এক যে ছিলো নেতা

এক যে ছিলো নেতা যুক্তি-তর্কের রঙ্গমঞ্চে ভূত-ভবিষ্যতের বিশ্লেষন..✿
(279)

🌻| আদর্শরা বেচেঁ থাকে... |🌻🗓️ ১৭ ই জানুয়ারি ১৯৪১ 🗓️গভীর রাতে ভবানীপুরের ৩৮/২ এলগিন রোডের বাড়ি থেকে ❝ দ্য এম্পায়ার অব ...
09/06/2025

🌻| আদর্শরা বেচেঁ থাকে... |🌻

🗓️ ১৭ ই জানুয়ারি ১৯৪১ 🗓️

গভীর রাতে ভবানীপুরের ৩৮/২ এলগিন রোডের বাড়ি থেকে ❝ দ্য এম্পায়ার অব ইন্ডিয়া লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ❞ সংস্থার ট্র্যাভেলিং ইন্সপেক্টর মহম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছদ্মবেশে নিজ গৃহে বন্দি অবস্থা থেকে অন্তর্ধান করলেন ---

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

নেতাজির ছদ্মবেশের কালো ফেজ টুপি, সালোয়ার, স্যুটকেস কেনাকাটা ও ছাপাখানায় গিয়ে মহম্মদ জিয়াউদ্দিনের নামে নকল কার্ড ছাপানোর কাজগুলো নেতাজির ভাইপো শিশির কুমার বসুর সাথে মিলে করলেন তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমতম প্রান্তের সুদূর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মানুষ নেতাজির ডাকে সাড়া দিয়ে পেশোয়ার থেকে কলকাতায় আগত --

মিঞা আকবর শাহ

এবং মহানিষ্ক্রমণের পর নেতাজি গিয়ে পৌঁছালেন পেশোয়ারেই। সেখানে তাঁর আশ্রয়দাতা ও সাহায্যকারী ---

মিঞা আকবর শাহ

পরবর্তীতে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম গুরুত্বপুর্ন ফ্রন্ট সংগঠন ❝ কীর্তি কিষাণ পার্টি ❞র কর্মী হিন্দু পাঠান ভগৎ রাম তলোয়ারের সাহায্যে কাবুল হয়ে নেতাজি ইতালীয় কূটনীতিবিদ অরল্যান্ডো মাজোট্টা নাম নিয়ে জার্মানি পাড়ি জমালেন।

🗓️ ৮ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩ 🗓️

ইতালীয় কূটনীতিবিদ অরল্যান্ডো মাজোট্টার ছদ্মবেশ ছেড়ে ভারতীয় জাতির মুক্তিদাতা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু হিসাবে নাৎসি জার্মানির প্রধান অ্যাডলফ হিটলারের সাথে সাক্ষাতের প্রায় মাস আটেক পর ভারতকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার জন্য জার্মানির কিয়েল বন্দর থেকে জার্মান ডুবোজাহাজে চেপে বসলেন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উদ্দেশ্যে।

এই বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় নেতাজির সঙ্গী ❝ জয় হিন্দ ❞ স্লোগানের প্রবক্তা ---

আবিদ হাসান

🗓️ ১৮ ই আগস্ট ১৯৪৫ 🗓️

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি পর্ব। ইতালি, জার্মানি আগেই পরাজয় বরণ করেছে। জাপান আত্মসমর্পণ করেছে। গোটা বিশ্বে অক্ষশক্তির একজন সেনানায়কই কেবলমাত্র অধরা। তাঁর শেষযাত্রার রচিত চিত্রনাট্যে একমাত্র জীবিত সাক্ষী ---

হাবিবুর রহমান

যিনি তাঁর জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তাঁর ❝ নেতাজি ❞কে দেওয়া কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে গোটা বিশ্বকে একটা মিথ্যা চিত্রনাট্যকে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করে গেছেন।

অর্থাৎ, নেতাজি চিরকাল তাঁর কর্মজীবনের সবথেকে কঠিন, সংকটময়কালে বিশ্বাস রেখেছেন যাদের উপর তারা সকলেই ধর্মে মুসলমান। আর, তাঁরাও নিজের জীবন বাজি রেখেও ❝ নেতাজি ❞র বিশ্বাস রক্ষা করে গেছেন।

তাই, নেতাজিকে প্রকৃত শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে গেলে কেবলমাত্র তাঁর মূর্তি স্থাপন কিংবা কোন রাস্তা কিংবা সড়কের নামকরণ তাঁর নামে করার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। বরং, তাঁর আদর্শকে অনুসরণ করে তাঁর স্বপ্নের ভারত গড়ে তুলতে হবে।

কারণ, তিনিই বলে গেছেন ---

❝ 𝗢𝗻𝗲 𝗶𝗻𝗱𝗶𝘃𝗶𝗱𝘂𝗮𝗹 𝗺𝗮𝘆 𝗱𝗶𝗲 𝗳𝗼𝗿 𝗮𝗻 𝗶𝗱𝗲𝗮, 𝗯𝘂𝘁 𝘁𝗵𝗮𝘁 𝗶𝗱𝗲𝗮 𝘄𝗶𝗹𝗹, 𝗮𝗳𝘁𝗲𝗿 𝗵𝗶𝘀 𝗱𝗲𝗮𝘁𝗵, 𝗶𝗻𝗰𝗮𝗿𝗻𝗮𝘁𝗲 𝗶𝘁𝘀𝗲𝗹𝗳 𝗶𝗻 𝗮 𝘁𝗵𝗼𝘂𝘀𝗮𝗻𝗱 𝗹𝗶𝘃𝗲𝘀 ... ❞🩷🌿

🇮🇳 জয় হিন্দ 🇮🇳

কলমে ✒️ Avishek Halder

© এক যে ছিলো নেতা

| ে_ছিলো_নেতা |

🔴|❝ উলগুলান ❞এর নেতা..|🔴🗓️ ১৫ই নভেম্বর, ১৮৭৫ 🗓️মুন্ডা প্রথা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার জন্ম হওয়ায় বাবা-মা ছেলের নাম রাখলেন বিরস...
09/06/2025

🔴|❝ উলগুলান ❞এর নেতা..|🔴

🗓️ ১৫ই নভেম্বর, ১৮৭৫ 🗓️

মুন্ডা প্রথা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার জন্ম হওয়ায় বাবা-মা ছেলের নাম রাখলেন বিরসা..💫🌻

চরম দারিদ্র পরিবারটির চিরসঙ্গী। কাজ আর বর্গা জমির পিছনে ঘুরুতে ঘুরতে তাঁরা অধুনা ঝাড়খন্ডের উলিহাটু থেকে কুরুম্বা, ফের নড়ন তারপর বোম্বা…গ্রামে গ্রামে ছুটে বেড়াত। পরবর্তীতে হত দরিদ্র পরিবারটি থিতু হয় চাকলাদ গ্রামে। তবে বাবা-মার দারিদ্র্যের বোঝা একটু হালকা করতে বিরসাকে ছোটবেলাতেই যেতে হয় মামারবাড়ি আইয়ুভাতি গ্রামে।

আর পাঁচটা মুন্ডা ছেলের মতোই বিরসাও সকাল বেলা বেড়িয়ে পড়ত ছাগল-ভেড়ার দল নিয়ে। বনে জঙ্গলে তাদের চড়িয়ে আর দস্যিপনা করেই দিন কাটত। এভাবেই চলল বেশ কিছুদিন। একটা সময় সুর ভড় করল বিরসাকে। কখনো একতারা, কখনো মোহন বাঁশি নিয়ে সুর ধরার চেষ্টা চালায় সে। কিন্তু দরিদ্র বালক খুব বেশি আর এগোতে পারে না।

