Manas Bangla

Manas Bangla Historical Travel Vlogger.

📢 মানস বাংলা’র নতুন আয়োজন 🎙️ইতিহাসের অজানা পাতা, বিস্মৃত ঘটনা আর রহস্যময় কাহিনী—সব কিছুই এবার আসছে এক নতুন রূপে!ঐতিহাসিক...
09/08/2025

📢 মানস বাংলা’র নতুন আয়োজন 🎙️
ইতিহাসের অজানা পাতা, বিস্মৃত ঘটনা আর রহস্যময় কাহিনী—সব কিছুই এবার আসছে এক নতুন রূপে!
ঐতিহাসিক ভ্রমণের পাশাপাশি আগামী রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে মানস বাংলা ইতিহাস ভিত্তিক পডকাস্ট ভিডিও সিরিজ।
💡 প্রতিটি এপিসোডে থাকবেন বিভিন্ন জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিবর্গ, যারা ইতিহাসকে তুলে ধরবেন তাঁদের অভিজ্ঞতা ও গবেষণার আলোকে।
📩 প্রিয় দর্শকবন্ধুদের জন্য বিশেষ অনুরোধ—আপনারা যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা বিশেষ ব্যক্তিকে পডকাস্টে দেখতে চান, তাহলে মন্তব্যে বা ইনবক্সে জানান। আপনার প্রস্তাব আমাদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।
👉 ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য এই যাত্রা হবে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। সাথে থাকুন, শেয়ার করুন!

#মানসবাংলা #ইতিহাসপডকাস্ট

বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার: সিপাহী বিদ্রোহ থেকে দেশভাগের নাট্যমঞ্চ!ভাগীরথীর পূর্বতীরে অবস্থিত মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুর...
09/08/2025

বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার: সিপাহী বিদ্রোহ থেকে দেশভাগের নাট্যমঞ্চ!

ভাগীরথীর পূর্বতীরে অবস্থিত মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুর। এখানে এক বিশাল বর্গাকার মাঠ ঘিরে গড়ে উঠেছিল এক ঐতিহাসিক সেনানিবাস—বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার। আজ এটি ইতিহাসের নিঃশব্দ সাক্ষী হলেও, একসময় এ স্থান ছিল নবাবি বাংলার রাজধানীর চোখে নজরদারির সামরিক ঘাঁটি, ১৮৫৭-র প্রথম সশস্ত্র অবাধ্যতার কেন্দ্রবিন্দু এবং ১৯৪৭-এর দেশভাগের আবেগঘন ঘটনার মঞ্চ।

পলাশির যুদ্ধের পর দুর্গ নির্মাণ : ১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধের পর, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার ক্যাপ্টেন জন ব্রোহিয়ার ফোর্ট উইলিয়ামের অধিকর্তা মি. ড্রেককে প্রস্তাব দেন যে মুর্শিদাবাদের কাছাকাছি একটি শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটি থাকা দরকার। উদ্দেশ্য ছিল নবাবকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং অঞ্চলে কোম্পানির দাপট বজায় রাখা।প্রথমে এই প্রস্তাব নাকচ হলেও, ১৭৬৫ সালে মীর কাশিমের সঙ্গে সংঘর্ষের পর কোম্পানির লন্ডন সদর দপ্তর এর যৌক্তিকতা মেনে নেয়। ১৭৬৫-তেই নির্মাণ শুরু হয় এবং ১৭৬৭ সালে কর্নেল এ. ক্যাম্পবেলের তত্ত্বাবধানে ব্যারাক স্কোয়ার সম্পূর্ণ হয়। এটি হয়ে ওঠে বেঙ্গল আর্মির উত্তর সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি।

স্থাপত্য ও বিন্যাস : ব্যারাক স্কোয়ারের পশ্চিম দিকে ছিল উচ্চপদস্থ সামরিক অফিসারদের জন্য বিশাল দ্বিতল গৃহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ইউরোপীয় সৈন্যদের থাকার ব্যবস্থা। পশ্চিম দিকের দক্ষিণ প্রান্তের প্রাসাদসম বাড়ি দুটিতে একসময় লর্ড ক্লাইভ বাস করেছিলেন—বর্তমানে এগুলি জেলা সমাহর্তার বাসভবন ও সার্কিট হাউস। পূর্ব প্রান্তে ছিল উপাসনাগৃহ (বর্তমান সরকারি ডাকবাংলো), টেক্সটাইল কলেজ, আদালত ভবন ও কারাগার।

১৮৫৭: সিপাহী বিদ্রোহের সূচনা : ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৭—ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। এখানে অবস্থানরত ১৯তম দেশীয় পদাতিক বাহিনী চর্বিযুক্ত কার্তুজ ব্যবহারের নির্দেশ অমান্য করে অস্ত্র হাতে ব্যারাক স্কোয়ারে জমায়েত হয়। কর্নেল মিচেলের অনুরোধে তারা রক্তপাত ছাড়াই সরে গেলেও, এটি ছিল প্রথম প্রকাশ্য সশস্ত্র অবাধ্যতা—যা পরবর্তীতে সারা ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সিপাহী বিদ্রোহের সূচনা করে।

বহরমপুর থেকে সেনা প্রত্যাহার ও পরবর্তী ব্যবহার: ১৮৭০ সালে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণে ইংরেজরা বহরমপুর থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। সেনানিবাসের বহু ভবন পরবর্তীতে সরকারি বাসভবন, গ্রন্থাগার, কলেজ ও আদালতে রূপান্তরিত হয়।

১৯৪৭: দেশভাগের নাটকীয় সকাল: দেশভাগের সময় র‍্যাডক্লিফ রেখার প্রাথমিক মানচিত্রে মুর্শিদাবাদ পূর্ব পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট সকালে সদর বহরমপুরের ব্যারাক স্কোয়ার মাঠে উত্তোলিত হয় পাকিস্তানের পতাকা। পতাকা তোলেন তৎকালীন আইসিএস অফিসার আই. আর. খান। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা শ্যামাপদ ভট্টাচার্য, মুসলিম লিগ নেতা কাজেম আলি মির্জা ও আরএসপি নেতা নিতাই গুপ্ত। কিন্তু স্বাধীনতার তিন দিনের মধ্যে ফের বদলালো বাংলা সহ দুই দেশের মানচিত্র। ১৮ আগস্ট সরকারিভাবে মুর্শিদাবাদ অন্তর্ভুক্ত হল ভারতের আর পাকিস্তানের অংশ হয়ে যায় খুলনা। সেই মুহূর্তের উলটপালট রাজনৈতিক নাটক বহরমপুরের মাটিতে গভীর ছাপ রেখে যায়।

