নতাত্ত্বিকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও গবেষণা ও অনুসন্ধান এই রহস্যের সমাধান করবে বলে আশা করা যায়।

তথ্যসূত্র:
*BBC News: King Tutankhamun's tomb: Evidence grows for hidden chamber
*The Independent: 'Hidden chamber' in Tutankhamun's tomb is 'full of treasures'
*BBC News: Search for Nefertiti's burial chamber in Tutankhamun tomb


© Subhasis Dutta (29/05/2025)
( পড়ে ভালো লাগলে সঙ্কলকের নাম সহ শেয়ার করুন)

বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার অ্যাডা লাভলেস: অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং প্রোগ্রামিংয়ের অগ্রদূত✍️: ...
29/05/2025

বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার অ্যাডা লাভলেস: অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং প্রোগ্রামিংয়ের অগ্রদূত

✍️: শুভাশিস দত্ত

বর্তমানে ক্যুইজের প্রশ্নে 'কম্পিউটারের জনক কে?' প্রশ্নটি করলেই সাথে সাথে উত্তর পাওয়া যায় 'চার্লস ব্যাবেজ', কিন্তু তার কম্পিউটারে জনক হওয়ার পেছনে ছিল আর একজন, তিনি ছিলেন এক প্রজ্ঞাময়ী নারী, তার খোঁজ আমরা কেউ রাখিনা। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে, যখন 'কম্পিউটার' শব্দটি আজকের মতো পরিচিত ছিল না, তখন চার্লস ব্যাবেজ নামক একজন দূরদর্শী ব্রিটিশ গণিতবিদ 'অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন' নামে একটি জটিল যন্ত্রের ধারণা নিয়ে এসেছিলেন। সেই সময় একমাত্র একজন মানুষের মনে এই ভাবনা এসেছিল যে এই যন্ত্রটি কেবল গণনা করাই নয়, বরং প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করতে সক্ষম। ব্যাবেজের এই কমপিউটারের স্বপ্ন তার জীবদ্দশায় সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়নি। আর ব্যাবেজের এই বৈপ্লবিক ধারণাকে যিনি প্রথম সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করেছিলেন এবং প্রোগ্রামিংয়ের সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন, তিনি ছিলেন অ্যাডা লাভলেস।

প্রথম জীবনে তার নাম ছিল অ্যাডা বায়রন, বিখ্যাত কবি লর্ড বায়রনের কন্যা হলেও, সাহিত্য থেকে দূরে সরে গণিতের প্রতি আকৃষ্ট হন। তার মা, অ্যানাবেলা মিলব্যাঙ্ক, যিনি নিজেই গণিতে পারদর্শী ছিলেন, অ্যাডার শিক্ষায় বিশেষ নজর দেন এবং তাকে অগাস্টাস ডি মর্গানের মতো বিখ্যাত গণিতবিদদের তত্ত্বাবধানে অধ্যয়ন করার সুযোগ করে দেন। এই সময়েই অ্যাডার সাথে চার্লস ব্যাবেজের পরিচয় হয়।

ব্যাবেজের অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের নকশা অ্যাডার কল্পনাকে বিশেষভাবে নাড়া দেয়। তিনি কেবল যন্ত্রটির জটিল গঠন দেখেই থেমে থাকেননি, বরং এর অন্তর্নিহিত কার্যকারিতা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা গভীরভাবে উপলব্ধি করেন। ১৮৪৩ সালে, যখন লুইগি মেনাব্রিয়া ব্যাবেজের ইঞ্জিন নিয়ে ফরাসি ভাষায় একটি প্রবন্ধ লেখেন, তখন অ্যাডা সেই প্রবন্ধটি অনুবাদ করেন এবং তার সাথে নিজের বিস্তারিত টিকা যোগ করেন। এই টিকাগুলি মূল প্রবন্ধের চেয়েও দীর্ঘ ছিল এবং এখানেই অ্যাডার মৌলিক চিন্তাভাবনার পরিচয় পাওয়া যায়।