কয়েকদিন লেখাপড়ার টানে দেশি স্কুলে যাতায়াত শুরু করে বিরসা। তারপর একদিন ভর্তি হয় জার্মান মিশনারি স্কুলে। তবে স্কুল শর্ত দিয়েছিল বিরসাকে খ্রিষ্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে হবে। এই ফাঁদ তখন পাতাই থাকত। আরও অনেকের মতো বিরসাকেও সেই ফাঁদে পড়তে হয়। বিরসা একা হলে হবে না গোটা পরিবারকেই খ্রিষ্টধর্মে ধরমান্তরিত হতে হয়। বিরসা মুন্ডা হয়ে যান বিরসা ডেভিড বিরসা দাউদ। তবে নিজের জাত কিংবা ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা অন্তরে যে রয়েই গেছিল তা বোঝা গেল যেদিন মিশনারি স্কুলের এক শিক্ষক যেদিন মুন্ডাদের নিয়ে একনাগাড়ে যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছিলেন বিরসা সেদিন মুখে কিছু বলতে না পারলেও প্রতিবাদে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে চলে যান।
বিরসার মতো একজন সাধারণ মানুষের ভিতরে একজন অসাধারণ বোধসম্পন্ন মানুষ ছিল যে বিরসাকে তাড়া করত। যে কোনও অন্যায়-অবিচার-অসাম্যের বিরুদ্ধে বিরসা অস্থির হয়ে উঠত। স্কুলে পড়ার সময়েই বিরসা সরদারি আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। প্রথমদিকে সরদারদের আন্দোলনের প্রতি মিশনারিদের মৃদু সমর্থন ছিল কিন্তু পরবর্তীতে আর সেই সহানুভূতিটুকুও ছিল না। তাছাড়া বিরাট সংখ্যক অ-খ্রিস্টান মুন্ডা সরদারি আন্দোলনে যুক্ত থাকায় মিশনারিদের মধ্যেও বিদ্বেষ তৈরি হয়..🌿

মিশনারিরা প্রথমে বিরসাকে সরদারদের আন্দোলন থেকে সরে আসার কথা জানায়। এরপর তারা প্রবল চাপ দিতে থাকলে বিরসা বোঝে মিশনারিদের সঙ্গে আর কোনওরকম সম্পর্ক রাখা সম্ভব নয়। ফলে বিরসা নিজে মশনারি স্কুল ছাড়েন এবং সপরিবারে খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করেন। তবে সরদারি আন্দোলন থেকে বিরসা একদিন সরে আসেন। ব্যক্তিগত অভিঙ্গতা দিয়ে বিরসা বুঝেছিলেন শুধুমাত্র দিকুরাই আদিবাসী মানুষের দুর্দশার একমাত্র কারণ নয়। একদিকে বিদেশি সরকার তথা প্রশাসন অন্যদিকে মিশনারি আর তাদের সঙ্গে দিকুরা আদিবাসী মানুষদের জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে।

যে বন আর ভূমির ওপর আদিবাসী মানুষদের জন্মগত অধিকার বিদেশি সরকার তা কেড়ে নিয়ে তাদের নিঃস্ব করেছে। অন্যদিকে আদবাসীদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে মিশনারিরা তাদের ধর্মান্তরিত করে। এর ওপর আছে দিকুদের অত্যাচার। নিজদের বনভূমে পরবাসী আদিবাসীরা যে তাদের হাজার বছরের ধর্ম ও সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন ; এ কথা মাত্র ২০ বছরের তরুণ বিরসা প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন। কেবল তাই নয় তিনি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠলেন..🔥

বিরসার ধর্ম, হাজার হাজার মুন্ডাদের মুখে ধরতি আবা বা জগত পিতা বিরসার জয়ধ্বনি শুনে ব্রিটিশরা আগে ভাগেই বিদ্রোহের আঁচ অনুভব করল। তাঁরা বুঝতে পারল ; যেভাবেই হোক বিরসাকে জব্দ করতে হবে। তাঁর নেতৃত্বেই আদিবাসী মানুষদের মধ্যে নতুন করে বন আর ভূমি নিয়ে অধিকার বোধ দানা বাঁধছে। কিছুদিনের মধ্যেই ব্রিটিশ সরকার পুরনো বন আইঙ্কে ছোটনাগপুর জঙ্গলে প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিল।
এই খবর মুন্ডাদের মধ্যে ছড়িয়ে যেতেই তাঁরা বিরসার নেতৃত্বে ফুঁসে ওঠে। পাহাড় আর জঙ্গলের ওঁরাও, মুন্ডা-সহ আদিবাসীরা বিদেশী সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে। এরকমই একটা সময়ের অপেক্ষা করছিল ব্রিটিশ সরকার। উসকানি আর বিদ্রোহে মদত দেওয়ার অভিযোগে তাঁরা বিরসাকে বন্দি করে দু’বছর আটকে রাখে। তবে থিতিয়ে যায় না সেই বিদ্রোহ। জেল থেকে বেরিয়ে বিরসা ফের মুন্ডা ও অন্যান্য আদিবাসীদের নিয়ে ঝাপিয়ে পরে ❝ উলগুলান ❞ বা স্বাধীনতা যুদ্ধে।

ব্রিটিশদের আধুনিক অস্ত্রের সামনে বিরসার যুদ্ধ সেদিন পরাজিত হয়েছিল ঠিকই কিন্তু, আদিবাসীদের মনে বিরসাই বন আর ভূমির অধিকার বোধ জাগিয়ে দিয়েছিল। সেই অধিকার কি তাঁরা স্বাধীন দেশেও পেয়েছে..? এ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এখনও খাদ্য আর শিক্ষা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাদের ধর্মান্তরিত করা হয়।

আজ বিরসা মুন্ডার প্রয়াণ দিবসে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি..🌷

© এক যে ছিলো নেতা

| ে_ছিলো_নেতা |

📌 Facebook এর পাশাপাশি আমরা পথচলা শুরু করেছি YouTube এও.. আমাদের কাজ ভালো লাগলে আমাদের channel টি Subscribe করে পাশে থাকবেন..

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের শেষ সময়টা কেমন ছিলো...!💛🌿🗓️ ১৯৫০ সাল, ১৫ই কার্ত্তিক 🗓️কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্য...
09/06/2025

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের শেষ সময়টা কেমন ছিলো...!💛🌿

🗓️ ১৯৫০ সাল, ১৫ই কার্ত্তিক 🗓️

কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারে নেমে এল ঘন অন্ধকার। তিনদিন আগে ধলভূমগড় রাজবাড়ির আমন্ত্রণে এক সাহিত্যসভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন বিভূতিভূষণ। সে দিন সকালেও প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বেরুবেন তিনি। তাঁর প্রিয় খাবার শুকনো চিঁড়ে আর নারকোল কোরা খেতে দিয়েছিলেন। কল্যানীদেবী। খাওয়ার পরেই উনি বললেন — বুকে বোধহয় চিঁড়েটা আটকে গেছে, বুকটা কেমন ব্যথা লাগছে। কল্যানী বুকে পিঠে মাসাজ করে দিয়ে বললেন, আজকে আর হাঁটতে যেয়ো না। বিভূতিভূষণ চিরপথিক, কথা না শুনে যথারীতি হাঁটতে বেরিয়ে গেলেন।

সন্ধ্যাবেলায় রাজবাড়ি থেকে এলো তাঁকে নিয়ে যেতে। অনেক প্রখ্যাত সাহিত্যিকেরা এসেছিলেন এই সভায় সে দিন। হঠাৎ তাঁর শরীর খারাপ হল। কয়েক বার বমি করলেন। অসুস্থ হয়ে পড়াতে তাঁকে সকলে ধরাধরি করে গাড়িতে তুলে বাড়িতে পৌঁছে দিলেন।
বেশ ঠান্ডা পড়েছে তখন ঘাটশিলায়। খোলার ছাদের বাড়িতেও খুব ঠান্ডা, তা সত্ত্বেও ওঁকে ভেতরের ঘরে নিয়েই যাওয়া গেল না। চারদিকে কাপড় টাঙিয়ে একটা খাটিয়ায় তাঁকে শোওয়ানো হল। ডাক্তার ভাই নুটবিহারী কোরামিন দেওয়া থেকে শুরু করে গরমজলে সেঁক দেওয়া এবং আনুঙ্গিক যা যা করার করলেন। সকলের আপ্রাণ দৌড়াদৌড়ি সত্ত্বেও আরোও অসুস্থ হতে থাকলেন তিনি। ইতিমধ্যে রামকৃষ্ণ আশ্রম থেকে স্বামী প্রজ্ঞানন্দ এসে পড়েছেন।
তাঁকে দেখে বিভূতিভূষণ বললেন — ‘ আমাকে নাম শোনান..। ’🌻

