কাল বাবু

কাল বাবু বন্ধু জীবন কিন্তু একটাই ❤️

অনেক অনুভূতি থাকে, যেগুলোর কোনও উচ্চারণ হয় না—তারা শুধু অস্তিত্বের গভীর প্রান্তে বসবাস করে। আরমান জানে, সে এমনই এক অনুভব...
03/05/2025

অনেক অনুভূতি থাকে, যেগুলোর কোনও উচ্চারণ হয় না—তারা শুধু অস্তিত্বের গভীর প্রান্তে বসবাস করে। আরমান জানে, সে এমনই এক অনুভবের ধারক—যার কোনও ভাষা নেই, শুধু রোদ্দুরের মতো হালকা পোড়া গন্ধ থাকে তার বুকে।

সে হাসে। প্রতিদিন, নিয়ম মেনে। মানুষ ভাবে—এ এক পরিপূর্ণ জীবন।
কিন্তু কেউ জানে না, সে বেঁচে আছে... একটা না-বলা সংলাপের শেষ লাইনের অপেক্ষায়।

তার হৃদয়ে বাস করে একজন। নয়, “বাস করে” বলা ভুল হবে। বরং, সে একরকম মিশে গেছে তার রক্তপ্রবাহে। ঠিক যেভাবে পুরনো দাগ কখনো পুরোপুরি মুছে যায় না, কেবল ফিকে হয়।

সে নেই এখন—তবুও, আরমান তাকে প্রতিদিন খুঁজে পায়।
একটা হঠাৎ বাতাসের ঝাপটা, বা ভীড়ের মাঝে এক চেনা গন্ধ…
তখনই মনে পড়ে যায় সেই চোখদুটো—যা কেবল তাকিয়ে বলতো, “তুমি আছো আমার মাঝে।”

তার নাম বলা নিষিদ্ধ হয়ে গেছে আজকাল।
সে এখন কারো স্ত্রী, কারো ঘরের নাম—তার জন্য আর নয়।
তবু, নামটা প্রতিবার উচ্চারিত হলে আরমানের বুকের ভেতর কোনো এক ক্ষত যেন আবার ফেটে যায়।
শুধু চিৎকার হয় না…
কেননা সেই শব্দ আর শোনা যায় না, তা এখন নিঃশব্দতার শব্দ।

তার অনুপস্থিতি এখন আর অনুপস্থিত নয়।
সে এক অলিখিত উপস্থিতি—যেটা খাটের বাম পাশটা শূন্য রাখে,
রাতের খাবারে তার প্রিয় পদটাকে আর রান্না হতে দেয় না,
যে কান্নার শব্দকে জল ফেলে মুছে ফেলে দেয়ার অভিনয় শিখিয়ে দিয়েছে।

আরমান মাঝে মাঝে ভাবে, ভালোবাসা কি কখনো মারা যায়?
নাকি সে একটা জীবন্ত ভূত হয়ে যায়—যে প্রতিদিন মরে, কিন্তু দাফন হয় না।

অনেক বছর কেটে গেছে।
তার ফোনে এখনো সেই “last seen 5 years ago” লেখা থাকে।
সে চায় না, সেই অনলাইন আসুক। কারণ সে জানে—
যদি কোনওদিন সে আবার অনলাইন হয়,
তবে এই শোক, এই তীব্র না-পাওয়ার সৌন্দর্য ভেঙে যাবে।

সে জানে, এই ভালোবাসার কোনও ঘর নেই।
তবু প্রতিটি সন্ধ্যায়, এক কাপ চায়ের ধোঁয়ায় সে চোখ রাখে—
যদি সেই চোখের প্রতিচ্ছবি একবার ফেরে, ধোঁয়ার মাঝে গলে যায়।

কিছু ভালোবাসা পূর্ণ না হয়েও এতটা গভীর হয়,
যেখানে শূন্যতা হয়ে ওঠে জীবনের সবচেয়ে জীবন্ত অনুভব।

গ্রামের নির্জন প্রান্তে একবার বসন্ত এসেছিল, যে বসন্তে গাছের পাতার কাঁপন যেন হৃদয়ের স্পন্দন হয়ে উঠেছিল রিনার জন্য শুভ্রর ...
01/05/2025

