
05/08/2025
আজ হোয়াটসঅ্যাপে এল এক হৃদয় ছোঁয়া বার্তা...
আসসালামু আলাইকুম, আমি আমার বান্ধবীদের জন্য ‘প্র্যাকটিসিং মুসলিমাহ’ বইটি ৮০ কপি নিতে চাই।
আমি চাই তারা ঈমানি পথে একটুখানি আহ্বান পাক। এই বইটা আমি নিজে পড়ে বদলে গেছি। এখন চাই ওরাও বদলাক…
একটি হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ...
আর তাতেই যেন হৃদয় কেঁপে উঠল।
আমরা বিনীতভাবে জানতে চাইলাম
আপনি এত ইসলামিক বই থাকতে শুধু প্র্যাকটিসিং মুসলিমাহ কেন বেছে নিলেন?
উত্তরে যা বললেন, তা শুধু আমাদেরই নয়, আপনাদের হৃদয়েও নাড়া দেবে
তাঁর হৃদয় থেকে উঠে আসা সেই কথাগুলোই শ্রদ্ধাভরে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি...
এই লেখাটা আমি নিজের জন্যই লিখছি। হয়তো ভবিষ্যতে ভুলে যাবো কোথা থেকে শুরু করেছিলাম। তাই আজ লিখে রাখি।
আমি একটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি বছর খানেক হলো।
বাড়িতে নামাজ-রোযা চলত, কিন্তু আমি কখনও খুব সিরিয়াস হইনি দ্বীন নিয়ে। কুরআন তিলাওয়াত বা ইসলামিক বই পড়া—এসব আমার খুব একটা জগতে ছিল না।
বাইরের দুনিয়ায় যা চলছে, আমিও তাই করছিলাম।
সত্যি বলতে, আমি গোনাহে ডুবে ছিলাম না, আবার দ্বীনের ভিতরেও ছিলাম না। মাঝামাঝি, একরকম উদাসীন।
আমার মাথায় তখন একটাই লক্ষ্য ছিল একটা ভালো জব। বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করেই চাকরি, তারপর নিজের একটা স্বাধীন জীবন। ব্যস।
বদলে যাওয়ার শুরুটা অপ্রত্যাশিতভাবেই।
আমার একটা বান্ধবী ছিল, যাকে অনেকে একটু “রিলিজিয়াস” বলে ঠাট্টা করত।
ও বেশি কথা বলত না, কিন্তু যখনই কিছু বলত, গভীর কিছু থাকত। একদিন দেখা করতে এসে ও আমাকে একটা বই দিল “প্র্যাকটিসিং মুসলিমাহ”।
আমি অবাক হয়ে বললাম,
“তুই তো জানিস, আমি এসব টাইপের মেয়ে না।”
একটু হেসেও বলেছিলাম,
“এই বই পড়লে কি আমি হিজাব পরে যাবো নাকি?”
ও মৃদু হেসে বলেছিল,
“একবার শুধু পড়ে দেখ। আমি জোর করছি না।”
বই পড়ার পরের অনুভূতিটা বোঝানো কঠিন
বইটা আমি প্রথমে পড়া শুরু করিনি। কিছুদিন ধরে পড়ার ফাঁকে টেবিলেই পড়ে ছিল।
একদিন দুপুরে হাতে সময় ছিল, বইটা খুলে কয়েক পৃষ্ঠা পড়লাম।
শুরুটা ছিল সহজ, কিন্তু অদ্ভুতভাবে বাস্তব।
“আত্মপরিচয়ের সন্ধানে” অধ্যায়টা পড়ে আমার বুক কেঁপে উঠেছিল।
প্রথমবার বুঝতে পারলাম, এতদিন ধরে আমি কাকে খুশি করতে চাচ্ছিলাম? সমাজকে? পরিবারকে? নিজেকে?
আল্লাহ কোথায় ছিল আমার চিন্তায়?
তারপর একে একে পড়ে ফেললাম পুরো বইটা।
কোনো নাটকীয়তা নয় কিন্তু ভেতরে যেন কেমন একটা চুপচাপ পরিবর্তন শুরু হল।
নামাজটা আবার শুরু করলাম। ইউটিউবে ইসলামিক লেকচার শুনতে শুরু করলাম।
জবের প্ল্যান বাদ দিলাম। সেই সিদ্ধান্ত কেউ বোঝেনি, আম্মু- আব্বু পর্যন্ত একটু বিরক্ত হয়েছিল।
কিন্তু আমি জানতাম এই পরিবর্তনটা বাইরের নয়, একদম আমার ভিতর থেকে আসা।
আজ আমি আলহামদুলিল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, কুরআন শিখছি, দাওয়াহের ছোট ছোট কাজ করি।
বাড়িতে থাকি, কিন্তু অলস নই। সময়টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করি।
আর আমার চারপাশের বান্ধবীদের ও কিছু আত্মীয়ের জন্য আমি নিউ লেখা প্রকাশনী থেকে ৮০ কপি “প্র্যাকটিসিং মুসলিমাহ” বই অর্ডার করেছি।
সবাইকে হাদিয়া দিচ্ছি। কারণ জানি, একটা বই কারো চিন্তাভাবনা বদলে দিতে পারে।
যেমন আমার এক বন্ধুর একটা বই… আমার পুরো জীবনটাই বদলে দিল।
আজও মাঝে মাঝে ওকে দেখি, একপাশে বসে কুরআন পড়ছে। আমি শুধু তাকিয়ে বলি
“তুই জানিস না, ওই একটা দিন, ওই একটা বই—আমার পুরো পৃথিবী বদলে দিয়েছে। আল্লাহ তোকে কবুল করুন।”
এই লেখাটা আমি কোনও স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য লিখিনি।
আমি লিখছি কারণ, কেউ হয়তো এখনই ভাবছে “আমার তো কিছুই হচ্ছে না, জীবন থেমে আছে…”
হয়তো সে একদিন একটা বই পড়বে… আর ঠিক সেখান থেকেই শুরু হবে ফিরে আসার গল্প।
আল্লাহ যেন সবাইকে হিদায়াত দেন। আমিন।
#প্র্যাকটিসিংমুসলিমাহ
080016 17046
New Lekha Prokashani