10/10/2025
                                            লোকে বলতো, একটা গ্রাম্য মেয়ে সে কি বা পড়তে পারবে ? 
আজ তার কাজ পৌঁছে গেছে বিদেশের মাটিতে !
অন্যরা যখন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বড় চাকরির স্বপ্ন দেখেছে,
তখন এই মেয়েটা নিজের মনকে বলেছিল,
“আমি বড় চাকরি করব না, আমি একজন শিল্পী হবো!”
আজ তার হাতের কাজ শুধু বাংলাতেই নয়, দেশের সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে বিদেশের মাটিতেও !
এই সমাজে যখন কেউ বলে — “একটা গ্রাম্য মেয়ে, সে কীইবা করতে পারবে?”
তখন সেই কথাটাকেই ভুল প্রমাণ করে এক মেয়ে উঠে দাঁড়ায় 
তার নাম অন্বেষা সামন্ত।
নেতাজী মহাবিদ্যালয়ের এডুকেশন তৃতীয় বর্ষের অনার্সের ছাত্রী ছিল। সবে গ্র্যাজুয়েশন শেষ হলো।
একেবারে সাধারণ এক মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে —
যার বাবা একজন কৃষক, মা একজন গৃহবধূ।
দিদি সাংবাদিকতায় এম.এ করেছে, ভাই এখনো স্কুলে পড়ে,
আর অন্বেষা? সে নিজের স্বপ্নের রঙে গড়ছে ভবিষ্যৎ!
ছোট থেকেই ওর মনে ছিল একটা বিশেষ টান —
রঙ, তুলি, কাগজ আর সৃষ্টির প্রতি এক অদ্ভুত টান।
যখন অন্যরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বড় চাকরির স্বপ্ন দেখেছে,
অন্বেষা তখন নিজের মনে বলেছে —
“আমি বড় চাকরি করব না, আমি একজন শিল্পী হবো!”
কিন্তু জীবনের পথ তো এত সহজ নয়। ছোটবেলায় ভর্তি হয়েছিল ছবি আঁকার ক্লাসে, কিন্তু পড়াশোনার চাপ, সংসারের দায়িত্ব — সবকিছুই তাকে সেই স্বপ্ন থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দেয়। তবু সে হার মানেনি।  নিজের সাহস, নিজের ইচ্ছেশক্তিকে সঙ্গী করে আবার শুরু করেছিল আঁকা —একজন ছবি আঁকার শিক্ষক কাছে ভর্তি হয়  । পরে সেটাও ঠিক হলো 
না । এখন তারই নিজের হাতে, নিজের চেষ্টায়, কারও শেখানো নয় —
পুরোপুরি নিজের ভালোবাসা থেকে জন্ম নেওয়া শিল্প।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন দেখত অন্যরা কেমন সুন্দর কাজ করছে, তখন ওর মনে হতো, “ওরা পারে, আমি কেন পারব না?” এই একটুখানি বিশ্বাসই ছিল অন্বেষার সবথেকে বড় শক্তি। সেই বিশ্বাস থেকেই শুরু তার Crafty Anu নামের শিল্পযাত্রা।
আজ তার হাতের কাজ শুধু বাংলাতেই নয়, দেশের সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ, সিকিম, দার্জিলিং, ঝাড়খণ্ড, শান্তিনিকেতন, কলকাতা, এমনকি বিদেশেও! আর এই সাফল্যের পিছনে আছে এক অনুপ্রেরণাদায়ক মানুষ —
শ্রীকান্ত বধূক।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচয়, আর সেখান থেকেই শুরু এক নতুন অধ্যায়। শ্রীকান্ত বাবু অন্বেষাকে শুধু স্বীকৃতি দেননি,
বিশ্বাস দিয়েছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন, বলেছেন — “আমি তোমার পাশে আছি।”
অন্বেষা বলে —
“আমি চাই, আমার মা-বাবা যেন একদিন গর্ব করে বলতে পারেন, ‘আমাদের মেয়েও পারে, মেয়েরাও পারে মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করতে।’