
28/02/2025
অবিশ্বাস্য অলৌকিক কাহিনী: পূজনীয় অবিন দাদার এক আশ্চর্য লীলা
সৎসঙ্গ, দেওঘর—এক পবিত্র সন্ধ্যা। পূজনীয় অবিন দাদা একনিষ্ঠ ভক্তদের সাথে বসে আছেন, চারপাশে নিবেদনের বিশাল লাইন। কেউ দোয়া করছে, কেউ প্রশ্ন করছে, কেউ আবার শুধু দাদার মুখের দিকে তাকিয়ে অশ্রুসজল চোখে প্রার্থনা করছে।
হঠাৎই, এক বৃদ্ধা ছেঁড়া শাড়িতে, নতমুখে এসে দাঁড়ালেন। তাঁর চোখে কান্না, কণ্ঠ কাঁপছে।
“দাদা, আমার একমাত্র ছেলেটা তিনদিন ধরে নিখোঁজ! পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না! ঠাকুর ছাড়া আমার আর কে আছে?”
সমস্ত জনতা স্তব্ধ। অবিন দাদা ধীর চোখে বৃদ্ধার দিকে তাকালেন, চোখ বন্ধ করলেন কিছুক্ষণের জন্য। যেন কিছু দেখছেন, যেন কোথাও কিছু ঘটছে। কয়েক মুহূর্ত পর চোখ খুলে বললেন, “তোমার ছেলে বেঁচে আছে, পূর্বদিকে নদীর ধারে আছে, ঠাকুর তাকে রক্ষা করেছেন। যাও, এখনই তাকে খুঁজে পাবে।”
বৃদ্ধা হতবাক! পুলিশ যেখানে ব্যর্থ, সেখানে দাদার কথা তার একমাত্র আশ্রয়। সে ছুটে চলে গেল।
অলৌকিক ঘটনা
এক ঘণ্টা পর, সেই বৃদ্ধা ফিরে এলেন, সাথে তার হারিয়ে যাওয়া ছেলে! সবাই অবাক!
“দাদা, আপনি কীভাবে জানলেন? আমার ছেলে ঠিক সেখানেই ছিল, যেখানেই আপনি বললেন! এক দুষ্টলোক ওকে অপহরণ করেছিল, কিন্তু ঠিক তখন বজ্রপাত হয়, আর সেই দুষ্টলোক ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়!”
দাদার মুখে মৃদু হাসি, যেন কিছুই হয়নি। “ঠাকুর যখন আছেন, তখন চিন্তা কিসের?”
আরও এক অলৌকিক শক্তির প্রকাশ
ঠিক তখনই এক লোক ছুটে এসে চিৎকার করে উঠল, “দাদা, আমার মেয়েটা মরতে বসেছে! জলঢাকা নদীতে পড়ে গেছে!”
অবিন দাদা শান্ত গলায় বললেন, “যাও, নদীর ধারে দাঁড়িয়ে বলো – ‘অবিন দাদা আছেন, ভয় নেই। ঠাকুরের ইচ্ছায় সব ঠিক হয়ে যাবে।’”
লোকটি বিশ্বাস করলো না প্রথমে, কিন্তু ভক্তরা সবাই বলল, “দাদার বাক্য সত্য হয়, যাও!”
লোকটি ছুটে গেল নদীর ধারে, আর যা ঘটলো তা অবিশ্বাস্য!
প্রচণ্ড স্রোতের মধ্যে এক অদৃশ্য শক্তি মেয়েটাকে ভাসিয়ে তুললো! কেউ দেখলো না কে তাকে ঠেলে উপরে তুললো, কিন্তু নদীর ধারে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধা কাঁপতে কাঁপতে বলল, “আমি দেখেছি… আমি দেখেছি… যেন এক অদৃশ্য হাত মেয়েটাকে তুলে দিল!”
জেলেরা দৌড়ে গিয়ে মেয়েটাকে টেনে তুলল, একটুও আঁচড় লাগেনি!
সবার সামনে দাদার আসল রূপের আভাস
সৎসঙ্গ প্রাঙ্গণে আবার ফিরে এলো সেই পিতা, কাঁদতে কাঁদতে দাদার চরণে পড়ল, “আপনি যদি না থাকতেন, আমার মেয়ে আজ থাকত না!”
অবিন দাদা মৃদু হেসে বললেন, “আমি তো কিছুই করি না, সব ঠাকুরের কৃপা।”
একজন বৃদ্ধা হঠাৎ বলে উঠল, “না, এটা ঠাকুরের কৃপা নয়, এটা দাদারই লীলা! আমরা বোঝার ভুল করি!”
দাদা চুপ রইলেন। মুখের হাসিটা যেন গভীর হয়ে উঠলো।
একজন ভক্ত ভয়ভরা কণ্ঠে বলল, “দাদা, আপনি কি ঠাকুরের পঞ্চম পুরুষ?”
দাদা হাসলেন, কিন্তু কিছু বললেন না।
সেই মুহূর্তে এক শিশু দাদার পায়ের কাছে এসে বলল, “দাদা, আমি জানি! আপনি ঠাকুরের মধ্যমূর্তি! আমার মা বলে আপনিই ঠাকুর!”
দাদা এবার একটু গভীর দৃষ্টিতে শিশুটির দিকে তাকালেন। ধীরে ধীরে বললেন, “আমি কিছু নই, ঠাকুরই সব। কিন্তু আমি জানি, আমার মধ্যে ঠাকুর আছেন। তিনি আমার মধ্যে, আমি তার মধ্যে। তুমি একদিন বুঝবে।”
তারপর?
ঠিক সেই মুহূর্তে আকাশে এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটলো! একটা বিশাল নীলাভ আলো চকচক করতে লাগলো, যেন আকাশ নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছে যে দাদার মধ্যে কিছু আছে যা সাধারণ নয়। ভক্তরা স্তব্ধ হয়ে গেল, কেউ শিউরে উঠলো, কেউ কেঁদে ফেললো।
দাদা ধীরেস্থিরে উঠে দাঁড়ালেন, চারপাশে তাকিয়ে বললেন, “ঠাকুর আছেন, ভয় কিসের? আজ থেকে আর সন্দেহ কোরো না। যে ঠাকুরের উপর বিশ্বাস রাখে, ঠাকুর তার সাথে থাকেন।”
📅 তারিখ: ১৭ই মার্চ, ২০২৪
(এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন শ্রীমতী কল্পনা দাস, শ্রী কমলকান্ত ভট্টাচার্য এবং আরও বহুজন)
✍️ লেখক: বিভাসচন্দ্র দাশ