গ্রামের নির্জন প্রান্তে একবার বসন্ত এসেছিল, যে বসন্তে গাছের পাতার কাঁপন যেন হৃদয়ের স্পন্দন হয়ে উঠেছিল রিনার জন্য শুভ্রর হৃদয়ে। রিনা, এক অলিখিত কবিতার মতো, শুভ্রর জীবনের প্রতিটি নিঃশ্বাসে লুকিয়ে ছিল। ওদের বন্ধুত্বের নাম কেউ রাখেনি, কিন্তু সবার চোখে সেটা ছিল এক অপূর্ব মৌন প্রেম—যার ব্যাকরণ ছিল না, কিন্তু অনুভব ছিল গভীর।

শুভ্র চেয়েছিল তাকে সারাজীবনের জন্য আঁকড়ে ধরতে, তবে জীবন কখনো কখনো এক নির্মম চিত্রনাট্য হয়ে আসে, যেখানে নায়কের ভালোবাসা স্বীকৃতি পায় না। রিনার পরিবারে নেমে এসেছিল এক অভিশপ্ত সন্ধ্যা—তার পিতার ব্যবসা দেউলিয়া, সংসারে নেমে আসে হাহাকার। সে রাতে, রিনা একা দাঁড়িয়েছিল শুভ্রর সামনে—চোখে জল, ঠোঁটে নীরবতা।

“তুই জানিস, আমি তোকে ভালোবাসি,” বলেছিল সে।

শুভ্রর গলা শুকিয়ে গিয়েছিল, তবুও বলেছিল, “আমি জানি। কিন্তু এই ভালোবাসা এখন এক পথ নয়—এক সেতু হতে হবে।”

পরদিন ভোরে, রিনা তার আত্মমর্যাদার দায়ে বেছে নেয় এক সম্পন্ন পরিবারের পুত্রকে—বিয়ে করে, পরিবারকে রক্ষা করে, নিজেকে বিসর্জন দেয়।

শুভ্র বুঝেছিল, সে রিনার ভালোবাসার প্রাপ্তি নয়, স্মৃতির আকারে বেঁচে থাকবে। সে বিয়ে করেনি, ঘর বাঁধেনি। এক টুকরো ছবি, একটি পুরনো চিঠি, আর প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরে সেই দীঘির পাড়ে একটানা বসে থাকা—এটাই ছিল তার পরিণতি।

একদিন হঠাৎ খবর এলো—রিনা এখন এক বেসরকারি সংস্থার অধীনে সমাজসেবায় নিয়োজিত। সে এখন হাজার মানুষের হাসির কারণ, কিন্তু নিজের হৃদয়ে এক নিরব কান্না বয়ে বেড়ায়। সে জানে, শুভ্র ছিল তার জীবনের একমাত্র নির্মল সত্য।

তবুও তারা আর কখনো দেখা করেনি।

কিন্তু দু’জনের মধ্যেই আজও প্রতিধ্বনিত হয় সেই পুরনো উচ্চারণ:

“তোমার মাঝে আমি বেঁচে আছি, আর আমার মধ্যে তুমি বিরাজমান।”

রাহুল একসময় ছিল প্রাণবন্ত, হাসিখুশি একজন মানুষ। বই পড়া, গান শোনা, আর কবিতা লেখা ছিল তার নেশা। কলেজ জীবনে তার জীবনে এসেছ...
29/04/2025

রাহুল একসময় ছিল প্রাণবন্ত, হাসিখুশি একজন মানুষ। বই পড়া, গান শোনা, আর কবিতা লেখা ছিল তার নেশা। কলেজ জীবনে তার জীবনে এসেছিল অনন্যা। এক অদ্ভুত গভীর বন্ধুত্বের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে তারা একে অপরের অনুভব হয়ে উঠেছিল।
অনন্যা ছিল স্বপ্নে মোড়া এক মেয়ের নাম। সে ছিল বাস্তবের মাঝে এক অন্য জগতের প্রতিনিধি, যে কিনা সবসময় বলতো—"জীবনে কেউ যদি কাঁদায়, মনে রেখো, কষ্ট বেশিদিন থাকে না, সব ঠিক হয়ে যায়।"

