13/11/2025
বৌদির অ/ত্যাচার নি/র্যাতন সহ্য করে অন্যের বাড়িতে গিয়ে বই পড়তো, সেই মেয়েই আজ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গর্ব !
ছোট থেকেই বৌদির অ/ত্যাচারে মেয়েটির জীবন দু/র্বিষহ হয়েছিল! তুফানগঞ্জ থানার ছোট্ট এক গ্রাম — আমলাগুড়ি। সেই গ্রামে জ'ন্মেছিল এক মেয়ে — নাম মিঠু চন্দ।
মিঠুর বয়স যখন মাত্র নয় বছর, হঠাৎই বাবা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। চোখের সামনে ভে/ঙে পড়ল পুরো সংসার।
কিন্তু দাদা তখন বলেছিলেন — “আমি তোর বাবা, আমি তোর দাদা।” সেই কথা যেন এক প্রতিজ্ঞা হয়ে গিয়েছিল।
অভাবের সংসারে দাদা চাকরি পেয়ে সংসারে সুখের হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। সেই সময় দাদা এমন এক মেয়েকে বিয়ে করলেন, যার বয়স তাঁর চেয়ে অনেক বেশি। এবং দাদা ঘর জামাই হয়ে গেলেন শ্বশুরবাড়িতে। মা কাঁদতেন দিনরাত, মিঠু তখন ক্লাস নাইন । সংসারে শুরু হলো অভাব । তবে কখনো কখনো চুপি চুপি মা বোনের জন্য বাজার করে দিতেন, কিছু টাকা দিতেন — কিন্তু সেগুলোরও দাদা শা/স্তি পেতেন মা/র/ধ/র খেয়ে।
মিঠুর অভিযোগ,
মিঠু তখন মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নিচ্ছে। টিউশন করে সংসার চালাত, নিজের খরচ আর মায়ের ওষুধের ব্যবস্থা করত। দাদার বৌ বলেছিল, “এই মেয়েকে আর পড়াতে হবে না, বিয়ে দিয়ে দাও।” কিন্তু মিঠু হার মানেনি । এভাবেই সে মাধ্যমিক পাস করল, উচ্চমাধ্যমিক পাস করল, কলেজে ভর্তি হলো। সেই সময় বই জামার নিচে লুকিয়ে অন্যের বাড়ি গিয়ে পড়ত ।
এই সময় মায়ের অ/সু/স্থতা বাড়ছিল । দাদা ফিরে এলেন নিজের মা আর বোনের কাছে । তবে তাৎক্ষণিক বৌও এসে পড়ল, শুরু হলো নতুন করে অ/ত্যা/চা/র । মা, মিঠু, দাদা — তিনজনই অ/সহায়। দাদা ভয় পেতেন, কারণ বৌ হু/মকি দিত — “বধূ নি/র্যা/ত/নের কে'স করব, জেলে প/চবে সবাই।”
এই সময় মিঠু তার BA Final Exam দিচ্ছিল । কিন্তু সেই পরীক্ষার দিনগুলোতেও তাকে ইচ্ছে করে বাধা দেওয়া হতোবা । এমনকি একদিন ভয়ানক দু/র্ঘ/টনায় আ/হত হলো মিঠু। দাদা হা/সপাতালে ভর্তি করালেন, কিন্তু বাড়ি ফিরে আসা মাত্রই — শুরু হলো ন/র/ক/য/ন্ত্র/ণা।
দাদার বৌ মিঠুকে মাটিতে ফেলে মা/রতে লাগল, এমনকি মাকে ধরেও মা/র/ধ/র করল । কারণ দাদা নিজের টাকা দিয়ে বোনের চি/কিৎসা করিয়েছিল । সেদিনই মিঠুর জ্ঞা/ন হারাল।
মা আর পাড়ার মানুষ মিঠুকে হা/সপাতালে নিয়ে গেলেন। দুদিন ভর্তি থেকে ফিরে এল। কিছুদিন পর দাদা মা/ন/সি/ক/ভা/বে ভে'ঙে পড়লেন।
আর তারপর একদিন...
একদিন মিঠুর দাদা নিজেই শে'ষ করে ফেললেন নিজের জী/ব/ন। সেই মুহূর্তে পৃথিবী যেন থেমে গেল মিঠুর জন্য। তার মৃ/ত্যু/র পর শুধু মা আর মেয়ে রয়ে গেলেন, অ'নিশ্চয়তা আর অভাবের অ'ন্ধকারে। তবুও থেমে যায়নি মিঠু। টিউশন বাড়িয়ে দিল, দিনে টিউশন, রাতে নিজের পড়া, মায়ের ও'ষুধের খরচ — সব কিছু নিজের কাঁধে তুলে নিল।
অনেক সময় না খেয়েই দিন কে/টে/ছে, তবু মাকে বলেছে — “বাইরে খেয়ে নিয়েছি।”
2013 সালে দাদা যে ফর্মটা পূরণ করেছিলেন, সেটিই একদিন হয়ে গেল আশীর্বাদের দরজা।
2018 সালে মাঠে ডাকা হলো — মিঠু গেল, পরীক্ষায় প্রথম হলো। ধাপে ধাপে সব পেরিয়ে 2020 সালে সে পেল নিজের পরিচয় — পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের একজন মহিলা হোমগার্ড হিসেবে । এই পুরো ঘটনাটাই, মিঠু আমাদের জানিয়েছে !
আজ মিঠু ভালো আছে, বিয়ে করেছে একটা ফুটফুটে সন্তান ও আছে, মায়ের মুখে হাসি আছে। কিন্তু একটা শূ'ন্যতা থেকে গেছে — দাদা সেটা দেখতে পারলেন না।