বহরমপুর ক্যান্টনমেন্ট শুধুই একটি পুরনো সামরিক ঘাঁটি নয়—এটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম ধাপের প্রতীক। এখানকার মাঠ, প্রাচীন ভবন ও স্মৃতিস্তম্ভ আজও আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনতার পথ রক্ত ও আত্মত্যাগে নির্মিত। অতীত সংরক্ষণই হতে পারে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই ঐতিহাসিক স্থানটির সত্যিকার মর্যাদা পৌঁছে দেওয়ার একমাত্র উপায়।

© Manas Bangla

#বহরমপুর #ব্যারাকস্কোয়ার #মুর্শিদাবাদ #সিপাহী_বিদ্রোহ #পলাশির_যুদ্ধ #দেশভাগ #ইতিহাস #বাংলার_ইতিহাস #ঐতিহ্য #ভারতের_স্বাধীনতা

বর্ষার অপরুপ সৌন্দর্যে মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারী!  #হাজারদুয়ারী  #মুর্শিদাবাদ
07/08/2025

বর্ষার অপরুপ সৌন্দর্যে মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারী!

#হাজারদুয়ারী #মুর্শিদাবাদ

বর্গি বনাম ইংরেজ: খোলাখুলি লুট না ছদ্মবেশী শোষণ?"১৮শ শতকের বাংলা ছিল রাজনৈতিক চক্রান্ত, লুটতরাজ এবং বৈদেশিক হস্তক্ষেপের ...
06/08/2025

বর্গি বনাম ইংরেজ: খোলাখুলি লুট না ছদ্মবেশী শোষণ?"

১৮শ শতকের বাংলা ছিল রাজনৈতিক চক্রান্ত, লুটতরাজ এবং বৈদেশিক হস্তক্ষেপের এক সংকটময় কালপর্ব। এই ইতিহাসে দুই ধরনের আক্রমণকারীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য — একদিকে ছিল মারাঠা বর্গিরা, যারা হঠাৎ এসে সব ধ্বংস করে, যা পেত নিয়ে চলে যেত; অপরদিকে ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, যারা ধূর্তভাবে প্রশাসনকাঠামোর আড়ালে বহুবছর ধরে এক নির্মম শোষণব্যবস্থা গড়ে তোলে। এদের তুলনা শুধু ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়, আমাদের উপনিবেশিক শ্রেণি রাজনীতির প্রকৃত রূপ অনুধাবনেরও সহায়ক।

🔹 বর্গিদের লুট: তাৎক্ষণিক ও বাহ্যিক দস্যুবৃত্তি
'রূপি দেহ, রূপি দেহ' — এই ছিল বর্গিদের একমাত্র আহ্বান। মারাঠা বর্গিরা বছরে একাধিকবার হানা দিত বাংলার উপরে। তারা অর্থ, ধনরত্ন, নারী—সবকিছু লুটপাট করত; কিন্তু এ লুট ছিল সাময়িক। বর্গিরা যা পেত, ঘোড়ায় চাপিয়ে নিয়ে যেত নাগপুর, আর ফিরে যেত। বাংলার জনগণের জন্য এটি ছিল ভয়াবহ, তবে স্বল্পস্থায়ী বলেই তার পরিণামেও ছিল কিছুটা সীমাবদ্ধতা।

🔹 ইংরেজদের শোষণ: প্রাতিষ্ঠানিক ও দীর্ঘস্থায়ী কর্পোরেট লুট:
ইংরেজরা সরাসরি লুটে বিশ্বাসী ছিল না; বরং তাঁরা একটি পরিকল্পিত ও সংগঠিত শোষণব্যবস্থা তৈরি করল। পলাশীর যুদ্ধের (১৭৫৭) পর নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন এবং মীর জাফরের উত্থানের পরই সূচনা হয় এই ব্যবস্থার, যার নেপথ্যে ছিলেন ক্লাইভ। তিন কোটি টাকার চুক্তি, রাজকোষ লুন্ঠন এবং তা আইনসম্মত আঙ্গিকে নেয়ার ব্যবস্থা — এসবই ছিল ব্রিটিশদের পদ্ধতিগত দস্যুবৃত্তির চূড়ান্ত নিদর্শন।
নবাব প্রথমে তাৎক্ষণিক কিছু অর্থ দিতে পারলেও বাকিটা কিস্তিতে ইংরেজরা উত্তোলন করেছিল। এ এক ‘সফট লুট’ ছিল, বছরে বছরে নৌকোভর্তি করে মুর্শিদাবাদ থেকে ধনরত্ন পৌঁছে যেতো ইংল্যান্ড।

🔹 ক্লাইভের আত্মপ্রসাদ ও উপনিবেশিক ব্যাবসা-
ক্লাইভ নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতেন, কারণ সে ঐ অন্যায্য চুক্তির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের সুযোগ পেয়েছিলেন। নিজের বাবাকে লেখা চিঠিতে তিনি বর্ণনা করেছেন, কীভাবে বাংলা থেকে পাওয়া অর্থ তাঁদের পরিবারকে আর্থিক নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করল। বোনদের বিয়ে, ভাইদের ভবিষ্যৎ, এমনকি পিতার ব্যবসা ছাড়ার বিষয়টিও সেখানে তুলে ধরেছেন। ক্লাইভ নিজের বাবাকে এক চিঠিতে লিখলেন—“জাফর আলি খান বাহাদুর যে মস্ত উপকার পেয়েছেন, তার বদলে তিনি সরকারী ও বেসরকারী খাতে তিন কোটি টাকা দিতে রাজি হয়েছেন। অর্ধেক এর মধ্যেই হাতে এসে গেছে।
আমি স্বদেশে এমন ঠাঁটে থাকতে পারব, যা আমার সব আশা আকাঙ্ক্ষার অতীত। বোনেদের বিশ হাজার টাকা করে দিচ্ছি। ভাইদের ব্যবস্থাও পরে করব।
আপনারও আর আইনের ব্যবসা করার দরকার নেই।”... এর মাধ্যমে বোঝা যায়, ইংরেজ অর্থলোভের কতটা সুগভীর ও সূক্ষ্ম ছিল, এবং কীভাবে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থকে সাম্রাজ্যবাদের আড়ালে ঢাকা দিয়েছিলেন তারা।