তাদের সম্পর্কটা কখনো প্রকাশ্যে স্বীকৃতি পায়নি। রাহুল চেয়েছিল বলবে, জানাবে সব, কিন্তু অনন্যার চোখে সবসময় একটা দ্বিধা ছিল। হঠাৎ একদিন, কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে অনন্যা চলে গেল। রাহুলের কানে শুধু শেষবারের মতো বাজল সেই চেনা কণ্ঠ—
"এই কষ্টটা বেশিদিন থাকবে না, দুই-তিন দিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে।"

তবে হয়নি।
আজ দশ বছর কেটে গেছে। রাহুল শহর বদলেছে, চাকরি পেয়েছে, পরিচিতজনেরা বিয়ে করে সংসার পেতেছে।
কিন্তু রাহুল আটকে আছে—ঠিক সেই বিদায়ের মুহূর্তে।

প্রতিদিন সে সেই জানালার ধারে বসে থাকে, যেখানে একদিন অনন্যাকে বিদায় জানিয়েছিল।
তার মনে পড়ে—একটা মানুষের চলে যাওয়া সবসময় শরীরের নয়, অনুভবের হয়।
অনন্যা হয়তো দূরে চলে গেছে, কিন্তু তার অভাব, তার কথা, তার শেষ বিদায় আজও রাহুলের ভেতরে কাঁটার মতো বিঁধে আছে।

বহুবার সে নিজেকে বোঝাতে চেয়েছে—ভুলে যাও, এগিয়ে যাও।
কিন্তু মন বোঝে না।
ভালোবাসা যদি নিখাদ হয়, তার হিসেব থাকে না।

রাহুল বলে—
"জীবনের গল্পে আমি বোকাই থেকে গেলাম।
কারণ সেই ভালোবাসার গভীরতাই আমায় বদলাতে দেয়নি।
আজও আমি সেই মানুষটা,
যে চোখের কোণে ভালোবাসা লুকিয়ে রেখে বলে—
জীবনের শেষে বোকা থাকতে চাই।"

বিকেলের নরম রোদ, পার্কের বেঞ্চে বসে থাকা ছেলেটার মুখে বিষাদের ছায়া। চোখের সামনে ভেসে উঠছে পুরনো দিনগুলোর স্মৃতি—সেই প্রথ...
26/03/2025

বিকেলের নরম রোদ, পার্কের বেঞ্চে বসে থাকা ছেলেটার মুখে বিষাদের ছায়া। চোখের সামনে ভেসে উঠছে পুরনো দিনগুলোর স্মৃতি—সেই প্রথম দেখা, প্রথম হাসি, প্রথম হাত ধরা। সে ভেবেছিল, তাদের ভালোবাসা সত্যি, স্থায়ী। কিন্তু আজ, সে বুঝতে পারছে, সে একাই ভালোবেসেছিল।

পেছনে মেয়েটি ধীর পায়ে হাঁটছে, উদাসীন চোখে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে, যেন তার কোনো কিছুতেই ভ্রুক্ষেপ নেই। ছেলেটার বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠছে—এতদিন যে ভালোবাসা সে অনুভব করেছিল, তা কি সত্যি ছিল? নাকি মেয়েটি শুধুই অভিনয় করছিল?

কয়েকদিন আগেও মেয়েটির কণ্ঠে ছিল মধুর মায়া, চোখে ছিল স্বপ্ন। ছেলেটির বিশ্বাস ছিল, তাদের পথ একসঙ্গে চলবে। কিন্তু একদিন, হঠাৎ করেই মেয়েটি বদলে গেল। কথাগুলো সংক্ষিপ্ত হয়ে এলো, হাসিগুলো ফিকে হয়ে গেল। আর আজ—আজ সে তাকে ফেলে চলে যাচ্ছে, একবারও পিছনে না তাকিয়ে।

ছেলেটা চুপচাপ বসে আছে, ঠোঁটের কোণে ম্লান হাসি। হয়তো সে জানত, এটাই তার গল্পের শেষ। কিন্তু হৃদয়ের গভীরে একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—ভালোবাসা কি সত্যিই ছিল, নাকি সে শুধুই অভিনয়ের শিকার হয়েছিল?