অ্যাডার নোটগুলিতে, তিনি অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন কীভাবে কেবল সংখ্যা গণনা করার চেয়েও অনেক বেশি কিছু করতে পারে, তা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে এই যন্ত্রটিকে বিভিন্ন প্রতীক পরিচালনা করার জন্য প্রোগ্রাম করা যেতে পারে – কেবল সংখ্যা নয়, সঙ্গীত নোট, অক্ষর বা অন্য কোনও ডেটাও প্রক্রিয়া করা সম্ভব। তার এই ধারণাটি আধুনিক কম্পিউটারের প্রোগ্রামিংয়ের ভিত্তি স্থাপন করে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অ্যাডা লাভলেস অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের জন্য একটি অ্যালগরিদম তৈরি করেন। তিনি একটি নির্দিষ্ট অনুক্রমের গণনা সম্পাদন করার জন্য ইঞ্জিনের কার্যক্রমের একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা লেখেন। এই অ্যালগরিদমটিকেই বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রাম হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি বিশেষভাবে বার্নোলি সংখ্যা গণনার জন্য একটি পদ্ধতি বর্ণনা করেছিলেন, যা ইঞ্জিনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে সমাধান করা যেত।

অ্যাডা লাভলেস কেবল অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের প্রযুক্তিগত দিকগুলিই বোঝেননি, বরং এর সামাজিক ও দার্শনিক প্রভাব সম্পর্কেও গভীর চিন্তা করেছিলেন। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে এই ধরনের যন্ত্র ভবিষ্যতে বিজ্ঞান, শিল্পকলা এবং সঙ্গীতের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারে। তিনি ইঞ্জিনের সৃজনশীল সম্ভাবনা এবং মানুষের চিন্তাভাবনাকে প্রসারিত করার ক্ষমতা সম্পর্কে লিখেছিলেন।

যদিও অ্যাডার জীবদ্দশায় অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন সম্পূর্ণরূপে নির্মিত হয়নি, তার ধারণা এবং লেখাগুলি পরবর্তী প্রজন্মের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে ছিল। বিংশ শতাব্দীতে যখন প্রথম ইলেকট্রনিক কম্পিউটার তৈরি হয়, তখন অ্যাডা লাভলেসের অবদানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। তাকে প্রায়শই 'প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং তার কাজের গুরুত্ব আধুনিক কম্পিউটার বিজ্ঞানের ইতিহাসে অপরিসীম।

অ্যাডা লাভলেস ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী নারী, যিনি তার সময়ের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছিলেন। চার্লস ব্যাবেজের অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন হয়তো একটি অসম্পূর্ণ স্বপ্ন ছিল, কিন্তু অ্যাডার তীক্ষ্ণ বুদ্ধি এবং দূরদর্শিতা সেই স্বপ্নকে প্রোগ্রামিংয়ের ধারণার মাধ্যমে অমর করে রেখেছে। কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাসে ব্যাবেজের উদ্ভাবনী ধারণার পাশাপাশি অ্যাডা লাভলেসের বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনা এবং প্রথম প্রোগ্রাম রচনা চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

তথ্যসূত্র:
* Ada Lovelace - Wikipedia
* Charles Babbage - Wikipedia
* Britannica:
Ada Lovelace | Biography, Computer Programming, & Facts
Charles Babbage | Biography, Computer, Inventions, & Facts
* Smithsonian Magazine:
Ada Lovelace: The First Computer Programmer
*Ada Lovelace - Computer History Museum

© Subhasis Dutta (30/05/2025)
( পড়ে ভালো লাগলে লেখকের নাম সহ শেয়ার করুন)

ভারতীয় রেল ও কলকাতা মেট্রো প্ল্যাটফর্মে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা।✍️: শুভাশিস দত্তভারতবর্ষের রেলওয়ে ব্যবস্থা ...
28/05/2025

ভারতীয় রেল ও কলকাতা মেট্রো প্ল্যাটফর্মে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা।