🔹 কে বেশি বিপজ্জনক?
বর্গিরা লুটপাট করত প্রকাশ্য রূপে — তাদের ছিল অস্ত্র, আতঙ্ক আর হঠাৎ উদ্ভূত ধ্বংস। তারা ছিল রাজনীতির বাইরের শক্তি। অন্যদিকে, ইংরেজরা রাজনীতি ও প্রশাসনকে নিজেদের হাতিয়ার বানিয়ে একটি ব্যবস্থার ভিতরে থেকেই শোষণ করেছিল — যা আরও দীর্ঘস্থায়ী দুঃখ-কষ্ট ও দাসত্ব নিশ্চিত করেছিল বাংলার জনগণের জন্য।

© Manas Bangla

#মানসবাংলা #ইতিহাস #পলাশীরপরিণতি #মুর্শিদাবাদ #বর্গি #ইংরেজশাসন #ইস্টইন্ডিয়াকোম্পানি

"আপনারা কি ভাবেন টাকার বৃষ্টি হয়?" – এক হতাশ নবাবের আকুতি ইতিহাসের এক করুণ অধ্যায়—ইংরেজদের হাতে ক্ষমতার খেলায় ক্রীড়ান...
06/08/2025

"আপনারা কি ভাবেন টাকার বৃষ্টি হয়?" – এক হতাশ নবাবের আকুতি

ইতিহাসের এক করুণ অধ্যায়—
ইংরেজদের হাতে ক্ষমতার খেলায় ক্রীড়ানক হয়ে উঠেছিলেন মীরজাফর। তাঁকে দিয়ে পলাসীর ষড়যন্ত্র ঘটানো হয়েছিল, নবাব সিরাজের পতনের পর তাঁকেই বসানো হয়েছিল সিংহাসনে। কিন্তু এই সিংহাসন ছিল ব্রিটিশদের দয়ার দান, বাস্তব ক্ষমতা ছিল ইংরেজদের হাতে। ইংরেজদের বারংবার অর্থ জোগাতে না পারায় মীরজাফর একবার সিংহাসনচ্যুত হন। পুনরায় ইংরেজদের অনুগ্রহে সিংহাসনে ফিরলেও, রাজত্বের শেষ দিনগুলোতে অসহায়, নিঃস্ব ও অসুস্থ হয়ে মারা যান।

ইংরেজ বারবার টাকার চাওয়ায় একসময় মরিয়া হয়ে ইংরেজদের তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন—
"আপনারা কি ভাবেন টাকার বৃষ্টি হয়?"

এই প্রশ্ন শুধু তাঁর নয়, ছিল একটি পরাধীন জাতির আর্থিক ও রাজনৈতিক দাসত্বের প্রতিচ্ছবি।

©Manas Bangla

তথ্যসূত্র : পলাশীর ষড়যন্ত্র ও সেকালের সমাজ- রজতকান্ত রায়

#ইতিহাস #মীরজাফর #পলাসিরপরিণাম #ব্রিটিশরাজ

🏛️নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের গোপন সভা: কে ছিলেন এই ষড়যন্ত্রের মুখ্য চরিত্র?একটি প্রবাদ বাংলায় বহুদিন ধরে প্রচলিত—"শেঠবাড়ির...
05/08/2025

🏛️নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের গোপন সভা: কে ছিলেন এই ষড়যন্ত্রের মুখ্য চরিত্র?

একটি প্রবাদ বাংলায় বহুদিন ধরে প্রচলিত—
"শেঠবাড়ির গুপ্ত সভা থেকেই নবাব সিরাজের সর্বনাশের সূচনা।"

ইতিহাসে সরাসরি প্রমাণ না থাকলেও, বহু সমসাময়িক সূত্র ও লোকমুখে জানা যায় এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের কথা।
এই ষড়যন্ত্রে শুধু সেনাপতি বা উচ্চপদস্থ কর্মচারীরাই নন, সম্ভ্রান্ত জমিদাররাও যুক্ত ছিলেন।

📌 কে কে ছিলেন এই ষড়যন্ত্রে?

মীরজাফর খাঁ: মসনদের আশায় ও অবমাননার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন।

জগৎ শেঠ: ধনসম্পদ রক্ষায় এবং মীরজাফরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যোগ দেন।

ঘসেটি বেগম ও রাজা রাজবল্লভ: পুরোনো বিরোধের কারণে সিরাজের বিরুদ্ধাচরণ করেন।

রাজা কৃষ্ণচন্দ্র (নদিয়া): নিজে সরাসরি না এলেও, প্রাথমিকভাবে তার দেওয়ান কালীপ্রসাদ সিংহ ষড়যন্ত্রে অংশ নেন। পরবর্তীতে রাজাও শেঠবাড়িতে উপস্থিত হন।

দুর্লভরাম: মোহনলালের প্রাধান্যে পদমর্যাদার হানিতে নবাবের প্রতি অসন্তুষ্ট হন ও বিরোধিতা শুরু করেন।

ইয়ার লতিফ: নিজেও নবাব হবার বাসনায় ব্রিটিশদের কাছে ভরসা খুঁজছিলেন।

বলা হয়, শেঠবাড়ির সেই গুপ্ত মন্ত্রণাসভায় উপস্থিত ছিলেন— রাজা মহেন্দ্র(দুর্লভ রাম), রাজা রামনারায়ণ, রাজা রাজবল্লভ, কৃষ্ণদাস, মীরজাফর প্রমুখ।কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি যতক্ষণ না নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র স্বয়ং এসে পরিকল্পনায় যুক্ত হন। এরপরেই পরিকল্পনা হয় ইংরেজদের সাহায্যে সিরাজকে সরিয়ে দেওয়ার। জগৎ শেঠ এই প্রস্তাবে সমর্থন জানান এবং পরে রবার্ট ক্লাইভের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। একটি প্রবাদ অনুযায়ী, রানী ভবানী রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে এইধরনের কাপুরুষোচিত গুপ্ত মন্ত্রণায় যোগদানের জন্য "শাঁখা-সিঁদুর" পাঠিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন!"