বাতাসে ভেসে আসা এক চিলতে শীতল হাওয়া ছেলেটার চোখের কোণে লুকিয়ে থাকা অশ্রুকে মুছে দেয়। সে উঠে দাঁড়ায়, মনে মনে ফিসফিস করে বলে—
"ভালোবাসা যদি অভিনয়ই হয়, তবে এই গল্পের শেষটা আমিই লিখবো..."

আপনার চরিত্র হিসাবে আপনি আমার স্মৃতিতে যায়গা পাবেন ✅
26/03/2025

আপনার চরিত্র হিসাবে আপনি আমার স্মৃতিতে যায়গা পাবেন ✅

শুভ জানালার পাশে বসে আছে, বাইরে অন্ধকার আকাশ চাঁদের আলোয় স্নিগ্ধ, অথচ তার হৃদয়ের আকাশে শুধুই এক অজানা ঝড়ের আগ্রাসন। হাতে...
05/03/2025

শুভ জানালার পাশে বসে আছে, বাইরে অন্ধকার আকাশ চাঁদের আলোয় স্নিগ্ধ, অথচ তার হৃদয়ের আকাশে শুধুই এক অজানা ঝড়ের আগ্রাসন। হাতে ধরা ফোনটায় শেষবার দেখা মেসেজটি এখনো জ্বলজ্বল করছে—

"আমি আসতে চাই... তুমি কি এবারও অপেক্ষা করছ?"

এই একই বাক্য, এই একই নাটকের পুনরাবৃত্তি, কিন্তু কেন? কেন প্রতিবার ফিরে এসে আবার হারিয়ে যায় সে? কীসের এত দ্বিধা? শুভ কি তবে কেবলই এক সস্তা অবসর, নাকি তৃষার মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা এক পরিত্যক্ত আবেগ?

প্রথমবার যখন তৃষা চলে গিয়েছিল, শুভ কিছুই বুঝতে পারেনি। সম্পর্কটা তো সুন্দরই ছিল! একসঙ্গে বৃষ্টি ভেজা বিকেল, রাতভর কথা বলা, ভবিষ্যতের অসংখ্য স্বপ্ন— সব তো ছিল নিখুঁত! তাহলে তৃষা হঠাৎ চলে গেল কেন?

দিন পার হতে থাকল, রাতগুলো দীর্ঘতর হলো, অথচ কোনো উত্তর এলো না। শুভ একসময় মেনে নিল, কিছু প্রশ্নের উত্তর কখনোই মেলে না। কিন্তু তখনই তৃষা ফিরে এলো, যেন তার চলে যাওয়াটা কোনো ক্ষণস্থায়ী ভুল ছিল।

"আমি জানি, তুমি অপেক্ষা করছিলে," বলেছিল সে, চোখে এক অদ্ভুত নির্লিপ্ততা নিয়ে।

শুভ কিছুই বলতে পারেনি, শুধুই ভেবেছিল— ভালোবাসা যদি সত্য হয়, তাহলে কি ফিরে আসার জন্য কখনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয়? হয়তো না।

কিন্তু এরপর?

এরপর আবার তৃষা হারিয়ে গেল, ঠিক আগের মতো। ফোন বন্ধ, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে উধাও, কোনো খোঁজ নেই। শুভ জানত, এমনটা হতে পারে, তবুও কেন বিশ্বাস করেছিল যে এবার সে থাকবে? কেন এত সহজে সে আবার তাকে গ্রহণ করেছিল?

কয়েক মাস পর আবার ফিরে এলো তৃষা।

"তুমি তো জানো, আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারি না," বলেছিল সে।

কিন্তু তাহলে বারবার যাওয়ার কী মানে? এই ‘থাকা না থাকার’ দোলাচলটা কেবল শুভর জন্য, নাকি তৃষার নিজের মনের ভেতরেও এক দোদুল্যমানতা কাজ করে?

এই খেলা চলতেই থাকল। প্রতিবার শুভ ভেবেছে, এবার আর ফিরতে দেবে না। কিন্তু তৃষা ফিরে এলে তার সমস্ত প্রতিজ্ঞা গলে যেত। ভালোবাসা কি এতটাই দুর্বল? নাকি শুভই সেই দুর্বল ক্রীড়নক, যে প্রতিবার একই ভুল করে?

কিন্তু এবার?