✍️: শুভাশিস দত্ত

ভারতবর্ষের রেলওয়ে ব্যবস্থা দেশের জনজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেন এবং মেট্রো ব্যবহার করে যাতায়াত করে। এই বিশাল যাত্রীবাহী ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনা এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সময়ে নতুন নিয়মকানুন প্রবর্তন করা হয়। সম্প্রতি ভারতীয় রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে থুতু ফেলা এবং কলকাতা মেট্রোর 'ইয়েলো লাইন' পার করার ক্ষেত্রে যে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার প্রতি কর্তৃপক্ষের ক্রমবর্ধমান মনোযোগের ইঙ্গিত দেয়। এই পদক্ষেপগুলো কেবল রাজস্ব আদায়ের মাধ্যম নয়, বরং জনসচেতনতা বৃদ্ধির একটি কার্যকর উপায়।

রেল প্ল্যাটফর্মে থুতু ফেলার জরিমানা হলো একটি পরিচ্ছন্ন ভারত অভিযানের অংশ । ভারতীয় রেলওয়ের প্ল্যাটফর্মে থুতু ফেলার ওপর জরিমানা আরোপের বিষয়টি নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ভারতের বিভিন্ন রেলস্টেশনে যত্রতত্র থুতু ফেলার প্রবণতা একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। এটি শুধু পরিবেশ দূষণই করে না, বরং জীবাণু ছড়ানোর মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকিস্বরূপ। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় এই সমস্যার ভয়াবহতা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায়, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কঠোর হাতে এই প্রবণতা দমনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জরিমানা আরোপের ফলে যাত্রী সাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে এবং অনেকেই যত্রতত্র থুতু ফেলা থেকে বিরত থাকছেন। প্রাথমিকভাবে এটি রাজস্ব আদায়ের একটি উৎস মনে হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্টেশন প্ল্যাটফর্মগুলোকে পরিচ্ছন্ন রাখা এবং একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা। 'স্বচ্ছ ভারত অভিযান'-এর অংশ হিসেবে এই নিয়ম অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই বিষয়ে রেলওয়ের কঠোর অবস্থানের খবর প্রকাশ করেছে, যা জনমানসে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

কলকাতা মেট্রোয় 'ইয়েলো লাইন' এবং আত্মহত্যার প্রবণতা রোধেও বর্তমানে একটি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কলকাতা মেট্রো, যা 'পাতাল রেল' নামে পরিচিত, কলকাতার জনজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন মাধ্যম। দ্রুত এবং আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য এটি ব্যাপক জনপ্রিয়। তবে, সম্প্রতি মেট্রো স্টেশনগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্তৃপক্ষকে নতুন করে ভাবতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ প্ল্যাটফর্মে 'ইয়েলো লাইন' পার হলে জরিমানা এবং কড়া নজরদারির ব্যবস্থা চালু করেছে। 'ইয়েলো লাইন' হলো প্ল্যাটফর্মের কিনারায় আঁকা একটি হলুদ রেখা, যা যাত্রীদের নিরাপত্তা সীমা নির্দেশ করে। এই রেখা অতিক্রম করলে যাত্রীরা অসাবধানতাবশত লাইনে পড়ে যেতে পারে অথবা ট্রেনের ধাক্কায় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। দুঃখজনকভাবে, অনেকে স্বেচ্ছায় এই রেখা অতিক্রম করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এই প্রবণতা রোধে, মেট্রো কর্তৃপক্ষ জরিমানা আরোপের পাশাপাশি সিসিটিভি নজরদারি বাড়িয়েছে এবং প্ল্যাটফর্মে কর্মীদের উপস্থিতি জোরদার করেছে। এর উদ্দেশ্য কেবল জরিমানা আদায় নয়, বরং যাত্রীদের জীবন রক্ষা করা এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের মনে একটি বার্তা দিতে চায় যে, তাদের নিরাপত্তা এবং জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। গণমাধ্যমগুলোতে এই বিষয়েও বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যা এই নিয়মের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।