অনেকে মনে করেন, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও অন্যান্য জমিদাররা সরাসরি কোনো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন না। এই মতের পেছনে যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জমিদার শ্রেণি ঐতিহাসিকভাবে রাজনৈতিক ব্যাপারে খুব একটা জড়াতেন না। কিন্তু ঐতিহাসিক দলিল ও প্রচলিত প্রবাদ বলছে, যদিও তথাকথিত 'মন্ত্রণা সভা'র অস্তিত্ব প্রশ্নবিদ্ধ, তবু এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রমুখ জমিদারগণ ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইংরেজদের সহায়তা করেছিলেন। এই সহায়তার ফলেই নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের পথ সুগম হয়। ইংরেজদের সঙ্গে গোপনে মিলে জমিদারগণ যে সিরাজের সর্বনাশ ডেকে এনেছিলেন, তা আজ ইতিহাসের সুপ্রতিষ্ঠিত সত্য।

🔻 আপনার মতামত দিন:
আপনার মতে, সিরাজউদ্দৌলার পতনের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী কে?
কমেন্টে জানান ⬇️

#মানসবাংলা

জগৎশেঠ: বাংলার মুকুটহীন এক সম্রাট!নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মূল হোতা হিসেবে ইতিহাসে জগৎশেঠের নাম উঠে আসে ব...
05/08/2025

জগৎশেঠ: বাংলার মুকুটহীন এক সম্রাট!

নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মূল হোতা হিসেবে ইতিহাসে জগৎশেঠের নাম উঠে আসে বারবার। কিন্তু বাস্তব ইতিহাস কি এতটাই একরৈখিক?

ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় —জগৎশেঠ ছিলেন বাংলার অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যের প্রকৃত অধিপতি। নবাবি টাঁকশাল, অর্থ লেনদেন, বাজারের রূপ — সবই ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণে। নবাব চাইলেই যুদ্ধ করতে পারতেন না, যদি জগৎশেঠ অর্থ না দিতেন। এমনকি নবাব সিরাজও বহুবার তার থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ সাহায্য নিয়েছেন।

১৭৫৭ সালের আলিনগরের সন্ধি অনুযায়ী ইংরেজরা কলকাতায় টাঁকশাল বসানোর অধিকার পেলেও বাস্তবে জগৎশেঠের প্রবল বিরোধিতার কারণে তারা সেটা রূপায়িত করতে পারেনি। কাশিমবাজার কুঠী থেকে কলকাতা কাউন্সিলকে এক চিঠিতে লেখা হয় - “While Fatehchand is so great with the Nawab, they can have no hopes of that grant… nor dare any other Shroff buy or coin a rupee worth of silver.”

নিখিলনাথ রায় লিখেছেন, ‘ডগলাস নামে জনৈক ব্যবসায়ীকে কলকাতায় সিক্কামুদ্রা নিতে হলে শতকরা পাঁচ থেকে দশ টাকা কম নিয়ে ক্ষতি স্বীকার করতে হত’।

অর্থাৎ, ইংরেজদের সঙ্গে তার সম্পর্ক কখনোই সহজ ছিল না। বরং টাঁকশালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। জগৎশেঠ যে ইংরেজদের পক্ষে গিয়ে ষড়যন্ত্রে অংশ নেন, তা ছিল আর্থিক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের এক পরিণতি, বিশ্বাসঘাতকতার সহজ পাঠ নয়।

নিছক 'ষড়যন্ত্রকারী' বললে জগৎশেঠের জটিল চরিত্রকে বোঝা যায় না। বাস্তবে তিনি ছিলেন — বাংলার অর্থনৈতিক রাজনীতির ছায়া-নবাব।

©মানস বাংলা

#জগৎশেঠ #সিরাজউদ্দৌলা #পলাশী #বাংলারইতিহাস

🔹 এখানেই শুরু, এখানেই ষড়যন্ত্র: কাশিমবাজার কুঠির অজানা ইতিহাস!মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজার—এক সময় বাংলার রেশম ও সূতিবস্ত্র ব...
03/08/2025

🔹 এখানেই শুরু, এখানেই ষড়যন্ত্র: কাশিমবাজার কুঠির অজানা ইতিহাস!

মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজার—এক সময় বাংলার রেশম ও সূতিবস্ত্র বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। এখানেই গড়ে উঠেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথমদিককার বাণিজ্য ঘাঁটি। আজ আমরা যে কলকাতাকে ব্রিটিশ শাসনের কেন্দ্র বলে জানি, তার সূচনা কিন্তু হয়েছিল এই কাশিমবাজার থেকেই।

◾ প্রথম আগমন ও কুঠির প্রতিষ্ঠা
১৬২০ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট জাহাঙ্গীর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলায় বাণিজ্যের অনুমতি দেন। সাহসুজার সুবেদারি কালে ইংরেজরা প্রথম হুগলিতে এবং পরে কাশিমবাজারে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে।
১৬৫৮ সালে মিঃ জন কেন কাশিমবাজার কুঠির অধ্যক্ষ হয়ে আসেন। তাঁর অধীনে কাজ করতেন মিঃ জোব চার্নক—যিনি পরবর্তীতে কলকাতার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত।
তখন কুঠিতে জমজমাট বাণিজ্য চলত—রেশম, মসলিন, রেশমি মোজা, রুমাল, দস্তানা ইউরোপে রপ্তানি হতো। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ পাউন্ড কাঁচা রেশম শুধু কাশিমবাজার থেকেই ইউরোপে চালান যেত।