এর মধ্যে তাঁর স্ত্রী কল্যানীদেবী, ভ্রাতৃবধূ যমুনারা বুঝতে পেরেছেন বিভূতিভূষণের মৃত্যু আসন্ন। কল্যানী স্বামীকে কাঁদতে কাঁদতে বলছেন — ‘ তুমি আর দেশের বাড়ি যাবে না?’ কষ্ট হচ্ছে, তাও উনি বলছেন, ‘তোমরা যাবে, আমি সঙ্গে থাকবো।’

এমন সময় পাশের ঘরে পুত্র বাবলু, তখন মাত্র তিন বছর বয়স, কেঁদে উঠেছে। উনি কল্যানীর আঁচল ধরে বাবলুকে নিয়ে আসার জন্য ডাকলেন। কল্যানী বললেন, ‘ আমি কিছুতেই যাবো না। ওকে তো এরপর সারাজীবনই কাঁদতে হবে।’ কিন্তু, বিভূতিভূষণ শুনছেন না। বারবার আঁচল ধরে টানছেন কল্যানীর। অবশেষে কল্যানী তাড়াতাড়ি উঠে গেলেন তাকে আনতে।

স্বামী প্রজ্ঞানন্দ সকলের নাম পাঠ করছেন.. উনার কষ্ট সত্তেও বললেন, ‘ রামপ্রসাদের নাম বললেন না তো?’
এদিকে কল্যানী বাবলুকে নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন। তার দিকে হাসিমুখে তাকালেন বিভূতিভূষণ। এবং তাঁর চোখ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে এলো। তখন রাত আটটা বেজে পনেরো মিনিট..🌷

কলমে ✒️ মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় [ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুত্রবধু ]

© এক যে ছিলো নেতা

| ে_ছিলো_নেতা |

📌 Facebook এর পাশাপাশি আমরা পথচলা শুরু করেছি YouTube এও.. আমাদের কাজ ভালো লাগলে আমাদের channel টি Subscribe করে পাশে থাকবেন..

এখনকার মতন পেসমেকার থাকলে হয়তো আরও অনেকদিন বাঁচতেন তাঁর মা, আক্ষেপ করেছিলেন সত্যজিৎ রায়..💫🌻সত্যজিৎ রায় যখন রবীন্দ্রনাথ ঠ...
08/06/2025

এখনকার মতন পেসমেকার থাকলে হয়তো আরও অনেকদিন বাঁচতেন তাঁর মা, আক্ষেপ করেছিলেন সত্যজিৎ রায়..💫🌻

সত্যজিৎ রায় যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওপর ডকুমেন্টারি তৈরি করছেন তখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাঁর মা সুপ্রভা দেবী,ছবিটা তিনি দেখে যেতে পারেন নি, সত্যজিৎ রায়ের ভাষায় গানকে ভালবাসা আর কাজকে ভালবাসা এ দুটো মা তাঁকে দিয়েছেন৷

সত্যজিৎ রায়ের বাবা সুকুমার রায় কে আমরা চিনি তাঁর মৃত্যুহীন সাহিত্য সৃষ্টির মাধ্যমে৷ তিনি সরস ও সজীবতার মূর্ত প্রতীক৷ আড়াই বছর যমে মানুষে টানাটানি হয়েছে,কালাজ্বরের তখন চিকিৎসাও ছিল না৷ নিজের প্রথম বই 'আবোলতাবোল' বই আকারে প্রকাশিত হওয়া তিনি দেখে যেতে পারেন নি,যদি পারতেন নিশ্চিতভাবে বলা যায় অসম্ভব খুশিই হতেন কি অনবদ্য সৃষ্টি তিনি করেছেন৷

আবালবৃদ্ধ বনিতা উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী,সুকুমার রায়,সত্যজিৎ রায়,লীলা মজুমদার কে যতটা চেনেন, হয়ত সত্যজিৎ জননী সুপ্রভা দেবী কে একই ভাবে চেনেন না! কালীনারায়ণ গুপ্তর নাতনি সুপ্রভা দেবী অসাধারণ গাইতেন৷ মাসি কণক দাশের থেকে সুপ্রভা দেবীর ভাল গলা ছিল,কিন্তু অকালবৈধব্য ও দারিদ্র্য সব নষ্ট করে দিয়েছিল এই বক্তব্য তাঁর কিংবদন্তি পুত্রের৷

মানিকবাবুদের ব্যবসা তখন উঠে গিয়েছে,পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে সুপ্রভা দেবী ছেলে কে নিয়ে ছোট ভাইয়ের আশ্রয়ে এলেন৷ লেডি অবলা বসু কে ধরে নিজে চাকরি নিলেন বিদ্যাসাগর বাণীভবনে৷ সেলাইটা জানতেন,এমব্রয়ডারি করে সত্যজিৎ রায় কে বড় করেছেন, পরিশ্রম করতেন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত৷

বহুমুখী প্রতিভার নারী সুপ্রভা দেবীর গুণের শেষ নেই৷ ১৪বছর বয়সে মানিকবাবু ম্যাট্রিক পাশ করেছেন, ৯বছরে তাঁকে বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে ক্লাস ফাইভে ভর্তি করা হয়৷ এর আগে তাঁর পড়াশোনা শেখা সবটাই মায়ের কাছে৷ অভাব থাকলেও সুপ্রভা দেবী ছেলেকে ভাল স্কুল, কলেজে পড়িয়েছেন৷

মা অবশ্য শেষ পর্যন্ত চাকরি ছেড়েছিলেন, সত্যজিৎ রায় মহাশয় ডি জে কিমারে চাকরি পাওয়ার পর আর তাঁকে আর চাকরি করতে দেন নি৷ প্রথম পদ জুনিয়র ভিসুয়ালাইজার বেতন ৬৫টাকা সঙ্গে ১৫টাকা ডি এ৷
চাকরি জীবনে উন্নতির শিখরে পৌঁছতে থাকেন,বাড়তে থাকে বেতন,'পথের পাঁচালী'-এর পরে যখন চাকরি ছেড়ে দিলেন তখন বেতন দু'হাজার টাকা৷

১৯৫৫সালে 'পথের পাঁচালী' মুক্তি পাবার পরে সত্যজিৎ রায় বিজ্ঞাপন জগতের কাজ ছেড়ে দেন৷নেপথ্যের কারণ হল বিজ্ঞাপন করতে গেলে ক্লায়েন্টদের চাহিদা অনুযায়ী জিনিস তৈরি করতে হত.আর ঠিক সেই ব্যাপারটায় ক্রমশ আস্থা হারাতে শুরু করেছিলেন৷
কিন্তু ছেলে সায়েব কোম্পানির ভাল চাকরি ছেড়ে ফিল্মের নেশায় মেতে ওঠায় প্রথম দিকে সুপ্রভা দেবী মোটেও প্রসন্ন হন নি,তারপর সাফল্য যখন এল ততদিনে মায়ের মন নিশ্চিন্ত হয়েছে ৷ ছেলের সব খবরের কার্টিং একটা লাল খাতায় এঁটে রেখে দিতেন৷ একটু চাপা প্রকৃতির ছিলেন,কিন্তু 'পথের পাঁচালী' দেখে তাঁর চোখেও অশ্রুধারা...🌿

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর ডকুমেন্টারি যখন ছেলে তৈরি করছেন তখন অসুস্থ হলেন সুপ্রভা দেবী,ছবিটা তিনি দেখে যেতে পারেন নি বলে বড় আপশোস ছেলের৷ একই সঙ্গে ছিল আরও বড় আক্ষেপ৷ সেই আক্ষেপের কথা আমরা শুনি মানিকবাবুর নিজের মুখেই -----

“শেষ বয়সে মায়ের ডায়াবিটিস হল সেই সঙ্গে হার্টের গোলমাল৷ এখনকার মতন পেসমেকার থাকলে হয়তো আরও অনেকদিন বাঁচতেন...”🌷

কলমে ✒️ অরুণাভ সেন

♦️তথ্যসূত্রঃ সত্যজিৎ রায় সাক্ষাৎকার সমগ্র (সন্দীপ রায়)

© এক যে ছিলো নেতা

| ে_ছিলো_নেতা |

📌 Facebook এর পাশাপাশি আমরা পথচলা শুরু করেছি YouTube এও.. আমাদের কাজ ভালো লাগলে আমাদের channel টি Subscribe করে পাশে থাকবেন..

