05/09/2025
আজ সচ্চিদানন্দ শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের আবির্ভাব তিথি মহা মহোৎসব!
"আজ কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের আবির্ভাব তিথি। তিনি অত্যন্ত ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ইংরেজি ভাষায় বিভিন্ন গ্রন্থের প্রকল্প নিয়েছিলেন এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আন্দোলনকে সমগ্র বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর প্রথমে একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন কারণ তিনি মনে করেছিলেন যে, এটি তাঁর পরিবার নির্বাহ করার একটি আদর্শ পন্থা। ১২ বছর বয়সে তিনি বিবাহ করেছিলেন। তিনি দ্রুত বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হন এবং ওড়িয়া ও ইংরেজিতে কিছু গ্রন্থ রচনা করেন। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা তাঁকে ভারতীয় প্রশাসনিক সেবায় রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এবং তিনি জগন্নাথ পুরী মন্দিরের প্রথম প্রশাসক হন।
তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর প্রকৃত জন্মস্থান খুঁজে বের করতে চেয়েছিলেন এবং তাই তিনি নদীয়া জেলায় স্থানান্তরিত হন। তিনি তখন শ্রী মায়াপুর থেকে একটি আলো দেখেন এবং বুঝতে পারেন যে এটি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান। শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর শ্রীল জগন্নাথ দাস বাবাজীকে মাথায় একটি ঝুড়িতে করে নিয়ে আসেন এবং তিনি যেখানে আলো দেখেছিলেন সেখানে যান। তিনি স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞেস করলেন এটা কোন জায়গা। তারা বললো, “এই জায়গাটা অভিশপ্ত, আমরা যা বপন করি তাতেই তুলসী জন্ম নেয়। বেগুন, টমেটো কিছুই হয় না; শুধু তুলসী।" এরপর তিনি শ্রীল জগন্নাথ দাস বাবাজীকে মাথায় নিয়ে তুলসী বাগানের মধ্য দিয়ে হেঁটে যান। শ্রীল জগন্নাথ দাস বাবাজী প্রায় ১৩০ বছর বয়সী ছিলেন, তিনি খুব বৃদ্ধ ছিলেন এবং তাঁর চোখের পাতা শুধুমাত্র দিয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়ে খোলা রাখা হত। তিনি একেবারেই হাঁটতে পারতেন না। এবং একটি ঝুড়িতে করে তাঁকে বহন করা হত। কিন্তু সেই নির্দিষ্ট স্থানে এসে তিনি লাফাতে শুরু করলেন, হরিবোল! হরিবোল! সেটিই ছিল শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান!
যেহেতু শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর একজন ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন, তাই তিনি বৃহৎ অনুদান গ্রহণ করতে চাননি। তাই তিনি ৩০,০০০ লোকের কাছে গিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১ রূপি করে সংগ্রহ করেন এবং মহাপ্রভুর জন্মস্থানে প্রথম মন্দির তৈরি করেন এবং জগন্নাথ মিশ্র ও শচীমাতার জন্য একটি কুটির তৈরি করেন।
শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর তাঁর জীবনকে খুব নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাহ করেছেন। প্রতিদিন তিনি তাঁর পরিবারকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় দিতেন, বিভিন্ন লোকজনের সাথে সাক্ষাৎ করতেন, জপ করতেন, গ্রন্থ লিখতেন, ভক্তিগীতি রচনা করতেন, ভক্তদের সাথে দেখা করতেন, তিনি কখন কী করবেন সবকিছুই নির্ধারিত ছিল। আপনি যদি তাঁর সময়সূচী দেখেন, তবে আপনি দেখতে পাবেন যে তিনি আধুনিক সময় ব্যবস্থাপনাকারী সমস্ত গুরুদের অতিক্রম করেছেন। তাঁর সময়সূচী অবিশ্বাস্যভাবে নিখুঁত ছিল।
আমাদের প্রচার আন্দোলনও তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই সময় তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে, নিত্যানন্দ প্রভু নামহট্ট শুরু করেছিলেন এবং তাই তিনি আবার নামহট্ট শুরু করেছিলেন। শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর সারা বাংলা ও ওড়িশা জুড়ে এই নামহট্ট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।"
~শ্রীল জয়পতাকা স্বামী
৩১শে আগস্ট, ২০২০