◾ কুঠির গঠন ও রেসিডেন্সি
কাশিমবাজার কুঠি ছিল এক বিশাল প্রকাণ্ড দোতলা ভবন, যার সামনে ছিল লম্বা লম্বা থাম আর এক প্রশস্ত সিঁড়ি। একতলায় থাকতো চাকর-বাকর, মালপত্র। দোতলায় ছিল সাহেবদের অফিস ও বসবাসের ঘর।
পরে এটি ইংরেজদের “রেসিডেন্সি” রূপে পরিচিত হয়। ইংরেজ কোম্পানির প্রতিনিধি, যাঁকে Resident বলা হতো, নবাবের দরবারে প্রতিনিধি হিসেবে থাকতেন এই রেসিডেন্সিতেই।

◾ বাংলায় বিতাড়ন ও কলকাতার জন্ম
ব্যবসায়িক সুবিধা পেয়ে ইংরেজরা সাহসুজার কাছ থেকে বিনা শুল্কে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করত। কিন্তু সময়ের সাথে তারা বাদশাহের কর্মচারীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। এমনকি তারা উড়িষ্যার বালেশ্বর লুঠ করে ও চাটগাঁ আক্রমণের চেষ্টা করে।
১৬৮৫-৮৬ সালে সুবেদার শায়েস্তা খাঁ তাদের বাংলার বাইরে তাড়িয়ে দেন। জোব চার্নক পালিয়ে গিয়ে সুতানুটিতে ঘাঁটি স্থাপন করেন—এই স্থানটিই পরে রূপ নেয় কলকাতায়।

◾ সিরাজের আক্রমণ ও পতনের সূচনা
১৭৫৭ সালে সিরাজউদ্দৌলা কাশিমবাজার কুঠি ঘিরে ফেলেন। তখন কুঠিতে ছিলেন প্রায় ৩০০ সৈন্য, যার মধ্যে ৫০ জন ইউরোপীয় এবং বাকি বেশিরভাগ পর্তুগিজ। কুঠির কমান্ডার লেফটেনান্ট ইলিয়ট আত্মহত্যা করেন। সাহেবদের বন্দি করে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনার ফলেই পরবর্তীতে পলাশীর ষড়যন্ত্র ত্বরান্বিত হয়।

◾ পলাশীর পর উত্থান ও চূড়ান্ত পতন
যুদ্ধের পরে কাশিমবাজার আবার ব্যবসায়িক কেন্দ্র হয়ে ওঠে। তবে রেসিডেন্সি হিসেবে এর গুরুত্ব কমে যায়। রেসিডেন্টরা পরে মতিঝিলে বসবাস করতে শুরু করেন।
কাশিমবাজার কুঠিতে তখনও কাঁচা রেশম প্রস্তুত হতো, সাহেবরা এখানেই কলকাতার চেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। কাশিমবাজারের জলবাতাসকে স্বাস্থ্যকর মনে করা হতো।

◾ অবশেষে ধ্বংস
১৮১৩ সালে ভাগীরথী নদী পথ পরিবর্তন করলে বন্দর হিসাবে কাশিমবাজারের গুরুত্ব কমে যায়। ম্যালেরিয়ার প্রকোপে লক্ষাধিক মানুষ কাশিমবাজার ছাড়ে। ১৮৫৮-৬১ সালের মধ্যে গভর্নর জেনারেলের এজেন্ট কর্নেল ম্যাকেঞ্জির স্ত্রীর বর্ণনায় জানা যায়—কাশিমবাজারের কুঠি পরিত্যক্ত ও অস্বাস্থ্যকর ঘোষণা করে মাত্র ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়।

ধীরে ধীরে বহু ইতিহাসের সাক্ষী সেই কুঠি, যা এককালে বাংলার অর্থনীতির কেন্দ্র, সম্পূর্ণ রুপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, যার কোনো চিহ্নই আজ আর নেই।

🔹 Manas Bangla

#কাশিমবাজার

🔹 সেখের দীঘি: অলৌকিক জলধারার এক ইতিহাস! বহরমপুর থেকে মালদা গামী জাতীয় সড়কের পাশেই গম্ভীর নীরবতায় বিস্তৃত, প্রায় এক মা...
02/08/2025

🔹 সেখের দীঘি: অলৌকিক জলধারার এক ইতিহাস!

বহরমপুর থেকে মালদা গামী জাতীয় সড়কের পাশেই গম্ভীর নীরবতায় বিস্তৃত, প্রায় এক মাইল দীর্ঘ এক বিশাল দীঘি— সেখের দীঘি বা শেখ দিঘি। ইতিহাসের পাতায় একে শুধু একটি জলাধার বলে ভুল করবেন না। এটি এক অলৌকিক ঘটনার নীরব সাক্ষী।

১৫১০ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সুলতান হোসেন শাহ উড়িষ্যা জয়ের উদ্দেশ্যে অভিযান করেন। এই অভিযানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন সনাতন গোস্বামী, যিনি সাকর মল্লিক উপাধিতে ভূষিত শাসন ও সমর-সচিব ছিলেন। তখন উড়িষ্যারাজ প্রতাপরুদ্র দক্ষিণে যুদ্ধ করতে যাওয়ায় রাজধানী ছিল শূন্য। সুযোগ বুঝে হোসেন শাহের সেনাপতি ইসমাইল গাজী উড়িষ্যা আক্রমণ করেন। আক্রমণের সংবাদে প্রতাপরুদ্র রাজা ফিরে আসলে সুলতানের বাহিনী পরাজিত হয়ে মন্দারণ দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করে। এই অভিযানের পরেই হোসেন শাহ গৌড় থেকে উড়িষ্যা সীমান্ত পর্যন্ত বাদশাহী সড়ক নির্মাণ করেন—সেই সড়কের পাশেই খনন করা হয় ‘সেখের দীঘি’ সহ বহু জলাশয়। মূলত সেনা চলাচলের সুবিধার জন্যই এই রাজপথ নির্মাণ করেছিলেন হোসেন শাহ।

কথিত আছে, দীঘির মাঝখানে গভীর কূপ খননের পরেও জল উঠছিল না। সুলতান হোসেন সাহ নিজে গৌড় থেকে এসে আবু সৈয়দ ফকীর নামে এক অলৌকিক সাধকের সহায়তা নেন। ফকীর তাঁর আশীর্বাদস্বরূপ লাঠিটি তাঁর এক শিষ্যকে দিয়ে দিঘিতে পুঁততেই দীঘি জলে পূর্ণ হয়ে ওঠে! সেই থেকেই এর নাম হয় সেখের দীঘি— ফকীর সেখ সাহেবের নাম অনুসারে।