☘️| কিশোর সুভাষের মমতাময় হৃদয় |☘️❝ কলকাতায় আমাদের বাড়ির সম্মুখে বসে এক জবুথবু বৃদ্ধা ভিখারি মহিলা প্রতিদিন ভিক্ষা করতো...
08/06/2025

☘️| কিশোর সুভাষের মমতাময় হৃদয় |☘️

❝ কলকাতায় আমাদের বাড়ির সম্মুখে বসে এক জবুথবু বৃদ্ধা ভিখারি মহিলা প্রতিদিন ভিক্ষা করতো। যতবার আমি বাইরে যেতাম বা বাড়ি ফিরতাম, তাকে না দেখে পারতাম না। যখনই তাকে দেখতাম বা এমনকি তার কথা চিন্তা করতাম তার করুন মুখখানি আর তার ছিন্ন বস্ত্র আমাকে যন্ত্রণা দিতো। পাশাপাশি নিজেকে এতো স্বচ্ছল ও সুখী মনে হতো যে আমি অপরাধী বোধ করতাম।🌻

আমার মনে হতো―তিনতলা বাড়িতে বাস করার মতো এরূপ ভাগ্য লাভ করার কি অধিকার ছিল আমার যখন এই নিঃস্ব ভিখারি মহিলাটির তার মাথার ওপরের কোনো আচ্ছাদন ও প্রকৃতপক্ষে কোনো খাদ্য বা বস্ত্র জুটতো না? পৃথিবীতে এতো যদি দুঃখ থেকে যায়, তাহলে যোগের কি মুল্য?

এরকম সব চিন্তা প্রচলিত সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাকে বিদ্রোহী করে তুলেছিল―কিন্তু কি করার ছিল আমার? একটা সামাজিক ব্যাবস্থা'কে একদিনে ভাঙতে বা রুপান্তরিত করতে পারা যায় না। ইতিমধ্যে এই ভিখারিনী টির জন্য কিছু একটা করা দরকার―এবং নিজেকে জাহির করার চেষ্টা না করে, তা করতে হবে।

ট্রামে করে কলেজে যাওয়ার জন্য বাড়ী থেকে আমি টাকাকড়ি পেতাম। তা আমি সঞ্চয় করে দান কার্যে ব্যয় করবো স্থির করলাম। প্রায়ই আমি কলেজ থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরতাম―যার দুরত্ব ছিল তিন মাইলের ওপর―এবং কোনোদিন যথেষ্ট সময় থাকলে হেঁটেও কলেজ যেতাম। তা আমার অপরাধবোধ কতকাংশে লাঘব করেছিল...❞ 💛🌿

— নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

♦️তথ্যসূত্রঃ শ্রী সুভাষচন্দ্র বসু সমগ্র রচনাবলী (প্রথম খন্ড)

🇮🇳 জয়হিন্দ 🇮🇳
✊ জয় নেতাজী ✊

© এক যে ছিলো নেতা

| ে_ছিলো_নেতা |

📌 Facebook এর পাশাপাশি আমরা পথচলা শুরু করেছি YouTube এও.. আমাদের কাজ ভালো লাগলে আমাদের channel টি Subscribe করে পাশে থাকবেন..

08/06/2025

কথা গুলো ভালো করে শুনুন..। আজকের দিনে দাঁড়িয়েও যে বা যারা বলেন ব্রিটিশরা নাকি ভালো ছিলো, তারা না এলে নাকি ভারত মধ্য যুগেই পরে থাকতো – এই কথা গুলো তাদের জন্য...🔴💥

https://www.facebook.com/share/v/197yBSZBpX/

বেলা প্রায় আটটা | আমরা চায়ের আয়োজন করতে ব্যস্ত | আহত কজন সেনা, যাঁরা ট্রাকে এসেছেন, তাঁদের কয়েকটি ছোট ছোট চালা ঘরে শুইয়ে...
08/06/2025

বেলা প্রায় আটটা | আমরা চায়ের আয়োজন করতে ব্যস্ত | আহত কজন সেনা, যাঁরা ট্রাকে এসেছেন, তাঁদের কয়েকটি ছোট ছোট চালা ঘরে শুইয়ে দেওয়া হয়েছে | একটা ফাঁকা মাঠের চারদিকে চালাঘর সাজানো |সব কয়টি ঘরের মুখ মাঠের দিকে | নেতাজী তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক মেজর মেনন ও কর্নেল চ্যাটার্জীর এ- ডি- সি লেফটানেন্ট নাজিরের সাথে একে একে রোগীদের পরীক্ষা করছেন, নার্স রয়েছে তাঁর সঙ্গে | ব্যান্ডেজ পাল্টে দিচ্ছেন, ওষুধ দিচ্ছেন, পথ্যের নির্দেশ দিচ্ছেন | নাজির এসব কাজে তাঁকে সাহায্য করছেনা , সে শুধু দেহরক্ষীর মতো নেতাজীর পাশে পাশে থাকছে | পরিদর্শন সেরে ওঁরা তিনজনে যখন মাঝের উঠানটুকু পার হয়ে আসছে, তখন একেবারে অতর্কিতে আকাশ ভেদ করে ছুটে এলো দুটো ফাইটার শত্রু বিমান |

কর্নেল চ্যাটার্জী চেঁচিয়ে বললেন, টেক শেল্টার!! প্লেনস !!

নার্সটি ছিল অনেক পিছনে- সে ছুটে ফিরে গেল ওদিকের চালাঘরে । ওদের তিন জনের সর্বপ্রথমে ছিলেন মেজর মেনন । প্রানপনে তিনি দৌড়লেন আমাদের পাকা ঘরটা লক্ষ্য করে । মাঝখানে নেতাজী, তিনিও দৌড়াচ্ছেন- কিন্তু আটচল্লিশ বছরের যে প্রৌঢ় মানুষটি সারারাত হেঁটে এসেছেন, টপ বুট পরে তাঁর পক্ষে আর কত জোরে ছোটা সম্ভব? দলের সকলের পিছনে ছিল লেফটেন্যান্ট নাজির আহমেদ । কৃষ্ণসার হরিনের মতো লঘুগতি তরুণ সৈনিক! কলেজে যে হান্ড্রেড ইয়্যার্ডস এ পরপর তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, ফৌজের হকি টিমে যে ছিল দুর্বার সেন্টার ফরওয়ার্ড! নেতাজির এ পথটুকু অতিক্রম করতে যতটুকু সময় লাগবে তার ভিতর সে অনায়াসে গোটা মাঠ বার দুই পারাপার হতে পারে! অথচ চোখের সামনে দেখলাম বড় বড় পা ফেলে সে ঠিক নেতাজির পাশে পাশে হেঁটে আসছে। নেতাজী দৌড়াচ্ছেন, কিন্তু নাজির হাঁটছে । দেহরক্ষী তাঁকে অতিক্রম করে যাচ্চে না। নির্মম কটি মুহূর্ত!

