
18/09/2025
মানবজীবন : এক অনন্ত রহস্য
মানব জীবনে সমস্যার অবসান নেই—এখানে যেমন আছে ভালো, তেমনি আছে মন্দ। কেউ জীবনটা কীভাবে শুরু করবে তা নিয়ে ব্যস্ত চিন্তায় নিমগ্ন, আবার কেউ জীবন শেষ করার ভাবনায় ভরিয়ে রাখে নিজের হৃদয়। হতাশা ও ব্যর্থতার ভারে যেন দম বন্ধ হয়ে আসে কারো কারো প্রাণ।
তবুও প্রশ্ন জাগে—এই বিশাল পৃথিবীতে এমন কোনো প্রাণী কি আছে, যে ভালো থাকতে চায় না? না, সবাই-ই চায় ভালো থাকতে। এই ভালো থাকার আকাঙ্ক্ষা থেকেই কেউ সৎকর্মে নিজেকে যুক্ত করে, আবার কেউ নিঃসংকোচে অন্যের জীবন ধ্বংসের পথ বেছে নেয়।
আল্লাহ তায়ালা অসীম সৌন্দর্যে সৃষ্টি করেছেন মানুষকে। তাদের হৃদয়ে দিয়েছেন ভালোবাসা, ভয়, আল্লাদ, আকাঙ্ক্ষা—অসংখ্য অনুভূতির সমাহার। এ কারণে মানুষকে বলা হয় আশরাফুল মাখলুকাত—সৃষ্টির সেরা প্রাণী। অথচ, এই মানুষকেই ঘিরে লুকিয়ে আছে সবচেয়ে বড় রহস্য।
মানবজীবনের বৈচিত্র্য সীমাহীন। লক্ষ্য করলে দেখা যায়—একই গড়নের মানুষ, কিন্তু কত জাত-পাত, কত ভিন্নতা! কেউ উচ্চবংশীয়, কেউ নিম্নবংশীয়; অথচ এই পার্থক্যের প্রাচীর তৈরি করেছে মানুষ নিজেরাই। আকাশ-পাতাল তফাৎ।
কেউ অঢেল ধনসম্পদের মালিক, বিলাসবহুল অট্টালিকায় বসবাস করে। আর কেউ পথের ধারে ছন্নছাড়া, নেই নিজের বলে কিছুই। দুমুঠো ভাত তাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। আবার কারো জীবন ছুটে চলে নিরন্তর ব্যস্ততায়—দৌড়াতে দৌড়াতে একসময় বুঝতেই পারে না, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে সে। যখন উপলব্ধি হয়, তখন আর হাতে থাকে না কোনো সময়।
তাহলে কি সবই মিথ্যে? এই জীবন, এই দৌড়ঝাঁপ, এই আকাঙ্ক্ষা—সবই কি মায়া? সত্য বলতে কি কিছু আছে? উত্তর এখনো অজানা।
তবুও জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মাঝখানের ক্ষুদ্র সময়টুকুই আসল জীবন। কেউ কাটায় বিভ্রান্তিতে, কেউ শান্তিতে, কেউবা অশান্তির আগুনে জ্বলতে জ্বলতে। আবার কেউ চিন্তার অবকাশই পায় না—হঠাৎ করেই জীবনের শেষপ্রান্তে এসে থেমে যায় তার যাত্রা। বাকি থেকে যায় শুধু অজানার অন্ধকার।
এবার আসি আমার কথায়। আমি মনে করি, মানবজীবন আমার, আর এই জীবন নিয়ে অতিরিক্ত বিশ্লেষণ কি সত্যিই প্রয়োজন? জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে হিসাব-নিকাশের খাতায় বেঁধে ফেললে কি বাঁচার স্বাদ পাওয়া যায়?
বরং জীবনকে তার আপন গতিতে বয়ে যেতে দেওয়াই শ্রেয় নয় কি?
অতএব আমি বিশ্বাস করি—এই মানবজীবনে সাধ্যের ভেতরে থেকে যতটা সম্ভব নিজের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা ও শখ পূরণ করা উচিত। অন্যথায় জীবন শেষমেশ অপ্রাপ্তির খাতায় জমা পড়বে।
✍️ Abul Bashar Mohammad Mahi