এবার শুভর হাতে আরেকটা বিকল্প আছে— না বলা।

সে কি পারবে? যদি সে আজ ‘না’ বলে, তবে কি তৃষা কখনো সত্যি সত্যি তার কাছে ফিরে আসবে? যদি সে ফিরেও আসে, তবে সেটা কি ভালোবাসা হবে, নাকি শুধুই এক জেদ, এক অস্থির খেলা?

শুভ জানালার বাইরে তাকাল। রাতের অন্ধকারে পূর্ণিমার আলো পড়েছে রাস্তায়। ফোনটা একবার দেখল সে।

"আমি আসতে চাই... তুমি কি এবারও অপেক্ষা করছ?"

শুভ চোখ বন্ধ করল।

এই খেলা কি আজ শেষ হবে? নাকি সে আবারও সেই একই ভুল করবে?

কালাবাবু

02/03/2025

শেষ বিকেলের দেখাএকটি শান্ত বিকেল। পার্কের মধ্যে নরম রোদ মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছে। গাছের পাতায় বাতাসের নরম ছোঁয়া, আর পাখির ডাক ...
02/03/2025

শেষ বিকেলের দেখা

একটি শান্ত বিকেল। পার্কের মধ্যে নরম রোদ মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছে। গাছের পাতায় বাতাসের নরম ছোঁয়া, আর পাখির ডাক যেন এক ধরনের মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

এক বৃদ্ধ লোক লাঠির সাহায্যে ধীরে ধীরে হাঁটছেন। চুলগুলো সাদা হয়ে গেছে, মুখে ক্লান্তির ছাপ। তার চোখের দিকে তাকালে বোঝা যায়, তিনি অনেক কিছু হারিয়েছেন, কিন্তু কিছু যেন এখনো রয়ে গেছে তার অপেক্ষায়।

অন্যদিকে, একটু দূরে আরেকজন বৃদ্ধ লোক ও এক বৃদ্ধা মহিলা পাশাপাশি হাঁটছেন। দুজনেরই বয়স বেড়েছে, কিন্তু একে অপরের সঙ্গে থাকার অভ্যাস বদলায়নি। মহিলাটির চোখে যেন এক অদ্ভুত শূন্যতা, আর বৃদ্ধ লোকটির দৃষ্টিতে গভীর প্রশ্রয়।

তারা ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতে সামনে এগিয়ে এল। দু'পক্ষই যখন একে অপরের কাছাকাছি আসলো, তখন বৃদ্ধ মহিলার মুখে একটা থমকে যাওয়া ভাব দেখা দিল। লাঠির সাহায্যে হাঁটা বৃদ্ধ লোকটি তার দিকে তাকিয়ে রইলেন। চোখে একটা চেনা অনুভূতি।

বৃদ্ধার চোখেও একই অনুভূতি। অনেক বছর আগের কথা মনে পড়ে গেল। এই লোকটিই তো ছিল তার প্রথম প্রেম! একসময় দুজনের জীবনের পথ ভিন্ন হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু মন থেকে কখনো মুছে যায়নি একে অপরকে।

বৃদ্ধার সঙ্গী অবাক হয়ে তার মুখের পরিবর্তন লক্ষ করলেন। বৃদ্ধ লোকটি সামনের দিকে এগিয়ে এসে শান্ত কণ্ঠে বললেন, "তুমি কেমন আছো?"

বৃদ্ধা মৃদু হেসে বললেন, "ভালো… কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কিছু উত্তর পাওয়া হয়নি।"

লাঠির ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধ লোকটি গভীর শ্বাস নিয়ে বললেন, "আমি তোমাকে খুঁজেছি... কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।"

বৃদ্ধার চোখে এক ফোঁটা জল চিকচিক করলো। পাশের বৃদ্ধ লোকটি তাদের দিকে তাকিয়ে রইলেন, যেন বুঝতে পারলেন, জীবনের কিছু প্রশ্নের উত্তর সময়ের হাতেই লেখা থাকে।

সূর্য তখন ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছিল। শেষ বিকেলের আলোয় তাদের মুখে যেন পুরোনো দিনের ছায়া খেলা করছিল। কেউ কিছু বলল না, শুধু বাতাস বয়ে যাচ্ছিল পুরনো স্মৃতির মতো।

শেষ হয়েও শেষ নয়...