শত্রু পক্ষের প্রথম প্লেনটি একটু নীচে নেমে এলো । নেতাজী রীতিমত হাপিয়ে পড়েছেন । নাজির উপরদিকে একবার তাকিয়ে দেখল, চোখটা আড়াল করেছে হাতের তালুতে। প্লেনটি মেশিনগান চালাতে চালাতে পার হয়ে গেল উঠোনটা। নেতাজী ও নাজিরের দশ, পনেরো ইঞ্চি দুরে মাটিতে কতোগুলো ছোবল পড়ল। ধুলো উড়ে গেল সরল রেখায়, মেজর মেনন ততোক্ষণে এসে পৌঁছেছেন । নেতাজী আমাদের বারান্দা থেকে আন্দাজ ফুট ত্রিশেক দুরে । আর বড়জোর দশটা পদক্ষেপ আর নেতাজীর ঠিক পাশেই নাজির, আমরা যখনই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলতে যাচ্ছি, অমনি দেখি ডাইভ দিয়ে দ্বিতীয় প্লেনটি নেমে এলো । বাজপাখির মতো উড়ে এলো একি সরলরেখায়। মেশিনগানের তীব্র ক্রটাক্রট শব্দ কাছে থেকে আরোকাছে এসে মুহুর্মুহু গুলি ছড়িয়ে আবার উঠে গেল উর্দ্ধাকাশে । ঠিক তার পূর্ব মুহূর্তে নেতাজী একটা লাফ দিয়ে উঠে এলেন আমাদের বারান্দায় । নাজির পারলোনা । লুটিয়ে পড়লো তার রক্তাক্ত দেহ সিড়ির গোড়ায় ।

ছুটে গেলেন নেতাজী ও কর্নেল চ্যাটার্জী । ধরাধরি করে দাওয়ায় তুললেন দেহটা । রক্তে ভেসে যাচ্ছে নাজিরের বাম অঙ্গ। বুলেট লেগেছে তার বাম জানুতে, অনেক গুলোই । আমার চোখের সামনেই ঘটল ঘটনাটা । বুলেট ঝড়ের মধ্যেই নেতাজী কে পিছন থেকে সজোরে শেষ ধাক্কাটা মেরেছিল এই নাজির আহমেদই, ওর ক্ষত দেখতে সজল চোখে সেকথা নেতাজীও বললেন, যার জেরেই একটি বুলেটো নেতাজী কে স্পর্শ করেনি । আমি কিছুক্ষণের জন্য অন্যমনষ্ক হয়ে নাজিরকে ঘিরে আমার অনেক একান্ত মুহুর্তে র কথাগুলো ছবির মতো দেখতে লাগলাম, কর্নেল চ্যাটার্জি র সাথে লেফটেন্যান্ট নাজিরের প্রথমবার বার্মা সীমান্ত পার করে ভারতভূমিতে প্রবেশের সেই আবেগঘন মুহূর্ত, আমার জন্যে আনা নাজিরের প্রথম উপহার স্বাধীন ভারতের এক খন্ড মাটির তাল, সবই একে একে ভেসে উঠল । দিন টা কেমন করে কেটে গেল জানি না, মেজর মেনন ও কর্নেল চ্যাটার্জি একমত হলেন যে হসপিটালে ছাড়া এই ক্ষত নিরাময় করা যাবেনা, নিকটবর্তী হাসপাতাল মৌলমিনে নেতাজী সেখানে যাবার নির্দেশ দিলেন । বিকেলে র দিকে জ্ঞান ফিরলো লেফটেন্যান্ট নাজিরের । আমরা তখন ওকে নিয়ে যাচ্ছি মৌলমিনে হাসপাতালে।পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। আমি বললাম কষ্ট হচ্ছে? নাজির দাতে দাত ‌‌‌‌চিপে বললে হ্যাঁ। নেতাজী ঠিক আছেন?
আমি বললাম হ্যাঁ ।

নাজির তারপরে বললো আমার পা কি কেটে বাদ দিয়েছে!

---- না না! পা তোমার ঠিক আছে, ঠিক হয়ে যাবে!

অসীম যন্ত্রণা র মধ‍্যেও নাজির হাসলো, বললে -- কালই বলেছিলাম না, নাজির হয়তো বিকলাঙ্গ হয়ে যাবে!

আমি আর সহ্য করতে পারিনি, সজোরে ওর মুখ টা চেপে ধরি, কান্না চেপে রেখে বলি , তোমার কথা বলা মানা আছে, হসপিটালের ডাক্তার দেখলে তুমি ঠিক হয়ে যাবে, নাজির কিন্তু মানলো না, ওর মুচকি হাসি বুঝিয়ে দিলো ওকে ফাকি দেওয়া যাবে না । আমার কানে ভেসে এলো কয়েক ঘন্টা আগে ই বলা মেজর মেননের উক্তি, হাসপাতালে পৌঁছে বোধহয় বা পাখানা জানু থেকে কেটে বাদ দিতে হবে। অর্থাৎ, নাজির বাচলে ও হকি টীমের সেন্টার ফরোয়ার্ড আর বাচবে না ।

মৌলমিন হাসপাতালেই লেফটেন্যান্ট নাজির আহমেদ মারা যান, অপারেশনে তার পা কেটে বাদ যায়, আরো দুই দিন বেচে ছিল সে। শেষ সময়ে তার জ্ঞান ছিল কিন্ত কথা বলতে পারত না, আমার দিকে চেয়ে থাকতো, আর দুচোখে জলের ধারা বইতো, আমি চোখের জল মুছিয়ে দিতাম রুমালে!
নাজিরের ব‍্যক্তিগত সম্পত্তি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার হাতেই দিয়েছিল, দেশ স্বাধীন হবার পরে নাজিরের মায়ের ঠিকানায় তার, হাতঘড়ি, কলম ইত্যাদি পার্সেল করে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম, আমার কাছে রইলো শুধু দুটি স্মৃতি চিহ্ন। উর্দু বয়েতে ঠাসা তার একটি ছোট্ট নোট বই। মৌলমিন হাসপাতালে র দক্ষিণ পূর্ব কোনে একটি ফুলে ভরা গুলমোহর গাছের তলায় ওকে কবর দিয়েছিলাম, কবিতার খাতাটা ভিতরে ফেলে দিতে পারিনি, মনে হয়েছিল ও খুশি হবে ওটা আমি নিয়ে এলে ।ঐ খাতাটাই আমাকে উর্দু শিখতে বাধ্য করেছে । এখানকার স্কুলে উর্দু শেখাই আজ। নাজিরের ঐ খাতাটা আমাকে শুধু জীবন দেয়নি, দিয়েছে জীবিকাও। আরো একটা স্মৃতি চিহ্ন আছে । যে রুমাল টা দিয়ে ওর ক্ষতস্থান চেপে ধরেছিলাম একদিন! ঐ একটি রুমাল ই ছিল আমার সম্বল। ঐ রক্তমাখা রুমাল দিয়েই একদিন মুছিয়ে দিয়েছিলাম মৃত্যু পথযাত্রীর চোখের জল ।
পচিশ বছর পার হয়ে গেছে তারপর। আজ আমি প্রৌঢ়া । তবু সে রুমাল তেমন ই আছে । ওর চোখের জলের চিহ্ন মাত্র নেই। জমে আছে শুধু একটা কালো রক্তের দাগ। তাজা রক্ত যেমন শুকিয়ে কালো হয়ে গেছে, শতাব্দীর এক চতুর্থাংশে মর্মান্তিক তীব্র শোকটার ধার ভোতা হয়ে গেছে। তবু ঐ রুমালটা যেদিন বাক্সের তলা থেকে বের করে দেখি তখন পচিশ বছরের ওপার থেকে শুনতে পাই সাতাশ বছর বয়সের কণ্ঠস্বর--

❝ দো লব্জো মে পুশিদা এক মেরি কাহানী হ্যায়।
এক লব্জ মহব্বত হ্যয়, এক লব্জ জওয়ানী হ্যায় ।
আসুকে মেরে লে-কর দামন পে জরা জাচ্চো--
জম যায়ে তো খুন হ্যয়, বহ্ যায়ে তো পানি হ‍্যয় ।।❞🥀

♦️তথ্যসূত্রঃ আমি নেতাজীকে দেখেছি, ‘আরতি নায়ারের’ বয়ান, নারায়ণ স্যান্যাল

ছবি 📸 আজাদ হিন্দ ফৌজের দুই সৈনিক (নাম- অজানা)

🇮🇳 জয়হিন্দ 🇮🇳

© এক যে ছিলো নেতা

| ে_ছিলো_নেতা |

📌 Facebook এর পাশাপাশি আমরা পথচলা শুরু করেছি YouTube এও.. আমাদের কাজ ভালো লাগলে আমাদের channel টি Subscribe করে পাশে থাকবেন..