হোসেন সাহ ফকীরকে ৬৬ বিঘা লাখেরাজ জমি দান করেন, আনান তাঁর স্ত্রী-পুত্রদের আরব থেকে, গড়ে ওঠে মোস্তফাবাদ গ্রামের পরিবর্তে ‘সেখের দীঘি’ নামের নতুন জনপদ। দীঘির চারপাশে বাঁধাঘাট, মসজিদ, হাটবাজার—সব মিলিয়ে এটি হয়ে ওঠে এক গুরুত্বপূর্ণ জনপদ।

পরবর্তীতে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ নিজে এসে দীঘি পরিদর্শন করে এতটাই মুগ্ধ হন যে ফকীরের বংশধর সৈয়দ আসাদুল্লার কাছ থেকে দীঘি কিনে নেন। সেই থেকে সেখের দীঘি হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের নবাবি সম্পত্তি।

আজও সেখ সাহেবের বংশধরেরা সেই দীঘির পাড়েই বসবাস করেন। ইতিহাস, আধ্যাত্মিকতা, আর অলৌকিকতার এক অপূর্ব মেলবন্ধন এই সেখের দীঘি।

©Manas Bangla

তথ্য সূত্র :
১. মুর্শিদাবাদ কথা-শ্রীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
২. মুর্শিদাবাদ থেকে বলছি- কমল বন্দ্যোপাধ্যায়।
৩. গৌড়ের ইতিহাস - রজনীকান্ত চক্রবর্তী।

#সেখের_দীঘি #বাংলারইতিহাস #সেখদিঘী #মুর্শিদাবাদ #হোসেনসাহ #আবুসৈয়দ #নবাবিএতিহাস #ঐতিহাসিকবাংলা

🌄 তিব্বত না ভূতবর্ষ? কোচবিহার রাজবংশের এক বিস্ময়কর কাহিনি! আজ যাকে আমরা তিব্বত নামে জানি, প্রাচীনকালে তার নাম ছিল ভূতবর্...
01/08/2025

🌄 তিব্বত না ভূতবর্ষ? কোচবিহার রাজবংশের এক বিস্ময়কর কাহিনি!

আজ যাকে আমরা তিব্বত নামে জানি, প্রাচীনকালে তার নাম ছিল ভূতবর্ষ বা কিম্পুরুষবর্ষ। উত্তর দিকে কৈলাস পর্বত, দক্ষিণে হিমালয়, পূর্বে চীন আর পশ্চিমে চিত্রল—এই ভূখণ্ডেই মানস সরোবর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ বয়ে গেছে ভারতের দিকে। কালের আবর্তে ভূতবর্ষ চীনের প্রভাবাধীন হলে চীনা ভাষায় ‘ভূত’ শব্দের বিকৃতি ঘটিয়ে নাম হয়ে যায় ভোট—আর সেখান থেকেই ‘তিব্বত’। চীনারা কৈলাসকে বলে কিউলন্, আর ব্রহ্মপুত্র নদকে সামপু। তিব্বতের ধর্মীয় গুরু দালাই লামা—তাকে বলা হয় দলই লামা, অর্থাৎ মহাযোগী। এই দলই লামাকেই বলা হয় "ভূতপতি", ঠিক যেমন "কাশীর রাজা" মানে শিব।

কাহিনির মোড় ঘোরে তখনই, যখন এই ভূতপতি দক্ষিণ প্রান্তে পরিদর্শনে এসে চিহ্না পাহাড়ে দুই সুন্দরী—হীরা ও জিরা—কে নিজের সেবাদাসী করে নেন। হীরার গর্ভে জন্ম নেয় বিশু সিংহ, আর জিরার গর্ভে ইশু সিংহ। ভূতপতি এই দুই পুত্রকে দক্ষিণ সীমান্তে রাজত্ব দেন। বিশু সিংহের বংশধর হলেন কোচবিহার ও জলপাইগুড়ির রায়কত। আর ইশু সিংহের বংশ থেকে উদ্ভূত বিজনি ও সিডলির রাজারা। এই দুই পিতৃসূত্রেই গড়ে ওঠে উত্তরবঙ্গের রাজনীতির এক শক্তিশালী ঐতিহ্য।

ইতিহাস, পুরাণ না কল্পনা—আপনি কী মনে করেন?

এইরকম আরো বিস্ময়কর ঐতিহাসিক কাহিনির জন্য চোখ রাখুন মানস বাংলার পাতায়!

তথ্যসূত্রঃ মোঘলদের আগে-দূর্গাচন্দ্র সান্যাল।

#তিব্বতেরইতিহাস #ভূতবর্ষ #কোচবিহার #দলাইলামা #ব্রহ্মপুত্র #লোককথা #বাংলারইতিহাস #পুরাণওইতিহাস #মানসসরোবর #হিমালয়েরগল্প #ইতিহাসবলে

📜দেওয়ানদের রাজত্বে বাংলা: নবাবি প্রশাসনের অন্দরকথামুর্শিদকুলি খাঁ যখন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শাসনভার গ্রহণ করেন, তখন ...
31/07/2025

📜দেওয়ানদের রাজত্বে বাংলা: নবাবি প্রশাসনের অন্দরকথা

মুর্শিদকুলি খাঁ যখন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শাসনভার গ্রহণ করেন, তখন প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিজের নিকটাত্মীয় নবাব সৈয়দ একরাম খাঁকে দেওয়ান-সুবা পদে নিযুক্ত করেন। পরে এই পদে বসেন তাঁর দৌহিত্র সরফরাজ খাঁ। দেওয়ান-সুবা ছিল নবাব নাজিমের প্রধানমন্ত্রীর সমতুল্য পদ।

নবাবি আমলে মূলত চার ধরনের দেওয়ান ছিলেন:

