20/07/2025
🥺💔মেয়েদের কষ্টের সংসার 💔🥺
নাসিমা ছোট্ট একটা গ্রামে জন্ম নেওয়া এক সাধারণ মেয়ে। খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল তার, তখনও সে স্কুলে পড়ত। বিয়ের পরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। স্বপ্ন দেখত শিক্ষিকা হওয়ার, কিন্তু বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
স্বামী দিনে কাজ করে, রাতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়। সংসারের সব দায়িত্ব নাসিমার কাঁধে। সকাল থেকে রাত—রান্না, কাপড় ধোয়া, সন্তানকে স্কুলে পাঠানো, শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা—সব কিছুতে ব্যস্ত সে। কারও মুখে একটাও ভালো কথা শোনে না, কিন্তু সব মুখের দিকে হাসিমুখে তাকায়।
অনেক সময় নিজের জন্য দুটো মিনিটও পায় না। শরীর ব্যথা করে, মন কান্না চায়, কিন্তু চোখে জল আনে না, কারণ সে জানে—এই জল দেখলে কেউ বোঝে না, বরং দোষই দেয়। তবু সে টিকে থাকে। সন্তানের মুখ দেখে, একটুখানি ভালোবাসার আশায়, জীবনের এক চিলতে শান্তির খোঁজে।
নাসিমা ছোট্ট একটা গ্রামে জন্ম নেওয়া এক সহজ-সরল মেয়ে। বাবা-মা ছিল গরিব, তাই খুব অল্প বয়সেই তার বিয়ে দিয়ে দেয় এক দিনমজুরের সঙ্গে। তখনও সে ক্লাস নাইনে পড়ত। স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে শিক্ষিকা হবে, বাবাকে ভালো ঘরে রাখবে, কিন্তু বিয়ের পর সেই স্বপ্ন যেন কোথায় হারিয়ে গেল।
বিয়ের পরে বইখাতা ছেড়ে উঠতে হলো রান্নাঘরে। সকালে উঠে পানি আনা, রান্না, গোসল করানো শ্বশুর-শাশুড়িকে, আবার রাত করে স্বামীর অপেক্ষা। স্বামী কাজ থেকে ফিরে হয়রান, কিন্তু কথা বলে কড়া স্বরে। ভালোবাসা সে কমই পায়, বেশিরভাগ সময়েই তার জীবন চলে দায়বদ্ধতার ঘেরাটোপে।
একদিন রাতে চুপিচুপি তার মেয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল,
“মা, তুমি কি সুখী?”
নাসিমা উত্তর দিল না। শুধু মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিল আর মনের ভিতর প্রতিজ্ঞা করল—এই মেয়েকে সে পড়াবে, তার স্বপ্ন যেন ভেঙে না যায়।
নাসিমা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করল মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য।
কষ্ট সহ্য করল, অপমান গিলে ফেলল—তবু মেয়েকে স্কুলে পাঠাল, কোচিং-এ ভর্তি করাল। স্বামী কিছু না বুঝলেও, সে জানত—মেয়েটিই তার জীবনের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে পারবে।
শিক্ষা:
গল্প শুধু নাসিমার নয়—এটা হাজারো নারীর কণ্ঠহীন আর্তনাদ, যাদের কষ্ট চাপা থাকে ঘরের চার দেয়ালে। তবু তারা জীবন চালিয়ে যায়, কারণ তারাই তো প্রকৃত অর্থে সংসারের ভিত।
একজন নারীর জীবন কত কঠিন হতে পারে, কিন্তু তার মধ্যেও সে পরিবারের জন্য কীভাবে নিজেকে নিঃস্ব করে দেয়। সমাজে অনেক নারী আছেন, যারা চুপচাপ সব সহ্য করে সংসার চালিয়ে যান, কারো প্রশংসা ছাড়াই। আমাদের উচিত, নারীদের স্বপ্নকে মূল্য দেওয়া, তাদের কণ্ঠকে শক্তি দেওয়া, এবং তাদের শ্রমকে সম্মান করা। একজন শিক্ষিত নারী শুধু নিজের জীবন নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরও আলোর পথ দেখাতে পারে।