ভারতের প্রকৌশল কীর্তির নেপথ্য নায়িকা : ❝ চেনাব রেলওয়ে ব্রিজ ❞ এর পেছনে ১৭ বছরের অনন্য অবদান রাখা অধ্যাপিকা গালি মাধবীলত...
07/06/2025

ভারতের প্রকৌশল কীর্তির নেপথ্য নায়িকা : ❝ চেনাব রেলওয়ে ব্রিজ ❞ এর পেছনে ১৭ বছরের অনন্য অবদান রাখা অধ্যাপিকা গালি মাধবীলতা..🩷🌿

কাশ্মীর উপত্যকায় চেনাব নদীর উপরে গড়ে ওঠা চেনাব রেল সেতু আজ ভারতের গর্ব, বিশ্বের বিস্ময়।
৩৫৯ মিটার উঁচু এই সেতুটি আইফেল টাওয়ারের থেকেও উঁচু, এবং এটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেল সেতু। এটি কেবল একটি সেতু নয়, এটি একটি রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার – কাশ্মীরকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে স্থায়ীভাবে সংযুক্ত করার।

কিন্তু আপনি কি জানেন, এই বিশাল সেতুর পেছনে ছিলেন এক নিঃশব্দ, অদম্য নারী বিজ্ঞানী? তিনি হলেন প্রফেসর গালি মাধবীলতা, যিনি হিমালয়ের ভঙ্গুর ভূমির বুকে গড়ে তুলেছেন এই সাফল্যের ভিত্তি..🌻

২০০৫ সাল। চেনাব সেতুর পরিকল্পনা শুরু হয়। তখন Northern Railway প্রকল্পটির জন্য একজন ভূপ্রকৌশল বিশেষজ্ঞ খুঁজছিলেন, যিনি হিমালয়ের দুর্গম ও ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় স্থায়ী ভিত্তি তৈরি করতে পারেন। এই বিশাল দায়িত্ব বর্তায় IIT মাদ্রাজ থেকে ভূপ্রকৌশলে পিএইচডি করা প্রফেসর লতার ওপর, যিনি গবেষণা করেছেন IISc বেঙ্গালুরু-তেও।

তারপর শুরু হয় এক ১৭ বছরের দীর্ঘ যাত্রা, যার প্রতিটি ধাপেই ছিল চ্যালেঞ্জ, ধৈর্য আর সাহস...🏔️

অপরিকল্পিত ভূগোল : হিমালয়ের শিলা প্রতিনিয়ত ভেঙে পড়ছিল। পাহাড়ের গাঁয়ে ছিল অজস্র ফাটল ও শূন্যস্থান।

'𝗗𝗲𝘀𝗶𝗴𝗻 - 𝗮𝘀 - 𝘆𝗼𝘂 - 𝗴𝗼 𝗮𝗽𝗽𝗿𝗼𝗮𝗰𝗵' কৌশল : কোনো বইয়ের সমাধান এখানে কাজ করত না। লতা নিজেই মাঠে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি বুঝে ডিজাইন পরিবর্তন করতেন।

পাথর বাধাঁই ও দৃঢ়ীকরণ : ৬৬ কিমি দীর্ঘ রক অ্যানকর বসানো হয়। ভেতরে সিমেন্ট গ্রাউটিং করে পাহাড়কে শক্ত ভিত্তিতে রূপান্তরিত করা হয়।

মাধবীলতা তাঁর এক বক্তব্যে বলেন, ❝ এই প্রকল্পে কাজ মানেই শুধু বিজ্ঞান না, এটা ছিল এক মনস্তাত্ত্বিক লড়াই – প্রকৃতির অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে নির্ভুল কৌশল প্রয়োগের সাহস..।❞💥

বেশ কিছু রাত তিনি সাইটেই কাটিয়েছেন, যাতে খনন কাজ চলাকালীন মুহূর্তে-মুহূর্তে পরামর্শ দিতে পারেন।

চেনাব সেতুকে তৈরি করতে হয়েছে এমনভাবে যাতে –

⭕ ২৬০ কিমি/ঘণ্টা বেগের বাতাসে কাঁপে না।

⭕ ৮ রিক্টার স্কেলের ভূমিকম্পেও অক্ষত থাকে।

প্রফেসর লতার ভূপ্রকৌশল নকশা এইসব প্রতিকূলতা মোকাবিলায় সফলভাবে কাজ করেছে।

🏁 এক সার্থক পরিসমাপ্তি : প্রথম বন্দে ভারত ট্রায়াল।

২০২৫ সালের ৪ জুন, চেনাব সেতুতে প্রথমবারের মতো বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের পরীক্ষামূলক চলাচল হয়। ভারতের প্রকৌশল ইতিহাসে এটি এক মাইলফলক।

🏅 একাডেমিক সম্মান ও উত্তরাধিকার..

২০২১ সালে তিনি “Best Woman Geotechnical Researcher” (Indian Geotechnical Society) সম্মানে ভূষিত হন।

২০১৬–২০২২: Indian Geotechnical Journal-এর প্রধান সম্পাদক পদ অলংকৃত করেন।

বর্তমানে – IISc-এ অধ্যাপক হিসেবে রয়েছেন..।❤️

চেনাব সেতুর মতো প্রকৌশল বিস্ময় অনেক সময় চোখ ধাঁধিয়ে দেয়, কিন্তু তার ভেতরের নায়কদের আমরা চিনে উঠতে পারিনা। প্রফেসর গালি মাধবী লতা সেই ব্যতিক্রমী মানুষ, যিনি নিজের মেধা, নিষ্ঠা ও সাহস দিয়ে ভারতের প্রকৌশল ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় রচনা করেছেন।

তিনি শুধু সেতু বানাননি, তিনি আগামী প্রজন্মের জন্য স্থাপন করেছেন এক অনুপ্রেরণার স্তম্ভ। তিনি সকলের চোঁখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন ❝ কীভাবে অধ্যবসায় দিয়ে পর্বতও জয় করা যায়...!❞🌷

কলমে ✒️ Indian Defence Policy And Reality

#নারীশক্তি

© এক যে ছিলো নেতা

| ে_ছিলো_নেতা |

📌 Facebook এর পাশাপাশি আমরা পথচলা শুরু করেছি YouTube এও.. আমাদের কাজ ভালো লাগলে আমাদের channel টি Subscribe করে পাশে থাকবেন..

