07/06/2023
ছি: ছি: ছি: ধিক্কার
"আমাকে C ভেবেছিস? C ভেবেছিস আমাকে ?"
মানুষ কখনো কখনো হঠাৎ নিজের অজান্তেই সত্যিটা নিজের মুখেই বলে ফেলে। এই যেমন, Mr Pushpal Roy ভিডিওতে বলেছেন। এবং আমরা সহমত, উনি একজন মস্তবড় C. তাই আমরা ওনাকে C Roy বলেই সম্বোধন করবো।
এটা ওনার কর্ম জীবনের মানচিত্র:
"As per his LinkedIn profile, Roy has been serving as Vice President in a Kolkata branch of HDFC bank for over 16 years. He is a Chartered Accountant who has previously worked with PwC, and ICICI Bank"
এটা ব্যাংকের তরফ থেকে জারি করা নোটিশ:
"We at HDFC Bank have a zero tolerance policy for any form of harassment or misconduct at the workplace and firmly believe in treating all our employees with dignity and respect," the bank statement read.
যেনো গত ১৬ বছর পুষ্পল রায়ের এই মিষ্টি স্বভাবের ব্যাপারে ওনার উপরতলার বাপেরা বা HR এর ন্যাকা ম্যানেজাররা কিচ্ছুটি জানতেন না।
উনি ভিডিওতে "জন" কে হুমকি দিচ্ছেন, "তোর জন্য আমার score এত কমে গেছে, তো আমি তোর আর তিথির নামে HR Memo issue করবো।" এতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, HR মহলও এনার কথাতেই ওঠে বসে।
তো, ব্যাংকের তরফে এই "ব "য়ের বিজ্ঞপ্তি জারি করা, just লোকদেখানো। জনগন সোশ্যাল মিডিয়ায় ধুয়ে দিচ্ছে, তাই একটা নোটিশ দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি একটু ঠিক করার চেষ্টা ছাড়া কিসসু না।
আহারে, নিপাট এক মার্জিত, পরিশীলিত, মিষ্টভাষী, সহানুভূতিশীল একজন উচ্চপদস্থ অফিসারকে দুম করে বরখাস্ত করে দেয়া হলো ?! কী করেছেনটা কি উনি? একটা মিটিংয়ে একটু নরমগরমে টিমের সদস্য দের ( ফ্যামিলি পড়ুন) একটু ব্যবসা আনতে বলেছেন। নাহলে তাদের মাইনে তাদের ইনসেনটিভ, দেবেন ক্যামনে?
এবার , কর্পোরেট ফ্যামিলির এক বাপ, তার বড় বাপের চাপ খেয়ে, তার নিজের ফ্যামিলির ছেলেদের একটু বকাঝকা (ডা ন্ডা ) করবেন না? আচ্ছা, তিনি কম সয়েছেন এসব? কান লাল করা মা বাপ তোলা খি স্তি খেয়েও নিজের টার্গেটে অবিচল থেকে তবেই না আজ তার এই পদ মর্যাদা, এত দাপট! সেই কুবচন, সেই রোদ্দুর ঘাম প্যাচপ্যাচে অপমানের বিষ তিনি প্রতিবার উগরে উগরে দেবেন তার নিচের তলার মানুষদের। এটাই তো দস্তুর। ( সবাই নয়, তবে অনেকেই)
বন্ধুবান্ধবদের থেকে তাদের কাজের জায়গায় এরকম ঘটনার কথা হামেশা শুনেছি। সেলস, মার্কেটিং ,কারখানা, কর্পোরেট, সব স ও ব জায়গায় C Ray রা আছেন। শ্রমিক গা লি শোনে ঠা ঠা পোড়া রোদ্দুরে, আর কর্পোরেট ঠান্ডা ঘরে।
নিজে ফিল্ড সেলসের কাজে থাকার সময় বিস্তর ঝামেলায় জড়িয়েছি নিজের বা অন্যের ম্যানেজারের সঙ্গে, তাদের অভদ্র আচরণের জন্য, এবং দরকারে অভদ্র ভাবেই ।তবে সঙ্গে অনেকে ছিল , তাই কিছুটা সংগঠিত প্রতিরোধ যাকে বলে সেটা করা যেত, বছর কুড়ি আগেও।
সে যাইহোক, যাঁরা নানান পোস্টে মন্তব্য করেছেন -এনারা এসব মুখ বুজে সহ্য করে আছেন কি করে, প্রতিবাদ কেনো করছেন না, মুখের উপর চাকরি ছুঁড়ে মেরে গটগটিয়ে হাঁটা কেনো দিচ্ছেন না... শুনুন দাদা, এত্ত সহজ নয়। এরা এখানে ঘোড়ার ঘাস কাটছেন না, দিব্যি চাকরি করছেন। রীতিমত প্রমোশন পাচ্ছেন, এটাই সিস্টেম বলে মেনে নিয়েই টিকে আছেন। তাদেরও EMI আছে। C রায়ের প্রবচন ওনাদের খুব একটা বিচলিত করতে পারেনা, সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, C রায়ের ওভার অ্যাক্টিং দেখে কেউ কেউ ক্যামেরা pause করে একটু হেসে নিয়েছে জানলেও আশ্চর্য হবো না।
খারাপ লাগলো, C রায়ের কথা ভেবে। কী পরিমাণ উত্তেজিত, কী অবস্থা ওর মানসিক স্বাস্থের? রাতে ঘুমায়? প্রেশার কত কে জানে, আরো নিশ্চই কিছু না কিছু অসুখ আছে, এই বয়সে। না থাকলেও অচিরেই হবে। সংসারে কে আছে, বাড়ির লোকজন পাড়ায় মুখ দেখাচ্ছে কি ভাবে?
যে দুষ্টু লোক এই ভিডিওটা বাজারে ছেড়েছে, সে ব্যাটা মহা মজা নিচ্ছে এখন।
হায়রে C রায়! তোর থোবোড় এখন অপমানে কাটা যায়!
তবে, এটা একটা প্রমান হিসেবে রইলো। একটু হলেও এই C রায় এর মত লোকগুলো দু বার ভাববে। চাপের অফলাইন মিটিংয়ে মোবাইল নিয়ে ঢুকতে দেবে না। অন লাইন মিটিংয়ে সংযত হবে। তবে সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলিতেছে এবং চলিবে। ব্যাঙের HR, সব বেওসা।
পুনশ্চ: C রায় বাবুকে আমার হেব্বি লেগেছে। ব্যাংকের চাকরি গেলেও, মেগা সিরিয়াল আছে তো!