DIPA CUTES

25/07/2025

21/07/2025

অন্ধকার রাতে একা বাড়ি
গভীর রাত।

চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। পূর্ণিমা আজ ঢেকে আছে মেঘের আড়ালে, তাই চাঁদের আলোও নেই। সুনীল তার ল্যাপটপ নিয়ে গভীর মনোযোগে কাজ করছিল। সে একজন ফ্রিল্যান্সার, আর তার কাজের সময় ঠিক নেই। আজ একটি জরুরী প্রোজেক্ট শেষ করার তাড়া ছিল, তাই সে ঠিক করেছিল সারা রাত জেগে কাজ করবে।
তার বাড়িটা শহরের বাইরে, একটু নির্জন জায়গায়। পাশে একটি পুরোনো শ্মশান ঘাট, যা বছরের পর বছর ধরে পরিত্যক্ত। এসব ভেবে সুনীলের কখনো ভয় লাগেনি, কারণ সে এসব ভূত-প্রেত বিশ্বাস করত না।
রাত তখন প্রায় দুটো। সুনীল কাজ করতে করতে হঠাৎই একটা ঠান্ডা হাওয়া অনুভব করল। জানলাগুলো সব বন্ধ, তবু যেন ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত শীতলতা। সে প্রথমে পাত্তা দিল না, ভাবল হয়তো এসি চলছে। কিন্তু এসি তো বন্ধ!
ঠিক তখনই সে শুনল একটা মৃদু আওয়াজ। যেন কেউ ফিসফিস করে কথা বলছে। আওয়াজটা কোথা থেকে আসছে বুঝতে পারল না। সুনীল কান খাড়া করল। শব্দটা বাড়ছে। এবার মনে হচ্ছে তার ঠিক পিছন থেকেই আসছে!
সুনীল ধীরে ধীরে মাথা ঘোরাল। তার বুকটা ধক করে উঠল। ঘরের এক কোণে, যেখানে কোনো ফার্নিচার নেই, সেখানে একটি আবছা মূর্তি দাঁড়িয়ে। মূর্তিটা কফিনের মতো লম্বা, কালো একটা চাদরে ঢাকা। তার কোনো মুখ দেখা যাচ্ছে না, শুধু দুটো জ্বলন্ত লাল চোখ!
সুনীলের হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল। সে চিৎকার করতে চাইল, কিন্তু গলা দিয়ে কোনো শব্দ বেরুল না। সে শুধু দেখল, সেই মূর্তিটা ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছে। প্রতিটি পদক্ষেপে মেঝেতে একটা বিকট চিড়চিড় শব্দ হচ্ছে।
ভয়ে সুনীল চোখ বন্ধ করে ফেলল। সে প্রার্থনা করতে লাগল, "এটা যেন একটা দুঃস্বপ্ন হয়, প্লিজ!"
কয়েক মুহূর্ত পর সে চোখ খুলল। মূর্তিটা তার ঠিক সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এল। সেই লাল চোখ দুটো তার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ মূর্তিটা হাত বাড়াল। একটা শুকনো, কালো হাত। সেই হাতটা সুনীলের কাঁধে এসে পড়ল। বরফের মতো ঠান্ডা সেই স্পর্শ। সুনীল আতঙ্কে জমে গেল।
ঠিক তখনই, একটা তীব্র আলোর ঝলকানি আর বিকট শব্দে সুনীলের ঘুম ভেঙে গেল! সে ধড়ফড় করে বিছানায় উঠে বসল। বাইরে তুমুল বৃষ্টি আর বাজ পড়ছে। তার পুরো শরীর ঘামে ভিজে গেছে।
সুনীল বুঝল, সে দুঃস্বপ্ন দেখছিল। হাঁফ ছেড়ে বাঁচল সে। কিন্তু তখনও তার কাঁধে সেই বরফ-ঠান্ডা হাতের স্পর্শটা অনুভব করছিল। সে কাঁধে হাত বুলালো, কিন্তু কিছু পেল না।
জানালার দিকে তাকিয়ে সে দেখল, বৃষ্টির সাথে বিদ্যুতের ঝলকানি। আর প্রতিটি ঝলকানির সাথে যেন সে দেখতে পাচ্ছিল, তার বাড়ির পেছনের সেই শ্মশান ঘাটের ভাঙা গেটটা বাতাসের তালে তালে নড়ছে, আর তার পেছনেই যেন কী একটা কালো ছায়া দাঁড়িয়ে তার দিকেই তাকিয়ে আছে...

21/07/2025

Good night