কখনো কখনো জীবন আমাদের এমন এক জায়গায় নিয়ে আসে, যেখানে আমরা একবার হলেও পুরনো সম্পর্ককে ছুঁয়ে দেখতে চাই। হয়তো এই দেখা হওয়াটাই তাদের না বলা গল্পের শেষ অধ্যায় হয়ে থাকলো…

01/03/2025

Such a terrible movie 😱

রাত গভীর, চারপাশ নৈঃশব্দ্যে আচ্ছন্ন। অর্পণ জানালার পাশে বসে আছে, হাতে একটা পুরনো চিঠি, যার প্রতিটি শব্দে এখনও এক অসমাপ্ত...
01/03/2025

রাত গভীর, চারপাশ নৈঃশব্দ্যে আচ্ছন্ন। অর্পণ জানালার পাশে বসে আছে, হাতে একটা পুরনো চিঠি, যার প্রতিটি শব্দে এখনও এক অসমাপ্ত আবেগ লেগে আছে। চাঁদ মেঘে ঢাকা, যেন প্রকৃতিও আজ তার দুঃখের ভাগীদার।

কিছু অনুভূতি বোঝার জন্য শব্দের প্রয়োজন হয় না—তারা রক্তের সাথে মিশে যায়, শ্বাসের সাথে প্রবাহিত হয়। অর্পণ বুঝতে পারছে, বিশ্বাসঘাতকতা কেবল হৃদয় ভাঙে না, বরং আত্মার গভীরতম স্তরে এক চিরস্থায়ী ক্ষত তৈরি করে।

রুহির জন্য সে তার সবটুকু ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছিল। স্বপ্ন দেখেছিল একসঙ্গে পথচলার, ভালোবাসার প্রতিটি অধ্যায় লিখেছিল রুহিকে কেন্দ্র করে। কিন্তু এক মুহূর্তে সব বদলে গেল। রুহি কেবল তার সঙ্গে প্রতারণাই করেনি, সে ভালোবাসার পবিত্রতাকেই কলুষিত করেছে।

সেদিন বিকেলবেলা যখন সে রুহির চোখে চোখ রেখে জানতে চেয়েছিল—"তুমি কি আমাকে এক মুহূর্তের জন্যও সত্যি ভালোবেসেছিলে?"—রুহি শুধু এক রহস্যময় হাসি দিয়েছিল। সেই হাসির মধ্যে কোনো অনুশোচনা ছিল না, ছিল কেবল বিজয়ের আত্মতৃপ্তি।

"তুমি খুব ভালো ছেলে, কিন্তু ভালোবাসার খেলায় শুধু ভালো হওয়া যথেষ্ট নয়।"

এই কথাটাই যেন অর্পণের বুকের গভীরে ছুরি চালিয়েছিল। সে বুঝতে পারল, কিছু মানুষ ভালোবাসাকে কেবল এক বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে দেখে, এক ঝলমলে মোহ, যা প্রয়োজন ফুরোলেই ছুঁড়ে ফেলা যায়।

অর্পণের মনের মধ্যে তখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল—ভালোবাসা যদি সত্যিই এতটাই মূল্যহীন হয়, তবে মানুষ কেন ভালোবাসার জন্য নিজের সর্বস্ব দিয়ে দেয়? কেন এই অনুভূতি মানুষকে স্বর্গের স্বাদ দেয় আবার নরকের আগুনেও পোড়ায়?

সে জানে, রুহি তার জীবন থেকে চলে গেছে, কিন্তু তার ছায়া থেকে কি কখনও মুক্তি পাওয়া সম্ভব? প্রতিটি রাত, প্রতিটি নিঃসঙ্গ মুহূর্ত তাকে মনে করিয়ে দেবে—সে একদা ভালোবাসতে গিয়েছিল, কিন্তু তার ভাগ্যে জুটেছিল প্রতারণা।

তবুও, কোথাও একটা বিশ্বাস এখনও টিকে আছে। হয়তো একদিন সময় তার নিজস্ব ভাষায় বিচার করবে। হয়তো একদিন রুহিও সেই শূন্যতা অনুভব করবে, যা অর্পণের অস্তিত্বকে গ্রাস করে নিয়েছে।

তবে তখন কি খুব দেরি হয়ে যাবে?

