
05/08/2025
F❝ইস্তিগফার করি, কাজ হয় না?❞ এটা কি সম্ভব? — না, কখনোই না।
তবুও অনেকে হতাশ হয়ে বলেন, "উক্ত বিষয়ে অনেক ইস্তিগফার পড়লাম—কাজ হলো না!"
আসলে বুঝে নিতে হবে—ইস্তিগফার এককভাবে পূর্ণ তাওবা নয়।
ইস্তিগফার হলো তাওবার একটি অংশ/ শর্ত মাত্র, আর তাওবা হচ্ছে ফিরে আসার ওয়াদা। কেবল ‘আল্লাহ'র কাছে মাফ চাচ্ছি’ বললেই তাওবা হয় না।
কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী, সত্যিকারের তাওবার ৪টি শর্ত বা স্তরঃ
(১) পাপ ত্যাগ করা এবং ভবিষ্যতে আর কখনও উক্ত পাপে না জড়ানোর আন্তরিক সিদ্ধান্ত নেওয়া।
(২) পাপের জন্য গভীর অনুতাপ অনুভব করা।
(৩) সৃষ্টির অধিকার—যদি কারো হক নষ্ট করে থাকি, তাহলে তা ফেরত দেওয়া, যেভাবেই হোক ফেরত দেওয়া আর তা সম্ভবই না হলে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে নেওয়া।
(৪) ইস্তিগফার—আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
কেবল ইস্তিগফার করেই কেউ যদি বলে—“আমি তাওবা করেছি”, কিন্তু উপরের শর্তগুলো পূরণ করে না—তবে সেটা আসলে তাওবা নয়, বরং একপ্রকার মিথ্যাচার।
কারণ, সে মুখে বলছে “ফিরে এসেছি”, অথচ প্র্যাকটিক্যালি ফিরে আসেনি। অনুতপ্ত হয়নি৷ মাঝে মাঝেই নিজে করে বা অন্যের করাকে সমর্থন করে৷ ইত্যাদি৷
উদাহরণ,
ধরুন, কেউ প্রেম করে বিয়ে করেছে। এখন সে ভাবছে—বিয়ে করলেই প্রেমের গুনাহ মাফ হয়ে গেল!
না, এটা ভুল।
বিয়ে করার আগে করা গুনাহর জন্য তাকে তাওবা করতে হবে। বা আগে করা সম্ভব না হলে, বিয়ে হয়ে গেলে বিয়ের পরও।
বিশেষ করে এখানে ১ ও ৩ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন করে আর প্রেম করবেন না, প্রেমকে প্রশ্রয় দেবেন না৷ এমনকি সন্তানদেরকেও এই পাপের পথে উৎসাহ দেবেন না—এটাই তাওবার সঠিক রূপ।
নিজে আর জড়ালেন না, অনুতপ্ত হলেন কিন্তু সন্তানের প্রেমকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন, সব জেনে শুনে মেনে নিচ্ছেন ইজিলি,
তাওবা বাতিল হয়ে যেতে পারে।
প্রেমের সম্পর্কে আবার ৩ নং বিশাল আলোচনার বিষয়, সেখানে ফিকহি আলোচনা চলে আসবে যা মুফতিদের কাজ।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক,
অনেকেই গীবত করে, কারো অধিকার নষ্ট করে, সুদ খায়, ঘুষ নেয়, গালি দেয়, যুলুম করে, অন্যের সম্পদ মেরে খায়, ট্রল করে, সিগারেট খেয়ে ধোয়া দিয়ে মানুষের ক্ষতি করে — তারপর কেবল মুখে বলে, "ইস্তিগফার করছি।"
কিন্তু এসব গুনাহর সাথে সৃষ্টির হক জড়িত। এই হক আদায় না করে শুধু ইস্তিগফারে কিছু হয় না।
ইস্তিগফার অবশ্যই কাজ করে (এটা আল্লাহ'র ওয়াদা) , কিন্তু তখনই— যখন তা আসে পূর্ণ তাওবার অংশ হিসেবে।
আল্লাহর কাছে ফিরে আসা মানে শুধু চোখের পানিতে নয়—অন্যায়ের পরিণতি স্বীকার করে, সংশোধনের পদক্ষেপ নেওয়ায়।