রেলওয়ে এবং মেট্রো কর্তৃপক্ষের এই ধরনের নিয়মকানুন প্রবর্তন কেবল আইন প্রয়োগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং নাগরিকদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি করা। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, অন্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিজেদের জীবনকে মূল্য দেওয়া—এই মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জনমানসে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। জরিমানা একটি বাহ্যিক চাপ সৃষ্টি করলেও, অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন তখনই সম্ভব যখন জনগণ স্বেচ্ছায় এই নিয়মগুলো মেনে চলবে এবং এর গুরুত্ব উপলব্ধি করবে। গণমাধ্যম, সামাজিক সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এই বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যখন প্রতিটি নাগরিক রেল ও মেট্রো ব্যবস্থাকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে তার যত্ন নেবে এবং নিয়মকানুন মেনে চলবে, তখনই একটি সুস্থ, নিরাপদ এবং সুশৃঙ্খল সমাজ গড়ে উঠবে।

তথ্যসূত্র:
* জি নিউজ বাংলা (Zee News Bangla): ভারতীয় রেল প্ল্যাটফর্মে থুতু ফেলার জরিমানা সংক্রান্ত খবর।
* আজকাল (Aajkal): রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং জরিমানার প্রভাব সম্পর্কিত প্রতিবেদন।
* সংবাদ প্রতিদিন (Sangbad Pratidin): কলকাতা মেট্রোয় ইয়েলো লাইন এবং আত্মহত্যার প্রবণতা রোধে গৃহীত ব্যবস্থা নিয়ে সংবাদ।
* টিভি৯ বাংলা (TV9 Bangla): কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষের নতুন নিয়মাবলী এবং জনসচেতনতা সম্পর্কিত প্রতিবেদন।


© Subhasis Dutta (28/05/2025)
( পড়ে ভালো লাগলে সঙ্কলকের নাম সহ শেয়ার করুন)

এআই পিসি (AI PC): কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও এজ (Edge) সিস্টেম।✍️ : শুভাশিস দত্তবর্তমান প্রযুক্তির দ্রুত...
28/05/2025

এআই পিসি (AI PC): কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও এজ (Edge) সিস্টেম।

✍️ : শুভাশিস দত্ত

বর্তমান প্রযুক্তির দ্রুতগতির যুগে, ব্যক্তিগত কম্পিউটার (PC) কেবল একটি সাধারণ যন্ত্র নয়, এটি এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) সাথে একীভূত হয়ে 'এআই পিসি' (AI PC) নামে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এআই পিসি হলো এমন এক ধরনের কম্পিউটার যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাজগুলো স্থানীয়ভাবে, অর্থাৎ ডিভাইসের ভেতরেই, আরও দ্রুত ও দক্ষতার সাথে সম্পাদন করতে পারে। এটি প্রচলিত কম্পিউটারের তুলনায় আরও স্মার্ট, প্রতিক্রিয়াশীল এবং ব্যক্তিগতকৃত অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

👉এআই PC কী?

একটি এআই PC কে সংজ্ঞায়িত করার মূল উপাদান হল এর হার্ডওয়্যার। সাধারণ PC গুলোতে সিপিইউ (CPU) এবং জিপিইউ (GPU) থাকে, কিন্তু এআই PC তে এইগুলোর পাশাপাশি একটি ডেডিকেটেড নিউরাল প্রসেসিং ইউনিট (NPU) যুক্ত করা হয়। এই NPU-গুলি বিশেষভাবে AI মডেল এবং অ্যালগরিদম চালানোর জন্য অপ্টিমাইজ করা হয়েছে।

* NPU (Neural Processing Unit): এটি AI-নির্দিষ্ট কাজগুলি যেমন মেশিন লার্নিং, ডিপ লার্নিং, এবং জেনারেটিভ AI অপারেশনগুলি সম্পাদনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। NPU প্রচলিত CPU বা GPU-এর তুলনায় একই কাজ কম শক্তি খরচ করে এবং উচ্চ দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করতে পারে।

* CPU (Central Processing Unit): এটি সাধারণ কম্পিউটিং কাজ এবং অপারেটিং সিস্টেম পরিচালনা করে।