দেওয়ান-ই-সুবা (Diwan-i-Subah): নবাবের মুখ্য সচিব ও রাজস্ব-শাসনের সংযোগকারী। প্রদেশের (সুবা) সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্তা। জমি জরিপ, কর আদায়, কোষাগারে অর্থ জমা ও দিল্লির সঙ্গে সমন্বয়। কখনো কোনো হিন্দুকে এই পদে নিযুক্ত করা হতো না। মুর্শিদকুলি খাঁ নিজেই নবাব হওয়ার আগে এই পদে ছিলেন।

দেওয়ান-ই-খালসা (Diwan-i-Khalsa) : রাজস্ব জমি ও প্রজাদের স্বার্থরক্ষাকারী। খালসা জমির পরিমাপ, শ্রেণিবিন্যাস ও রাজস্ব আদায়। চাষিদের অধিকার রক্ষা ও বিরোধ নিষ্পত্তি। এই দপ্তরে হিন্দু কর্মচারীরাই থাকতেন, ‘রায় রায়ান’ উপাধি পেতেন। উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব: উন্মেদরাম (সিরাজউদ্দৌলার সময়), নন্দকুমার (মীরজাফরের সময়)

দেওয়ান-ই-নিযামত (Diwan-i-Nizamat) : আইন-শৃঙ্খলা ও সামরিক প্রশাসনের প্রধান। সেনাবাহিনী, ফৌজদারি বিচার ও নিরাপত্তা তদারকি। অপরাধ দমন, আদালত ও কারাগার পরিচালনা। নবাব নিজেই প্রায়শই এই দপ্তরের প্রধান হতেন। হিন্দুদের এই দপ্তরে নিয়োগ হতো না

দেওয়ান-ই-তান (Diwan-i-Tan): নবাব পরিবারের ব্যক্তিগত ব্যয় তদারক। নবাবের অন্দরমহল, বেগমদের খরচ, বিলাসবহুল জীবনযাপন। উৎসব, উপহার, কবি, শিল্পী, নর্তকীদের পৃষ্ঠপোষকতা। এই দপ্তরের ব্যয় বাংলা কোষাগারে চাপ সৃষ্টি করে

এত বড়ো প্রশাসন! তবু পলাশির পর সবই ইতিহাস! আপনাদের মতামত কী? কোন দপ্তর ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?

©Manas Bangla

#নবাবিআমল #বাংলারইতিহাস #নবাবসরকার #দেওয়ান #ইতিহাসেরগল্প #মানসবাংলা #পলাশিযুদ্ধ #সিরাজউদ্দৌলা #ঐতিহাসিকবাংলা #ইতিহাসপ্রীতি

কাটাদ্বীপ না কণ্টকদ্বীপ? ‘কাটোয়া’ নামের গোপন ইতিহাসবর্ধমান জেলার অন্তর্গত বর্তমান কাটোয়া—যা আজ পরিচিত এক আধুনিক শহর হি...
31/07/2025

কাটাদ্বীপ না কণ্টকদ্বীপ? ‘কাটোয়া’ নামের গোপন ইতিহাস

বর্ধমান জেলার অন্তর্গত বর্তমান কাটোয়া—যা আজ পরিচিত এক আধুনিক শহর হিসেবে, একসময় ছিল এক প্রাচীন জনপদ। তবে এর নামের আড়ালে লুকিয়ে আছে বহুস্তর ইতিহাস, ভূগোল আর জনশ্রুতি মিশ্রিত কিংবদন্তি। অনেকের মতে, কাটোয়ার আদি নাম ছিল ইন্দ্রাণী—এক সময়ের মহানগর, যা আজ প্রায় বিস্মৃত।

📜 প্রাচীন ইন্দ্রাণী জনপদ: “ইন্দ্রাণী” শব্দটি শুধু একটি স্থাননাম নয়, এটি এক বৃহৎ ঐতিহাসিক পরিচয়ের ধারক। অজয় ও ভাগীরথীর মোহনায়, বর্তমান শাঁখাইঘাট থেকে দাঁইহাট পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল একসময় ইন্দ্রাণী জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল। আজও কাটোয়া থানার বিশাল অংশ “ইন্দ্রাণী পরগনা” নামে চিহ্নিত। বিশ্বাস করা হয়, বেড়া গ্রামের পাশে, প্রাচীন ইন্দ্রেশ্বর মন্দির সংলগ্ন এলাকাতেই ছিল ইন্দ্রাণী নগরী—সম্ভবত এক মহানগরী। আইন-ই-আকবরীতে উল্লেখ আছে ‘ইন্দ্রায়ন’ বা ‘ইন্দ্রয়ীন’ নামে এক পরগনার, যা এই ইন্দ্রাণীর সাথেই সম্পর্কযুক্ত বলে অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন।

🧝‍♂️ ইন্দ্রদ্যুম্ন ও কণ্টকনগর: জনশ্রুতি অনুযায়ী, ইন্দ্রাণীর রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন (যিনি ইন্দ্রেশ্বর মন্দির নির্মাণ করেছিলেন) গঙ্গাধর মহাদেবের কৃপা লাভের জন্য নিজের মাথা কেটে বলি দিতে চেয়েছিলেন। সেই থেকেই এই অঞ্চল পরিচিতি পেতে শুরু করে “কণ্টকনগর” নামে।

🌊 গঙ্গারিডি ও কাটোয়ার ঐতিহাসিক সংযোগ: - গঙ্গারিডি রাজ্য সম্পর্কে গ্রিক ঐতিহাসিক মেগাস্থিনিস, টলেমি, প্লিনি প্রমুখের বিবরণে দেখা যায়, এটি গঙ্গা নদীর মোহনা অঞ্চলে অবস্থিত ছিল এবং এর রাজধানী ছিল “গাঙ্গে” নামে একটি বন্দরনগরী। রাঢ় অঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে কাটোয়া—এই অবস্থান সত্যিই গঙ্গারিডি সভ্যতার প্রবেশদ্বার হিসেবে ভাবা যেতে পারে। অজয় নদ দ্বারা বিভক্ত এই অঞ্চল উত্তর ও দক্ষিণ রাঢ়ের সংযোগস্থল। কর্ণসুবর্ণ ও কান্দি মহকুমা—এই অঞ্চলে “গঙ্গারিডি” নামে ক্ষুদ্র স্থাননামের অস্তিত্ব আজও গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