🌻|| বাঙালির পকেট হারকিউলিস ||🌻একটা সময় নাকি ইংল্যান্ডে থাকার প্রস্তাবও তিনি প্রত্যাখান করেছিলেন কলকাতার জন্য। তিনি সব স...
07/06/2025

🌻|| বাঙালির পকেট হারকিউলিস ||🌻

একটা সময় নাকি ইংল্যান্ডে থাকার প্রস্তাবও তিনি প্রত্যাখান করেছিলেন কলকাতার জন্য। তিনি সব সময় বলতেন "কলকাতার মতো আবহাওয়া নাকি কোথাও নেই। এমনকী ইংল্যান্ডেও নেই। এখানকার পরিবেশ বডি বিল্ডারদের জন্য আদর্শ। তাই কখনও কলকাতা ছাড়ার কথা মাথাতেই আসেনি তাঁর।’’ এতটাই টান ছিল তাঁর বাংলার প্রতি |তিনি ‘বিশ্বশ্রী’ মনোহর আইচ..🌿

‘বিশ্বশ্রী’ মনোহর আইচকে তো সবাই চেনেন। তবে তাঁর যে আরও একটা পরিচয় আছে, সেটা কি জানেন? শুনলে হয়তো আঁতকে উঠবেন অনেকে যে, তিনি এক সময় জেলও খেটেছিলেন! তবে চুরি, ডাকাতির জন্য অবশ্যই নয়। মনোহরের সাত বছরের জেল হয়েছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য। স্বাধীনতার আগে। তাঁর সবচেয়ে পুরনো ছাত্র ক্ষিতীশবাবুর কথায়, ‘‘কেউ হয়তো বিশ্বাস করবে না যে, উনি ৪ ফুট ১১ ইঞ্চি হয়েও রয়্যাল এয়ারফোর্সে কাজ করেছেন।এয়ার ফোর্সের একজন অফিসার ছিলেন রিউব মার্টিন। মনোহরের শরীরচর্চা প্রীতি দেখে তিনি তাকে উৎসাহ দেন এবং আধুনিক অনেক শরীরচর্চা পদ্ধতির সাথে তাকে পরিচিত করান। কিন্তু বেশি দিন তিনি চাকরি করতে পারেননি। আসলে ওই সময় একটা নিয়ম ছিল। রাতে ব্রিটিশ অফিসারদের ডিনারের পর যে খাবার বাঁচত, সেটা সকালে ভারতীয় সৈনিকদের দেওয়া হত। আর মনোহরদা সেটা খেতে শুধু অস্বীকার করেছিলেন তাই নয়, প্রতিবাদও করেছিলেন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। যার ফলে সাত বছর সাজা হয় তাঁর।’’

যদিও চার বছরেই সেই সাজা শেষ হয়ে যায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে। লাহৌর, পেশোয়ার হয়ে মনোহরের হাজতবাস শেষ হয় আলিপুর জেলে। তবে এই চার বছরের হাজতবাসের সময় বডি বিল্ডিংয়ের চর্চায় পুরোপুরি ডুবে যান মনোহর। তার মনে হতে থাকে তিনি চাইলে বিশ্ব বডি বিল্ডিং প্রতিযোগীতায় যেতে পারেন। এর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন তিনি। তখন এমন সময়ও গিয়েছে যে, দিনে কোনো ধরনের যন্ত্রপাতি ছাড়াই তিনি বারো ঘন্টা ব্যায়াম করে গেছেন।মজার ব্যাপার হল, বডি বিল্ডিংয়ের প্রতি তাঁর ভালবাসা এবং নিষ্ঠা দেখে জেলের আধিকারিকরাও মনোহরের জন্য জেলে স্পেশ্যাল ডায়েট চালু করে দেন। কেন না মানুষ মনোহরকে কাছ থেকে দেখার পরে মুগ্ধ হন ব্রিটিশরাও। আর মনোহর? কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার জেল থেকে বেরোনোর পরেই হাতেনাতে চলে আসে। এক বছরের মধ্যে স্বাধীন ভারতে প্রথম মিস্টার ইউনিভার্সও হয়ে যান। তারপর একে একে আরও সাফল্য।

মনোহর আইচের জন্ম ১৯১২ সালের ১৭ মার্চ, বর্তমান বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার ধামতি গ্রামে। বারো বছর বয়সে আক্রান্ত হন কালাজ্বরে। রোগটি তাকে প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি নিয়ে, কিন্তু তিনি ফিরে আসেন। ভগ্ন স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে শুরু করলেন দেশীয় স্টাইলে শরীর চর্চা। সেই থেকে শুরু |তাঁর গুরু ছিলেন প্রবাদপ্রতিম বিষ্ণু ঘোষ। বিষ্ণু ঘোষের আখড়াতেই বডি বিল্ডিংয়ের হাতেখড়ি। পড়াশোনা করতেন ঢাকার জুবিলি স্কুলে। একবার সে স্কুলে জাদু দেখাতে আসেন বিখ্যাত জাদুকর পি সি সরকার। মনোহর আইচের শরীর চর্চা ও শরীর নির্ভর ক্রিয়াদি দেখে তার ভালো লাগে। তিনি তাঁর দলে নিয়ে নেন তাঁকে।

মনোহর তখন পি সি সরকারের সাথে বিভিন্ন প্রোগ্রামে তার ক্রীড়াকৌশল দেখাতে শুরু করেন। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল:

• দাঁত দিয়ে ইস্পাত বাঁকানো
• গলার সাহায্যে বল্লম আনমিত করা
• তরবারির উপর পেট রেখে শুয়ে থাকা,
• দেড় হাজার পাতার বই নিমিষে ছিঁড়ে ফেলা

ধীরে ধীরে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেহচর্চার টানে ছুটে গিয়েছেন বিদেশের মাটিতে। ১৯৫০-এ মাত্র ৩৭ বছর বয়সে মিস্টার হারকিউলিস প্রতিযোগিতা জেতেন। ’৫১-তে মিস্টার ইউনিভার্স-এ দ্বিতীয় হন। ১৯৫২-তে প্রথম বাঙালি বডিবিল্ডার হিসেবে ‘মিস্টার ইউনিভার্স’ খেতাব জেতেন তিনি। নয়াদিল্লি (’৫১), ম্যানিলা (’৫৪) ও টোকিও (’৫৮) এশিয়ান গেমসে তিনটি করে সোনা জেতেন তিনি। এর পর আর থেমে থাকেননি তিনি। একের পর এক প্রতিযোগিতায় দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন মনোহরবাবু। আশি পেরিয়েও সমান ভাবে শরীরচর্চা করে গিয়েছেন তিনি। তাঁর শেষ শো ছিল ৮৯ বছর বয়সে..💪🏼♥️

কিন্তু বডি বিল্ডিং চালিয়ে নেয়া তার জন্য সহজ ছিল না।দরিদ্র পরিবারের সন্তান | স্ত্রী এবং চার সন্তান ছিল পরিবারে।তাই মনোহর বিভিন্ন ছোটখাট কাজ করে নিজের বডি বিল্ডিংয়ের জন্য অর্থ জোগাড় করতেন। তাঁর এই পরিশ্রম ও চেষ্টা বৃথা যায়নি।তিনিই ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মিস্টার ইউনিভার্স খেতাবধারী | ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন আমাদের মতোই একজন বাঙালি, জীবনাচরণে ছিলেন বেশ সাদামাটা। এখনকার যারা জিম করেন তাদের ডায়েটের কত নিয়ম আছে, ভাত খাওয়া যাবে না, কমপ্লেক্স কার্ব খেতে হবে ইত্যাদি। মনোহর আইচ কিন্তু ভাতই খেতেন। ‘পান্তা ভাতের জল, তিন পুরুষের বল‘- এ কথা তিনি বলতেন।তিনি একসময় দিনে চারবেলা পান্তা খেতেন।

যখন তার বয়স শত বছর পেরিয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে খেতেন দুধ দিয়ে চিঁড়া, এরপর খেতেন এক কাপ কফি। দুপুরে ভাত, ডাল এবং সবজি বা মাছ। বিকেলে থাকতো কফি। রাতের বেলায় আবার ভাত। কখনো ফলের রস খেতেন দিনে। তিনি বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফলের ও মাছের ভক্ত ছিলেন। সপ্তাহে তিন দিন মাংসও থাকত খাবারের তালিকায়। মুসুরির ডাল আর পুঁইশাকের চচ্চড়ি তো বটেই, মাছের মুড়ো আর কচুর লতিও অসম্ভব ভালবাসতেন তিনি।