* GPU (Graphics Processing Unit): এটি গ্রাফিক্স-সংক্রান্ত কাজ এবং কিছু ক্ষেত্রে AI-এর বড় ডেটা মডেল পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।
এআই PC'র প্রধান সুবিধা হলো, এটি ক্লাউড সার্ভিসের উপর নির্ভরশীল না হয়ে স্থানীয়ভাবে (on-device) AI প্রসেসিং করতে পারে। এর ফলে ডেটা প্রাইভেসি বাড়ে, রেসপন্সের সময় কমে, এবং ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই উন্নত AI ফিচার ব্যবহার করা সম্ভব হয়।

👉এআই PC র ইতিহাস:

এআই PC র ধারণা হঠাৎ করে আসেনি, বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ব্যক্তিগত কম্পিউটিংয়ের দীর্ঘ বিবর্তনের ফল। নিচে এর টাইমলাইন দেওয়া হলো:

* কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আদি যুগ (১৯৫০-১৯৮০ এর দশক): কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা ১৯৫০-এর দশকে শুরু হলেও, সেই সময়কার কম্পিউটারগুলি ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়নি। AI মূলত বড় আকারের মেইনফ্রেম কম্পিউটারে সীমাবদ্ধ ছিল এবং এর ব্যবহার ছিল গবেষণামূলক।

* ব্যক্তিগত কম্পিউটারের উত্থান (১৯৮০-২০০০ এর দশক): ১৯৮০-এর দশকে ব্যক্তিগত কম্পিউটার জনপ্রিয় হতে শুরু করে। এই সময়ে PC মূলত লেখালেখি, হিসাব-নিকাশ এবং সাধারণ গেমিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হত। AI এর তখনও খুব বেশি প্রসেসিং শক্তির প্রয়োজন হত, যা ব্যক্তিগত কম্পিউটারের নাগালের বাইরে ছিল।

* GPU এর উত্থান এবং AI-এর অগ্রগতি (২০০০-২০১০ এর দশক): ২০০০-এর দশকে জিপিইউ-এর ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। জিপিইউ তার সমান্তরাল প্রসেসিং ক্ষমতার কারণে গ্রাফিক্স ছাড়াও বৈজ্ঞানিক সিমুলেশন এবং পরবর্তীতে মেশিন লার্নিংয়ের মতো কাজে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। এই সময়ে AI মডেলগুলি আরও জটিল এবং ডেটা-ইনটেনসিভ হয়ে ওঠে।

* ক্লাউড এআই এর প্রভাব (২০১০-২০২০ এর দশক): এই দশকে ক্লাউড কম্পিউটিং এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেটের প্রসার ঘটে। গুগল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন-এর মতো সংস্থাগুলো ক্লাউড-ভিত্তিক AI পরিষেবা সরবরাহ করা শুরু করে। এতে ব্যবহারকারীরা শক্তিশালী AI মডেল ব্যবহার করতে পারত, কিন্তু এর জন্য ডেটা ক্লাউডে পাঠাতে হতো এবং ইন্টারনেট সংযোগ অপরিহার্য ছিল।

* এআই পিসির জন্ম (২০২০ এর দশক থেকে): ক্লাউড এআই-এর সীমাবদ্ধতা, যেমন ডেটা প্রাইভেসি এবং লেটেন্সি (latency), দূর করার জন্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলো স্থানীয়ভাবে AI প্রসেসিংয়ের দিকে মনোযোগ দেয়। ইন্টেল (Intel), এএমডি (AMD), কোয়ালকম (Qualcomm) এবং অ্যাপল (Apple)-এর মতো চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রসেসরে ডেডিকেটেড NPU যুক্ত করা শুরু করে। এর ফলে এমন পিসি তৈরি করা সম্ভব হয় যা সরাসরি ডিভাইসের মধ্যে জটিল AI কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারে। এই নতুন ধারার কম্পিউটারগুলিই এআই পিসি নামে পরিচিতি লাভ করে। মাইক্রোসফ্ট তাদের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে 'কোপাইলট+' (Copilot+) পিসির ধারণা নিয়ে আসে, যা NPU সম্পন্ন ডিভাইসগুলোর জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।

👉এআই পিসির ব্যবহার:

এআই পিসি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করছে।

i) স্বয়ংক্রিয় কাজ: ইমেল লেখা, মিটিংয়ের সারসংক্ষেপ তৈরি করা, ডেটা বিশ্লেষণ করা, এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফাইল সংগঠিত করার মতো কাজগুলি এআই-এর সাহায্যে দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।

ii) ব্যক্তিগতকৃত অভিজ্ঞতা: এআই ব্যবহারকারীর অভ্যাস এবং পছন্দ অনুযায়ী সিস্টেমকে অপ্টিমাইজ করতে পারে, যেমন ঘন ঘন ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশনগুলো দ্রুত লোড করা বা সিস্টেম রিসোর্সকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামঞ্জস্য করা।

iii) সৃজনশীল কাজ:
* ফটো এবং ভিডিও এডিটিং: এআই-চালিত সফটওয়্যার ব্যবহার করে ছবি এবং ভিডিও দ্রুত নির্মাণ করা, AI-এর মাধ্যমে ছবির মান উন্নত করা, এবং রিয়েল-টাইম ইফেক্ট যুক্ত করা সম্ভব। যেমন, Adobe Photoshop এবং Premiere Pro-এর মতো সফটওয়্যারগুলো NPU-এর সুবিধা নিয়ে কাজ করে।
* জেনারেটিভ আর্ট ও ডিজাইন: এআই মডেল ব্যবহার করে দ্রুত শিল্পকর্ম তৈরি করা, টেক্সট থেকে ইমেজ তৈরি করা, এবং ডিজাইনে নতুন ধারণা আনা যায়।

iv) যোগাযোগ ও সহযোগিতা:
* রিয়েল-টাইম অনুবাদ: ভিডিও কল বা মিটিংয়ে তাৎক্ষণিক ভাষা অনুবাদের সুবিধা।
* উন্নত ভিডিও কনফারেন্সিং: এআই-এর মাধ্যমে চোখের যোগাযোগ উন্নত করা (eye contact enhancement), ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ কমানো (noise suppression) এবং বক্তার ভয়েসকে পরিষ্কার করা যায়।

v) গেমিং:
* AI-চালিত আপস্কেলিং: এআই ব্যবহার করে গেমের গ্রাফিক্সের মান উন্নত করা এবং ফ্রেম রেট বাড়ানো সম্ভব, যা গেমিং অভিজ্ঞতাকে আরও মসৃণ করে তোলে (যেমন, DLSS বা FSR)।
* স্মার্ট এনপিসি (NPC): এআই গেমে নন-প্লেয়ার ক্যারেক্টারদের (NPC) আরও বুদ্ধিমান এবং বাস্তবসম্মত আচরণ করতে সাহায্য করে।

vi) নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা:
* স্থানীয়ভাবে AI প্রসেসিংয়ের কারণে ডেটা ক্লাউডে পাঠানোর প্রয়োজন হয় না, যা ডেটা সুরক্ষাকে বাড়িয়ে তোলে।
* AI-চালিত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যগুলি ম্যালওয়্যার সনাক্তকরণ এবং সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধে আরও কার্যকর হতে পারে।

👉 এআই পিসির ভবিষ্যৎ:

এআই পিসির ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল এবং পরিবর্তনশীল। এটি কেবল একটি সাময়িক প্রবণতা নয়, বরং ব্যক্তিগত কম্পিউটিংয়ের একটি মৌলিক পরিবর্তন।

i) বাজারের বৃদ্ধি: বাজার বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে, আগামী বছরগুলোতে এআই পিসির চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। ২০২৪ সালে ৪৩ মিলিয়ন ইউনিট থেকে ২০২৮ সাল নাগাদ এটি মোট পিসি বাজারের ৬৪% দখল করবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিছু রিপোর্টে ২০৩৫ সালের মধ্যে বৈশ্বিক এআই পিসি বাজার ৯৯২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

ii) হার্ডওয়্যারের বিবর্তন: NPU-এর ক্ষমতা দিন দিন বাড়তে থাকবে এবং এর ইন্টিগ্রেশন আরও শক্তিশালী হবে। ARM-ভিত্তিক প্রসেসর, যেমন কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন এক্স এলিট (Snapdragon X Elite), উইন্ডোজ এআই পিসি বাজারে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা অ্যাপলের সিলিকনের মতো পারফরম্যান্স এবং পাওয়ার দক্ষতা প্রদান করবে।

