
06/06/2025
"সামান্য দু-পিছ মাংস খাওয়ার অপরাধে আমায় ডিভোর্স দেবেন আপনারা মা?
দু-মাসের মেয়ে,ছবছরের ছোট্ট ছেলেটাকে নিয়ে এই বৃষ্টির দিনে কোথায় যাব আমি মা?
এক অনাথের সঙ্গে আপনারা এমন অবিচার করতে পারেন না।
আমি তো কম করিনি আপনাদের জন্য।নিজে না খেয়ে খাইয়েছি।সেবা করেছি।মা বলে ডেকেছি।সেই আপনি কীনা আমায় ঘার ধাক্কা দিচ্ছেন মা?"
মিসেস রজনীর ঝাঝালো কন্ঠ,”অবশ্যই দেব।
দু-পিছ মাংসের লোভ যে সামলাতে পারেনা।সে যে কেমন মানুষ তা আমার বোঝা হয়ে গেছে।
ঝটপট আমার ছেলের ঘার থেকে নামো তোমরা মা-ছেলে,মেয়ে।”
তন্নি অশ্রুসিক্ত নয়নে স্বামীর দিকে তাকাল।
লোকটা পাথরের ন্যায় দাড়িয়ে আছে।মুখে টু শব্দটি নেই।
তন্নি চেচিয়ে বলে,”কিছু বলছ না কেন আকাশ?
আমি না তোমার স্ত্রী।
তোমার মা এসব কী বলছে আকাশ?
আমি কোথায় যাব?কে আছে আমার তুমি ছাড়া?
কি দোষ আমার?কেন প্রতারণা করছ আমার সঙ্গে?ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাব আমি?ছেলেটা তোমায় ছাড়া কিচ্ছু বোঝেনা।
অন্তত নিজের সন্তান দুটোর কথা ভেবে হলেও আমায় ঠাই দাও প্লিজ।”
আকাশের চটপটা উত্তর,”মা যেটা বলবে সেটাই শেষ কথা।
উনি আমায় জন্ম দিয়েছে।আমার খারাপ চাইবে না নিশ্চয়।
উনি যেহেতু এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে,সুতরাং আমার মঙ্গলের জন্যই নিয়েছে।
তাই আমি মায়ের বিরুদ্ধে যেতে পারব না।”
তন্নি ধপ করে মেঝেতে বসে পড়ে।
বছর ছয়েকের ছেলে আলিফ মায়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙে চোখ কচলাতে কচলাতে মায়ের কাছে আসে।
মায়ের কোলে মাথা রেখে সেখানেই শুয়ে পড়ে।
তন্নি ছেলের দিকে তাকিয়ে চোখের জল বিসর্জন দেয়।
মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
শাশুড়ি রজনী খাম সমেত একটি পেপার এনে তন্নির মুখে ছুড়ে দেয়।
তন্নি মাটি থেকে কুড়িয়ে নেয় সেটি।
ভাঝ খুলে দেখে ডিভোর্স পেপার এটি।
আগে থেকেই আকাশের সাইন করা।
তন্নি আকাশের দিকে তাকায়।
“এই তোমার ভালোবাসা আকাশ?
এর জন্যে বিয়ে করেছিলে আমায়।এতো ভালোবাসা,এতো প্রমিস, কোথায় গেল সব?
নিজের সন্তানদের মুখের দিকেও তাকালে না তুমি।
এতো পাষণ্ড,এতোটা অমানুষ!”
আকাশ তেড়ে আসে।তন্নির গালে স্বজড়ে এক থাপ্পড় দিয়ে বলে,”বেশি বুঝিস না।দোষ টা তোর।এতিম হয়ে আমার মতো ধনী ঘরের ছেলেকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করেছিস তুই।
আমায় ঠকিয়েছিস।
আমি তোর থেকে ভালো ডিজার্ভ করি।সেসময় অন্ধ ছিলাম।তাই তোর মতো ভিখারীকে জীবন সঙ্গী করেছিলাম।
এবার আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি।
আমার ভাবীর কৃপায় আমার চোখ খুলেছে।
এবার এসব বাচ্চা আবর্জনা নিয়ে বেড়িয়ে যা তুই।”
তন্নি পাশের ঘরে তাকায়।
চলবে..
#বড়োজা
afrin