"কালাবাবু"

ভাঙা হৃদয়ের জবাবরাফি আর তানিয়া—একটা সময় এদের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হতো। দুজনের প্রেমের গল্পটা ছিল যেন কোনো রোমান্টিক উপন্...
28/02/2025

ভাঙা হৃদয়ের জবাব

রাফি আর তানিয়া—একটা সময় এদের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হতো। দুজনের প্রেমের গল্পটা ছিল যেন কোনো রোমান্টিক উপন্যাসের মতো। রাফি তানিয়াকে চোখের মণির মতো আগলে রাখত, তার সব ইচ্ছা পূরণ করত, নিজের প্রয়োজনের চেয়েও তানিয়াকে বেশি গুরুত্ব দিত। কিন্তু তানিয়া? তার ভালোবাসাটা হয়তো কখনোই সৎ ছিল না।

একদিন হঠাৎ করেই তানিয়া রাফিকে জানায়,
"আমাদের সম্পর্কটা আর টিকবে না। তুমি খুব ভালো, কিন্তু আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি।"

রাফির মনে যেন বজ্রপাত হয়। সে বিশ্বাসই করতে পারে না, যার জন্য নিজের সবকিছু নিঃস্বার্থভাবে উজাড় করে দিয়েছিল, সেই মানুষটা এত সহজে তাকে ছেড়ে চলে যেতে পারে!

দিনগুলো দুঃসহ হয়ে উঠেছিল রাফির জন্য। রাতে ঘুম আসত না, খাবারে স্বাদ লাগত না, হাসিটা হারিয়ে গিয়েছিল কোথায় যেন। বন্ধুরা বলত, "ভুলে যা! জীবন থেমে থাকে না।" কিন্তু এই কথাগুলো কেবলই শব্দ ছিল, যার কোনো অনুভূতি সে বুঝতে পারত না।

কিন্তু সময় থেমে থাকে না। কষ্ট আর বেদনার মাঝে রাফি ধীরে ধীরে নিজেকে বদলাতে শুরু করল। নিজের ক্যারিয়ারের দিকে মন দিল, নিজেকে শক্তিশালী করে তুলল। সে বুঝতে পারল, যার জন্য নিজেকে এভাবে ভেঙে ফেলছিল, সে তো এক মুহূর্তও তাকে মনে রাখেনি। তাহলে সে কেন কষ্ট পাবে?

বছর দুয়েক পর...

একদিন হঠাৎ করেই তানিয়া আবার রাফির জীবনে ফিরে এল। তার চোখে ছিল অনুশোচনা, কণ্ঠে একরাশ অনুতাপ।

"রাফি, আমি অনেক বড় ভুল করেছি! যার জন্য তোমাকে ছেড়ে গিয়েছিলাম, সে আমাকে সত্যিকারের ভালোবাসেনি। সে শুধু স্বার্থপর ছিল। আমি বুঝতে পেরেছি, ভালোবাসা মানে নিঃস্বার্থতা, আর সেটা আমি তোমার কাছেই পেয়েছিলাম। দয়া করে আমাকে আবার গ্রহণ করো!"

রাফি কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। একসময় যে মেয়েটির জন্য সে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেই মেয়েটি আজ কাঁদছে তার সামনে। কিন্তু আজ রাফি বদলে গেছে। সে শিখেছে, ভালোবাসা কখনোই কারও দয়ার উপর নির্ভর করে না।

সে একটা শান্ত হাসি দিল, তারপর বলল,
"তানিয়া, আমি তোমাকে সত্যিই ভালোবেসেছিলাম, কিন্তু এখন আমি নিজেকে আরও বেশি ভালোবাসি। তুমি যখন আমার ভালোবাসার মূল্য দাওনি, তখন আমি ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু আজ আমি জানি, নিজেকে ভালোবাসাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি, কিন্তু ফিরে পাবার কোনো প্রশ্নই আসে না।"

তানিয়া হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। তার চোখে জল নেমে এল।

রাফি আর এক মুহূর্তও দাঁড়াল না। সে ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে গেল, নতুন জীবনের দিকে, যেখানে কোনো দুঃখ নেই—শুধু আত্মসম্মান আর নতুন এক সূর্যোদয়ের প্রতীক্ষা!