iii) সফ্টওয়্যার ইকোসিস্টেম: মাইক্রোসফ্ট তাদের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে Copilot এবং Copilot+ ফিচারগুলোকে আরও গভীরভাবে একীভূত করছে, যা AI পিসির জন্য বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন এবং টুলস ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করবে। ডেভেলপাররাও NPU-এর ক্ষমতা কাজে লাগাতে নতুন AI-চালিত অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করবে। এ বিষয়ে বলে রাখি কিছুদিন পূর্বে Motorola তাদের ফোনে সর্বপ্রথম ডেডিকেটেড AI কী ব্যবহার করা শুরু করেছে। (Motorola Edge 60 Pro)

iv) দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব: এআই পিসি আমাদের দৈনন্দিন কাজ, যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং বিনোদনে আরও বেশি ব্যক্তিগতকৃত এবং নির্বিঘ্ন অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। এটি ভার্চুয়াল এবং অগমেন্টেড রিয়ালিটির অভিজ্ঞতাকে আরও বাস্তবসম্মত করে তুলবে।

v) এজ (edge) কম্পিউটিংয়ের গুরুত্ব (ওই যে একটু আগে উল্লেখ করলাম Motorola র এজ সিরিজের কথা) : এআই পিসি 'এজ কম্পিউটিং' ধারণার একটি মূল অংশ, যেখানে ডেটা জেনারেট হওয়ার উৎসের কাছেই প্রসেস করা হয়। এর ফলে ডেটা সেন্টারগুলোতে ডেটা পাঠানোর চাপ কমে, ব্যান্ডউইথের ব্যবহার কমে এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া সম্ভব হয়।

যাইহোক, এআই পিসি ব্যক্তিগত কম্পিউটিংয়ের ভবিষ্যৎকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে। এটি কেবল দ্রুততর প্রসেসিং ক্ষমতা নয়, বরং একটি আরও বুদ্ধিমান, ব্যক্তিগতকৃত এবং নিরাপদ কম্পিউটিং অভিজ্ঞতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়। হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং ব্যবহারকারীর চাহিদার বিবর্তনের সাথে সাথে এআই পিসি আমাদের জীবন ও কর্মপদ্ধতিকে আরও গভীরে প্রভাবিত করবে, যা প্রযুক্তির ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

তথ্যসূত্র:
* HP Tech Takes: "What is an AI PC? HPs Next Gen AI Laptop Features & Benefits."
* CrowdStrike: "What is an AI PC?"
* PCMag: "What Is an AI PC? How AI Will Reshape Your Next Computer."
* Intel: "The AI PC Powered by Intel is Here. Now, AI is for Everyone."
* Tableau: "What is the history of artificial intelligence (AI)?"
* Cloudflare: "What is the history of AI?"
* Britannica: "History of artificial intelligence."
* Freethink: "All PCs will be AI PCs "pretty soon," says Intel exec."
* HP Tech Takes: "What is an AI PC? HPs Next Gen AI Laptop Features & Benefits."
* ASUS Edge Up: "Meet the AI PC: what it is, what it does, and how to get started."
* Intel: "The AI PC Powered by Intel is Here. Now, AI is for Everyone."
* theCUBE Research: "2025 is the Year of the AI PC - theCUBE Research."
* GlobeNewswire: "AI PC Market Research and Global Forecasts Report 2025-2031."
* GMInsights: "AI PC Market Size, Share & Industry Analysis, 2025-2034."
* Roots Analysis: "AI PC Market Size, Share, Trends & Insights Report, 2035."
* MarketsandMarkets: "AI PC Industry worth $260.43 billion by 2031."


© Subhasis Dutta (28/05/2025)
( পড়ে ভালো লাগলে সঙ্কলকের নাম সহ শেয়ার করুন)

Address

Barasat

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Pillow Book posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Pillow Book:

Share

Category