সবচেয়ে দারুণ ছিল তার জীবন দর্শন। তিনি বলতেন, “আমি কখনো দুশ্চিন্তাকে প্রশ্রয় দেই না। ছোটবেলা থেকে টাকা রোজগার নিয়ে আমার সমস্যা ছিল। কিন্তু অবস্থা যা-ই হোক না কেন, আমি চিন্তিত হই না, খুশি থাকি।”নিজের তৈরী ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম শেখাতেন। ভারতের আটবারের চ্যাম্পিয়ন বডি বিল্ডার সত্য পাল তারই শিষ্য। এছাড়া আরেক শিষ্য প্রেমচাঁদ দোগরা ১৯৮৮ সালে জিতেছিলেন মিস্টার ইউনিভার্স খেতাব।

মনোহর আইচ মনে করতেন, দেহের উন্নতির জন্য মনের সাথে তার সংযোগ জরুরী। এজন্য মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। শুধুমাত্র শারীরিক কসরতের উপরই বডি বিল্ডিং নির্ভর করে না।মনোহর আইচের জীবনে দেখা যায়, দারিদ্রতার জন্য তিনি অনেক প্রতিকূল অবস্থায় পড়েছেন, কিন্তু হতোদ্যম হননি। সবসময় হাসিখুশি থেকেছেন এবং নিজের কাজ করে গেছেন। একসময় তিনি এটাও বলেছেন যে, মিস্টার ইউনিভার্স খেতাব জিতবেন কি না তা ভাবেন নি, কেবল নিজের ব্যায়ামটা ঠিকমত করে গেছেন। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, নিজের ভবিষ্যত জীবনের ভালোর জন্য অন্যের গোলামী করার মানসিকতা তার ছিল না। তাই সেই ব্রিটিশ অফিসারের মন্তব্যের প্রতিবাদ তিনি করতে পেরেছিলেন।

মাত্র ৪ ফুট ১১ইঞ্চি উচ্চতা হওয়ার কারণে তাঁকে 'পকেট হারকিউলিস' ও 'ভারতীয় শরীরচর্চার জনক' নামে অভিহিত করা হত।মনোহরবাবুর সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৫ সালে তাঁকে বঙ্গবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত করা হয়।বডি বিল্ডিংয়ের এই কিংবদন্তী ব্যক্তিত্ব মারা যান ২০১৬ সালের ৫ জুন। তখন তার বয়স হয়েছিল ১০৪ বছর।এই বডিবিল্ডারের প্রয়াণ এক চলমান ইতিহাসের অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি..💛

কিছু দিন আগেই চলেগেল বাঙালীর পকেট হারকিউলিস মনোহরবাবুর প্রয়াণ দিবস, আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি..🌷

♦️তথ্যসূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা, Roar বাংলা

© এক যে ছিলো নেতা

| ে_ছিলো_নেতা |

#মনোহর_আইচ #ব্যায়ামবীর #পকেট_হারকিউলিস #ভারতীয়_শরীরচর্চার_জনক #বাঙালী #বাংলা #ব্যায়াম

📌 Facebook এর পাশাপাশি আমরা পথচলা শুরু করেছি YouTube এও.. আমাদের কাজ ভালো লাগলে আমাদের channel টি Subscribe করে পাশে থাকবেন..

কেমন আছে নেতাজির তৈরি ক্যান্টিন..?🩷১৯২৪ সাল থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত কলকাতা পুরসভায় ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। ১৯২৪ সালে তিনি ...
07/06/2025

কেমন আছে নেতাজির তৈরি ক্যান্টিন..?🩷

১৯২৪ সাল থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত কলকাতা পুরসভায় ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। ১৯২৪ সালে তিনি কলকাতা পুরসভায় চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৩০ সালের ২২ আগস্ট তিনি Kolkata Municipal Corporation এর মেয়র হন। এরপর বিধানচন্দ্র রায় পুরসভার মেয়র হলে তিনি অব্যাহতি দেন। জানা যায়, পুরকর্মীদের খাবারের সংস্থান করতে কলকাতা পুরসভায় থাকাকালীন পুরসভার ক্যান্টিন চালু করেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। তিনি নাকি নিজেও খেতে ভালবাসতেন..🌻

কলকাতা পুরসভায় সুভাষচন্দ্র বসুর ক্যান্টিন চালু প্রসঙ্গ কিন্তু নেহাতই কাকতালীয় নয়। জানা যায়, ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর খাদ্য তালিকায় মিষ্টি থাকতই। খিচুড়ি ছিল তাঁর অন্যতম প্রিয় খাবার। মধ্যাহ্নভোজে আম বাঙালির মতো ভাত, ডাল, তরকারি বেশি পছন্দ করতেন নেতাজি। শেষের দিকে লিভারের সমস্যার কারণে বেশির ভাগ সময় লেবু,লবন, চিনি, জলই খেতেন।

কিন্তু এখন কেমন আছে নেতাজির তৈরি এই ক্যান্টিন?💙🌿

বর্তমানে ক্যান্টিন এবং পুরসভার গেস্ট হাউস মিলিয়ে ২৭ জন কর্মী কাজ করেন। এদের অধিকাংশই চুক্তিভিত্তিক কর্মী। এঁদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। ১৯৬৪ সাল থেকে কাজ করছেন সুধীর পাল কিংবা ১৯৭১ সাল থেকে কাজ করছেন বীরেন জানা। ক্যান্টিনের ফুল মালা দেওয়া নেতাজির ছবিতে প্রণাম করে বীরেন বাবু বলেন, "শুনেছি ১৯৩০ সালে মেয়র হওয়ার পর এই ক্যান্টিন চালু করেছিলেন তিনি। আজও সেই ক্যান্টিনের দৌলতেই আমরা দুমুঠো অন্ন জোগাচ্ছি।"

দীর্ঘদিন ধরে এই ক্যান্টিনে কর্মরত কমল পাল। তিনিও ক্যান্টিনের হাল ফেরাতে এর আধুনিক সংস্কার করার দাবি জানান। পাশাপাশি, সব কর্মীরাই পুরসভার ক্যান্টিনের উন্নতি হোক এটাই চান। যাতে কর্মী ও তার পরিবারের সকলের রুটি রুজি অটুট থাকে।
শোনা যায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সব থেকে প্রিয় পানীয় ছিল চা। তিনি নাকি দিনে ২০-২৫ বার চা খেতেন। তিনি সবসময় সুপারি চিবোতেন। অনেক বারণ করা সত্ত্বেও শুনতেন না। এমনকি ব্যাডমিন্টন খেলার সময়ও তিনি সুপুরি খেতেন। পরে অবশ্য সুপারি সম্পূর্ণ ছেড়ে দিয়ে হরিতকি খেতেন বলে শোনা যায়..💛

প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময়ে কফি হাউস থেকে সূর্য সেন স্ট্রিটের শরবতের দোকান সব জায়গাতেই যাতায়াত ছিল ছাত্র সুভাষের। কফির সঙ্গে প্রিয় ছিল কাটলেট। সূর্যসেন স্ট্রিটের ফেভারিট কেবিনও প্রিয় গন্তব্য ছিল নেতাজির। বসতেন চার নম্বর টেবিলে। এই টেবিলে বসেই তিনি শুনতেন নজরুলের গান।

শোনা যায়, কলেজস্ট্রিটের অন্যতম বাঙালি খাবারের দোকান স্বাধীন ভারত হিন্দু হোটেলেও যেতেন নেতাজি। এখানে নিজের হাতে শতরঞ্চি পেতে বন্ধুদের নিয়ে দুবেলা ভরপেট মাছ ভাত খাইয়েছেন নেতাজি বহুবার। এছাড়াও ভীমচন্দ্র নাগের সন্দেশ খুব প্রিয় ছিল বলে শোনা যায়..🌷

♦️তথ্যঃ News18 বাংলা

© এক যে ছিলো নেতা

| ে_ছিলো_নেতা |

📌 Facebook এর পাশাপাশি আমরা পথচলা শুরু করেছি YouTube এও.. আমাদের কাজ ভালো লাগলে আমাদের channel টি Subscribe করে পাশে থাকবেন..

Address

Halisahar

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when এক যে ছিলো নেতা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to এক যে ছিলো নেতা:

Share