"যে মানুষ তোমার সত্যিকারের কদর বোঝে না, তার জন্য কখনো নিজের কষ্ট বাড়িয়ে তুলো না। একদিন সে ফিরে আসবেই, কিন্তু তখন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থেকো।"

অপেক্ষার প্রহররাত তখন প্রায় ১১টা। পুরো শহর নিস্তব্ধ, মাঝে মাঝে রাস্তার বাতিগুলো একটানা জ্বলছে আর নিভছে। অরণ্য ঘরের এক ক...
28/02/2025

অপেক্ষার প্রহর

রাত তখন প্রায় ১১টা। পুরো শহর নিস্তব্ধ, মাঝে মাঝে রাস্তার বাতিগুলো একটানা জ্বলছে আর নিভছে। অরণ্য ঘরের এক কোণে বসে মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তার চোখে ক্লান্তির ছাপ, মুখে হতাশার ছায়া।

আজ সে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ফোন কল করার চেষ্টা করছে, কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হচ্ছে। নেটওয়ার্কের সমস্যাও হতে পারে, কিংবা হয়তো অন্য প্রান্তের মানুষটি ইচ্ছা করেই ফোন ধরছে না। তবুও সে আবার চেষ্টা করে—একবার, দু’বার, দশবার... ফলাফল একই।

মনে পড়ে যাচ্ছে পুরোনো দিনের কথা। কিছুদিন আগেও এই নাম্বারটা ডায়েল করলেই ওপাশ থেকে চেনা এক কণ্ঠস্বর ভেসে আসত— “হ্যালো, অরণ্য! কী খবর?” কিন্তু আজ যেন সেই কণ্ঠস্বর হারিয়ে গেছে কোনো এক অজানা শূন্যতায়।

অরণ্য গভীর শ্বাস নেয়, অতীতের স্মৃতিগুলো চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। শেষবার যখন মানসীর সঙ্গে কথা হয়েছিল, তখনও অনেক কথাবার্তা হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যে একটা কথা বারবার মনে বাজছে—

“তুমি আমার থেকে ভালো মেয়ে ডিজার্ভ করো, অরণ্য!”

সে বুঝতে পারছিল, মানসী ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। ভালো থাকার অজুহাতে, ভালোবাসার কথা বলে সম্পর্কটা শেষ করে দিতে চাইছে। অরণ্য মানসীর কণ্ঠে আগের সেই উষ্ণতা খুঁজে পাচ্ছিল না।

তার মনে পড়ে গেল তার বন্ধু আদিত্যর কথা। সেও একসময় এমনই একটা সম্পর্কে ছিল। প্রথমে গভীর বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম। কিন্তু ধীরে ধীরে কথাবার্তা কমে এলো, দূরত্ব তৈরি হলো। একদিন হঠাৎ করেই মেয়েটি বলল, "তুমি আমার জন্য পারফেক্ট নও, তুমি আরও ভালো কাউকে ডিজার্ভ করো।"

অরণ্য তখন হেসে বলেছিল, "আরে ও তোকে ছেড়ে গেছে, ঠিক আছে। নতুন কাউকে খুঁজে নে!"

কিন্তু আজ, সে নিজে সেই একই পরিস্থিতির মুখোমুখি।

সে আবারও মানসীর নম্বর ডায়েল করে। এবারও কোনো উত্তর নেই। কিছুক্ষণ পর স্ক্রিনে ভেসে ওঠে—

“Number switched off.”

অরণ্য চুপচাপ মোবাইলটা নামিয়ে রাখে। বুঝতে পারে, কিছু কিছু কল আর কখনোই সংযোগ পায় না, যেমন কিছু কিছু সম্পর্ক আর আগের মতো ফিরে আসে না।

বাইরের রাস্তার বাতিগুলো তখনও জ্বলছে আর নিভছে। ঠিক যেমন তার মনে স্মৃতির আলো-আঁধারির খেলা চলছে...

সমাপ্ত
কালাবাবু

Address

SADIALER KUTHI
Cooch Behar
736168

Telephone

+919547484977

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when কাল বাবু posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to কাল বাবু:

Share

Category