🌊 নদীবেষ্টিত দ্বীপ-ভূখণ্ড ও ‘কাটোয়া’ নামের বিবর্তন :
বহু ইতিহাসবিদ যেমন ড. কালীচরণ দাস মনে করেন, কাটোয়া ছিল একসময় নদীবেষ্টিত দ্বীপভূমি। গঙ্গা, অজয়, শিবা ও অন্যান্য উপনদীর শাখাপ্রশাখায় ঘেরা ছিল এই অঞ্চল।

🔹 প্রাচীন গ্রিক পর্যটকেরা একে "Katadupa / Katadipa / Kootdwipa" নামে উল্লেখ করেছেন।

🔹 ফরাসি পণ্ডিত সেন্ট মারটিন এবং ম্যাকক্রিন্ডল মনে করেন, ‘কাটোয়া’-র সংস্কৃত রূপ হতে পারে "কাটদ্বীপ" বা "কণ্টকদ্বীপ"—অর্থাৎ কণ্টকময় দ্বীপ।

এই অঞ্চল ঘিরে আজও রয়েছে:
🔹 অগ্রদ্বীপ ও কণ্টকদ্বীপ: “অগ্রে উৎপন্নং দ্বীপম” অর্থাৎ প্রথমে উৎপন্ন দ্বীপ—এই ব্যুৎপত্তি অগ্রদ্বীপকে ভাগীরথীর পলিসঞ্চয়ে গঠিত প্রাচীন ভূখণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করে। এডুমিশ্রের কারিকা অনুযায়ী “কণ্টকদ্বীপ” ছিল অগ্রদ্বীপের মধ্যাংশ। “কণ্টক” শব্দের অর্থ কাঁটা বা দুর্গম, যা কাটোয়ার নামের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য ঐতিহাসিক যোগসূত্র তৈরি করে।

🔹 নবদ্বীপ, পট্টদ্বীপ, পূর্বস্থলী: নবদ্বীপের নামকরণে “নব” অর্থ নতুন এবং “দ্বীপ” অর্থ দ্বীপ—এটি গঙ্গার পলিসঞ্চয়ে নবজাগরিত ভূখণ্ডের প্রতীক। ঐতিহাসিকভাবে এটি নয়টি দ্বীপের সমাহার হিসেবেও পরিচিত।

🔹 পট্টদ্বীপ (পাটুলি) এবং পূর্বস্থলীও ভাগীরথীর ধারাবাহিক ভূপ্রাকৃতিক পরিবর্তনের সাক্ষ্য বহন করে।

🔹 গঙ্গাটিকুরি ও টিকরা: “টিকরা” বা “টিকুরি” শব্দের উৎস সংস্কৃত “তুঙ্গ” থেকে, যার অর্থ উচ্চভূমি। গঙ্গাটিকুরি নামটি নদী বিধৌত কাঁদরের সঙ্গে যুক্ত, যা বাঁধজঙ্গল বা উঁচু চরভূমির ইঙ্গিত দেয়।

এইসব নাম ও ভূখণ্ডের ব্যুৎপত্তি শুধু ভাষাতাত্ত্বিক নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক ভূগোলের মানচিত্রও আঁকে—যেখানে নদী, পলি, জনপদ ও ধর্মীয় ইতিহাস একে অপরকে ছুঁয়ে থাকে। এ থেকে স্পষ্ট যে, কাটোয়া সেই সময়কার এমনই একটি দ্বীপনগরী ছিল। “কণ্টকদ্বীপ > কাটদ্বীপ > কাটদিপা > কাটবা > কাটোয়া”—এই রূপান্তরের সম্ভাবনাই বেশি যুক্তিসঙ্গত।

🗣️ ভাষা, লোকাচার ও উচ্চারণের পরিবর্তন: ভাষাবিদ সুকুমার সেন ‘কাটোয়া’ শব্দের ব্যুৎপত্তি বিশ্লেষণ করে বলেন— “কর্ত + বয়ন = কাটোয়া” অর্থাৎ সুতাকাটা ও বস্ত্র বয়নের স্থান। অপরদিকে, নিবারণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মনে করেন, ‘কণ্টক’ শব্দটি মুসলমান শাসনের সময় ‘কাট’ হয়ে যায় এবং হিন্দুস্থানী প্রভাবে তার সঙ্গে যুক্ত হয় ‘ওয়া’/‘বা’। ফলে, ‘কাটোয়া’ উচ্চারণই প্রাধান্য পায়।

🔍 ঐতিহাসিক দলিল ও সাহিত্যপ্রমাণ
1. 📖 গৌড়াধিপতি হুসেন শাহের সমসাময়িককালে রচিত বিপ্রদাসের মনসাবিজয়ে (ইং ১৪৯৫) কিন্তু পরিষ্কার কাটোয়া শব্দ আছে : ‘উজানি কাটোয়া বাহি রহে ইন্দ্রঘাটে।'
2. 📖 মনোহর দাসের ‘অনুরাগবল্লীতেও (ইং ১৬৯৬) কাটোয়া নাম— ‘কাটোয়া নিকট বাগ্যনকোলা পাটবাড়ী।

এই সবই প্রমাণ করে যে, ১৫শ-১৬শ শতকেও “কাটোয়া” নামের অস্তিত্ব ছিল এবং তা জনজীবনে স্বীকৃত ছিল। তবে প্রশ্ন রয়ে যায়...আজও নির্দিষ্টভাবে জানা যায় না, ঠিক কোন সময় থেকে ‘কাটোয়া’ নামটি বর্তমান রূপে প্রতিষ্ঠিত হল। তবে এ এক চমকপ্রদ বিষয়—একটি নামের পেছনে এত ভূগোল, ইতিহাস, কিংবদন্তি, ভাষাবিজ্ঞান আর সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ছাপ যা সত্যই অবাক করে দেয়!আজকের কাটোয়া শুধুই একটি শহর নয়, এটি আমাদের ইতিহাস, ভাষা ও নদীবিধৌত সভ্যতার জীবন্ত সাক্ষী।

Manas Bangla

#কাটোয়া #ইন্দ্রাণী #কণ্টকনগর #বাংলারইতিহাস #মানসবাংলা #নদীসভ্যতা

Address

Berhampore

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Manas Bangla posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Manas Bangla:

Share

Category